প্রতিটি প্রাণী আল্লাহর অহির সাহায্যে পরিচালিত হয়
লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:০২:৫৩ সন্ধ্যা
আপনাদের বাড়িতে হাসেঁর বাচ্চা ফুটানো হয় কিভাবে কখনো খেয়াল করে দেখার সুযোগ পেয়েছেন ? কিছু দিন আগে থেকেও হাসেরঁ ডিম থেকে কিন্তু মুরগী ছাড়া বাচ্চা ফোটানো যেতো না। গ্রামের বাড়িতে অনেকগুলো মুরগীর ডিমের সাথে সাথে কয়েকটি হাসেঁর ডিম দিয়ে দেওয়া হতো। লোকজন মনে করতো মুরগী ডিম চিনতে না পেরে নিজের ডিম মনে করে উম দিতে থাকবে এবং হাসেঁর ডিম থেকেও বাচ্ছা বের আসবে। কিন্তু নাস্তিকদের পুজ্য বিজ্ঞান দেবতাও( ??) বহু পরীক্ষা নিরিক্ষার পরে অত্যান্ত বিণয়ের সাথে স্বিকার করে নিয়েছে যে, হাসেঁর ডিম ফুটানোর সময় একটি মুরগী যতটা বৈজ্ঞানী, বিশুদ্ধ সার্জিকেল জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ গটায় এবং বিচক্ষন ধাত্রীর মতো কাজ করে সেটা উন্নত প্রশিক্ষন লব্ধ ডাক্তার বা ধাত্রীদের পক্ষেও সম্ভব নয়। এই কাজে মুরগী তার চোখ ঠোট এবং নখকে অত্যান্ত কার্যকর ভাবে ব্যবহার করে যেভাবে মাইক্রোস্কোপ বা আল্ট্রাসোনোগ্রাম দিয়ে মানুষের গর্ভের ভিতরকার বাচ্ছার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা নেওয়া হয়। মুরগী তার নখকে অত্যান্ত সফল ভাবে সিজারের কাজে ব্যবহারে একটি হাসেবঁ বাচ্ছা কে জন্ম দেয়। বিষয়টি এবার পরিস্কার করে দেই।
মুরগীর ডিমের তুলনায় হাসেঁর ডিমের ছাল কিছুটা শক্ত এবং গাঢ় হয়। মুরগী তার ডিমের ওপর উম দেওয়ার সময় তাপমাত্রাকে ঠিক তেমন ভাবে নিয়ন্ত্রন করে যেভাবে আইসিউতে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রন করা হয় এবং মায়ের গর্বের বাচ্ছার জন্য আল্লাহ পাক নিজের কুদরতি ব্যবস্থানাও এভাবেই তাপমাত্র নিয়ন্ত্রন করেন। এই কাজে মুরগী তার ডানা গুলো কে ব্যবহার করে এমন ভাবে ঝাপটে ধরে যে, বাইরের ঠান্ডা বাতাস ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। আবার এই ডানার সাহায্যেই নিয়মিত বাতাস দিয়ে তাপমাত্রাকে কম বেশি করে সেই পরিমানের রাখে যে পরিমান তাপমাত্রায় ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়ার জন্য উপযোগী। নিজের মুরগীর জন্য এক রকম তাপমাত্রা হলে হাসেঁর ডিমকে সে ঠিকই চিনে নেয় এবং তাদের কে বেছে বেছে নিজের এক পাশে নিয়ে আসে এবং তাদের জন্য আলাদা তাপমাত্রা প্রয়োগ করে। পরীক্ষা করলে দেখা যাবে যে, আপনি যেভাবে দেন না কেন মুরগী তার দৃষ্টি শক্তির প্রখরতাকে কাজে লাগিয়ে হাসেরঁ ডিমগুলোকে আলাদা করে নিবে।
পনের থেকে উনিশ দিনের ভিতর কোন এক সময় ডিমের ভিতর বাচ্চার ভিতর প্রাণ সঞ্চার হয় এবং সেগুলো কিছুটা নড়াচড়া শুরু করে। মুরগী সেটা অনুভব করে বাচ্চাদের জন্য অত্যান্তু সূচারু ভাবে অভিজ্ঞ সার্জনের মতো সার্জারির কাজ শুরু করে দেয়। এই কাজে সে তার ঠোট এবং পায়ের নখকে কাজে লাগায়। নিজের বাচ্চাদের খোসা থেকে বের হওয়ার সময় আর হাসেঁর বাচ্চাদের বের হওয়ার সময় এক নয় এটা মুরগী বুঝতে পারে। বিজ্ঞানও বলে যে, মুরগী থেকে হাসেঁর বাচ্ছার গঠন প্রণালী একটু ধীরে হয়। হাসেরঁ ডিমের খোসার ভিতর বাচ্চাদের শ্বাস প্রশ্বাসের প্রচন্ড সমস্যা হওয়া সম্ভবনা থেকে যাওয়ার কারণে হাসঁগুলো মারাও যেতে পারে। এই ভেবে মুরগী তার ঠোটের সাহায্যে হাসের ডিমের ঠিক সেই ভাগে একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র করে দেয় যেখানে হাসেঁর ঠোট দুটি অবস্থান করছে। একেবারে হাসের বাচ্চাদের দুই ঠোট বরাবর ছোট্র ছিদ্রের সাহায্যে হাসেঁর বাচ্চারা শ্বাস নিতে থাকে। কিছুদিন পরে তাদের জন্যও পুর্বের মতো সাজারীর ব্যবস্থা করে বাচ্ছাগুলো কে খোসা থেকে বের করে নিয়ে আসে। এই কাজে মুরগীর সফলতা শতভাগ। যদি কোন ডিমের ভ্রুন নষ্ট হয়ে যায় তাহলে মুরগী সেটা নিজের উমের কেন্দ্র থেকে দুরে ঠেলে দেয় বহু আগেই। ভ্রুন নষ্ট হওয়া ডিম যাচাই করতে মুরগীর একটি নজরই যথেস্ট। তার চোখকে মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রের সাথে তুলণা করলেও ভূল হবে বরং সেটা আরো প্রখর এবং তিক্ষè।
এবার কতগুলো প্রশ্নের জবাব খুজুন।
১। মানুষের গর্ভের বাচ্ছার পজিশান জানতে একজন গাইনী বিশেষজ্ঞকে কতগুলো যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে স্বিদ্ধান্ত নিতে হয়, অথচ মুরগী দেখলেই বলে দিতে পারে কোন ডিমের ভ্রুন নষ্ট হয়ে গেছে, তাহলে বেশি জ্ঞানী কে ? গাইনী বিশেষজ্ঞ না মুরগী।
২। কোন ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে ছাড়াই কিভাবে একটি মুরগী তার চারপাশের, বিশেষ করে ডিমের ওপরের তাপমাত্রাকে একটি বিশেষ মাপ পর্যন্ত কন্টোল করে ? এই ক্ষমতা, জ্ঞান কি কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের আছে ? মানুষ যন্ত্র ছাড়া কি করে খোলা জায়গায় তাপমাত্র পরিমাপ করে নিয়ন্ত্রন করবে ?
৩। সুস্থ্য একটি ডিমের ভিতর থেকে যে কোন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে কেটে বাচ্ছা বের করে আনার সময় কতটা বাচ্ছা জীবিত থাকবে সেটার গ্যারান্টি কোন ডাক্তা দিতে না পারলেও মুরগী কিন্তু নিজের নখকে কেচি হিসেবে ব্যবহার করে সফল অস্ত্র প্রচার সম্পন্ন করে বাচ্চাদের নিরাপদে খোসা থেকে বের করে আনে। এখানে অভিজ্ঞ সার্জন হিসেবে কে বেশি মার্ক পাবেন, ডাক্তার না মুরগী ?
৪। একজন ডাক্তার যন্ত্রের সাহায্যে মানুষের পেটের ভিতকার যে কোন টিউমারের অবস্থান নির্ণয় করার পরে চিহ্ন দিয়ে রেখে পরে সেই জায়গায় সিজার করে দেখেন যে, তারা ভুল জায়গায় কাঁচি চালিয়েছেন। অথচ একটি মুরগী কোন ধরনের যান্ত্রিক পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই খোসার ভিতরকার একটি হাঁসের বাচ্ছার দুই ঠোটের মধ্যভাগে ছিদ্র করে দেয় এবং এই কাজে সে শতভাগ সফল হয়। এবার বলূন, মানুষের তৈরি করা আলট্রাসোনগ্রাম বা অত্যাধুনিক এক্স্ররে থেকে মুরগীর চোখের ক্ষমতা বেশি কি না ?
৫। কোন ডাক্তার কি বলতে পারবে সে শতভাগ সফল সিজার করতে পারে ? একজন ডাক্তার কি মুরগীর থেকেও বেশি জ্ঞান ধারণ করে ? ওপরের ঘটণা প্রমান করে যে একটি মুরগী জাগতিক জ্ঞানে যে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থেকেও বেশি জ্ঞানী। অথচ মানুষ এই সামান্য জাগতিক জ্ঞানের মালিক হয়ে গেলেই তার জন্ম ইতিহাস কে অস্বিকার করে। তার চোখের সামনে রয়ে যাওয়া হাজারো কুদরতি ব্যবস্থাপণা কে বিবর্তন বলে উড়িয়ে দেয়। তাহলে কেন সে নিজের ক্ষুদ্র জ্ঞান আর রসায়ন শাস্ত্র নিয়ে অহংকার করে বলে বেড়ায় ” There is no God ”। অথচ ওপরের প্রশ্নগুলির প্রতিটির জবাব হচ্ছে মানুষ থেকেও মুরগীগুলো উল্লেখীত স্থান সমুহে বিপুল জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে প্রমানিত। এ থেকে কি বুঝা যায় না যে, এদের প্রশিক্ষনের জন্য এমন কোন স্বত্ত্বা আছেন যিনি তাদের কে তাদের প্রয়োজনের পথনির্দেশ করেন। যিনি এদের কে সৃষ্টি করেছেন এবং পথ দেখিয়েছেন তিনিই তাদের সৃষ্টা। সৃষ্টার অস্তিত্ব্য তালাশ করতে হকিংসের বইর পাতায় চোখ না দিয়ে নিজের দেহের দিকে তাকালেই তো হয়।
নাস্তিক্যবাদের অনুশারীদের বুঝতে হবে যে, এগুলো আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান যা তিনি মুরগীর প্রয়োজনের খ্যাতিরে দিয়েছেন। তাকে সাহায্য করেন সরাসরি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। এই কাজে মুরগীর ওপর ইলহাম হতে থাকে। প্রতিটি প্রাণী আল্লাহর অহির সাহায্যে পরিচালিত হয়। এই দুনিয়ার কোন প্রাণীকে আল্লাহ পাক পথ নির্দেশনা না দিয়ে ছেড়ে দেননি এটা বুঝার জন্য বিজ্ঞানই উত্তম মাধ্যম হওয়া উচিত ছিলো। অথচ কিছু বিজ্ঞান পুজারী একতরফা ভাবে বিজ্ঞান কে ইসলামের প্রতিপক্ষ বানাতে উঠে পড়ে লেগেছে। তারা আল্লাহ তায়ালার ওপর ঈমান না এনে মানুষের কতিপয় স্বিদ্ধান্তের ওপর ঈমান এনেছে। এরা ভুলে গেছে যে, মানুষ ছাড়াও বিজ্ঞজনিত স্বিদ্ধান্ত অনেক প্রানীও দিতে পারে। অথত তাদের কে বিবর্তনের ফল বলা হয় না। বিবর্তন কেবল মানুষের বেলায় এসে থমকে যায়।
বিষয়: বিবিধ
২৩৩৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন