অধ্যাপক গোলাম আযমের পুত্র হওয়া অপরাধ কিন্তু রাজা ত্রিদিব রায়ের পুত্র হওয়া আশীর্বাদ !!!

লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ২১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:১৪:৪৪ দুপুর



যেমনটি একাত্তরে মুসলিম জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামপন্থী দল ও ব্যাক্তিবর্গ আগ্রাসী এবং আধিপত্যবাদী ভারতকে সামনে রেখে মুসলিম বিশ্ব থেকে ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন ও একাকী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের স্বাধীন বাংলাদেশকে অখন্ড পাকিস্তানের সাথে থাকাটাকেই বাঙ্গালী মুসলমানের জন্য মন্দের ভালো এবং অধিকতর নিরাপদ বিবেচনায় রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন... ঠিক তেমনটাই তৎকালীন চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় এবং তাঁর পার্বত্য জনগোষ্ঠী ভারতীয় আগ্রাসন এবং স্বজাতির স্বাতন্ত্র ও অধিকার হারানোর আশংকায় নিজেদের জন্য মন্দের ভালো এবং অধিকতর নিরাপদ বিবেচনায় অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষেই অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন !! সেসব মুসলিম জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামপন্থী ব্যাক্তিবর্গের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অধ্যাপক গোলাম আযম। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শেষের দিকে তিনি দলীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের জন্য তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। যখন তিনি ফিরছিলেন, তাঁকে বহনকারী বিমানটি ঢাকায় অবতরণ করতে অথবা ঢাকা অভিমূখী হতে ব্যর্থ হয় যুদ্ধকালীন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে। তাঁর বিমানটি পাকিস্তান ফিরে যায়। ইতোমধ্যে দেশ স্বাধীন হয়, স্বতন্ত্র-স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। অধ্যাপক গোলাম আযমের জন্য মাতৃভূমিতে ফেরা অসম্ভব হয়ে ওঠে। মাতৃভূমিতে ফিরতে ব্যাকুল অধ্যাপক গোলাম আযম পাকিস্তান ছেড়ে সৌদী আরবে পাড়ি জমান। সেখান থেকে লন্ডন, ইংল্যান্ডে !! ইতোমধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের সরকার স্রেফ দৃষ্টিভঙ্গিগত কারণে ভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থানগ্রহণকারী অন্যান্য আরো ৩০/৩৫ জন মুসলিম জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামপন্থী রাজনৈতিক নেতৃবর্গের জন্মগত নাগরিক অধিকার হরণ করে। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শহীদ জিয়াউর রহমান সরকারের সময় তিনি মাতৃভূমিতে ফেরার অনুমতি লাভ করেন। যদিও তিনি দেশে ফেরেন কিন্তু তাঁকে তাঁর নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হয়নি! ইতোমধ্যে দেশে অনেক রাজনৈতিক উত্থানপতন ঘটে যায়। অবশেষে ১৯৯২-’৯৩ সালের দিকে প্রায় সত্তর বছর বয়েসী প্রবীণ এই নেতাকে দীর্ঘ আইনী লড়াই এবং জেলজীবন যাপন করে তবেই আল্লাহ প্রদত্ত তাঁর জন্মগত নাগরিক অধিকার ফিরে পান!! অধ্যাপক গোলাম আযম চাইলেই তাঁর নিজ আকাশ ছোঁয়া ব্যক্তিত্বের গুণে মুসলিম বিশ্বের যেকোন দেশই তাঁকে অত্যন্ত নিরাপদ, সম্মানজনক, আয়েশী এবং আভিজাত্যপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ করে দিতো !! কিন্তু তিনি ব্যাকুল ছিলেন তাঁর মাতৃভূমি জন্য। তাঁর জীবনটা তিনি উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন স্বজাতির জন্য!! আগেই বলেছি- মুসলিম জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামপন্থী ব্যাক্তিবর্গের বাইরে যেকজন গুরুত্বপুর্ণ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন তাঁর মধ্যে অন্যতম ছিলেন তৎকালীন চাকমা রাজা ত্রিদিব রায়। দেশ স্বাধীন হয় হয় ঠিক এরকম সময়ে রাজা ত্রিদিব রায় সপরিবারে দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমান!! পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য বজায় রেখে তিনি পাকিস্তানেই থেকে যান। দেশে ফিরে আসার আহবান পাওয়ার পরও তিনি তা’ প্রত্যখ্যান করেছিলেন ! “ভিভিআইপি” হিসেবে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অত্যন্ত উচ্চ সুযোগসুবিধা গ্রহণ পূর্বক তিনি সেদেশটির জন্য আজীবন কাজ গিয়েছেন মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত!! সম্প্রতি ২০১২-’১৩ সালে তিনি পাকিস্তানেই মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয় !! বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক পরও এই সেদিন পর্যন্ত তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন!! সেই রাজা ত্রিদিব রায়ের ছেলে হচ্ছেন বর্তমান চাকমা রাজা এবং বিগত ১/১১ পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়!! দেবাশীষ রায় পাকিস্তানে বড় হওয়া মানুষ!! ত্রিদিব রায়ের ছেলে দেবাশীষ রায় যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মনোনীত হন তখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোল এজেন্ট সকল ব্যক্তি এবং সংগঠন মূখে কুলুপ এঁটে বসেছিলো !! দেবাশীষ রায়ের সাথে রাতের পর রাত টক শো’ গুলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা হাসিমূখে আড্ডা দিতে তাদের বাঁধেনি !! অথচ অধ্যাপক গোলাম আযম পূত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমি’র সেনাবাহিনীর সদস্য হওয়াটা তাদের ‘চেতনা’র জন্য যতো সমস্যা !! সত্যকথা হচ্ছে, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং এর চেতনার নামে যতোগুলো জ্ঞানপাপী নামধারী বুদ্ধিজীবি, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক এবং রাজনীতিক রয়েছে তাদের আসল সমস্যাটা হলো মুসলিম জাতীয়তা, ইসলামী চেতনাবোধ এবং চেতনাসমৃদ্ধ ব্যাক্তিবর্গকেকে নিয়ে!! মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাইটা তাদের স্রেফ একটা ঢাল বা অসিলা মাত্র !!

যে রাজা ত্রিদিব বাংলাদেশ কে স্বীকার করে নেন নি, তার লাশ কয়েকমাস আগে বাংলাদেশে আনা হলে ও চেতনাধারিদের চেতনা দারায় নি, কারণ উনার ছেলে আওয়ামীলীগের এজেন্ট,

বিষয়: বিবিধ

১৬০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File