সাংবাদিক সম্মেলনে দুর্নীতির বরপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের বিচার দাবী – জাহিদ এফ সরদার সাদী

লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৬:২০:৩৯ সন্ধ্যা

লন্ডন / ৯ ডিসেম্বর ২০১৩ :একটি বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের দূর্নীতি ও দুরাচার তদন্তের দাবী জানিয়েছে সময়ের সাক্ষী নামে একটি সংগঠন। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া কানাডা এবং কাতার থেকে একযোগে পরিচালিত এই সংগঠনের ইউরোপ ব্রাঞ্চ এর উদ্যোগে লন্ডনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, দেশে বিদেশে অর্থপাচার, অবৈধ অস্ত্র বহন, মাতাল অবস্থায় ড্রাইভিং, নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধসহ নানা অভিযোগ রয়েছে জয়ের বিরুদ্ধে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মাতাল অবস্থায় গাড়ী চালানোর দায়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তার ১২০ দিনের জেল হয়েছে, দিতে হয়েছে অর্থদন্ড। এছাড়াও যুক্তরাজ্যে জয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের ১৩টি ঘটনার স্যাপ্রমান রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবী করা হয়। কয়েকটি ঘটনার তথ্যউপাত্ত উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এমন একজন প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার আগে তার ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপে তদন্ত শুরু করা এখন সময়ের দাবী। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সময়ের সাক্ষী.কম এর অন্যতম সংগঠক তাজ উদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তাজ উদ্দিন, সলিসিটর বিপ্লব পোদ্দার, ব্যারিস্টার আব্দুল হামিদ আফিন্দি, ব্যারিস্টার এন্ড সলিসিটর একেএম কামরুজ্জামান, ব্যারিস্টার আবু ইলিয়াস, নাসিম আহমেদ চৌধুরী এবং শরীফজ্জামান চৌধুরী তপন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এর উদ্দেশ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন আকতার হোসেন। তারা অবিলম্বে জয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার জন্য দূর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এনার্জি সেক্টরে একটি বিদেশী কোম্পানীকে কাজ পাইয়ে দিতে গিয়ে জয়ের ব্যাপারে দুর্নীতির যে অভিযোগের খবর আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো তার তদন্ত প্রয়োজন। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের নেপথ্যেও ‘এনার্জি এন্ড পাওয়ার’ সেক্টরের অবৈধ লেনদেনের ঘটনা রয়েছে বলে জনমনে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে। ওই দূর্নীতির ঘটনার পেছনে শেখ হাসিনা পরিবারের যোগসাজস থাকতে পারে এ কারণেই খোদ প্রধানমন্ত্রী একটি মামলার প্রত্য্য তদারকী করার পরও এখনো সাগর রুনি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়নি বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। পরিবারের কাউকে বাঁচাতে শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু দূর্নীতি তদন্তেগড়িমসি করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশে এখন মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই। বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনা আর তার দূর্নীতিবাজ পুত্রপরিজনএবং মহাজোটের চোরদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তারা আরও অভিযোগ করেন শেখ হাসিনার পুত্র পরিবার সবসময় বিদেশে বসবাস করলেও তিনি মতায় এলেই দেশে তার পুত্রকন্যাদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। তারা দেশে ফিরে এসে মেতে উঠে অর্থ পাচার দূর্নীতি আর লুটপাটে। আয়োজকরা জানান, দেশে-বিদেশে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দূর্নীতির চাঞ্চল্যকর তথ্য ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে জয়ের নামে বেনামে ১৭টিব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ৮টি বাড়ী রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হয়, জয়ের বিরুদ্ধে এইসব অভিযোগকে ছোট করে দেখা যায়না। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ মতায় আসার পর বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় দৈনিক আমারদেশ সজীব ওয়াজেদ জয়ের দূর্নীতির রিপোট প্রকাশ করার জের ধরে পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এখনও কারাবন্দী। জয়ের দূর্নীতি ও বেপরোয়া জীবনাচারের একটি রিপোর্টে পহেলা ডিসেম্বর সময়ের সাী.কম ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হওয়ার মাত্র ১৪ ঘন্টার মধ্যেই ওয়েব সাইটটি বাংলাদেশে দেখা বন্ধ করে দেয় সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে জয়ের নাইট কাবে অতিমাত্রায় বিল, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধর্মের একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক কিংবা বিয়ের তথ্য উপস্থাপন করে বলা হয়, এগুলি তার ব্যাক্তিগত বিষয় হলেও জয় যদি হঠাৎ করেই রাষ্ট্রীয় মতার সুযোগ নিয়ে জনগণের সামনে নেতা হিসেবে আবির্ভূত হতে চান, তাহলে তার জীবনাচার ও চরিত্র সম্পর্কে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। তারা আরও বলেন, রাজনীতির মাঠে এইসব প্রশ্ন যে গুরুত্বপূর্ণ এটি তার মা শেখহাসিনা ও প্রমাণ করেছেন। শেখ হাসিনা নিজেই জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, তার ছেলে আহলে কিতাবের অনুসারী ক্রিশ্চিনাকে বিয়ে করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ব্ক্তারা বলেন, জয় আহলে কিতাব কিংবা শিখ ধর্মাবলম্বী যাকেই বিয়ে করেন সেটি তার ব্যক্তিগত বিষয় হলেও রাজনীতি করতে চাইলে এইসব বিষয়গুলো সম্পর্কে জনমনে নানা প্রশ্ন থাকা স্বাভাবিক। কারন, প্রতিপরে রাজনৈতিক নেতা ও দল সম্পর্কে অশোভন বক্তব্য মন্তব্য, প্রকাশ্য রাজপথে শত শত আলেম ওলামাকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা, দাড়িটুপিওয়ালা মানুষকে অপমান, সামরিক বাহিনীতে জঙ্গীবাদ রয়েছে বলে অপপ্রচার এবং মাদ্রাসা শিক্ষা উঠিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র এইসব হীন কর্মকান্ডের পেছনে জয়ের ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও বেপরোয়া জীবনাচারনের কু প্রভাব রয়েছে সেটি ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট কতৃপরে প্রতি আহবান জানিয়ে বলা হয়, বিদেশে বেড়ে ওঠা, বিদেশী সাংস্কৃতি লালন করা, বিদেশী মেয়েকে বিয়ে করা, বিদেশে ব্যবসা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠা করা, যার সবকিছুই বিদেশে তিনি হঠাৎ করেই মায়ের মতার দাপট দেখিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন কিনা এটি জরুরীভিত্তিতে খতিয়ে দেখা দরকার। সংবাদ সম্মেলনে জয়ের দূর্নীতির তথ্য ধারাবাহিকভাবে ‘সময়েরসাক্ষী ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তের কথাও পুনর্ব্যাক্ত করা হয়। একইসঙ্গে ‘সময়েরসাক্ষী,কম এর উপর থেকে সকল প্রতিবন্ধকতা তুলে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি আহবান জানানো হয়।

বিষয়: বিবিধ

১৪২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File