এবার সময় হলো শাহাদাতের মাধ্যমে সত্যের স্বাক্ষ্য দেওয়া

লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ১১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:২২:৪৫ সকাল

সবাই ধৈর্য ধারণ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করুন। ওরা চায় আমরা হুট করে এমন কিছু করি যাতে আমাদের সকল অর্জন ভূলন্ঠিত হয়ে যায়। আল্লাহর ফয়সালার ওপর ভরশা রাখুন। তিনিই আমাদের অভিভাবক, আর অভিভাবক হিসেবে তার থেকে উত্তম আর কেউ নেই। এমন পরীক্ষার জন্য আমাদের কে পছন্দ করে নেওয়া হয়েছে এর চাইতে খুশির খবর আর কি আছে। এটাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসেবে মনে করুন। আমরা জানি যে, প্রিয়তম কাউকে হাড়াতে বসলে মন খারাপ হবেই। কিন্তু আমাদের ভাবা দরকার যে, কাদের মোল্লাকে হয়তো বিছানাতেই মরতে হতো। তখন কিন্তু আমরা তাকে মনে রাখতাম না, তার মৃত্যুতে ইসলামী আন্দোলন কিছু পেত না। ইসলামী আন্দোলনের জন্য জানবাজি ধরার নেতৃত্ব্য এই জমিনে প্রায় শুন্য ছিলো। নেতৃত্ব্যের ভিতর থেকে সত্যের চুড়ান্ত স্বাক্ষ্য দেওয়ার তালিকা একেবারে খালি ছিলো। কাদের মোল্লা সেই মিছিলের নেতৃত্ব্য দিবেন এটা তো গৌরবের বিষয়।

ভুলে কেন যাচ্ছেন যে, আমরা এতদিন বহুমুখী প্রশ্নের মুখোমুখি ছিলাম। একদিকে তাগুতের পা চাটা দরবারী আলেমদের অহরহ ফতোয়াবাজি, অপরদিকে কতিপয় হক্কানী ওলামাদের সংশয় সন্দেহমুলক প্রচারণা আর অন্যদিকে ছিলো ইসলামকে নাম সর্বস্ব হিসেবে ব্যবহারকারী হযরতদের দুনিয়াবী যুদ্ধের টিটকারী মুলক বয়ান। এতগুলো প্রশ্ন আর অভিযোগের জবাব তো খাতা কলমে আমাদের নেতারা বহুবার দিয়েছেন এবার সময় হলো শাহাদাতের মাধ্যমে সত্যের স্বাক্ষ্য দেওয়া। পুর্ববর্তিদের রেখে যাওয়া পদ্বচিহ্নের অনুশরনে শাহাদতের তালিকায় নাম লিখানোর জন্য এই জমিনে আল্লাহ পাক আমাদের কে কবুল করেছেন এটা দুনিয়াবাসীর জানা দরকার। আব্দুল কাদের মোল্লা প্রমান করেছেন যে, মাওলানা মওদূদীর সেই ভবিষ্যত বানী বাস্তবিকই সত্য ছিলো। তিনি বলেছিলেন, এই আন্দোলনে পা দেওয়ার অর্থই হলো জাতির সুর্য সন্তানদের কে পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়া, জীবনকে খোদার রাহে বিলিয়ে দেওয়ার ইস্পাত স্বিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া। ক্ষমা প্রার্থনার অস্বিকার করে কাদের মোল্লা সেই কাতরে নাম লিখালেন যেমন লোক মাওলানা মওদূদী প্রত্যাশা করেছেন। সত্যকে নিজের জীবনের বিনিময়ে স্বাক্ষ্য দেওয়ার নামই হলো শাহাদাত। কোন দলকে আল্লাহ পাক তখনি পরীক্ষায় ফেলেন যখন তিনি তাদের কে কবুল করে তার নিজের পক্ষ থেকে কোন বিশেষ দায়িত্ব্য দেওয়ার চিন্তা করেন। কোরআন হাদিস যারা নিয়মিত অধ্যায়ন করেন তাদের কাছে বিষয়টি গোপণ কিছুই নয়। কাদের মোল্লার আজন্ম শত্রুও একে হত্যাকান্ড ছাড়া কিছুই বলছে না, এটাই তার পুরস্কার। ধরে নিন যে, আগামী তে আরো বড় কোন দায়িত্ব্য পালনের জন্য এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাজির হয়েছে।

একবার ভাবুন। আজকে কাদের মোল্লা কতজন ভক্ত রেখে গেছেন ? তার হিসেব করার আগে নিচের পরীসংখ্যান দেখুন। তার থেকেও লক্ষ কুটি গুন মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের ভাগ্যে কি ঘটেছে।

ইমাম আবু হানিফা রহ। কুফার সব থেকে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব্য। মুসলিম বিশ্বের নয়নের মনি। দুনিয়ার বুকে ফিকহকে আলাদা উচ্চতায় পৌছানে রাতের নামাজের জন্য বিখ্যাত, তাকে কোথায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হয়েছে ? জেলখানা বিষপ্রয়োগ করে তাকে হত্যা করা হয়।

ইমাম মালেক রহ কে দিনের পর দিন কারাঘারে রাত কাটাতে হয়েছে। সমকালিন শাষকরা তাকে উল্টো করে এমন ভাবে বেধে রাখতেন যে, শেষ পর্যন্ত তার হাত কব্জি থেকে আলাদা হয়ে যায়।

ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা রহ। তিনি কি অপরাধ করেছিলেন ? তাতারিদের আক্রমনের কারণে যখন রাজাবাদশারা পালানোর পথ খুজে পাচ্ছিলেন না, তখন তিনি সম্মুখ যুদ্দে তাদের সংগে লড়েছেন। অন্যদিকে দুনিয়ার সকল কুসংস্বকার, আর মুসলিম সমাজের ভিতর লালিত দির্ঘদিনের শিরক বেদয়াত নির্মূলে তার অবদান মুসলিম বিশ্ব কেয়ামত পর্যন্ত স্বিকার করতে থাকবে। অথচ তাকেও মৃতূদন্ড মাথায় নিয়ে জেল খানায় মরতে হলো।

দেওবন্দেরে প্রতিষ্টাতা কাসেম নানুতুবী, ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরী মক্কি সহ প্রথম সারীরর সকল ওলামাদের নামে মৃত্যুদন্ড ঘোষনা করে ইংরেজ সরকার কি তাদের শেষ রক্ষা করতে পেরেছে ?

সমাকালিন বিশ্বে সাইয়েদ কুতুব রহ শহীদকে নির্মম ভাবে ফাসি দেওয়া হলো, দলের ফাউন্ডার হাসানুল বান্নাকে নিজের লোক দিয়ে হত্যা করলো তাগুতের সরকার। কিন্তু ইখওয়ান কি ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংস হয়েছে জামাল নাসেররা। ইখওয়ান এখন ক্ষমতা সিড়িতে।

মাওলানা মওদূদীকে তিন বারে আট বছরের মতো জেলে রাখা হয়। বক্তৃতা করার সময় তাকে লক্ষ করে গুলি করা হয়। গুন্ডা পাঠিয়ে তাকে হত্যার ষরযন্ত্র করা হয় কিন্তু তার চারিত্রিক দৃঢ়তার কাছে আতাতায়ী স্বয়ং ধরাশয়ী হয়। উপায় না দেখে তাকে ঠুনকো অযুহাতে ফাঁসি দিয়ে মেরে ফেলার ষরযন্ত্র করা হয়। ফাসিঁর আসামী করে তাকে কনডেম সেলে রাখা হয় কিন্তু কি হয়েছে ? দুনিয়া থেকে মওদূদীর নাম মুছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে ? সম্বব হয়নি। আল্লাহর ফয়সালা থেকে কেউ ব্যত্ক্রিম করতে পারবে না। আমাদের কে তার দিকেই ফিরে যেতে হবে। এক কাদের মোল্লা চলে যাবেন, তার রক্তের প্রতিটি ফোটা থেকে, তার প্রতিটি দির্ঘ্যশ্বাস থেকে দশজন করে কাদের মোল্লা তৈরি হবে। এটাই ইতিহাস। যত কিছুই হোক না কেন ইতিহাস কে কেউ বদলাতে পারে না। ইতিহাস তার নিজের কলমেই লিখিত হবে। এর বাইরে ব্যতিক্রম যা কিছু আছে তা ইতিহাসের বিকৃতি মাত্র। বিকৃতি বেশি দিন দির্ঘস্থায়ী হয় না। তারা চায় তাদের ষরযন্ত্রে পা দিয়ে আমরা এমন কিছু করি যাতে জনগনের হৃদয় নিংরানো দোয়া গুলো থেকে কাদের মোল্লা এবং স্বয়ং সংগঠন মাহরুম হয়ে যায়। পরীক্ষা কে পরীক্ষা হিসেবে নিন এবং এই মুহুর্তে দায়িত্বশীলদের অনুমতি ছাড়া একদমও বাড়াবেন না। আল্লাহ পাক কদের মোল্লার পরিবার সহ সংগঠনের সকল ভাইদের কে সবর করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

বিষয়: বিবিধ

২০৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File