নতুন তিন 'জঙ্গি' সংগঠনের উত্থান!?
লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ১৪ নভেম্বর, ২০১৩, ০৯:০১:০৭ রাত
অবাক হতে পারেন, শিরোনাম দেখে। আমেরিকার গোয়েন্দাদের 'জঙ্গি' তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন তিনটি সংগঠন!
এগুলোর নাম হচ্ছে—১- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তান,২- তাবলীগ জামাত, ৩- জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান!
এখন আমরা এগুলোর 'জঙ্গি' হওয়ার কারণগুলো উল্লেখ করব।
১- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানঃ-
পাকিস্তানের একটি প্রভাবশালী ইসলামি সংগঠন। বিগত নির্বাচনে এ দলটি ১২টি আসন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের অপরাধ, তালেবান যখন ক্ষমতায় আসে তখন তারা পাকিস্তান সরকারকে তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য করে, বিভিন্নদেশে তারা তালেবানের পক্ষে স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে প্রচারণা করে। ক্রুসেডারদের আফগান আক্রমণ, পাকিস্তান সরকারের আফগানের বিরুদ্ধে ভুখন্ড ব্যবহারের প্রচন্ড বিরোধিতা করে। টিটিপির বিরুদ্ধে সৈন্য মোতায়েনের তারা বিরোধিতা করে, তারাই বর্তমান পাক সরকারকে টিটিপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার কথা বলে আসছে। দেখা যায় যে, তালেবানদের অনেক যোদ্ধারা একসময় এই জমিয়ত করত, এমনকি অন্যতম জমিয়তনেতা তালেবানপিতা মাওলানা সামীউল হক হচ্ছেন জমিয়ত(এস)র প্রধান। তাই তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা নজরদারি বেড়েছে।
২- তাবলীগ জামাতঃ-
গাট্টি মাথায়, পুটলি হাতে, ডেগ-পাতিল আর বুচকি সাথে নিয়ে তারা চুপি চুপি করে রাশিয়া-চীন-জাপান, ফ্রান্স-হিন্দুস্তান ও হোয়াট হাউজের শিকড়ে পৌছে যায়। তাদের মাধ্যমে অনেক অমুসলিম দ্বীনে ইসলাম দেয়ারা দীক্ষিত হয়। যেহেতু ওইসব দেশের মানুষ লেখা-পড়া জানে, তাই তারা কুরআন-হাদীস পড়ে 'জঙ্গি' হয়ে যায়। জানা যায় যে, কেনিয়ায় যারা হামলা করেছেন, তাদের অনেকে নওমুসলিম। এভাবে বিশ্বের অনেক মার্কিন-ইসরাইলের স্থাপনায় হামলার সাথে এই নওমুসলিমরা জড়িত। আর তাবলীগের মাধ্যমে অনেকে নওমুসলিম হয়েছে।তাছাড়া আফগানিস্তানে অনেক তাবলীগীরা শেষে জিহাদে যোগ দেয়। তাই এদের উপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
৩-জামায়াতে ইসলাম পাকিস্তানঃ-
গণতান্ত্রিক আদর্শের এক ঐতিহ্যবাহী দল। গণতন্ত্রের পক্ষে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর। তাদের সাবেক আমীর কাযী হোসাইন আহমদ(মরহুম) টিটিপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলেছেন। কিন্তু হাকিমুল্লাহ মেহসুদের শাহাদাতের পর তাদের বর্তমান আমীর মুনাওর হাসান তাঁকে শহীদ বলেছেন। এবং যে পাকসেনারা মার্কিন স্বার্থ রক্ষার্থে মারা যায় তারা কীভাবে শহীদ হয়? সে প্রশ্নও উত্থাপন করেছেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় সেদেশের সেনাবাহিনী। তাকে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়ে বিবৃতি দেয়। মার্কিন রাষ্ট্রদুত তার কথার ব্যাখ্যা চায়! সেদেশের আওয়ামীলীগ পিপিপি আদালতের কাছে তাদের নিবন্ধন বাতিলের আহবান জানায়।
এর বিপরীতে জামায়াত পাকসেনাকে রাজনীতিতে হস্তেক্ষেপ না করার আহবান জানায়।এর প্রতিবাদে জামায়াতের সেক্রেটারি লিয়াকত বেলুচ এক বিবৃতিতে বলেছেন, সায়্যিদ মুনাওয়ার হাসানের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ইচ্ছাকৃত ঘোলাটে পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।
পাঞ্জাব প্রদেশের টিটিপির আঞ্চলিক কমান্ডার ইসমতুল্লাহ মুয়াবিয়া মুনাওর হাসানের কথাকে অভিনন্দন জানান এবং বলেন, একমাত্র আমেরিকার দালালরা একথার বিরোধিতা করতে পারে। (জং-পাকিস্তান)
এখন আসি আমাদের কথায়, উপরের আলোচনায় কেউ হবেন হর্ষিত, আবার কেউ হবেন বিমর্ষিত।
কিন্তু আমরা যে বিষয় দীর্ঘদিন ধরে উপলদ্ধি করে আসছি, তা হচ্ছে বর্তমান দুনিয়ায় সত্যিকার মুসলিম হিসেবে বাচতে হলে 'জঙ্গি' তকমা নিয়েই বাচতে হবে। কারণ জিহাদ হচ্ছে ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অংশ, যে জিহাদকে অস্বীকার করবে নিঃসন্দেহে সে কাফির। আর যে জিহাদকে ফরজ মানল অথচ জীবনে একবারও জিহাদের নিয়্যত করলো না সে মুনাফিক হয়ে মারা যাবে। কেননা নবীজী সা. বলেছেন, যে মারা গেল এমতাবস্থায় যে সে জিহাদের নিয়্যত করলো না সে মুনাফিক হয়ে মারা গেল!
আর যদি কেউ জিহাদের নিয়্যত করে এবং শরীয়াহ শাসন চায় তাহলে সে আমেরিকার দৃষ্টিতে 'জঙ্গি' ।
অতএব আমাদেরকে এখুনি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যে আমরা 'জঙ্গি' হিসেবে বাচব, না মুনাফিক হয়ে মরব।
—হানীন ইলদারম
বিষয়: বিবিধ
১২৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন