হালাকু খানের ভয়াবহ বার্তা
লিখেছেন লিখেছেন সবুজ মিনার ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০১:৪৩:২৬ দুপুর
"তুমি কোথায় লুকাবে? কোন রাস্তায় দিয়ে পালিয়ে যাবে? আমাদের ঘোড়াগুলো যেমন তেজী, আমাদের শরগুলোও তেমন তীক্ষ্ণ। আমাদের তরবারিগুলো বজ্রের মত আর আমাদের হৃদয় পর্বতের মত শক্ত। মরুবালুকার মত আমাদের সৈন্যসংখ্যাও গুণে শেষ করা যাবে না। না কোন দুর্গ আমাদের আটকাতে পারবে, না কোন সৈন্যদল পারবে আমাদের রুখতে। তোমার আল্লাহর কাছে তোমাদের ফরিয়াদ আমাদের বিরুদ্ধে কোন কাজেই আসবে না। কোন শোকের মাতম আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারবেনা, না অশ্রু গলাতে পারবে আমাদের মন। শুধু যারা প্রাণ ভিক্ষা চাইবে তারাই আমাদের হাত থেকে বাঁচতে পারবে।
যুদ্ধের দাবানল ছড়িয়ে পড়ার আগেই তোমার উত্তর পাঠিয়ে দিও। কোন প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে তার ফল হবে ভয়ঙ্করতম। আমরা তোমাদের মসজিদগুলো ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলব আর তোমাদের রবের দুর্বলতা সবার সমানে প্রকাশ করব তারপর তোমাদের শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সবাইকে হত্যা করব। মনে রেখ এই মুহুর্তে তোমরা আমদের একমাত্র শত্রু।”
মিশরের তরুণ মামলুক সুলতান সাইফউদ্দিন কুতুজ এর প্রতি মোঙ্গল হালাকু খানের বার্তার ভাষা ছিল এমনই।
উপরে উল্লেখ করা চিঠির উত্তরটা সুলতান কুতুজ দিয়েছিলেন মোঙ্গল দূতের শিরশ্ছেদ করে। এর ফলাফলটা সকলের কাছেই নিশ্চয়ই অনুমেয়।
যুদ্ধের এক পর্যায়ে মোঙ্গল সেনাপতি কিতবুকা মারা যান। তারপরই ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে মোঙ্গল সেনাবাহিনী। পালিয়ে যেতে থাকে দিগ্বিদিক বিক্ষিপ্ত মোঙ্গলরা। কুতুজের সৈন্যরা প্রায় ৬০০ কিলোমিটার তাড়িয়ে শেষ হানাদার সৈন্যটিকেও হত্যা করে। এভাবেই মামলুক সৈন্যদের কাছে পরাজয় ঘটে অহংকারী, বর্বর ও জালিম হালাকু বাহিনীর।
এই পরাজয়ের পরও মোঙ্গলরা যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল কিন্তু আর কখনই আগের মত সেই মনোবল ফিরে পায়নি তারা। শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নয় পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধগুলোর মধ্যে একটি হল আইন জালুতের যুদ্ধ কেননা এই যুদ্ধে সুলতান কুতুজ হেরে গেলে উত্তর আফ্রিকা, স্পেন ও ইউরোপ পরিণত হত বাগদাদ, সমরখন্দ ও বেইজিং এর মত বধ্যভুমিতে। আদৌ মানব সভ্যতার ঐ ক্ষত সেরে উঠত কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর কারও জানা নেই।
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১২২২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন