দু’দিন আগের ঘটনা। সময় সাড়ে ১২টা…….

লিখেছেন লিখেছেন সবুজ মিনার ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:২৫:২১ রাত

দু’দিন আগের ঘটনা। সময় সাড়ে ১২টা। উত্তরা, ৬ নং সেক্টর, রোড নাম্বার ১০। স্থানীয় একটি স্বনামধন্য স্কুলের প্রভাতী শাখার তিনটি মেয়ে স্কুল ছুটির পর বাসায় ফিরছে। তাদের দেখে একটি ছেলে রাস্তায় দাঁড়ালো, প্যান্টের চেইন খুললো, অতঃপর শিশি করা শুরু করে দিল। একটি মেয়ে তাকে(ছেলেকে) অতিক্রম করার পর বললো – ‘এমন অসভ্য মানুষও দুনিয়ায় আছে’!!! উল্লেখ্য, ছেলেটি যেখানে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করছিল, পাশেই তার বাসা।

[WrittenBy@ Fourkan Hamid]

কথাটি ছেলেটির কানে গেলো। প্রস্রাব সেখানেই পজড। সে মেয়েদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। একাই মেয়েদের ধরে টেনে-হিঁছড়ে বাসার নিচে গ্যারেজে নিয়ে গেলো। মাকে ডাকলো। তার মা আসলেন। অসভ্যের জননী বলে কথা। অসভ্যতার দিক থেকে মা ছেলের থেকে আরও ২৫০ গুন বেশি। আসার পর থেকেই অকথ্য ভাষায় মেয়েদেরকে গালাগাল শুরু করে দিল। এত বড় সাহস? তার আদরের ধন, নয়নের পুতুলী, জানোয়ার ছেলেকে, জানোয়ার না বলে অসভ্য বলল! শাস্তি পেতে হবে মেয়েদেরকে। রায় ঘোষনা হলো। চুল হারাতে হবে মেয়েদেরকে। কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দেওয়া হবে। নো আপিল! শাস্তি পেতেই হবে। শুধু কার্যকরের অপেক্ষা।

এদিকে মেয়েদের কান্নাকাটিতে লোকসমাগম শুরু। সবাই বুঝানোর চেষ্টা করলো জানোয়ারের জননীকে। দোষ আপনার ছেলের। আপনি মেয়েদেরকে ছেড়ে দেন। নাহ! তিনি কারও কথা শুনবেন না। উল্টা সবাইকে বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করলো। মান-সম্মানের ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছিল না।

সেই রোড দিয়েই যাচ্ছিল স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ী। এগিয়ে গেলেন। সব কিছু শুনলেন। মহিলাকে বুঝালেন। দোষ আপনার ছেলের। কিন্তু নাহ! তিনি নাছোড় বান্দা। তার ছেলে অসভ্য? এর একটা বিহিত তিনি করেই ছাড়বেন। উত্তরা থানার বড় বাবু ওসি সাহেবকে ফোন দেওয়া হলো। বড় বাবু আসলেন। একি? বড় বাবুকেও মহিলা গালাগালি করে ছাড়লো। তার এক কথা, সে মেয়েদেরকে কেশহীন করেই ছাড়বে। বড় বাবু কিছুটা পিছু হটলেন। ভাবলেন, মহিলার উপরে নিশ্চয়ই বড় কোন নেতা আছে। আবার কি থেকে কি বলে শেষে চাকুরিটাই না হারান বড় বাবু। বড় বাবু ব্যবসায়ীকে কিছু একটা বলে বেরিয়ে গেলেন।

ব্যাবসায়ী বাবুও কম না। এবার তিনি মহিলার সাথে মিল দিলেন। মহিলার সাথে সুর মিলিয়ে তিনি বললেন, এখনই কাঁচি এনে মেয়েদের রায় কার্যকর করা হোক। মিল দিয়ে মহিলাকে কোন একভাবে গেটের কাছে নিয়ে আসলেন। ধাক্কা দিয়ে বাহিরে ফেলে দিলেন। অনেক আগে থেকেই দর্শক হাতে গণধোলাইয়ের ক্ষুধা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুরু হয়ে গেল হরিলুট। ধুমাধুম ধুম ধুম! ছেলেটিকেও ধরে বাহিরে ফেলে দেয়া হলো। মাকে মেরে যারা হাত ব্যাথা করে ফেললেন, তারা এবার ছেলেটিকে অসভ্য থেকে সভ্য বানানোর চেষ্টা করলেন পা দিয়ে। কিছুক্ষণ রাম ধোলাইয়ের পর থানার বড় কর্তা এগিয়ে আসলেন। ধরে নিয়ে গেলেন সভ্যতা বিবর্জিত দিগম্বর মা-ছেলেকে। সময় তখন বিকাল সাড়ে তিনটা।

শিক্ষাঃ আল্লাহপাক পরম ক্ষমাশীল ও ধৈর্য্যবান। ক্ষমাকেই তিনি ভালবাসেন। তাইতো মহিলা ও তার ছেলেকে অপমান ও ধোলাই দেওয়ার আগে তিন ঘন্টা সময় দিয়েছেন। তাদেরকে দাওয়াত দিয়েছেন বহুবার। কিন্তু সীমা লংঘনকারীদের আল্লাহপাক পছন্দ করেন না। তাদের জন্য আছে অবমাননাকর শাস্তি দুনিয়া ও আখিরাতে। যারা আজ ক্ষমতায় থেকে মানুষ মারছে, তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্টতম অবমাননাকর শাস্তি। ক্ষমতাসীনদের অন্যায় যেমন বড়, তেমনি তাদেরকে দেয়া সুযোগও বড়। সময় শেষ হয়ে আসছে দ্রুত।

কপি-পেস্ট করবেন না। ভাষাগত ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য বিনিত অনুরোধ

বিষয়: বিবিধ

১৯৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File