ইসলাম বিদ্বেষী ‘ভিক্টোরিয়া’ ব্লগারের ইসলামের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের খন্ডন
লিখেছেন লিখেছেন সবুজ মিনার ০৩ জুন, ২০১৩, ১২:০০:১৫ রাত
[আজ সন্ধায় ভিক্টোরিয়া কর্তৃক লিখিত একটি ব্লগের জবাবে এই লেখাটি]
আপনি বুঝেও বুঝেন না, বা বুঝতে চেষ্টা করেন না। মুসলমানদের মাপকাঠি কুরআ'ন-হাদিস। এর বাইরে কেউ মনগড়া কিছু বললে বা করলে তার দায় ইসলামের নয়। এখনকার মুসলমানদের দিয়ে ইসলাম যাচাই করা আপনার বড় ধরনের মূর্খতা। খোঁজ নিয়ে দেখুন ইউরোপ-আমেরিকায় বা সারা পৃথিবীতে যারা মুসলমান হচ্ছে তারা জীবনী দেখেছে সাহাবীদের, এখনকার মুসলমানদের নয়। কারন সকল ধর্মের মানুষ তার ধর্মের পূর্ণ অনুসরন করে না। যারা করে তাদের সংখ্যা কম। নবিজীর হাদিস অনুসারে মুসলিমরা ৭৩ দলে ভাগ হবে, একটা দল হবে সঠিক অনুসারী, বাকিরা ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে খাবে। তাই আপনি সেই সঠিক দলের অনুসন্ধান করুন, যেহেতু আপনি ইসলামের সমালোচক। ৭২ টা ভ্রষ্ট দলের ভন্ডামিকে ইসলামের নিয়ম বলে চালানোটা অন্যায়। এটা আপনার মূর্খতা।
অভিযোগ-১। ইসলামী মৌলবাদীরা যেভাবে দামী দামী মসজিদে বোমা মারে, তাতে নবীর যুগের মতো খেজুরপাতা, খর্জুরপাতা দিয়ে মসজিদ বানানো উচিত। হায়াত-মৌত আল্লার হাতে। এতে বোমায় মানুষ মারা গেলেও মুসলমানদের সম্পদ রক্ষা হবে।
আপনি কুরআ'ন-হাদিসের কোথাও দেখাতে পারবেন না সাধারন মানুষকে হত্যা করা অনুমতি দিয়েছে ইসলাম। শুধু তাদেরকে হত্যার অনুমতি দিয়েছে যারা যুদ্ধ করবে আমাদের বিরুদ্ধে ধর্মের কারনে। যেসকল অমুসলিম আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবে না, তাদের কোনোরুপ আঘাত করতে নিষেধ করা হয়েছে আল-কুরআ'ন এ। আপনি অবশ্যই সেই আয়াত পড়েছেন। যেখানে অমুসলিম হত্যা করা নিষেধ সেখানে কি করে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় মুসলিম হত্যা জায়েয??? যারা মসজিদে বোমা মেরে মানুষ মারে এরা ভ্রষ্ট ৭২ দলের অনুসারী। এদের সাথে ইসলামের সম্পর্ক নেই। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, আদৌ কি কোন মুসলমান এই কাজ করে? নাকি আপনারাই মুসলিম বেষ ধারন করে মুসলিম নিধন করছেন? আগেই বলেছে মুসলমান এই কাজ করতে পারে না।
অভিযোগ-২। কাফের বিজ্ঞানীদের সব গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারই প্রথমে ইসলামে হারাম থাকে। পরে তা হালাল হয়ে যায়। বড়দের কাছে শুনেছিলাম মাইক আবিষ্কারের প্রথম দিকে ইসলাম তা হারাম বলে ঘোষণা দিয়েছিল। অথচ কিছুদিন পরই আযান দেয়ার জন্য আর ওয়াজ করার জন্য মাইক ইসলামের সবচেয়ে জরুরি নিয়ামত হয়ে পড়ে, হোক সে কাফেরদের আবিষ্কার। মা'র মুখে শুনেছি, মক্তবের হুজুর আর আরবী শিক্ষক টিভি দেখতে নিষেধ করতেন, টিভি দেখলে নাকি চোখের গুনাহ হয়। আর এখন ইসলামী অনুষ্ঠান ছাড়া দেশের কোনো টিভি চ্যনেলই চিন্তা করা যায় না। শুধু ইসলাম প্রচার করার জন্য অসংখ্য টিভি চ্যানেল রয়েছে পৃথিবীর প্রায় সব ইসলামিক দেশেই। দেশে প্রথম ইন্টারনেট আসার পর দেখতাম বাবা-মা তাদের সন্তানদের ইন্টারনেট ব্যবহারে ভয় পেতেন। ইন্টারনেট ব্যবহার করলে নাকি ছেলেমেয়েরা খারাপ হয়ে যেতে পারে। আর এখন ইন্টারনেটই হচ্ছে মোল্লাদের ইসলাম প্রচারের সবচেয়ে বড় মাধ্যম।
বিজ্ঞানের কথা বলেছেন। বিজ্ঞানের মূলভিত্তি হল গনিত। আর গনিত মানের বীজগনিত, যার আবিষ্কারক মুসলিম বিজ্ঞানীরা। ইসলামের প্রাথমিক যুগে পৃথিবীর সেরা সকল বিজ্ঞানী ছিল মুসলিম। মুসলিমদের আবিষ্কার পরে ক্ষমতার দাপটে নিজেদের পকেটে পুরেছে পশ্চিমারা, এটা কমন কথা।
মাইকের কথা বলেছেন। ০ ছাড়া বাইনারী নাম্বার সিস্টেম অচল। বাইনারী নাম্বার সিস্টেম ছাড়া কম্পিউটার অচল। কম্পিউটার অচল মানে সারা পৃথিবীর বর্তমান প্রযুক্তি অচল। এই শূন্যটাও মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের ফসল। মাইকের মধ্যদিয়ে ডাটার আদান-প্রদান করা এই ০ ছাড়া অসম্ভব। আপনি শুনেছেন। আপনি কোথাও কি দেখাতে পারবেন মাইকের ব্যবহার হারাম করেছিলেন মুসলিমরা। এই ধরনের মিথ্যাচার না ছড়ালেই পারেন। একটু সূক্ষ দৃষ্টি দিলে সহজেই বুঝা যায় আধুনিক বিজ্ঞান-প্রযুক্তির প্রসারে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদান সবার উপরে। প্রত্যেকটি আবিষ্কারে রয়েছে উনাদের ভূমিকা।
টিভি চ্যানেলের কথা বলেছেন। এখনও ইসলামের হক্কানি উলামায়ে কেরামের ঐক্যমত টিভি দেখা হারাম। সেটা হোক ইসলামি অনুষ্ঠান বা অনৈসলামিক অনুষ্ঠান। উদাহরন দেই। জাকির নায়েকের ইসলামিক লেকচার শুনেছেন এক ২০ বছরের বালিকা। এই লেকচার শুনে তার কোন সওয়াবতো হচ্ছেই না, বরং কবীরাহ গুনাহ হবে একজন বেগানা পুরুষকে দেখার কারনে। আবারও আপনাকে বলছি। ৭২টি ভ্রষ্ট দলের কর্মকান্ডকে ইসলামের কর্মকান্ড বলা আপনার অজ্ঞানতার পরিচায়ক।
ইন্টারনেট। এটি সবার জানা ইন্টারনেট যেমন অভিশাপ, তেমনি আবার আশীর্বাদ। এটি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইন্টারনেট ব্যবহার করে কত তরুন নষ্ট হয়ে গিয়েছে তার হিসাব মেলানো ভার। আর যেটির মাধ্যমে মানুষ পশুতে পরিনত হয় তা ইসলাম ব্যবহারে উৎসাহিত করে না। ইসলাম যেমন কারও বিরুদ্ধে বিনা কারনে অস্ত্র ধারনে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে, তেমনি আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র ধারনকে অত্যাবশ্যকও করে। কোন অমুসলিম যদি আমাকে আঘাত করতে আসে বল্লম দিয়ে, তার প্রতিরোধে বল্লম ধারনে আমাকে অনুমতি দেয় ইসলাম। ইসলামের শত্ররা যদি আসে পানি পথে, তাকে প্রতিহত করব আমরা পানি পথে। তারা যদি আসে আকাশপথে, আমরাও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব আকাশপথে। ইন্টারনেট ব্যবহারে ইসলাম নেতিবাচক হলেও, নাস্তিক-মূর্তাদরা যেহেতু এখন সাইবার হামলা চালাচ্ছে আমাদের উপর, তাই সেই একই কারনে আত্মরক্ষার জন্য ইসলামিক ব্লগার-হ্যাকাররা নাস্তিক মূর্তাদদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে, শুধুই ইসলামের কারনে, তাদের কোন পার্থিব উদ্দেশ্যের জন্য না। আমরা মুসলিম জাতীরা সত্যিই গর্বিত আমাদের কৌশলের কারনে। অমুসলিমদের অনেক আবিষ্কার রাতারাতি আমরা দখল করে সেটি দিয়েই তাদের লাথি মারি। এটিই আমাদের সকল ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে বড় সফলতা।
অভিযোগ-৩। মুসলমানদের মোনাজাত শুনলে মনে হয় যেন আল্লাহ কাকে কী করবে, কাকে রাখবে, কারে মারবে, কাকে ধ্বংস করবে আর কারে শান্তিতে রাখবো.................. সবকিছু মুসলমানদের ইচ্চায় হবে।
মুসলমানদের ইচ্ছায় সব যদি হত তাহলে মুসলমানরা মোনাজাতে এত করুন হয়ে কান্নাকাটি করত না। এটি আমাদের আবেগ। আল্লাহপাক যেহেতু সকল কিছুর ক্ষমতার মালিক, তাই উনার কাছে আমরা প্রান খুলে চাই। আমাদের তাওবা কবুল হলেই দোয়া কবুল হয়ে থাকে।
অভিযোগ-৪। বাংলাদেশের মুসলমানরা কয়দিন পর পর কোরান খতম দেয়। খতমের পর মানুষকে জিলাপি খাওয়ানো হয়। কিন্তু বাংলায় কোরান খতম দেয়া হয় না।
খতম দেওয়ার পর জিলাপী খাওয়ানো। আবারও বলছি ভ্রষ্ট ৭২ দলের কর্মকন্ডের দায় মুসলমানদের নয়। এমন রীতি ইসলামের সঠিক পথের লোকেরা করে না। আর আরবীতে হবে না বাংলায় হবে সেটা আপনি বলে দেওয়ার কে? সেটি আমাদের নির্ধারণ করা আছে।
অভিযোগ-৫।অনেক মুসলমানকেই ইদানিং সুস্বাদু মদ্য উপভোগ করতে দেখা যায়।
অনেক হিন্দুকেই দেখা যায় ধর্ষনে সেরা পারদর্শী। তাহলে এটা কি হিন্দু ধর্ম শিক্ষা দিয়ে থাকে? মদ হারাম। যারা এটা পান করে তারা ভ্রষ্ট ৭২ দলের লোক।
তাই আসুন, আমরা জ্ঞানী হই, জ্ঞানপাপী নই। আমরা মানুষ হই, হাদা-ভাদা না হই।
আমার কিছু লেখা। পড়ে ভাল লাগবে ইনশা-আল্লাহ।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ_ইসলামিক ব্লগার, ফেইসবুক ইউজার, পেইজ এডমিনসহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি_ভুয়া ছবি কিভাবে যাচাই করবেন???
টগবগে তরুন মুরগী শাহরিয়ার এবং বৃদ্ধ হেফাজতীরা_৫ তারিখে ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না হেফাজতকে
হযরত মুহাম্মদ (সা)’র পবিত্র রওজা মুবারক নিয়ে মাজারপূজারীদের ঘৃন্য মিথ্যাচার
ইমাম আবু হানিফা (র):নাস্তিকদের প্রশ্নের দাঁতভাঙ্গা জবাব
রাজপালের "রঙ্গীলা রাসূল" বই এবং শহীদ আলীমুদ্দীন (র)
ঋতুকালীন স্ত্রী সহবাস
মাননীয় মন্ত্রী মখা ইসলাম সম্পর্কে যা জানেন, তা কি জানেন আল্লাম শফী?
২৫০ টাকা দিয়ে হুজুর(?) কিনতে পাওয়া যায়
‘পরীবানু’ কাফের ব্লগারের মূর্খতা
বাংলার মুনাফিক_আসুন জানি_সবাইকে জানাই
শাহবাগীদের প্রথম শহীদ(?) রাজিব হায়দার_মুমিন নাকি কাফের
বিষয়: বিবিধ
৪৩০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন