মাতৃত্ব থেকেই তোমরা আমাদের "মা"
লিখেছেন লিখেছেন গেঁও বাংলাদেশী ৩০ নভেম্বর, ২০১৬, ১১:১৫:১৭ রাত
৭ম শ্রেণীতে প্রথম বীজগনিত শেখার কথা মনে পড়ে। দুইটি গরু ও দুইটি ছাগল যোগ করলে ৪ টি গরু ছাগল হয়না, দুইটি গরু ও দুইটি ছাগলই থাকে। কারন গরুর সাথে ছাগলের তুলনা চলেনা, গরুর সাথে গরু, ছাগলের সাথে ছাগল। ঠিক তেমনি, টু এক্স ও টু ওয়াই যোগ করলে 4XY হবেনা, 2X+2Y থাকবে। আবার গুনের ক্ষেত্রেও X কে Y এর সাথে গুন করলে বর্গ হবেনা, XY রয়ে যাবে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সাম্প্রতিক বক্তব্য পড়ে আবার সে কথাই মনে পড়লো। নারীর সাথে পুরুষের তুলনা হয়না, নারীর সাথে নারীরই তুলনা হয় এবং পুরুষের তুলনা হয় পুরুষের সাথেই । শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিক উভয় দিক থেকেই নারীর সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্য ভিন্ন। সুতরাং তাদের মৌলিক কর্মক্ষেত্রও ভিন্ন।
কিন্তু পুরুষ যা পারে নারীও তো সুযোগ দিলে তার সবই পারে, প্রমানিত ...। কথা সত্য, আর্কিটেক্ট কিন্তু রাজমিস্ত্রির কাজও করতে পারে। কিন্তু সে আর্কিটেক্ট এসি রুমে বসে ঠাণ্ডা মাথায় চা পান করে আর বাড়ির ডিজাইন করে। আর রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে রাজমিস্ত্রী দাঁড় করায় বিশাল ইমারত। কোম্পানী কখোনো আর্কিটেক্টকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে দেয়না। কারন তাতে ডিজাইনের কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সেই দুঃখে আর্কিটেক্ট কখোনো আফসোস করে বলেনা... "এত কষ্ট করে বাড়ির নকশা করি, লোকে দেখে শুধু মিস্ত্রিকে"।
সভ্যতার মৌলিক কেন্দ্র 'পরিবার' এর আর্কিটেক্ট হচ্ছেন নারী। তবে ইচ্ছে করলে তিনি বিমানও চালাতে পারেন, নৌকাও চালাতে পারেন, কোম্পানীর এমডি হতে পারেন, বাদামও বেচতে পারেন। কিন্তু তার শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি সেই দায়িত্ব নারীকে দেননি। কারণ তাতে তার মুল কাজ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাকে দিয়েছেন সভ্যতার আর্কিটেক্টের দায়িত্ব- মাতৃত্ব।
তথাকথিত নারীবাদিরা এই মাতৃত্বকে সবচেয়ে বেশি উপহাস আর অবহেলা করতে শেখায়- এমনকি তা ঘৃণা পর্যন্ত গড়ায়। কি আশ্চর্য.. আর্কিটেক্ট বাদ দিয়ে ইমারত নির্মাণ!! সময় ও সুযোগ পেলে মানুষ বাগান করে, মুরগি পালন করে, একজন নারীও সময় ও সুযোগ সাপেক্ষে সভ্যতার অন্যান্য সেক্টরে অবদান রাখবে... চিকিৎসা, শিক্ষা, শিল্প, বাণিজ্য, প্রযুক্তি.. আরো কত কি। তাই বলে মৌলিক কাজ বাদ দিয়ে নয়, মাতৃত্বকে অবহেলা করে নয়, উপহাস করে নয়, ঘৃণা করে নয়। ওভার টাইম করার জন্য মূল কাজ বাদ দিলে পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা, শাস্তি ছাড়া।
মাতৃত্ব অনেক কষ্টের.. হ্যা কষ্টের তো হবেই, কোন কাজটি কষ্ট ছাড়া? সভ্যতার সূত্রপাত হয় যে মাতৃত্ব দিয়ে, তা এত সহজ কি করে আশা করা যায়? কষ্টের বলেই তো মর্যাদার... যে মর্যাদার ধারে কাছে পিতৃত্বের স্থান নেই।
কিন্তু সমাজ তো নারীর মাতৃত্বের সে মর্যাদা দেয়না..
কথা সত্য, সমাজ একসময় শৌল বোয়ালের মর্যাদা দেয়নি, রাক্ষুসে মাছ বলেছিল, বিষ দিয়ে মেরে ফেলতে বলেছিল, সিলভার কার্ব গ্রাস কার্ব চাষ করতে বলেছিল। এখন আর বলেনা, মর্যাদা দেয়, স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে। সমাজ আজ একটা বলে কাল আরেকটা বলে। আমি আপনি সমাজের কথায় কান দিয়ে একটা মাত্র জীবনে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ঝুঁকি নেব কেন?
তথাকথিত নারীবাদীদের হাতে সমাজ ছেড়ে দিলে মর্যাদা পাওয়া যাবেনা। আকাশ ও পৃথিবীর যিনি স্রষ্টা, দেশ কাল লিঙ্গ বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের যিনি পক্ষপাতহীন সর্বজ্ঞ প্রভু, তাঁর প্রদত্ত জীবন বিধান অনুযায়ী সমাজকে সাজাতে পারলে মাতৃত্ব তার আপন মর্যাদায় অভিষ্ক্তি হবে- শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার স্থান।
স্রষ্টার নির্দেশনা প্রতিষ্ঠিত হলে সভ্যতার প্রতিটি পক্ষই তার প্রাপ্য মর্যাদায় শ্রেণীভুক্ত হবে।
ফেবু থেকে সংগৃহীত।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর শেয়ারিং।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন