খেলাফত নেতাদের কামড়াকামড়ি: অন্তরালে বিয়ে ও ক্ষমতা

লিখেছেন লিখেছেন গেঁও বাংলাদেশী ২২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:০১:১৬ সকাল



বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিবের পদ থেকে ইস্তেফা দিয়েছেন মাওলানা জাফরুল্লাহ খান। এর পরই তার পদত্যাগ নিয়ে দলটির ঢাকা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাওলানা ফিরোজ আশরাফি মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান। এতে দলটির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে খবর নিয়ে জানা গেছে, মাওলানা ফিরোজ আশরাফি ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে জাফরুল্লাহ খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন। যার কোনো ধরণের সত্যতা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির একাধিক নেতা।

খেলাফত আন্দোলনের একাধিক সিনিয়র নেতা শীর্ষ নিউজকে জানিয়েছেন, ফিরোজ আশরাফি মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের সাবেক ছাত্র। তিনি জাফরুল্লাহ খানের কন্যা আলেমা ও হাফেজা সাহেদাকে বিয়ের জন্য তার পরিবারকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সাহেদার চাইতে মাওলানা ফিরোজ আশরাফির একাডেমিক ও অন্যান্য যোগ্যতা কম হওয়ায় তার পরিবার এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। আর এতেই মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের উপর ক্ষিপ্ত হন মাওলানা আশরাফি। এ ক্ষোভ থেকেই জাফরুল্লাহ খানের বিরুদ্ধে তিনি অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খেলাফত আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ফখরুল ইসলাম শীর্ষ নিউজকে বলেন, পদত্যাগের জন্য জাফরুল্লাহ খানকে কেউ চাপ প্রয়োগ করেনি। তার বিরুদ্ধে আমরা কখনো কোনো অভিযোগ তুলিনি। পদত্যাগের পূর্বে কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেননি। ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকেই ফিরোজ আশরাফি মাওলানা জাফরুল্লাহ খানকে নিয়ে গণমাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ফিরোজ আশরাফির বিরুদ্ধে আমরা যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছি। তিনি গণমাধ্যমকে ভুল তথ্য দিয়ে দলে সংকট সৃষ্টি করছেন। কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ফিরোজ আশরাফির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান মুফতি ফখরুল ইসলাম।

Click this link



পরিবারতন্ত্রে ফিরছে খেলাফত আন্দোলন


ইসলাম পরিবারতন্ত্রকে সমর্থন না করলেও সেই পরিবারতন্ত্রের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে হাফেজ্জী হুজুরের হাতে গড়া দেশের অন্যতম পুরোনো ইসলামী দল বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।

হাফেজ্জী হুজুরের ইন্তেকালের পর দলটির আমিরে শরীয়তের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তারই ছেলে মাওলানা আহমাদুল্লাহ আশরাফ। তিনি এখন অসুস্থ। শুক্রবার রাজধানীর কামরাঙ্গিরচর নূরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসায় গিয়ে দেখা গেছে হুইল চেয়ার ছাড়া মাওলানা আশরাফ একা চলা-ফেরা করতে পারেন না। ঠিকভাবে কথাও বলতে পারেন না তিনি। এজন্য দলের ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দিয়েছেন তারই ছোট ভাই মাওলানা আতাউল্লাহকে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে তীব্র আকাঙ্খা পোষণ করে আসছেন আহমাদুল্লাহ আশরাফের দুই ছেলে মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ও মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ।

তাদেরই চাচা মাওলানা আতাউল্লাহকে দলের ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দেয়াটাকে তারা খুব ভালোভাবে নেন নি। পিতার আসনে আসীন হওয়ার আকাঙ্খা তাদের মধ্যে ছিল বলেও দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

এসব নিয়ে হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ও মুহিব্বুল্লাহর মধ্যে মাদরাসা ও দলের কর্তৃত্ব পেতে ইতিমধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তাদের এ দ্বন্দ্ব থেকেই মাদরাসায় অভ্যন্তরীণ সংকটও দেখা দিয়েছে। হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বর্তমানে খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম। অপরদিকে মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ দলের ও মাদরাসার গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

জানা গেছে, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজীর ধারণা ভবিষ্যতে দলের আমিরে শরীয়তের পদটা তিনি নাও পেতে পারেন। তাই তিনি দলটির মহাসচিবের পদ পেতে মরিয়া।

দলটির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ প্রতিবেদককে জানান, আহমাদুল্লাহ আশরাফের জামাতা মাওলানা আব্দুল্লাহ তার দুই শ্যালক হাবিবুল্লাহ মিয়াজী ও মুহিব্বুল্লাহর মধ্যে সৃষ্ট সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিলে হাবিবুল্লাহ মিয়াজীর পক্ষ থেকে দুইটি প্রস্তাব দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রথমত: মাওলানা জাফরুল্লাহ খান খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। দ্বিতীয়ত: তিনি আর এ পদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না। তাহলে বিরাজমান সংকটের নিরসন হয়ে যাবে। উপরে উল্লেখিত দুটি শর্ত বৃহস্পতিবার দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘মজলিসে আমেলা’র জরুরি বৈঠকে লিখিতভাবে উল্লেখ করা হয়। যার একটি কপি শীর্ষ নিউজের কাছে পৌঁছেছে।

লিখিত ওই দুইটি প্রস্তাবের কথা মাওলানা জাফরুল্লাহ খানকে জানানো হলে তিনি মাদরাসা ও দলের বৃহত্তর স্বার্থে মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

আর সে মোতাবেক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খেলাফত আন্দোলনের ওই জরুরি বৈঠকে তিনি তার পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পদত্যাগপত্রে হযরত মুহাম্মদ (সা.) দৌহিত্র হযরত হাসান (রা.) এর অনুকরণে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন জাফরুল্লাহ খান।

মাওলানা জাফরুল্লাহ খান দীর্ঘ ২৭ বছর খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। দলের আমিরে শরীয়তের দায়িত্ব হাফেজ্জী হুজুরের পরিবারের লোকদের মধ্যে থাকলেও মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন বাইরের লোক।

আগামী ২৯ নভেম্বর দলের কাউন্সিল হবে। সেখানে আহমাদুল্লাহ আশরাফের ছেলে হাবিবুল্লাহ মিয়াজীই দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পেতে পারেন বলে দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এরই মধ্যদিয়ে দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব একই পরিবারের মধ্যে থেকে যাচ্ছে।

এদিকে জাফরুল্লাহ খানের পদত্যাগ নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালানো হলেও বাস্তবে তা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি ফখরুল ইসলাম।

শীর্ষ নিউজকে মুফতি ফখরুল বলেন, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান দল ও মাদরাসার অভ্যন্তরীণ সংকট নিরসনের লক্ষ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে যে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন এজন্য আমরা তাকে মোবারকবাদ জানাই। তিনি ইসলামের সঠিক নীতি অনুসরণ করেই পদত্যাগ করেছেন।

পদত্যাগ বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান শীর্ষ নিউজকে বলেন, একটি সংকট নিরসনের জন্যই আমি পদত্যাগ করেছি। আমাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ¦ নেই। সামনে কাউন্সিল আছে সেখানে নতুন দায়িত্বশীল নির্বাচিত হবেন।

Click this link

বিষয়: বিবিধ

৯৭৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

286760
২২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩৮
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : এরকম অকার্যকর নামমাত্র খেলাফত দলের স্থান ইসলামে নেই। তারপর আবার ব্যাক্তিগত আক্রোশ। বাতিল।
২২ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫২
230300
গেঁও বাংলাদেশী লিখেছেন : তারা বিভ্রান্ত
286780
২২ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:১১
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : কোনো দলের ভিতরেই আর আদর্শ নাই। সবাই এখন ক্ষমতাকেন্দ্রীক ও নিজের স্বার্থকেন্দ্রীক হয়ে পড়ছে। যার ফলেই এসব ঘটনা অহরহ ঘটছে।
২২ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫২
230301
গেঁও বাংলাদেশী লিখেছেন : খাঁটি কতা
286811
২২ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:০৫
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : ইয়ে বড়ি আফসোস কা বাত হ্যা%
২২ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৪
230302
গেঁও বাংলাদেশী লিখেছেন : হুম!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File