মঙ্গলে প্রথম বাংলাদেশি বাসিন্দা হতে যাচ্ছেন লুলু ফেরদৌস!
লিখেছেন লিখেছেন গেঁও বাংলাদেশী ০৪ মে, ২০১৪, ১০:৩৩:০১ রাত
মঙ্গল গ্রহে প্রথমবারের মতো ৪ জন মানুষ স্থায়ী বসবাস করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের মধ্যে লুলু ফেরদৌস নামের বাংলাদেশি এক নারী বিরল এই কৃতিত্বতের অংশীদার হতে যাচ্ছেন। লুলু বর্তমানে নাসাতে সহযোগী গবেষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। একটি ডাচ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সাত মাস আগে ঘোষণা দেয়, ২০২৫ সালে মঙ্গল গ্রহে স্থায়ীভাবে মানুষের বসবাস শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা স্বেচ্ছায় মঙ্গলে বসতি গড়তে চান, তাদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি আবেদনপত্র আহ্বান করে। ফলে এই প্রকল্পে সারা বিশ্ব থেকে অনেক মানুষ আবেদন করলেও সর্বমোট ২৪ জন যেতে পারবেন মঙ্গল গ্রহে। সেই ২৪ জনের মাঝে ৪ জন মহাকাশচারীর নাম নির্ধারণ করা হয়েছে যাদের মাঝে বাংলাদেশের মেয়ে লুলু ফেরদৌস একজন। লুলু জানান, ২ লাখের বেশি আবেদনপত্র জমা পড়ে এ প্রোগ্রামে। পুরো প্রোগ্রামে মাত্র ৪ জন মহাকাশচারীকেই এ সুযোগ দেওয়া হবে। আমি ওই ৪ জনের একজন হতে যাচ্ছি।
৩৫ বছর বয়সী লুলু ফেরদৌস জন্ম গ্রহণ করেন ঢাকায়। লুলু ফেরদৌসের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নে। লুলু ঢাকায় ভিকারুননিসা স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। এরপর আমেরিকায় গিয়ে গবেষণার পাশাপাশি পড়াশোনাও করছেন। লুলুর বাবা ভূ-তত্ত্ব বিভাগের সাবেক পরিচালক ওবায়েদুর রহমান খান। মা রেজিয়া সুলতানা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (আইইউবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক। লুলুর একমাত্র ছোট ভাই ইমরান সিঙ্গাপুরে পড়াশুনা করছেন।
লুলু ৬ বছর বয়স থেকেই তার মহাকাশ নিয়ে আগ্রহ। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি বাংলাদেশে বিমান বাহিনীতে দেশের হয়ে প্রথম নারী বৈমানিকের খাতায় নাম লেখাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু সে সময় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তাকে পরিষ্কার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ইচ্ছে বা মেধা থাকলেও কোন নারী বৈমানিক নেয়ার সুযোগ নেই। পরবর্তীতে লুলু ফেরদৌস বাণিজ্যিক বিমানের পাইলট হওয়ার চেষ্টা চালান। তবে বাংলাদেশে তাও সে সময় সম্ভব ছিলো না। এক্ষেত্রেও তাকে হতাশ হতে হয়।
এর পরে লুলু ফেরদৌস এর অন্য রকম এক যুদ্ধ শুরু হয়, একে বলা যায় আকাশ জয়ের যুদ্ধ। নিজেকে একজন মহাকাশচারী কিংবা মহাকাশ নিয়েই গবেষণার অংশ হিসেবে গড়ে তুলতে লুলু ফেরদৌস ২০০৭ সালে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি এয়ার ট্রান্সপোর্টেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেন। পরে যোগ দেন নাসার বিশেষ গবেষক হিসেবে। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত তিনি নাসার গবেষণার সাথেই নিজেকে যুক্ত রাখেন।
লুলু ফেরদৌস বলেন, মার্স ওয়ান মিশন আমাকে দারুণ ভাবে আলোড়িত করেছে। আমি যখন প্রথম শুনি মার্স ওয়ান প্রকল্প নেয়া হয়েছে এবং সেখানে মানুষদের আবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে তখন আমি এই প্রকল্পের বিষয়ে খোঁজ খবর নিই। মার্স ওয়ান প্রকল্প কেবল একমুখী টিকেট দিচ্ছে এমনটা জানার পরেও লুলু ফেরদৌস বিচলিত নন। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি উপভোগ করছি, আমার পরিবার প্রথমে এটি শুনে অবাক হয় এবং আমাকে না করলেও, আমি জানি তারা এক সময় আমাকে নিয়ে গর্ব করতে পারবে।
জানা গেছে, ২ লাখের বেশি আবেদনপত্র জমা পড়ে মার্স ওয়ান প্রকল্পে। তার মাঝে এখন ছাটাই হয়ে সংক্ষিপ্ত তালিকা নেমে এসেছে ১,০৫৮ জনে। বাছাই করা সর্বশেষ ২৪ জন আগ্রহী নভোচারীদের দীর্ঘ সময় বিভিন্ন ভাবে মহকাশযান চালনা, সেখানে অবস্থান, এবং কিভাবে নিজেকে বিরূপ আবহাওয়ায় টিকেয়ে রেখে মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপন করা যাবে সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। মার্স ওয়ান প্রকল্প পৃথিবী থেকে ২৪ জন নভোচারী নিয়ে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ ৭ মাসের মহাকাশ যাত্রা শুরু করবে ২০২৪ সালে।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
।
।
।
।
।
।
আমিও যামু বাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন