তোমরা যারা নায়ক-নায়িকা হতে চাও
লিখেছেন লিখেছেন গেঁও বাংলাদেশী ২২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:০২:৪৭ রাত
কিছুদিন আগে আমার এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষক তার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। আমি ভাবলাম যাক বাবা বাঁচা গেল। পাত্রী খোঁজার ঝামেলা পোহাতে হবে না। কিন্তু মেয়ের সাথে কয়দিন মোবাইলে কথা বলে আমিতো পুরাই টাস্কিত!! কয়কি মেয়ে সে নাকি নায়িকা অইবো!!! ওই মেয়েরে বিয়া করা অইলো না। কারণ নিচের পরিসংখ্যাণ।
,
,
,
ইদানীং আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে তারকাদের বিয়ে ভাঙার ব্যাপারটি। পরকীয়া, নেশাদ্রব্যে আসক্তি, অবাধ্য জীবনযাপন, নেতিবাচক অ্যাডভেঞ্চার, অতি স্বাধীনচেতা মনোভাব। এগুলোই বিচ্ছেদের প্রধানতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন মিডিয়া বিশ্লেষকরা।
জয়া-ফয়সাল : নন্দিত অভিনেত্রী জয়া মডেল ফয়সালের সাথে প্রেম করে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ধানমন্ডিতে প্রেমের সোপান হিসেবে একটি ফাস্টফুডের দোকান খুলতেও দেখা যায়। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু হঠাৎ অজানা কিছু বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের ঝড় বইতে শুরু করে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। একপর্যায়ে স্বামী ফয়সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় ডিভোর্স লেটার পাঠান জয়া। এরপর সংসারজীবনে একা হয়ে যান। বর্তমানে জয়াকে ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে উভয় পর্দায়ই তার সমান জনপ্রিয়তা রয়েছে। জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে জয়াকে বেশ খোলামেলা পোশাকেও দেখা যাচ্ছে।
অপি-উজ্জ্বল : জনপ্রিয় মডেল অভিনেত্রী অপি করিম ২০০৭ সালে জাপান প্রবাসী কম্পিটার ইঞ্জিনিয়ার তাসির আহমেদকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর কিছু দিন ভালোই ছিলেন তারা। তারপর হঠাৎ তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন ওঠে। অপির মিডিয়ায় ব্যস্ততা এবং মিডিয়ার লোকদের সাথে ঘনিষ্ঠ মেলামেশাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না তাসির। অন্য দিকে তাসিরের বিরুদ্ধেও আগে আরো একটি বিয়ে করাসহ নানা অভিযোগ তোলেন অপি। এভাবে দু’জনের মধ্যে বাড়তে থাকে সন্দেহ-অবিশ্বাস। বছর না গড়াতেই তাদের সংসার ভেঙে যায়। এরপর অপি প্রেমে পড়েন নাট্য পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের। তারা বিয়েও করেন। কিন্তু সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। সম্প্রতি তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
তারিন-সোহেল : জনপ্রিয় মডেল অভিনেত্রী তারিন চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেনের ছেলে অভিনেতা পরিচালক সোহেল আরমানকে প্রেম করে বিয়ে করেন। বাবা-মায়ের অজান্তে পালিয়ে গিয়ে ২০০১ সালে তারিন বিয়ে করেন সোহেলকে। ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা করলেও পরে জানাজানি হয়ে যায়। এরপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভেঙে যায় সে সম্পর্ক। সম্প্রতি প্রবাসী এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে তারিন আমেরিকায় স্থায়ী হচ্ছেন এমন গুঞ্জন ওঠে। তবে তারিন সে গুঞ্জন নাকচ করে দেন। আবার ঢাকার এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর সাথে তারিনের রোমাঞ্চ চলছেÑ এমন খবরও শোনা যায়। এটিকেও তারিন গুজব বলে উড়িয়ে দেন।
তাজিন-এজাজ মুন্না : অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ ছোট পর্দার পরিচালক এজাজ মুন্নাকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের সংসারও টেকেনি বেশি দিন। এজাজ মুন্নার মাদকাসক্তি ও পরনারী আসক্তির অভিযোগ তোলায় তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। অবশেষে তাজিনের সাথে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে মুন্না লাক্স তারকা মমকে বিয়ে করেন। আর তাজিন বিয়ে করেন এক মিউজিশায়নকে। সম্প্রতি মমর সাথেও এজাজ মুন্নার বিচ্ছেদের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
শ্রাবন্তী-পার্থ বড়ুয়া : প্রেম করেই বিয়ে করেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী পার্থ বড়ুয়াকে। কিন্তু প্রেমের সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। পার্থর অভিযোগ ছিল- শ্রাবন্তী মাদকাসক্ত। শ্রাবন্তীর অভিযোগ পার্থ পরনারী আসক্ত। অবিশ্বাসের পথ ধরে সংসারে দেখা দেয় অশান্তি; এরপর বিচ্ছেদ। পার্থ এখন গান ও অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু হারিয়ে গেছেন শ্রাবন্তী।
হিল্লোল-তিন্নি : মিডিয়াপাড়ায় হিল্লোল-তিন্নির বিয়ে বেশ আলোচিত ছিল। এটাও ছিল ভালোবাসার বিয়ে। তিন্নি ধর্মান্তরিত হয়ে মা-বাবাকে ছেড়ে হিল্লোলের কাছে চলে আসেন। কিন্তু তিন্নির নেশা ও পরপুরুষের প্রতি আসক্তির অভিযোগ তোলেন হিল্লোল। একপর্যায়ে তাদের ঘরও ভেঙে যায়। এ নিয়ে দু’জনই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা-অভিযোগ তোলেন। এক সময়ের গ্লামার গার্ল তিন্নি এখন চিকিৎসকের পরামর্শে রেস্টে আছেন। অন্য দিকে হিল্লোল আরেক মডেল অভিনেত্রী নওশীনের সাথে নতুন করে সংসার পেতেছেন চলতি বছরের শুরুর দিকে।
বিজরী-ইমন : অভিনেত্রী বিজরী বরকতউল্লাহর সাথে সংসাররত অবস্থাতেই পরকীয়ায় জড়ান সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। জিনাত কবীর নামে এই মেয়েকে বিয়ে করার নাম করে তারা একসাথে বসবাস করতে থাকেন। এরপর বিজরীও আর দেরি করেননি। অনেক জল ঘোলা করে বিজরী বিয়ে করেন অভিনেতা ইন্তেখাব দিনারকে।
অপূর্ব-প্রভা : সাবেক প্রেমিক রাজিবের সাথে আচমকা সম্পর্কের ইতি টেনে অপূর্বকে ভালোবেসেই বিয়ে করেন প্রভা। তার পর প্রভা এবং রাজিবের অশ্লিল ভিডিও চিত্র প্রকাশ পেলে অপূর্ব ডিভোর্স দেন প্রভাবে। বিচ্ছেদের কিছু দিনের মধ্যেই অপূর্ব নতুন সংসার বাঁধেন নাজিয়া হাসান অদিতির সাথে। এর কিছু দিন পর গত ডিসেম্বরে মাহমুদ শান্ত নামে একজনকে বিয়ে করেন। দীর্ঘ দিন বিরতির পর প্রভা বর্তমানে মিডিয়ার সক্রিয় হয়েছেন।
মোনালিসা-ফাইয়াজ : খুব ঘটা করেই পারিবারিক আয়োজনে মডেল অভিনেত্রী মোনালিসা আমেরিকা প্রবাসী ফাইয়াজ শরীফকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরপরই তাদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। ফাইয়াজের বিরুদ্ধে মোনালিসার অভিযোগ- ফাইয়াজ লোভী প্রকৃতির। বিয়ের আগে নিজেকে বড় ব্যবসায়ী হিসেবে জাহির করলেও আসলে তার কিছুই নেই। পরের সম্পদের প্রতি খুবই লোভ তার। একপর্যায়ে ফাইয়াজের অত্যাচারে মোনালিসা তার এক বান্ধবীর বাসায় আশ্রয় নিয়ে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। সেখান থেকে বড় বোনের কাছে আমেরিকায়। আমেরিকায় গিয়ে ফাইয়াজকে ডিভোর্স দেন। এখন এক রকম গোপনীয়তার মধ্যেই আমেরিকায় দিন কাটাচ্ছেন।
শমী-রিঙ্গো : ১৯৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের চিত্রনির্মাতা রিঙ্গোকে বিয়ে করেন শমী কায়সার। বিয়ের স্থায়িত্ব ছিল দুই বছর। নানা কারণে তাদের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে সেই বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর শমী আবার বিয়ে করেন আরাফাত নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে।
মিমি-রাকায়েত : একটি নাট্যদলে কাজ করতে গিয়ে আফসানা মিমির পরিচয় হয় নির্মাতা-অভিনেতা গাজী রাকায়েতের সাথে। পরিচয়ের পর সখ্য। সময়ের ব্যবধানে সেই সখ্য গড়ায় প্রেমে। অতঃপর বিয়ে। কিন্তু বিয়েটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৯৬ সালে বিচ্ছেদ ঘটে আফসানা মিমি-গাজী রাকায়েতের। পরে আফসানা মিমির সাথে আযম রেজা নামে এক ব্যক্তির সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তানিয়া-দেবাশীষ : মডেল অভিনেত্রী তানিয়া হোসেন ও উপস্থাপক ও নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস বিয়ে করেন দীর্ঘ দিন প্রেম করে। তাদের প্রেমে অবাধ্য উত্তাপ থাকলেও ভালোবাসার দুর্বল ভিতের কারণে বিয়ে ভেঙে যায় এক বছরের মাথায়। তানিয়া মুসলমান বলে ছেলের বউ হিসেবে তাকে মেনে নিতে পারেননি দেবাশীষের মা। গত বছরের ২ অক্টোবর মায়ের পছন্দে দ্বিতীয় বিয়ে করেন দেবাশীষ। কনের নাম অরুণা সরকার। আর তানিয়া এখন একলা চলছেন।
জেনি-রেজা : বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজাকে বাবা-মায়ের অমতে ভালোবেসে বিয়ে করেন অভিনেত্রী জেনি। দীর্ঘ প্রেমের বিয়ে হলেও তাদের সংসার বেশি দিন টেকেনি। বিচ্ছেদের পর একলা চলছেন হালের ব্যস্ত এই মডেল অভিনেত্রী। তবে আবার প্রেমে পড়েছেন জেনি এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে ইদানীং।
রিয়া-ইভান : মডেল ও নৃত্যশিল্পী রিয়া দীর্ঘ দিন মডেল পল্লবের সাথে প্রেম করে মিনহাজ নামে এক বৈমানিককে বিয়ে করেন। কিছু দিন না যেতেই স্বামীকে তালাক দিয়ে চলতি বছরের মার্চে ইভান চৌধুরীকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের মাস আট না পেরোতেই রিয়ার সংসারে আবার ভাঙনের সুর বেজে উঠেছে।
রুমানা-আনজাম মাসুদ : লালবাগের হাঁসমার্কা কেশ তেলের বিজ্ঞাপন দিয়ে রুমানা সবার দৃষ্টি কাড়েন। এরপর বিজ্ঞাপন নির্মাতা-অভিনেতা আনজাম মাসুদকে প্রেম করে বিয়ে করেন। কিন্তু ভালোবাসার রঙ মেশানো সেই বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ এনে বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন। এরপর রুমানা ঘটা করে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন। রুমানার সাথে বর্তমান স্বামীরও বিচ্ছেদের পর্যায়ে রয়েছে। যদিও রুমানা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চান না।
পরিসখ্যাণ সূত্র
বিষয়: বিবিধ
১৪০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন