আল্লাহর দ্বীন কবুল করা বা না করার দিক থেকে মানুষের শ্রেণী বিন্যাস

লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহশাহেদ ১১ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:২০:০৪ রাত

আল্লাহ তাআলা সূরা বাকার শুরুতে তাঁর দ্বীন কবুল করা বা না করার দিক থেকে সমস্ত মানুষকে তিনভাবে বিভক্ত করেছেন। এক নং আয়াত থেকে পাঁচ নং আয়াত পর্যন্ত তিনি খাঁটি মুমিনদের পরিচয় ও বৈশিষ্ট সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তাঁরা হচ্ছেন ঐ সমস্ত মানুষ যারা আল্লাহ, পরকাল এবং গায়েবের অন্যান্য বিষয়ে ঈমান আনয়ন করেছে এবং নামায-যাকাত থেকে শুরু করে ইসলামের অন্যান্য বাহ্যিক আমলগুলো সম্পাদন করে। এর পরই মাত্র দু’টি আয়াতে অর্থাৎ ছয় ও সাত নং আয়াতে নিরেট কাফেরদের আলোচনা করেছেন। এরা হচ্ছে এমন লোক, যারা অন্তর দিয়ে আল্লাহর উপর বিশ্বাস করেনি এবং আল্লাহর দ্বীন ও নবী-রাসূলদের দ্বীনকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে। এতটুকু করেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি; বরং তারা পৃথিবী থেকে আল্লাহর দ্বীনকে মিটিয়ে দেয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে এবং করে যাচ্ছে। অতঃপর ৮ নং আয়াত থেকে শুরু করে ১৯ নং আয়াত পর্যন্ত মুনাফেকদের বৈশিষ্ট ও পরিচয় বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। তারা হচ্ছে এমন লোক, যারা বিশেষ স্বার্থে মুখে মুখে ইমান প্রকাশ করে ইসলামের কিছু আমল প্রকাশ্যে পালন করে; কিন্তু তাদের অন্তর কুফরীতে পরিপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাদের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য তাদের আসল পরিচয় তুলে ধরেছেন। কারণ খাঁটি কাফের থেকে এরা ইসলাম ও মুসলিমদের জন্য অধিক ক্ষতিকর। কাফের ও মুশরিকরা যেহেতু ইসলামের প্রকাশ্য শত্র“ এবং তারা যেহেতু মুসলিম সমাজ থেকে সাধারণতঃ দূরেই বাস করে, তাই তাদের ব্যাপারটি সুস্পষ্ট। পক্ষান্তরে মুনাফেকরা যেহেতু ইসলামী সমাজে মুসলিমদের সাথেই বসবাস করে, ইসলামের কথা প্রকাশ্যে ঘোষণাও করে, তাই তাদেরকে চেনা কষ্টকর, তাই আল্লাহ তাআলা তাদের বিষয়টি বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন।

এই বিষয়টি এখানে বিস্তারিত উল্লেখ করার কারণ এই যে, প্রকাশ্যে ইসলামের ঘোষণা প্রদানকারী এবং ইসলামের বাহ্যিক নিদর্শনাবলী পালনকারী কোন মুসলিমকে কোন একটি পাপ কাজ করার কারণেই আপনি যদি তাকে কাফের বলেন, তাহলে যার উপর আপনি কুফরীর হুকুম লাগাচ্ছেন, তার অবস্থা ঠিক ঐ সমস্ত লোকদের মতই হতে হবে, যাদের আলোচনা করা হয়েছে সূরা বাকারার ৮ নং আয়াত থেকে ১৯ নং আয়াতের মধ্যে। কারণ আপনি ভাল করেই জানেন যে, প্রথম ও দ্বিতীয় প্রকার লোকদের উপর আপনি কুফরীর হুকুম লাগাচ্ছেন না। আপনি কেবল কবীরা গুনাহ করার কারণে কিছু মুলিমকে তৃতীয় প্রকার লোকদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে চাচ্ছেন। সুতরাং আপনাকে ভাল করে ভাবতে হবে, যে মুসলিমকে তৃতীয় প্রকার মানুষের মধ্যে শামিল করতে চাচ্ছেন, তার মধ্যে ঐ সমস্ত লোকের বৈশিষ্ট পূর্ণরূপে আছে কি না- যার আলোচনা করেছেন আল্লাহ তাআলা ৮ নং থেকে ১৯ নং আয়াতে। অর্থাৎ আপনি যদি মনে করেন, কোন মুসলিম আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এবং তার চেলাদের ন্যায় অন্তরে কুফরী গোপন করে মুখে ইসলাম প্রকাশ করছে এবং সে আসলেই ইসলামের দুশমন, তাহলে আপনার হুকুম তার উপর প্রযোজ্য হতে পারে। অন্যথায় একজন মুসলিমকে পাপের কারণে কাফের বললে আপনি মারাত্মক অপরাধী হবেন। সুতরাং বিজ্ঞ আলেম এবং সমাজে বসবাসকারী মানুষের অবস্থা সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও বিচক্ষণ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো জন্য কোন মুসলিমের উপর কুফরীর হুকুম লাগানো অনুচিত। বিশেষ করে যখন জানা গেল যে, পাপ কাজ করলেই কোন মুসলিম ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়না। (আল্লাহই ভাল জানেন)

সংগ্রহ ও প্রস্তুতেঃ আব্দুল্লাহ শাহেদ আলমাদানী



অনুবাদক, দাঈ ও গবেষক, বাংলা বিভাগ, জুবাইল ইসলামিক সেন্টার, সৌদি আরব

শেয়ার করুন।

বিষয়: বিবিধ

১২৬৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

206243
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:২৯
ভিশু লিখেছেন : খুব ভালো শেয়ার...Happy Good Luck
১৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
156392
আব্দুল্লাহশাহেদ লিখেছেন : Praying
১৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
156393
আব্দুল্লাহশাহেদ লিখেছেন : Praying

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File