একটি হাদীছ ও তার ব্যাখ্যা
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহশাহেদ ২৫ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:২৭:০৬ রাত
عن أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِإِنَّ اللَّهَ قَالَ: مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَد آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ، وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِي بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ، وَمَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إِلَيَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ، فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُ بِهِ، وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُ بِهِ، وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا، وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِي بِهَا، وَإِنْ سَأَلَنِي لأُعْطِيَنَّهُ، وَلَئِنِ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيذَنَّهُ، وَمَا تَرَدَّدْتُ عَنْ شَيْءٍ أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِي عَنْ نَفْسِ الْمُؤْمِنِ، يَكْرَهُ الْمَوْتَ، وَأَنَا أَكْرَهُ مَسَاءَتَهُ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ্ তাআলা বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার কোন অলীর সাথে শত্র“তা পোষণ করবে, আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো। আমার বান্দা যে সব ইবাদতের মাধ্যমে আমার নৈকট্য হাসিল করে থাকে, তার মধ্যে ঐ ইবাতের চেয়ে আমার কাছে আর অধিক প্রিয় আর কোন ইবাদত নেই, যা আমি তার উপর ফরজ করেছি। বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে সর্বদা আমার এতটুকু নৈকট্য অর্জন করতে থাকে, যার কারণে আমি তাকে ভালবাসতে শুরু করি। আমি যখন তাকে ভালবাসতে থাকি তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে শুনে, আমি তার চোখ হয়ে যাই যার মাধ্যমে সে দেখে, আমি তার হাত হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে স্পর্শ করে এবং আমি তার পা হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে চলাফেরা করে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, আমি তাকে দিয়ে দেই। সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে আমি তাকে আশ্রয় প্রদান করি। আমি মুমিন ব্যক্তির জান বের করতে যতটা দ্বিধা-সংকোচ করি, অন্য কোন কাজ করতে গিয়ে ততটা দ্বিধা-সংকোচ করিনা। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তাকে (দীর্ঘ হায়াত দিয়ে অতি বৃদ্ধ করে) কষ্ট দেয়াকে অপছন্দ করি।
টিকাঃ যদি প্রশ্ন করা হয় আল্লাহ্ তার প্রিয় বান্দার কান, চোখ ইত্যাদি হওয়ার প্রকৃত তাৎপর্য কি? উত্তর হচ্ছে বান্দা যখন আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য তাঁর ইবাদতে মগ্ন হয়ে যায় এবং ইবাদত করতে করতে তার ভালবাসার পাত্রে পরিণত হয়, তখন তার শরীরের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীন সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শরীয়তের অনুগামী হয়ে যায়। তখন কান দিয়ে শুধু আল্লাহর আনুগত্যের কথাই শুনে এবং তা দিয়ে কোন হারাম নিষিদ্ধ আওয়াজ শুনার চিন্তাও করে না। চোখ দিয়ে শুধু আল্লাহর পছন্দনীয় জিনিষই দেখে। হাত দিয়ে শুধু ভাল জিনিষই স্পর্শ করে এবং পা দিয়ে শুধু আনুগত্যের পথেই চলে। এক কথায় আল্লাহ্ তাঁর প্রিয় বান্দার সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সন্তুষ্টজনক কাজ করার তাওফীক দিয়ে থাকেন।
যারা এ হাদীছ থেকে স্রষ্টা সৃষ্টিতে বিলীন হওয়ার কথা সাব্যস্ত করতে চান তারা অপব্যাখ্যার পাশাপাশি স্রষ্টার অস্তিত্বকে গুড়েবালি করে ফেলেন। যার ফলে তারা নিজেরাই স্রষ্টাকে খুঁজে পান না; বরং এক পর্যায়ে সৃষ্টিকেই পুঁজা শুরু করেন, যা গুরুবাদের নামান্তর। তাদের ধারণা আত্মা + পরমাত্মার মিশ্রণে সব একাকার হয়ে গেছে। তাই তো তারা বলে বেড়ায় “আল্লার নাইরে ছায়া, কায়া স্বরূপ ধইরাছে মায়া, মানুষ হইয়া খোদা খুঁজ এ মন্ত্রনা কে শিখাইয়াছে? নাউযুবিল্লাহ
(বুখারী, ২০৬৩)
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন