জার্মানরা কেন ইহুদিদের ঘৃণা করে? — শেষ পর্ব ==============================

লিখেছেন লিখেছেন আলোর পথে আলোকিত ০২ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৫৮:১৪ রাত



১৯১৭ সালে রাশিয়ার মত জার্মানিতেও কমিউনিস্টরা দেশটির শাসনব্যবস্থা দখল করে নেয়। তবে তা কিছু দিনের জন্য মাত্র। জার্মানির কাইজার [Kaiser] হল্যান্ডে পালিয়ে যায় এই ভয়ে যে রাশিয়ার জারের [Czar] মত কমিউনিস্টরা তাকে ও তার পরিবারকেও হত্যা করবে! কিন্তু কিছু দিন পরে জার্মানরা কমিউনিস্টদের কাছে থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়।

১৯২০-১৯২৩ সালে জার্মানির অর্থনীতি একেবারে ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছিল। দেশে চলছিল স্মরণকালের অন্যতম সেরা উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। আজকে একটি পাউরুটির দাম ১০ মার্ক [তৎকালীন জার্মানির মুদ্রা] হলে পরের দিন তা ৫০০ বা ১০০০ মার্ক!! সরকারকে প্রতি ৩দিন বা প্রতি সপ্তাহ অন্তর অন্তর নতুন নোট ছাপাতে হচ্ছিল! তখন নোটগুলো হাজারে নয় মিলিয়ন মার্কের নোট ছাপাতে হচ্ছিল!! আপনারা যদি এরিক মারিয়া রেমার্কের “The Black Obelisk” উপন্যাসটি পড়েন তবে দেখবেন তখন জার্মানির অর্থনীতির অবস্থা কি রকম ছিল। লোকজনের দূরবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকেছিল। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাড়িয়েছিল “ভার্সাই-এর চুক্তি” অনুযায়ী ইউরোপের অন্য দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণের বিশাল অর্থের যোগান দেয়া! এসময় ইহুদিরা তাদের অর্থসম্পদের মাধ্যমে জার্মানির বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদগুলো সহজেই কিনে নিতে লাগলো!!

এসবের মাঝে আবির্ভাব হল এডল্‌ফ হিটলারের। সে জার্মানির সকল অশান্তির মূল কারণ হিসেবে দোষারোপ করতে লাগলো ইহুদিদের। জার্মানির বৃটেনের কাছে পরাজয়ের কারণ হিসেবে সে দোষ দিতে লাগলো ইহুদিদের, যদিও তখন জার্মানির জনগন জানে যে ইহুদিরা তাদের সাথে কিরূপ প্রতারণা করেছে, কিন্তু তারপরও তারা ইহুদিদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করিনি। তারা তাদের কাছে থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছিল।

১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলার ও প্রসিডেন্ট পদ নিয়ে নেয়। পুরো জার্মানির ক্ষমতা এখন হিটলার ও তার নাৎসি পার্টির হাতে। সে ইহুদিদের জার্মানির বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ পোস্ট থেকে অপসরণ করে [শারীরিকভাবে কোন আক্রমণ করেনি]। ইহুদিরা জার্মানির মোট জনসংখ্যার ১% এরও কম ছিল অথচ জার্মানির প্রেস/সংবাদপত্র, ব্যাবসা ও সরকারি সকল গুরত্বপূর্ণ স্থান তাদের দখলে ছিল। হিটলার এসে তাদের আধিপত্য কমিয়ে দেয়। এইটা যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের ইহুদিরা সহ্য করতে পারেনি। তারা ১৯৩৩ সালে নেদারল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামে একটা কনফারেন্স ডাকে। সেটার প্রতিনিধিত্ব করেন স্যামুয়েল আন্টারমায়ার [Samuel Untermeyer]। ঐ কনফারেন্সে ইহুদিরা সর্বসম্মতভাবে জার্মানিকে প্রস্তাব দেয় যে জার্মানি যেন হিটলারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় না হলে তার পরিণতি বহন করতে হবে!! জার্মানি প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখান করে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের আন্টারমায়ার WABC [WABC পরে American Broadcasting Company—এর অধীনে যায়, যার অধীনে (ABC) বর্তমানে ৬৫০ টিরও বেশি টেলিভিশন চ্যানেল আছে!!] রেডিওর মাধ্যমে ঘোষণা দেয় যে আজ থেকে সারা বিশ্বের ইহুদিরা জার্মানির বিরুদ্ধে “Holy War” ঘোষণা করলো!! তারা সারা পৃথিবীতে জার্মানির পণ্য বর্জন করবে। জার্মানিকে কোন কিছু রপ্তানি করতে দেবে না!

জার্মানির আয়ের দুই তৃতীয়াংশই আসতো রপ্তানি থেকে, তারা তাদের খাবার [বেশিরভাগ] আমদানি করতো। এখন যদি তারা রপ্তানি না করতে পারে তবে তারা অন্যদেশ থেকে খাবার আমদানি করতে পারবে না! কিছু দিনের মধ্যে ভয়াবহ অবস্থা হল! ইউরোপ [জার্মানি, অস্ট্রিয়া বাদে] ও যুক্তরাষ্ট্রে তখন এরকম দোকান পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে গেল যেখানকার কোন পণ্যে “Made in Germany” লেখা আছে! কিন্তু এতকিছুর পরও জার্মানিতে অবস্থিত ইহুদিদের তারা আক্রমণ করেনি!

লন্ডন ডেইলি এক্সপ্রেসে এই খবরটি হেডলাইন হয়েছিল। আপনি এই লিংকে গেলেই সেটা দেখতে পাবেন।

http://www.theapricity.com/forum/showthread.php?17720-Judea-declared-war-on-Germany-already-in-1933

জার্মানরা ভাবতে লাগলো, যে ইহুদিদের তারা এত সাহায্য করেছে তারা কিনা তাদের সাথে এমন আচরণ করতে লাগলো!! কেন? কেন?

বিষয়: বিবিধ

২৩২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File