ইসরাইল বিরোধী ইহুদি - ইসরাইলের জন্য যারা বিব্রত ও লজ্জিত =====================================
লিখেছেন লিখেছেন আলোর পথে আলোকিত ৩০ অক্টোবর, ২০১৩, ১০:৫২:২৬ রাত
ইহুদিদের মধ্যে অনেক ইহুদি আছে যারা বর্তমান জায়োনিস্ট রাষ্ট্র ইসরাইলের পুরোপুরি বিপক্ষে। তারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় জায়োনিস্ট রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরোধিতা করে বেড়ায় এবং এর জন্য স্বজাতির কাছে অনেক অপমান অপদস্থ ও হুমকির সম্মুখীনও হয়েছে এবং হচ্ছে। তারা তাদের তোরাহ বা তাওরাতের অনুসারী। তাদের ধর্মীয়গ্রন্থ মতে তারা কোন রাষ্ট্র নিজেরা গঠন করতে পারবে না। আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা তাদের কোন রাষ্ট্র গঠন করতে নিষেধ করেছেন। যদি তারা এমন কোন জায়গায় বসবাস করে যেখানে আর কোন লোকজন বসবাস করে না তারপরও তাদের কিতাব অনুযায়ী তারা সেখানে রাষ্ট্র গঠন করতে পারবে না।
জায়োনিস্ট আন্দোলন শুরু করেছিল নাস্তিক ও সেক্যুলার ইহুদিরা। তারা ফিলিস্তিনে তাদের একটা বাসস্থান চাচ্ছিল। তারা এ জন্য একটা স্লোগান তৈরি করেছিল, “A land for the people, the land without the people”, যেটা ছিল পুরোপুরি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন আর ইহুদি ধর্মে সেটার কোন স্থান নেই! তারা বিশ্ববাসীকে বোঝাতে চেয়েছিল যে ফিলিস্তিনে কোন লোকজন থাকে না সুতরাং ঐস্থানে তাদের জন্য একটা অবাসস্থান, তাদের জন্য একটা ভূমি তাদের চাই। কিন্তু সেটা সত্যের ধারে কাছেও ছিল না, কারণ ফিলিস্তিনে তখন আরব মুসলিম, খৃস্টান ও স্বল্প সংখ্যক ইহুদি একত্রে বসবাস করতো যাদের বিরাট অংশ ছিল আরব মুসলিম!
এই ধার্মিক ইহুদিগুলো তখন এই নাস্তিক ও সেক্যুলার ইহুদিদের প্রস্তাবের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করেছিল। তারা অস্ট্রিয়ার সাংবাদিক ও আধুনিক জায়োনিজমের প্রতিষ্ঠাতা Theodor Herzl-এর Der Judenstaat [ইহুদি রাষ্ট্র]নামক পুস্তকের পুরোপুরি বিরোধিতা করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, রাজনৈতিক ক্ষমতা তাদের হাতে না থাকায় সেক্যুলার জায়োনিস্টরা ঠিকই ১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর ব্রিটেনকে দিয়ে “Balfour Declaration”-এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে তাদের অবাসস্থল হিসেবে ‘বৈধতা’ নিয়ে নেয়।
ধার্মিক ইহুদিরা আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালাকে তাদের রক্ষাকর্তা মনে করে কিন্তু সেক্যুলার জায়োনিস্টরা মনে করে যে তারাই ইহুদিদের রক্ষাকর্তা। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র, মিসাইল, ট্যাংক, রাসায়নিক অস্ত্র, জীবানু অস্ত্র, নিউক্লিয়ার অস্ত্র, সাইবার অস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে!! কিন্তু এত কিছুর পরও ইসরাইল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে, এর জন্য দায়ী মুসলিমরা নয় বরং ইসরাইলের বিদেশনীতি। ধার্মিক ইহুদিরা ইসরাইল রাষ্ট্রের পুরোপুরি বিরোধী, তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন চায়, তারা মনে করে যে জায়োনিস্ট ইসরাইল তাদেরকে এবং তাদের ধর্মকে হুমকির মুখে ফেলেছে। তারা ইহুদি ধর্মকে দাবার ঘুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং করছে, যার কারণে মুসলিমদের কাছে ইহুদিরা ঘৃণিত হচ্ছে। ইসরাইল সৃষ্টির আগে আরব-মুসলিম ও ইহুদিদের মধ্যেকার সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের কথাও তারা স্মরণ করে। তারা বলে যে, ১৯৪৮ এর আগে আরব-মুসলিম ও ইহুদিরা ফিলিস্তিনে পাশাপাশি বসবাস করতো এবং তাদের মধ্যে এতটাই সৌহার্দ ছিল যে তারা একে অপরের বাচ্চদের আদরযত্ন ও লালন-পালন করতো! কিন্তু জায়োনিস্ট ইসরাইল প্রতিষ্ঠার পর সেই চিত্র পুরোপুরিই বদলে গেছে। তারা মনে করে যে আরব-ইহুদিদের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের মূল কারণ হল জায়োনিস্ট ইসরাইল। তাই যদি এই ইসরাইল রাষ্ট্রকে পুরোপুরি ভেঙ্গে ফেলা যায় এবং আগের ফিলিস্তিনে ফিরে যাওয়া যায় তবেই কেবল এ সমস্যার সমাধান হবে নতুবা নয়। তারা ইসরাইল চায়না বরং তারা ১৯৪৮ এর পূর্বকার আরব-ইহুদিদের মধ্যে যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক ছিল সেটা ফিরে পেতে চায়। আর সেই কারণেই তারা ফিলিস্তিন, লেবাননকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে আর অপরদিকে ইসরাইল রাষ্ট্রের বিরোধিতা করে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ও ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করে যাচ্ছে। এর জন্য অবশ্য তাদেরকে মূল্যও দিতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে FBI [Federal Bureau of Investigation] ও যুক্তরাজ্যের MI-5 [Military Intelligence-5] ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা তাদেরকে নজরদারি করছে। তারা কোথায় কি করছে, কোথায় যাচ্ছে, তারা কি করে সবকিছুর খবরই তারা রাখছে! প্রধান সংবাদ মাধ্যমগুলো তাদের এই প্রতিবাদের খবর প্রকাশ করছে না কারণ সেগুলো জায়োনিস্টদের দখলে আছে। তবে বিকল্প মিডিয়া যেমন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে তারা তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তারা গাজাতে ২০০৯ সালে তুরস্কের “Freedom Flotila” উপর ইসরাইলের অমানবিক হামলার পর ফিলিস্তিনের গাজাতে যায় এবং গাজার প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়ে [হামাস নেতা] তাদেরকে সাদরে গ্রহণ করে এবং জানান যে ইহুদিদের প্রতি তাদের কোন আক্রোশ নেই বরং জায়োনিজম ও জায়োনিস্ট ইসরাইলের প্রতি তাদের যত আক্রোশ ও অভিযোগ। তারা ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের সাথে সুদূর যুক্তরাষ্ট ও কানাডা থেকে সাক্ষাৎ করতে যায় ও তাকে বিশ্বশান্তির নেতা হিসেবে উল্লেখ করে এবং তাকে তারা [ইহুদি] তাদের পক্ষ থেকে একটি ট্রফি উপহার দেয় এবং তার সাথে কোলাকুলি ও মত বিনিময় করে। আর এই কাজের জন্য জায়োনিস্ট মিডিয়াতে ও স্বগোত্রের কাছে তারা প্রচন্ড সমালোচিত হয়।
আপনারা Rabbi Yisroel David Weiss নামে গুগোল করলেই পাবেন। তিনি ইহুদিদের ধার্মিক নেতা। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইর্য়কে থাকেন। ইনি সবসময় ইসরাইলের বিরোধিতা ও ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন করে যাচ্ছেন।
ইহুদিদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন:
https://www.facebook.com/pages/%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B2-Antichrist-%E0%A6%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%A6%E0%A6%BF-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%E0%A6%87%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A6%A8/616065658409674
বিষয়: আন্তর্জাতিক
২৫২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন