:: জায়োনিস্টদের আরব রাষ্ট্রগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্র :: ======================================
লিখেছেন লিখেছেন আলোর পথে আলোকিত ২৯ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:১০:৪৭ রাত
সাইক্স [Sykes] ছিল একজন ইংলিশ রাজনীতিবিদ আর পিকো [Picot] ছিল ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী। তারা আমি যে ভবনে ২৬ বছর ধরে আছি সেই ভবনে তারা বসেছিল ম্যাপ, পেন্সিল, স্কেল নিয়ে এবং তারা উদ্ভাবন করেছিল যেটা আমরা এখন আরব বিশ্ব বলে জানি। তার সম্পূর্ণভাবে কৃত্রিম কয়েকটি দেশে আরবকে বিভক্ত করেছিল। এমনকি তারা যে দেশগুলো তৈরি করেছিল সেই রাজাকে হবে সেটাও বাছায় করেছিল। নতুন ডকুমেন্ট অনুযায়ী, সাইক্স এবং পিকো ধারণা করেছিল তাদের প্রজেক্টটি সর্বোচ্চ ২০-৩০ বছর কার্যকর থাকবে। আপনি যদি তাদের বলতেন যে আরবরা ১০০ বছর পরেও তাদের পতাকা, সীমান্ত, রাজত্ব নিয়ে একে অন্যের সাথে মারামারি করবে যেটা একজন ইংরেজ ও ফরাসি লোক কৃত্রিমভাবে তৈরি করে দিয়েছিল তাহলে [একথা শুনে] তারা হাসতো। তারা ভেবেছিল আরবরা একত্রিত হয়ে এক জাতি হওয়ার যে কামনা বাসনা সেটা একসময় অদমনীয় হবে। তারা (সাইক্স ও পিকো) শুধু কিছু সময়ের জন্য একটু বিরতি চাচ্ছিল। যাতে করে তারা এই সময়ের মধ্যে আরব থেকে সম্পদ ও তেল বাগিয়ে নিতে পারে! কিন্তু সাইক্স ও পিকোর বিগত ১০০ বছর বেশিরভাগ আরবের জন্যই ছিল পুরোপুরি দুঃখ-দূর্দশার। আন্তর্জাতিক ঘটনায় কোন প্রভাব তাদের ছিল না, নিয়মিতভাবে বিদেশি শক্তি দ্বারা দখল হতো [পরোক্ষ দখল যখন কাজে দিত না]। সবচেয়ে খারাপ ও দূর্ণীতিগ্রস্থ শাসন ব্যাবস্থার উদয় হয়েছিল এবং এটা সমর্থন করেছিল যারা [যে দেশ] সাইক্স ও পিকোকে প্রতিস্থাপন করেছিল, সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র। আসলেই তারা [যুক্তরাষ্ট্র] আরবকে ভেঙে ফেলেছিল। তারা শুধুমাত্র তেল, গ্যাস ও মূল্য যা তারা নির্ধারণ করেছিল তাই-ই নেয়নি বরঞ্চ তারা আরব নেতাদের জোর করেছিল যেন তারা তাদের তেল বিক্রি করে যে পেট্রোডলার পায় সেটা যে তাদের দেশে বিনিয়োগ করে। পশ্চিমাদেশের অর্থনীতিতে , তাদের অস্ত্র নির্মান প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সেটা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। তারা রাজনৈতিক ইসলামকে ভয় করছে। তারা মনে করেছিল যে মুসলিম ব্রাদারহুডের মত সংস্থার বৈপ্লবিক ক্ষমতা আছে, তারা সম্ভবত আরবের রাজা-বাদশাদের ক্ষমতার মসনদ থেকে নামিয়ে দিতে পারে এবং দেশের জন্য ভাল কিছু করতে পারে। তাই তারা এখন নতুন পথে হাটছে, যেটাকে আমি সাইক্স-পিকো ২ বলি।
সাইক্স-পিকো ২ এতই খারাপ যে একদিন আসবে যখন আমরা পিছনে ফিরে তাকাবো আর বলবো সাইক্স-পিকো-১ ভালই ছিল। আমরা সাইক্স-পিকো-১ এ ফিরে যেতে চাইব যখন সেখানে ১২৩ টি বা ৫২৩ টি আরব দেশের পরিবর্তে ২৩টি আরব দেশ ছিল। এগুলো কোন দেশ হবে না এগুলো হবে আমিরাত বা শহর কেন্দ্রিক রাষ্ট্র। অর্থাৎ একটা দেশ হবে একটা শহরের মত ছোট, যেটা নির্ধারিত হবে ধর্ম, বর্ণ, মাজহাব নিয়ে। এরা সকলেই অস্ত্র হাতে থাকবে। যারা তাদেরকে ব্যাবহার করছে তাদের বিপক্ষে না লড়াই করে তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করবে!! মনে করবেন না যে এটা কল্পনাপ্রসূত। কেউ কেউ আমাকে বলে, কিভাবে তারা আরবদের এভাবে বিভক্ত করবে যেখান লক্ষ লক্ষ লোকজনকে গণহারে একস্থান থেকে অন্য স্থানে সরাতে হবে? মনে করবেন না যে এটা তাদের ক্ষমতার বাইরে। ভারত উপমহাদেশ বিভক্তের সময় যে লক্ষ লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল, আহত হয়েছিল; কারো কারো জীবন সারা জীবনের জন্য বিকৃত হয়ে গিয়েছিল, তাদের পরিণতির কথা ভাবুন, পড়ুন তাদের সম্পর্কে। যার ফলে সৃষ্টি হয় ভারত ও পাকিস্তান ও পরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। এবং এই বিভক্তির জন্য যে বিশাল পরিমান লোকজন এই ঘটনাতে মারা যায়। প্রকৃতপক্ষে, আরব বিশ্বের বিভক্ত করা ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত করার তুলনায় নস্যি ব্যাপার হবে। বিভক্তিটা কিছুটা এরকম দেখাবে, লেবানন ও সিরিয়তে—লেবানন আর সিরিয়া বলে কিছু থাকবে না। সেখানে দ্রুজ এমিরেট [দ্রুজ শহুরে রাষ্ট্র], খ্রিস্টান এমিরেট, সুন্নি-মুসলিম এমিরেট, শিয়া-মুসলিম এমিরেট, কুর্দি এমিরেট; কয়টা হলো- এখনি ৫ বা ৬ বা ৭টা ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে। যেটা এখন মোটে দুইটা দেশ! আলাবি রাষ্ট্র- তাহলে আরেকটি হল। প্রকৃতপক্ষে শুধু সিরিয়াতেই ২৩ ধরণের ধর্ম আছে। সীমাহীন সম্ভাবনার কথা চিন্তা করুন [কতটাভাগে বিভক্ত করতে পারবে], ধর্মীয় গ্রুপের মধ্যে পরস্পরের প্রতি কতটা পরিমান ঘৃণা তারা বপন করতে পারবে। এবং এতটাই বেশি হবে যে সেটা একই দেশের মধ্যে থাকা আর সহ্য ক্ষমতার ভিতরে থাকবে না। সিরিয়া ও লেবানন। এটা সম্পূর্ণই কৃত্রিমভাবে তৈরিকৃত।
আমি ৯৩ বছরের এক জর্ডান লোকের সাথে সাক্ষাত করেছিলাম, তার নাম প্রফেসর দাব্বাস। উচু পর্বতে আমরা বসেছিলাম, আমরা সাইক্স ও পিকোর সৃষ্টিকৃত রাষ্ট্রগুলোর দিকে তাকাচ্ছিলাম। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, যখন আপনি ছোট ছিলেন তখন জর্ডান বলে কিছু ছিল না, লেবানন বলে কোন দেশ ছিল না। আপনি যখন ছোট ছিলেন তখন আপনি নিজেকে কি বলে দাবি করতেন? সে একটু চিন্তা করলো এবং ঘাড় উঁচুয়ে বললো, আমরা শামে [শাম হল গ্রেটার সিরিয়া— যেটা ইসারাইল, ফিলিস্তিন, লেবানন, জর্ডান ও সিরিয়া নিয়ে গঠিত] বসবাসকারী আরব ছিলাম। সুতরাং এখন শামে বসবাসকারীদের ভাবা উচিৎ যে তারা সকলেই আরব। কিন্তু তারা কি এখন সেটা চিন্তা করে? যখন সাইক্স-পিকো-২ এর বিষ তাদের শিরার মধ্য দিয়ে অনেক সময় ধরে প্রবাহিত হবে তখন কি তারা ভাববে যে তারা সকলেই আরব নাকি তারা সকলেই আরব এই ধারণাটা তারা নষ্ট করে ফেলবে? সাম্রাজ্যবাদীরা এটার উপরে কাজ করে যাচ্ছে—সাইক্স-পিকো-২, বিশ্বাস করবেন না, এটা যেমন একজন লেবাননবাসীকে বিশ্বাস করানো সম্ভব হয়েছিল যে একজন লেবাননবাসী একজন সিরিয়াবাসীর থেকে আলাদা এবং এতটাই আলাদা যে তারা সেই ভিন্নতার জন্য তারা মৃত্যুবরণ পর্যন্ত করতে রাজী! সেখানে এটাও বিশ্বাস করানো সম্ভব যে, সে আসলে মোটেই লেবাননবাসী নয়, সে একজন সুন্নি এবং তার সাথে একজন খ্রিস্টান, শিয়া বা দ্রুজদের সাথে কোনই সম্পর্ক নেই যদিওবা সে সেই একই দেশ লেবাননে বসবাস করে! তারা বিশ্বাস করে যে এটা তৈরি করা সম্ভব এবং কিছু নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে যে তারা আসলেই ঠিক।
আমি লেবাননকে ভালবাসি। আমি ১৯৭৭ সালে লেবাননের মধ্য দিয়েই আরব বিশ্বে প্রবেশি করেছিলাম। এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় আরব দেশ। কিন্তু আপনি জানেন কি, যখন আমি পশ্চিমাদেশ গুলোর কাছে থেকে লেবাননের গণতন্ত্র সম্পর্কে বলতে শুনি, তখন সবসময় আমাকে তাদেরকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয় যে প্রকৃতপক্ষে যদি লেবাননে গণতন্ত্রই থাকতো তবে সেখানকার প্রেসিডেন্ট হতেন প্রেসিডেন্ট সাইয়্যাদ হাসান নাসরুল্লাহ। যিনি এই দেশ চালাতেন। একটু চিন্তা করেন, এটাই হতো। অধিকাংশই সাইয়্যাদ হাসানকে ভোট দিত। তিনিই প্রেসিডেন্ট হতেন কিন্তু তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। কোন মুসলিমই সেই দেশের প্রেসিডেন্ট হতে পারবে না কারন সেখানকার সংবিধান সেভাবেই রচিত হয়েছে!! সাইয়্যাদ হাসান এটা নিয়ে অভিযোগও করছেন না। প্রকৃতপক্ষে বাকিরা বিশাল ভাগ্যবান যে, হাসান নাসরুল্লাহর তার বিচক্ষণতার কারণে লেবাননে কোন ধরণের ধর্মীয় বিভেদ [সেক্ট] নিয়ে ক্ষত তৈরি করার ইচ্ছা পোষণ করছেন না। তারা বলে যে হিজবুল্লাহ কুছায়ারে [সিরিয়া] সেক্ট [শিয়া-সুন্নি] এর কারণে সেখানে গিয়েছে। হিজবুল্লাহ যদি ধর্মীয় বিভেদের কারণেই যদি সিরিয়াতে হস্তক্ষেপ করতো তবে তারা একই কারণে লেবাননকে বিকালের মধ্যেই দখল করে ফেলতো!! কিন্তু তাদের লেবানন দখলের কোন আগ্রহই নেই। এটার যথার্থ কারণ হলো যে তারা ধর্মীয় বিভেদের বিপক্ষে। তারা সেক্টেরিয়ানিজমের [ধর্মীয় বিভেদ—শিয়া-সুন্নি] বিরোধিতার কারণেই তারা সিরিয়াতে কুছায়ারে যুক্ত হয়েছে। সিরিয়ার যুদ্ধে তারাই শেষ বিদেশি শক্তি হিসেবে গেয়েছে প্রথম হিসেবে নয় যদি অন্য বিদেশি শক্তিগুলো সিরিয়া থেকে সরে যায় তবে হিজবুল্লাহ সিরিয়া ত্যাগ করে চরম আনন্দিত হবে। এটার কারণ যে তারা সেক্টেরিয়ান নয় এবং তারা সিরিয়াতে সেক্টেরিয়ানের বিজয় দেখতে চায় না। এ কারণেই সিরিয়ার যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত হিজবুল্লাহকে যোগদান করতে হয়। কারণ যারা এই সেক্টেরিয়ান বিভক্তির খেলা খেলছে তাদের থেকে সাইয়্যাদ হাসানের অনেক বেশি বুদ্ধিমত্তা আছে [একবার চিন্তা করেন, সাইয়্যাদ হাসান নাসরুল্লাহ ইসরাইলের কলিজার মধ্য রয়েছে কিন্তু ইসরাইল তার সম্পর্কে কিছুই জানে না। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স কেউই জানেনা সাইয়্যাদ হাসান কোথায় লুকিয়ে আছেন তার দলের কার কি পজিশন!! ইসরাইল ও পশ্চিমাদের তিনি কাঁচ কলা দেখিয়ে বেড়াচ্ছেন!!]। সিরিয়ার লোকজন সৌদি নয়, তার আফগানও নয়, তারা জীবনে কখনোও আল-কায়েদার শাসন ব্যবস্থা ও তাদের বর্বর, বিদঘুটে ইসলামী ব্যাখ্যা মেনে নেবে না। কখনোই না। কারা এই জঙ্গিগুলোকে চেচনিয়া, লিবিয়া, নেদারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, সারা বিশ্ব থেকে এই লোকগুলো সিরিয়ার উপর শকুনের মত নেমেছে? তাদেরকে কারা এনেছে? কারা তাদেরকে টাকা-পয়সা দিচ্ছে? এই কক্ষে যারা আছে তারা প্রত্যেকেই জানে সেটা। আগুন নিয়ে খেলার কথা বললে, আমি কিছুদিন আগে ডেভিড ক্যামরুনকে পার্লামেন্টে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তিনি যদি হাত কাটা, গলা কাটা জঙ্গি যাদেরকে হত্যা করার জন্য আমরা মালিতে গিয়েছিলাম আর একই হাত কাটা, গলা কাটা জঙ্গি যারা সিরিয়াতে আছে যাদের কে আমরা টাকা-পয়সা ও অস্ত্রশস্ত্র দিচ্ছি তাদের উভয়ের মধ্যে কি কি প্রধান পার্থক্য আছে সেটা যদি বলতেন। আমাদের পার্থক্যটা বলেন, ব্যাখ্যা করুন। কল্পনা করুন, যুক্তরাষ্ট্র আল-কায়েদার সাথে একই বিছানায় শুয়ে সিরিয়াতে লড়াই করছে!! সেই একই আল-কায়েদা যাকে তারা বলে আমাদের চোখের সামনেই প্রায় ৩০০০ লোককে হত্যা করেছিল। ২০০১ সালের ৯/১১ এর সেই টুইন টাওয়ার [ও বিল্ডিং ৭ — যদিও এটাতে কোন প্লেন আঘাত করেনি তার পরও বিল্ডিংটা এমনি এমনিই ঠিক টুইন টাওয়ারের মতই মুক্তভাবে (Free Fall) পড়ে গেল!!] হামলায় গণহত্যা করেছিল। আপনারা কিভাবে তাদের সাথে জোট বাধতে পারেন যারা আপনাদের নিজের জনগনকে হত্যা করেছিল? বাশার আল আসাদ কি এতটাই খারাপ যে, তাকে শেষ করার জন্য আপনাদের ওসামা বিন লাদেনের লোকজনের সাথে জোট বাধতে হবে!!
আমি আপনাদের বলি তার [বাশার আল আসাদ] খারাপ কাজ সম্পর্কে। এটা এ জন্য নয় যে আসাদ পরিবার এক-পরিবার-শাসন উপভোগ করে, পশ্চিমারা এক-পরিবার-শাসন ব্যবস্থা পছন্দ করে। আরবের একটা পরিবার তাদের দেশের নামে নিজেদের পরিবারের নাম পর্যন্ত লাগিয়ে দিয়েছে [আগে সৌদি আরব— জাজিরাতুল আরব নামে পরিচিত ছিল]!! কিম জং ইল পর্যন্ত তার দেশের নাম কিমজংইলিয়া রাখে নি!! কিন্তু আল-সৌদ পরিবার তাদের পরিবারের নাম আরব দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরত্বপূর্ণ দেশে এটা করেছে। সুতরাং বাশারকে এক-পরিবার-শাসন ব্যাবস্থার জন্য অপছন্দ করে না!
যখন কাতারের আমির কিম জং ইলের মতই তার জোষ্ঠ পুত্রকে কাতারের আমির হিসেবে মনোনিত করলো তখন পশ্চিমার তাকে চুমা খাওয়ার জন্য দোহাতে দৌড় দিল। তারাই কিম জং ইলের ক্ষেত্রে কতটাই না ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করেছিল!! মজার ব্যাপার হল মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ দেশগুলোই পরিবারতান্ত্রিক। এক পরিবারের শাসন। সুতরাং পশ্চিমার বাশার আল আসাদকে একড়-পরিবার –শাসন ব্যাবস্থার জন্য ঘৃণা করেনা বরং তারা বাশারের কোন খারাপ কাজের জন্য তাকে ঘৃণা করে না যদিও বা সে অনেক ঘৃণ্য কাজ করেছে। তারা বাশারকে ঘৃণা করে তার ভালো গুণের জন্য। বাশার ইরানের উপর পশ্চিমাদের এরূপ ব্যবহারের বিরোধী। কোন রকম প্রমান ছাড়াই পশ্চিমারা ইরানকে এরুপ দোষারোপ করে যাচ্ছে এটা শুধু অন্যায়ই নয়, মানবতা বিরোধীও। বাশার আল আসাদ হামাসের পক্ষে, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বিরোধী মানুষের পক্ষে। সে তাদের খাদ্য খাবার, অস্ত্রশস্ত্র বিভিন্ন যাবতীয় জিনিষ সরবরাহ করে যাচ্ছে। সে ফিলিস্তিনিবাসীদের বলেছে, আপনারা যদি চান তবে দামেস্কে এসে বসবাস করতে পারেন। আমরা দরিদ্র তবে আপনারা আমাদের চেয়ে দরিদ্র অবস্থায় থাকবেন না। আপনারা আমাদের মতই সেবা ও সুযোগ সুবিধা পাবেন। আপনার শিশুরা আমাদের স্কুলে পড়াশোনা করবে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিবে। আপনার কোন সিরিয়াবাসীর তুলনায় কম নয়, কোন সিরিয়াবাসীও আপনাদের তুলনায় উর্দ্ধে নয়। আর কোন আরব দেশে ফিলিস্তিনিরা সেই দেশের নাগরিকদের সমান মর্যাদা ভোগ করে? কেউ কি বাশারের মত এই কথা বলেছে??
তারা বাশারকে দেখতে চায় না কারন অন্য আরব স্বৈরাচারের মত সে ইসরাইলের কাছে তার দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিতে চায় না। সে গোলান উচ্চভূমিকে ইসরাইলের কাছে ছেড়ে দিতে চায় না। এইটা বাশারের অপরাধ। তারা এই জন্য বাশারকে সিরিয়ার মসনদে দেখতে চায় না যে সিরিয়াকে তারা আরো ধর্মনিরপেক্ষ সমাজে রূপান্তর করবে কারণ আরব দেশগুলোর মধ্যে সিরিয়াই সবচেয়ে বেশি ধর্মনিরপেক্ষ!!! তারা চায় না আরবে কোন শক্তি, লৌহমানব ক্ষমতায় থাকুক, তারা চায় আরবের নেতারা যেন সব হিজড়া হয়। আপনি কি মনে করেন যে, পশ্চিমারা সিরিয়াতে বাশার আল আসাদকে সরিয়ে ইসলামপন্থী কোন সরকারকে আনবে যে বা যারা ইসরাইলের বিরোধীতা করবে??? যদি আপনি এটা ভাবেন তবে আপনি এখনো বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন!!
ব্রিটিশ সংসদ সদস্য
জর্জ গ্যালাওয়ে
সিডনি অস্ট্রেলিয়া মার্চ, ২০১৩
আরব বিভক্তি সম্পর্কে নিউ ইয়র্ক টাইমসের একজন ইহুদির মন্তব্য দেখতে পারেন:
http://www.nytimes.com/interactive/2013/09/29/sunday-review/how-5-countries-could-become-14.html?_r=0
বিষয়: বিবিধ
২৫৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন