হরতাল নয় লাগাতার গনঅনশনে বসুন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত্য। বিশ্ব বিবেক দেখুক। সাধারন জনগণ সাথে পাবেন।

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার ২০ মার্চ, ২০১৩, ০১:১৯:৩১ দুপুর

আমি বরাবরই হরতালের বিরোধী বা হরতাল আমার পছন্দ না। আমার ধারনা সাধারন(যারা রাজনীতি করেনা) জনগণের ১০০%ই হরতাল চায় না।

সরকারের সীমাহীন নিপিড়নের রাজনীতি ও দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারনে বিরোধীদল বাধ্য হচ্ছে বলে বিরোধীদল বলছেন।

বিরোধীদল যখন হরতাল ডাকে তখন সরকারী দলের মন্ত্রী, এমপি, সাপোর্টাররা বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে ও হরতালের বিরুদ্ধে কথা বলে। এটা যে এই সরকারের সময় তা না। সব সরকারের সময়ই করে থাকেন। সাপোর্টাররা এমন উদ্ভট উদ্ভট কথা বলে যে মনে হয় তাঁরা দুধের ধোয়া তুলুশী পাতা। যে নিজে এক সময় নিজের হাতে পিকেটিং করে রাস্তায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে, মানুষকে উলঙ্গ করেছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, ভাংচুর করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি অপকর্ম করেছে, সে এখন হরতালের বিভিন্ন চিত্রের সমালোচনা করছে। এটা আমার কাছে মনে হয় বেমানান। ঐ ব্যাক্তির কি একই ব্যাপারে সমালোচনার রাইট আছে?

মাঝে মাঝে তাঁরা সরকারে থেকেও হরতালের ডাক দেয়। তবে সেটা সহিংস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না কারন পুলিশই সেটা সফল করে দেয়(নরসিন্ধীতে ট্রেন পোড়ানো ও ভয়াবহ ভাংচুর বিচ্ছিন্ন ঘটনা) । সরকারী দলের বিপরিতে কোন পাগল গাঁড়ী নিয়ে বের হবে!!!! তবে যে কারনে হরতালের ডাক দেয় যদি বিরোধী কাউকে সন্দেহ করে তাহলে রক্ষা নাই, বিরোধীদের আস্তানা জালীয়ে দেওয়া নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। তবে অনেক ক্ষেত্রেই বলতে গেলে সেই হরতাল অহিংস হয় ঠিক যেমনটি হয়েছে শাহাবাগের সরকারী আন্দোলন।

যদি আপনে আমার কোন বন্ধু সরকারী দলের কাউকে কোন প্রশ্ন করেন যে আপনারাও তো হরতালের ডাক দিয়েছেন এবং তুলনা মুলক ভাবে ২০-৩০ গুন বেশী এবং এখনো ভুলেন নাই। তখন কমন উত্তর আমাদের হরতাল যোক্তিক ছিল এখন বিরোধীদলের হরতাল ইস্যু বিহিন, অযোক্তিক, মানুষকে জিম্মি করছে তাঁরা ইত্যাদি লাবড়া লাবড়া কথা মালার চুটাচুটি চলতে থাকবে। এখন তো আবার নতুন ও কমন ডায়লগ "যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার হরতাল", যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় এই অরাজকতা, ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি যদি এখন হরতাল বিরোধী আইন চাই, তাহলে বিরোধী দলের সাপোর্টার আমার বন্ধুরা হয়তো বলবে, সরকার তো আর কোন পথ খোলা রাখছে না প্রতিবাদের। মানববন্ধনে, অবস্থান কর্মসচিতে, অনশনে, বিক্ষোভে, সব প্রতিবাদেই পুলিশ বাহিনি ও লীগ গং বাহিনি সর্বত্র অতর্কিত হামলা করছে। করছে গুলিবর্ষন, মারছে মানুষ, করছে গন হত্যা, মারছে পিপার স্প্রে ও কাঁদানে গ্যাস, সব চাইতে বড় কথা অতর্কিতে গুলিবর্ষন এখন নিত্য নৈমত্তিক ব্যপার।

মেনে নিলাম তাদের অবস্থান।

তবু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে হরতাল এখন আর তেমন কোন অস্ত্র নয় সরকারী দলের টনক নড়ানোর জন্য। হরতালে সরকারের কিচ্ছু হয় না। যা ক্ষতি হয় জনগণের। যারা রাজনীতি করেন তাদেরই উচিৎ অন্য কোন পন্থা বের করা। বর্তমান আওয়ামীলীগ ১৭৬ দিন হরতাল দিয়ে বাসে গান পাউডার দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে, রাস্তায় মানুষকে লেংটা করে, নির্যাতন করেও কি বিএনপির দুর্নীতি থামাতে পেরেছিল? নাকি পেরেছিল বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে নামাতে???? পারে নাই। তাই আমার মতে হরতাল এখন একটা বেহুদা ব্যপার। জনগনের ও দেশের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হয় না।

তাই নতুন কিছু ভাবতে হবে নেতাদের। নেতারা হরতাল দেয় গুলি খেয়ে ও পুড়ে মারা যায় কর্মীরা ও সাধারন জনগন। তার চাইতে এমন একটা অনশন কর্মসুচী দেয়না কেন যেটাতে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত্য উঠবেন না। প্রয়োজনে মারা যাবেন, কর্মী ও মরবে নেতা ও মরবে। প্রয়োজনে মরিতেই প্রস্তুত যেহেতু, শুধু কর্মীর উপর দিয়ে যাবে কেন? নেতা কর্মী সবাই একসাথে বসুন। বিশ্ব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে আর ঘৃনা চুড়বে। রক্ত পিপাশু সরকারের বিরুদ্ধে এটা একটা উদাহরন হয়ে থাকুক। সাধারন জনগণ সাথে পাবেন। দেশ দেখবেন বিক্ষোভে ফেটে পড়বে।

এবার আসি সরকারের দিকেঃ আমাদের বর্তমান সরকারের ম্যাজরিটি এমন যে তাঁরা "মেয়েকে ছেলে আর ছেলেকে মেয়ে বানাতে পারা ছাড়া সব কিছুই করতে পারে"। যারা ৩ মিনিটে ঢাকাকে ২ ভাগ করতে পারে। তাঁরা হরতালকে আইন করে বন্ধ করছেন না কেন? তার মানে কি উনারা বিশ্বাস করেন যে উনারা এতই অপকর্ম করেছেন যে আগামীতে ভরাডুবি হবে এবং উনারা আবার ১৭৫ দিন হরতাল দিবে? তাহলে এখন এত বড় বড় কতা আওড়ান কেন?

গত চার বছরে আমি বহু বিএনপি এমপি ও নেতাদের মুখেও শুনেছি সরকার ইচ্ছে করলেই আইন করে হরতাল বন্ধ করতে পারে তাঁরা সেটাতে আপত্তি করবে না। তাহলে ধরেই নিতে হয় সরকার নিজের ভয়েই হরতালকে আইন করে বন্ধ করছেন না।

বিষয়: বিবিধ

১৪৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File