ইসলামী বউ-জামাই, শ্বশুর-শ্বাশুরী ও দায়িত্ববোধ
লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ১০ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:২৪:৫৫ রাত
স্ত্রী বিষয়ক আলোচনায় আবার আসতে হচ্ছে, কিছু ব্যাপার আমার নিজের কাছে পরিস্কার হওয়ার জন্যই; কেননা, আমি মনে করি এ ব্লগে – অনেক ইসলামী জ্ঞানসম্পন্ন ভাই-বোনেরা রয়েছে এর যৌক্তিক উত্তর দানে। আমার এর আগের পোষ্টে অনেক ভাই-বোনের কথায় আমার মনে আরেকটা প্রশ্ন বদ্ধমূল হয়েছে, তা হচ্ছে স্ত্রীর কি কাজ স্বামীগৃহে? আর স্ত্রীর অধিকার কি তাও জানার আগ্রহবোধ হচ্ছেঃ
১/ বিয়ের পর কোন প্রয়োজন না পড়লেও, স্ত্রী ইচ্ছামতো যা খুশী তা করতে পারবে স্বামীর অনুমতি ছাড়াই, যেমনঃ ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরী? প্রয়োজন না থাকলেও স্বামী এসবের অনুমতি দিবে?
২/ স্ত্রীর যদি স্বামীর পরিবারের (তার পিতা-মাতা এবং অন্যান্য কাজের) দায়িত্ব নেয়া কোন বাধ্যবাধকতা না হয়, স্বামীগৃহে স্ত্রী কি করবে? স্বামীর ঘরে কোন দায়িত্ব স্ত্রী পালন না করলে, সে কি করে সময় পার করবে? শুধুই যৌন-সেবার জন্যঃ পণ দিয়ে কিনে এনে পুতুলের মতো শোকেসে রেখে দেবে পুরুষরা?
৩/ স্ত্রীর ভরণ-পোষনের জন্য স্বামী গোলামী (চাকরী) বা ব্যবসা করবে; এক্ষেত্রে পুরুষদের দাসত্বের জন্য বা ব্যবসার জন্য শিডিউল রয়েছে, সেসব চাকরী বা ব্যবসায় একদম দাসের মতোই তাদের কাজ করতে হয়; স্ত্রীর স্বামীর ঘরের এরকম শিডিউল্ড-কাজকে ইসলামের আলোকে দাসত্ব বলা হবে? এটা কি তার দায়িত্ব না?
৪/ স্বামীর কাজ/ব্যবসা-কে ইসলামপন্থী ভাইয়েরা ব্যাপক উৎসাহিত করলেও, নারীদের ঘরের কাজকে কেনো দাসত্ব বলে? স্বামী কি মানুষের অফিসে অফিসে দাস না? স্ত্রী হবে না কেনো ঘরে? কেনো তাদেরকে এসব দায়িত্বে উৎসাহিত না করে উল্টো বলা হয় স্ত্রী স্বামীর হুকুম মানতে বাধ্য না?
৫/ মানুষের অফিসে অফিসে দাসী হিসেবে নারীদের কাজের স্বাধীনতাকে নারীদের অগ্রযাত্রা অনেকে বললেও, স্বামীগৃহের স্বাভাবিক দায়িত্বকে কেনো তারা দাসীগিরি বলে?
অর্থনৈতিক সমাজ-ব্যবস্থা চালাতে গেলে লেবার বা শ্রমিকের শ্রমবিন্যাস আবশ্যক। নারী-পুরুষ, হোক সে স্বামী-স্ত্রী বা অন্য কিছু, এরাও লেবার। এদের শ্রম-বিন্যাস এর জন্য আমার জানামতে ইসলামিক একটা পদ্ধতি রয়েছে; যেটা – একান্ত প্রয়োজন না পড়লে, স্ত্রী তার শ্রম দিবে হোম-ইকোনোমিক্স-এ (মানে ঘরেই ও উৎপাদন ও সেবা দিবে); আর সক্ষম পুরুষ হলে সে ঘরের বাইরে নেমে উৎপাদন ও সেবা দিয়ে যাবে বৃহত্তর কল্যাণেঃ এটা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত বিন্যাস আমার মতে। এতে করে সমাজে সিনার্জিক-বেনিফিট বেড়ে যায়।
যেমন Debt-based-economy বা সোজা বাংলায় বলতে গেলে দেউলিয়া-অর্থব্যবস্থাপনার সমাজে পুজিপতিরা লেবারদের বিভিন্ন ক্লাসে ভাগ করে খাটায়ঃ আমাদের দেশে গার্মেন্টস-গুলোয় দেখা যায় সেখানে সব নারীদের বন্দী করে কাজ করাচ্ছে, সেখানে কোন পুরুষ নেই; সেখানে যদি পুরুষ দেয়া হতো তবে প্রেম-পিড়ীতির কারণে, টাঙ্কিবাজীর কারণে প্রোডাকশন কমে যাবেঃ তাই সেখানে হয় সব পুরুষ, নয় সব নারী; ম্যাক্সিমাম-আউটপুট অথবা বেনিফিট এর জন্য ব্যবহার করা হয়।
দেউলিয়া ব্যবস্থায় লেবারদের জীবন-যাপনের এক ধরন, আর পুজিপতিদের আরেক ধরণ; কখনোই দেখবেন না সেখানে হ্যারী বা উইলিয়াম-রা চাইল্ডহোমে বড় হয় বা কখনোই ক্লিনটন বা সিনিয়র বুশকে পাবেন না ওল্ডহোমে পালিত হতে দেখতে। সেখানে অর্ডিনারী লেবারদেরকে তেমন জীবন যাপনে বাধ্য করা হয়; আর তাদের সন্তানদেরকে একই মানসিকতায় গড়ে তুলতে সে চাইল্ডহোম সিষ্টেম; একইভাবে উৎপাদনে অক্ষম লেবারদের জন্য অন্য কোন লেবারের যাতে সময় নষ্ট না হয়, তাই তাদের জন্যও ওল্ডহোম ব্যবস্থা! আমার দৃষ্টিতে দেউলিয়া এ ব্যবস্থাপনা ইসলাম কোনভাবেই সমর্থন করে নাই! তাইঃ
আমার হিসেবে আমি যা পরিস্কারভাবে বুঝেছি, তা হচ্ছে স্বামীর আবশ্যিক দায়িত্ব স্ত্রী এবং পরিবার (পিতা-মাতা, স্ত্রী ও সন্তান) বহনের ব্যবস্থা করা (ব্যক্তিগত বা সামাজিকভাবে) আর স্ত্রীর আবশ্যিক দায়িত্ব স্বামীর ঘরের দায়িত্ব পালন করা (শ্বশুর-শাশুরী, সন্তান এবং ঘরের কাজ); এটা মানতে না পারলে অবশ্যই ব্যাখ্যা করা উচিৎ, তা-হলে কিভাবে এই সামাজিক কর্মগুলো (ঘরের এবং বাইরের) সম্পাদন হবে? অনেকের মতের ‘স্ত্রী আদেশ মানতে বাধ্য নন’, এটা ব্যাখ্যার ফল হিসেবে যা প্রতীয়মান হয়ঃ
১/ ঘরে থাকা স্বামীর বাবা-মায়ের কাজও স্বামী করবে
২/ বাইরে গিয়ে স্ত্রী এবং বাবা-মা ভরণ-পোষনের কাজও স্বামীই করবে
কিভাবে সম্ভব এটা? এটার যদি কোন যৌক্তিক উত্তর না থাকে, তবে কেনো অস্বীকার করা হয় স্ত্রী বাধ্য না স্বামীর ঘরের কাজের আদেশ পালনে? আরও একটা কথা এভাবে যৌক্তিক কর্মবিন্যাস না বুঝলে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা আমার মনে হয় কারও কামনাই করা উচিৎ না! আর এভাবে স্ত্রীর কোন কাম নাই আর সব কাম স্বামীর বলতে থাকলে দেখবেনঃ এইসব স্ত্রী-নামক দীর্ঘমেয়াদী বোঝা পিঠে বহনের কারো দরকার থাকবে না, একান্ত প্রয়োজন পড়লে ৫-পাই দিয়া বেশ্যালয়ে গিয়েই সবাই কাম-সেড়ে খাবে আর ঘুমাবে! আর মেয়েরাও উপায়ন্তর না পেয়ে মানুষের অফিসে অফিসে দাসী হয়েই যাবে পুরোপুরি (পাশ্চাত্যের ফুল দেউলিয়া অবস্থার মতো) আর জৈবিক চাহিদার জন্য লিভ-টুগেদার; ফল হিসেবেঃ গেন্দা-বাচ্চা চাইল্ডহোমে, বুইড়া-বুইড়ী ওল্ডহোমে। আরও খেয়াল করুনঃ আদেশ পালনে বাধ্য না হলে নারীদেরকে দেউলিয়া-ব্যবস্থাপনার সমাজ ব্যবস্থায়ও কর্মক্ষেত্র থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়! দায়িত্ব না নিলে সেখানেও কোন ব্যবহার নেই এসব নারীর!
ভালোভাবে চিন্তা করে বলেনঃ যে সমাজে আল্লাহ বলেছেন স্ত্রীদের ঘরে থাকতে এবং প্রয়োজন না পড়লে বাইরে না যেতে; আর সন্তানদের আদেশ দিয়েছেনঃ পিতা-মাতার ও সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে; সেখানে ঘরের ডিউটি আর বাইরের ডিউটি স্বামী আর স্ত্রীর উপর আলাদাভাবে না থাকলে, কিভাবে চলেছিল সেই সমাজ? বুইড়া-বুইড়ীদের কোন স্ত্রী লালন-পালন করে নাই, যাদের স্বামী যুদ্ধে বা কর্মের খাতিরে বাইরে ছিলো? অসম্ভব এটাঃ অবশ্যই তাদের স্ত্রীদের সে দায়িত্ব পালন করতেই হয়েছে।
তাই আমার মতেঃ
স্বামীর ঘরের কাজ (শ্বশুর-শাশুরী, সন্তান লালনের) পালনে স্ত্রী একান্তই বাধ্য!
না হলে বা স্ত্রী দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে অথবা অনিচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে সম্মানের সহিত তালাক দিয়ে, সে দায়িত্ব নিতে যে স্ত্রীরা সক্ষম তাকেই গ্রহণ করে নিতে হবে কেননা, ঘরে পিতা-মাতা বা সন্তানের অবহেলা ইসলাম সমর্থন করে না! কারও দ্বিমত থাকলে উপরের আলোচনার ভিত্তিতে যুক্তি দিয়ে বলুন, স্ত্রী বাধ্য না হলে পুরা-ব্যবস্থাপনাটা কিভাবে চলবে?
বিষয়: বিবিধ
৫৮৪৪ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জীবনঘণিষ্ট বাস্তবমুখী সমস্যাগুলো আলোচনা করতে আমার বেশ ভালো লাগে, এতে অনেক কিছু নতুন করে বোঝার, জানার উপলব্ধি করার সুযোগ হয়, কুরআন হাদিসের অনেল টেক্টের নতুন ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের ধারণা আসে!
আপনার পয়েন্টগুলো আমি আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ, এই মুহুর্তে হাতে সময় নেই! অপেক্ষা করুন!
ততক্ষণে অন্যরাও এসে যাবেন তাঁদের ঝুলি নিয়ে - এমনটাই আশা করি!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
আমার ওয়াদা পালন করেছি ৮নং মন্তব্যে-
জানানোর দায়িত্বটাও বুঝি আমার?
দেখার অনুরোধ রইলো
২/ চমৎকার প্রশ্ন। এটা নারীকে বুঝা উচিত। বিয়ের পরে স্বামী গৃহের কাজের জন্য চাপ দেয়া যায় না, কিন্তু তাই বলে মানবীয় দিক বলে একটা কথা আছে। স্ত্রী হটকারিতা করতে পারে না। স্বামীর ঘর-পরিবার এখন তার। তাই কিছু সময় নিজ থেকে কিছু করলে সবাই খুশি হবে। আর বিয়ে তো শুধু এবং কেবল শুধু যৌন কাজের জন্য নয়! আরো অনেক মহত্ব আছে।
৩/ স্বামীর কাজটা যেমন গোলামী বা দাসত্ব নয়, তেমনি স্ত্রী স্বামীর ঘরে কাজ করলে সেটা দাসত্ব বা গোলামী হবে না। উভয়ের দায়িত্বশীলতা প্রদর্শন করতে হবে।
৪/ চমৎকার প্রশ্ন! আজকাল কিছু ইসলামী মাইন্ডেড ভাইরা মেয়েদের ওপর একতরফাভাবে বাইরের কাজ চাপে দিতে চাচ্ছে। ঘরের কাজকে তাদের সামনে তুচ্ছ ভাবে রিপ্রেজেন্ট করছে। স্বামীর অনুগত হতে হবে আর বিপরীতভাবে হাদিস অনুযায়ী- সেই পুরুষ উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।
৫/ এর উত্তরটা বোধ হয় বলেই ফেললাম:-)
আমার ওয়াদা পালন করেছি ৮নং মন্তব্যে-
জানানোর দায়িত্বটাও বুঝি আমার?
দেখার অনুরোধ রইলো
আমার ওয়াদা পালন করেছি ৮নং মন্তব্যে-
জানানোর দায়িত্বটাও বুঝি আমার?
দেখার অনুরোধ রইলো
আমার ওয়াদা পালন করেছি ৮নং মন্তব্যে-
জানানোর দায়িত্বটাও বুঝি আমার?
দেখার অনুরোধ রইলো
আমার বিয়ে হয়১৯৮২ সালে।আমি ১৯৮৫ সালে প্রথম সন্তান হয়ার পরেও আমি সন্তানের লালন পালন বা আমার দায়িত্ব কর্তব্য কি আমি বুঝতে পারিনি । আমার স্বামী ততদিন আমাকে মানুষিক চাপ বা খারাপ ব্যবহার করেন নাই । বরং আমাকে সাহায্য করেছেন শিখাতে ।কিন্তু তাতে তেমন ফল না পেয়ে উনি আমাকে আল্লাহর কোরানের আলোতে আলোকিত বোনদের সাথে নিয়ে শামিল করেন। যখন আমি আমার বোনদের কোরানের আলোচনা থেকে সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভয় আসে ।তখন আমার সৃষ্টির প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য কি টা বুঝতেও আমি সক্ষম হই। আমি ৩ বছর পর স্বামী বা স্বামীর সংসারের কার জন্য কি দায়িত্ব টা আল্লাহর কাছে জবাব্দিহিতার ভয়ে করতে থাকি।আমার সাহেব আমাকে ঘরে এসে কখন কথায় কখন কাজে কখন তার ভালবাসা দিয়ে অনেক সাহায্য করেছেন ।এতে আমরা বন্ধুর মত এখন অনেক কাজ করে থাকি ।আমি অসুস্থ্য হলে সে আমার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেন । ছেলেদের বলবে তোমার আম্মুকে সবাই সংসারের কাজে সাহায্য করবে।
রাসুল সাঃ খাদিজা রাঃ সাথে সংসারের কাজ আবার বাচ্চা লালন পালনে সাহায্য করেছেন। সাহাবাদের জীবনিতেও দেখা যায় খলিফা হয়েও ওমর রা ঘরের কাজে সাহায্য করেছেন। এটা কোন বাধ্যবাদকতা নয় । যা শুধু ভালবাসা থেকে হয়ে থাকে ।
আর আপনি মনে করবেন না এর পরের জন আরো ভাল চলে আসবে ।কারন আল্লাহ এমন মেসেজ আপনাকে দেন নাই । তার চেয়ে ক্ষমা করে বাচ্ছার দিকে তাকায়ে আপনি একটু উত্তম চরিত্রের পরিচয় দিয়ে নিয়ে আসুন ।আমি খুব অভিমানী ।এটা আর কেউ না জানলেও আমার স্বামী সন্তান খুব ভাল করে জানেন ।আর আমি এখন চাই আমি অভিমান করলে যার সাথে করেছি সেই এসে যেন আমার অভিমান ভাংগায়। সত্যি এতে আরো ভালবাসা অনেক বেড়ে যায়।
আমার মনে হয় ভাবী আপনার সাথে অভিমান করলেও আপনার বিরহে চোখের জলে বিছান না ভিজলেও বালিশটা ঠিকই ভিজাচ্ছেন ।
রাসুলের সাঃ কিছু মুল্য বান উপোদেশ দিলাম সবার জন্য ।
শ্রেষ্ঠ উপদেশ -- রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর
উপদেশ ***
১) যদি পরিপূর্ণ ঈমানওয়ালা হতে চাও
তবে উত্তম চরিত্র অর্জন কর ।
২) যদি সবচেয়ে বড় আলেম হতে চাও
তবে তাকওয়া অর্জন কর ।
৩) যদি সবচেয়ে বেশী সম্মান
পেতে চাও তবে
মানুষের নিকট হাত পাতা বন্ধ
করে দাও ।
৪) যদি আল্লাহর নিকট বিশেষ সম্মান
পেতে চাও
তবে অধিক পরিমাণে আল্লাহর
জিকির কর ।
৫) যদি রিযিকের প্রশস্ততা চাও
তবে সর্বদা ওজুর সাথে থাকার
চেষ্টা কর ।
৬) যদি সমস্ত দোয়া কবুল হওয়ার
আশা কর তবে অবশ্যই হারাম
থেকে বেঁচে থাকো ।
৭) যদি কেয়ামতের দিন আল্লাহর
দরবারে গুনাহমুক্ত উঠতে চাও
তবে সহবাসের পর দ্রুত পবিত্র
হয়ে নাও।
৮) যদি কেয়ামতের দিন আল্লাহর নূর
নিয়ে উঠতে চাও
তবে মানুষের উপর জুলুম
করা ছেড়ে দাও।
৯) যদি আল্লাহর প্রিয়
বান্দা হতে চাও তবে আল্লাহর ফরজ
বিষয়াদির প্রতি যত্নবান হও ।
১0) যদি জাহান্নামের আগুন
নেভাতে চাও তবে দুনিয়ার
বিপদাপদে সবর কর ।
১১) যদি আল্লাহ তায়ালার রাগ
থেকে বাঁচতে চাও
তবে গোপনে সদকা কর ,
আত্নীয়তা রহ্মা করে চলো এবং মানুষের
উপর রাগ করা ছেড়ে দাও ।
মুসনাদে আহমদ)
আর তালাকের জন্য আলোচনায় বসতে বললেঃ তাও বসবেনা!
যা হওয়ার হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ, মনে হয় সবই নির্ধারিত ... আমরা শুধুই বহন করে যাওয়ার জন্য একটা সময়ে!
আপনার উপদেশ, আন্তরিকতার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আমার ওয়াদা পালন করেছি ৮নং মন্তব্যে-
জানানোর দায়িত্বটাও বুঝি আমার?
দেখার অনুরোধ রইলো
বর্তমানে আপনি আপনার কাঙ্খিত মানের স্ত্রী পাওয়ার সম্ভাবনা ১০% এরও কম। যুগ খারাপ বলে কথা যার প্রভাব ছেলে মেয়ে সকলের উপর পড়ছে। তাই যথাসম্ভব ছাড় দিয়ে হলেও সম্পর্ক জোড়া দেয়া যায় কিনা সেটি আরেকবার ভাবুন। আবারও শুভকামনা।
আমার ওয়াদা পালন করেছি ৮নং মন্তব্যে-
জানানোর দায়িত্বটাও বুঝি আমার?
দেখার অনুরোধ রইলো
নারীদের জন্যও ঠিক তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন পুরুষদের অধিকার আছে তাদের ওপর ৷ তবে পুরুষদের তাদের ওপর একটি মর্যাদা আছে ৷ আর সবার ওপরে আছেন আল্লাহ সর্বাধিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী , বিচক্ষণ ও জ্ঞানী ৷ সুরা বাকারা, ২২৮ আয়াত
তবে এটা স্বতন্ত্র , স্বামী-স্ত্রী যদি আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না বলে আশংকা করে, তাহলে এহেন অবস্থায় যদি তোমরা আশংকা করো, তারা উভয়ে আল্লাহ নির্ধারিত সীমার মধ্যে অবস্থান করতে পারবে না , তাহলে স্ত্রীর কিছু বিনিময় দিয়ে তার স্বামী থেকে বিচ্ছেদ লাভ করায় কোন ক্ষতি নেই ৷ সুরা বাকারা, ২২৯ আয়াত
এটি সেই আয়াত যাতে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে আলোচনা করে পরস্পরের দায়িত্ব-কর্তব্য ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে!
যদি কোন পক্ষ এটা করতে অনীহা প্রকাশ করে তবে তার জন্য বলা হয়েছে-
এগুলো আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা, এগুলো অতিক্রম করো না ৷ মূলত যারাই আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখা অতিক্রম করবে তারাই জালেম ৷ সুরা বাকারা, ২২৯ আয়াত
লায়স ইব্নু সা‘দ (রাঃ) বলেন, (পরবর্তী রাবী) ইউনুস (রহঃ) বলেছেন, আমি একদা ইব্নু শিহাব (রহঃ)-এর সঙ্গে ওয়াদিউল কুরা নামক স্থানে ছিলাম। তখন রুযাইক (ইব্নু হুকায়ম (রহঃ) ইব্নু শিহাব (রহঃ)-এর নিকট লিখলেন, আপনি কী মনে করেন, আমি কি (এখানে) জুমু‘আর সালাত আদায় করব?
রুযায়ক (রহঃ) তখন সেখানে তাঁর জমির কৃষি কাজের তত্ত্বাবধান করতেন। সেখানে একদল সুদানী ও অন্যান্য লোক বাস করত।
রুযায়ক (রহঃ) সে সময় আইলা শহরের (আমীর) ছিলেন। ইব্নু শিহাব (রহঃ) তাঁকে জুমু’আ কায়িম করার নির্দেশ দিয়ে লিখেছিলেন এবং আমি তাকে এ নির্দেশ দিতে শুনলাম।
সালিম (রহঃ) তার নিকট বর্ণনা করেছেন যে,
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই অধীনস্থদের (দায়িত্ব) জিজ্ঞাস করা হবে।
ইমাম [ইমাম’ শব্দ রাষ্ট্রের কর্ণধার, যে কোন কাজের তত্ত্বাবধায়ক, ব্যবস্থাপক ও সালাতের ইমাম অর্থে ব্যবহৃত হয়।] একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাঁকে তাঁর অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
পুরুষ তার পরিবার বর্গের অভিভাবক, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
নারী তার স্বামী-গৃহের কর্ত্রী, তাকে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
খাদিম তার মনিবের ধন-সম্পদের রক্ষক, তাকেও তার মনিবের ধন-সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আমার মনে হয়, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ
পুত্র তার পিতার ধন-সম্পদের রক্ষক এবং এগুলো সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে।
তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং সবাইকে তাদের অর্পিত দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে।
বুখারী : ৭১৩৪; মুসলিম : ৪৮২৮।
২৬) দুশ্চরিত্রা মহিলারা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা মহিলাদের জন্য৷ সচ্চরিত্রা মহিলারা সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষরা সচ্চরিত্রা মহিলাদের জন্য ৷ লোকে যা বলে তা থেকে তারা পূত-পবিত্র ৷ তাদের জন্য রয়েছে মাগফিরাত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবিকা৷
বিয়ের সময় এটা দেখা উচিত, পরেও যদি এতে গরমিল দেখা দেয় এবং সুরা বাকারার ২২৯ আয়াত অনুসারে ফায়সালা না হয় তবে বিচ্ছিন্নতাই উত্তম!
কেউ এমন আছে যে বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় সবকিছু দিয়ে দাও ৷ এই ধরনের লোকের জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই ৷
আবার কেউ বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় কল্যাণ দাও এবং আখেরাতেও কল্যাণ দাও এবং আগুনের আযাব থেকে আমাদের বাঁচাও ৷
এই ধরনের লোকেরা নিজেদের উপার্জন অনুযায়ী (উভয় স্থানে )অংশ পাবে ৷
বাকারা ২০০-২০২
মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী , এরা সবাই পরষ্পরের বন্ধু ও সহযোগী৷ এরা ভাল কাজের হুকুম দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে, নামায কায়েম করে, যাকাত দেয় এবংআল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্র করে৷ এরা এমন লোক যাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাযিল হবেই৷ অবশ্যি আল্লাহ সবার ওপর পরাক্রমশালি এবং জ্ঞানী ও বিজ্ঞ৷ তাওবাহ-৭১ আ্য়াত
উপরের আয়াত ও হাদীসের [প্রয়োজনে বিস্তারিত তাফসীর দেকে নেয়া যেতে পারে} আলোকে এখন আপনার প্রশ্নের জবাবে সংক্ষেপে বলা যায়-
১/ বিয়ের পর কোন প্রয়োজন না পড়লেও, স্ত্রী ইচ্ছামতো যা খুশী তা করতে পারবে স্বামীর অনুমতি ছাড়াই, যেমনঃ ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরী? প্রয়োজন না থাকলেও স্বামী এসবের অনুমতি দিবে?
জবাবঃ অনুমতি না দেবার অধিকার আছে!
জিদ করলে বাকারা-২২৯ আয়াতের দ্বারা ফায়সালা হবে
২/ স্ত্রীর যদি স্বামীর পরিবারের (তার পিতা-মাতা এবং অন্যান্য কাজের) দায়িত্ব নেয়া কোন বাধ্যবাধকতা না হয়, স্বামীগৃহে স্ত্রী কি করবে? স্বামীর ঘরে কোন দায়িত্ব স্ত্রী পালন না করলে, সে কি করে সময় পার করবে? শুধুই যৌন-সেবার জন্যঃ পণ দিয়ে কিনে এনে পুতুলের মতো শোকেসে রেখে দেবে পুরুষরা?
জবাবঃ দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা প্রসংগে আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে ব্যাখ্যা করা হয়েছে
৩/ স্ত্রীর ভরণ-পোষনের জন্য স্বামী গোলামী (চাকরী) বা ব্যবসা করবে; এক্ষেত্রে পুরুষদের দাসত্বের জন্য বা ব্যবসার জন্য শিডিউল রয়েছে, সেসব চাকরী বা ব্যবসায় একদম দাসের মতোই তাদের কাজ করতে হয়; স্ত্রীর স্বামীর ঘরের এরকম শিডিউল্ড-কাজকে ইসলামের আলোকে দাসত্ব বলা হবে? এটা কি তার দায়িত্ব না?
জবাবঃ এগুলো তাঁর দায়িত্ব, এবং জবাবদিহিতাও রয়েছে! অবশ্যই এসব দায়িত্বকে দাসত্ব বলা অপরাধ! কারণ সুবিধালাভের শর্তে স্বেচ্ছায় সম্পাদিত চুক্তিপালনকে দাসত্ব বলা চুক্তিভংগের সামিল
৪/ স্বামীর কাজ/ব্যবসা-কে ইসলামপন্থী ভাইয়েরা ব্যাপক উৎসাহিত করলেও, নারীদের ঘরের কাজকে কেনো দাসত্ব বলে? স্বামী কি মানুষের অফিসে অফিসে দাস না? স্ত্রী হবে না কেনো ঘরে? কেনো তাদেরকে এসব দায়িত্বে উৎসাহিত না করে উল্টো বলা হয় স্ত্রী স্বামীর হুকুম মানতে বাধ্য না?
জবাবঃ অবশ্যই এসব দায়িত্বকে দাসত্ব বলা অপরাধ! কারণ সুবিধালাভের শর্তে স্বেচ্ছায় সম্পাদিত চুক্তিপালনকে দাসত্ব বলা চুক্তিভংগের সামিল! যিনি/যাঁরা এসব দায়িত্বে উতসাহিত না করে উল্টো বলেন যে, স্ত্রী স্বামীর হুকুম মানতে বাধ্য না তাঁরা নিঃসন্দেহে মন্দকাজ করেন!
৫/ মানুষের অফিসে অফিসে দাসী হিসেবে নারীদের কাজের স্বাধীনতাকে নারীদের অগ্রযাত্রা অনেকে বললেও, স্বামীগৃহের স্বাভাবিক দায়িত্বকে কেনো তারা দাসীগিরি বলে?
জবাবঃ স্বামীগৃহের স্বাভাবিক দায়িত্বপালনই নারীর সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন পেশা! তবে অবশ্যই মর্যাদাহানিকর আচরণ না হওয়ার নিশ্চয়তা (বিবাহের চুক্তিপত্র অনুসারে) থাকতে হবে! তা না হলে মহিলা দায়বদ্ধ থাকবেননা!
সারকথাঃ
আদর্শ স্ত্রীর দায়িত্বপালনের মডেল উদাহরণ হযরত আইউব আঃএর স্ত্রী রহিমা এবং রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর কন্যা ফাতিমা রাঃ
আর পুরুষের উদাহরণ রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তারপর হযরত উমার রাঃ
আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন!
রসুলুল্লাহর প্রতি দরুদ ও সালাম- সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সুন্দর লিখাটি পড়লাম। ভালো লাগলো।
সিনিয়র ব্লগার ভাই/বোনেরা মন্তব্যে খুব সুন্দরভাবে বিষয়টির আরো গভীরে গিয়েছেন। সেগুলোও পড়লাম।
অনেক কিছু জানতে পারলাম, কন্সেপ্ট ক্লীয়ার হল।
ধন্যবাদ আপনাকে এমন একটি লিখার অবতারণা করায়।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকুমুল্লাহ
@ আবু সাইফ ভাই
@শেখের পোলা : আপনার সমর্থনে চোখ ভিজে গেল- আলহামদুলিল্লাহ
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকুমুল্লাহ
আমাদের দেশের রত্ন গর্ভা মায়েদের হিস্ট্রি ঘাঁটলে দেখা যাবে যে তাদের প্রায় সবাই পরিবারকে প্রাধান্য দিয়েছেন ক্যারিয়ারের আগে ।
এসব পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন থাকে অটুট এবং যার ফলে ছেলে মেয়েরাও ডিরেইলড হয় না ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন