নাই কাজ, তো খই ভাজঃ নারীর পোষাক নিয়ে আবারও আমি ...

লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:৪১:৫৫ রাত

এই লোকটার এই-লেখা-টা মনে হয়, আমার আগের পোষ্টের পরে পড়ে দেখেছিলাম কি-না, মনে পড়ছে না ঠিক মতো! যাই হোক, উনি যেহেতু একটা দায়িত্বশীল পদে কর্মরত; তাই উনাদের বক্তব্য অনেক সংযত, মার্জিত এবং যৌক্তিক হওয়া উচিৎ! আর যদি যা খুশী তা বলতে ইচ্ছা হয় এদের তবে আমার মতো এদেরও দায়িত্বশীল পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যহতি নিয়ে, তার পর বলা উচিৎ!

এই লেখার একটা প্যারায় উনি বলেছেনঃ

ফেসবুকে এই স্ট্যাটাস দেয়ার পর অনেকে মেয়েদের পোশাক নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। অনেকে শালীনতার কথা বলেছেন। ঠিক তাই। আমিও তাই মনে করি। আমি বলছি না, সব মেয়েকে শার্ট-প্যান্ট পরতে হবে বা শাড়ি-বোরকা পরতে হবে। কোনোটাতেই আমি গোড়া নই। আমার কথা হলো, পোশাক পরবে যার যার পছন্দে, ছেলে হোক আর মেয়ে। তবে পোশাকটা অবশ্যই শালীন হতে হবে, আমাদের সমাজ-সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। এই যেমন ইদানীং অনেক ছেলে কোমরের অনেক নিচে প্যান্ট পরে। আমার ভালো লাগে না, ভয় হয়, কখন জানি খুলে পড়ে যায়। তবে আমি কাউকে ওভাবে প্যান্ট পরতে বারণ করিনি। কারণ আমার পছন্দ না হলেও এটা তো তার পছন্দ। তবে কেউ কেউ পরামর্শ দিয়েছেন, কারও পোশাক পছন্দ না হলে যেন আমি সেটা মুখের ওপর বলে দেই। কারণ কথায় আছে, আপনা রুচি খানা, পরকা রুচি পরনা। এটা জানি, তবু আমি অন্তত কারও পোশাক পরার স্বাধীনতায়ও হস্তক্ষেপ করতে চাই না।


এটাই সবার কাম্য, কারও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা উচিৎ না; কেউ মনে চাইলে বোরকা পড়ুক না হয় ন্যাংটা হয়ে থাক, সেটা নিয়ে বাৎচিত, নানা রকমের মানুষ নিয়ে কর্মরত এদের মতো মানুষদের আসলে মানায়ও না! কিন্তু এখানে উনি-ই আগের প্যারার বলা কথা ভুলে গিয়ে কি বললো এটাঃ

অন্য পেশার কথা জানি না, বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে কর্মরত নারী সাংবাদিকরা অ্যাসাইনেমেন্টে গেলে ট্রাইপড বহন করতে হয়। ইদানীং লাইভ করার জন্য বড়সড় ব্যাকপ্যাকও বহন করতে হয়। তাই আমার সেই সহকর্মী শাড়ি-বোরকা পরে অফিসে এলে আমি তাঁকে অ্যাসাইনেমেন্টেই যেতে দেব না।


এখানে কি পোষাক পরার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হলো না? আপনাদের অনেক মহিলা সাংবাদিকের অনেক ছবি এখনও দেখি এবং আগেও দেখেছি – যেখানে সেসব মেয়ে কর্মীরা শার্ট/জামার নীচে কি পড়েছে, তাও স্পষ্ট বোঝা যায়! এছাড়াও দেশের গুলশান-বনানী বা অন্য পেশার সম্বন্ধে আপনার জ্ঞান না থাকলে – ওখানে আপনাকে ওরা কি কাজে নিযুক্ত করে রেখেছে? মেয়েদের গণহারে শার্ট-প্যান্ট পড়ানোতে উদ্বুদ্ধ করার বক্তব্য দেয়ার জন্য নিয়োগ দিয়েছে? আর ব্যাকপ্যাক আর ট্রাইপড এর জন্য শার্ট-প্যান্ট মান্ডেটোরী মনে হয়েছে আপনার? এ ছবিগুলোয় দেখুন তোঃ







এদেরকে কেউ জোর করে নি এসব পড়তে, আপনাদের মহিলা কর্মিদের চাইতে অনেক ভারী কাজে নিয়োজিত অথচ কতো সভ্য ও শালীন! পুরুষ সহকর্মীরাও এদের হেনেস্তা করে না; অথচ সংবাদ এবং মিডিয়ার শার্ট-প্যান্ট পড়া অনেক মহিলা কর্মীদের স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অফিসে বসে সেক্স, আর মনোমালিন্য হলে সেসবের কৃত-ভিডিও ফাস - এদেশের সবারই জানা! আর সর্বশেষ ছাগলের মতো কি বললেন এটাঃ

জিন্স পরা মেয়ে দেখলেই ধর্ষণ করতে ইচ্ছা করে, এমন অসুস্থ পুরুষের সংখ্যা বাংলাদেশে কম, অনেক কম। এখন এই অসুস্থ পুরুষদের কামনা থেকে বাঁচাতে আমরা যদি দেশের সব মেয়েকে বোরকায় বন্দী করে ফেলি, সেটা তো কাজের কথা হতে পারে না। জুতা আবিষ্কারের মতো রাজার পায়ে যাতে ধুলা না লাগে, তা করতে গিয়ে কি আমরা জগৎ ধুলোকাদাময় করে ফেলব! তার চেয়ে ভালো, সেই অল্পসংখ্যক ধর্ষকামী ও বখাটেদের হয় নিজ বাসায়, নইলে হাসপাতালে, নইলে কারাগারে রাখা।


এটা আপনার শিশুসুলভ হাসির মতোই একটা শিশুসুলভ অভিমত! যৌক্ষুধায় কাতড়ানো স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটির তরুনদের মধ্যে একটা জরিপ করে ফেলেন তোঃ যারা ফ্রী-সেক্সে জড়িত নয়, তাদের মধ্যে ঐরকম পোষাক কোন উন্মাদনা সৃষ্টি করে কি-না?

সর্বশেষ আমার মনে হয়, x-rated পোশাকে অভ্যস্ত সামান্য কিছু মেয়েদেরকে তাদের বাসায়, হাসপাতালে নইলে কারাগারে ভরে রাখলে এবং সেই সাথে হিন্দী-মুভি ও চ্যানেলগুলো বন্ধ করলেঃ দেশে ধর্ষন এবং উত্যক্ত করার হার কম করে হলেও ৭০%-৯০% কমে যাবে! এবং সেই সাথে মাসে ৩০ দিন-ই ফিট পুরুষদের যৌন-চিন্তা না এসে, কাজে ভালো মনোঃযোগ আসবে! মেয়েদের উপর তো আবার ন্যাচারাল-বার রয়েছে, মাসে ৭/১০ দিন, সিজোনালী ৬ মাস তো তারা কাজ করতে গেলে কষ্ট পায়!

ইউ.এস.এর কোর্টে এক মেয়ে নাকি বুক খুলে, দুধ বের করে বাচ্চাকে খাওয়ানো শুরু করার পর বিচারক তাকে কোর্ট থেকে বের করে দিয়েছিলেন – অশালীন আচরণের জন্য, আর সেই মেয়ে আহাজারী করেছিলো – হায়, আমাদের যদি সুযোগ থাকতো ঘরে বসে দুধ খাওয়ানোর! পরে বিচারক বুঝতে পেরেছিলো এর এই আচরনের জন্য সমাজ ব্যবস্থাই দায়ী, তাই সে মেয়ের কাছে মাফও চেয়েছিলেন! – পত্রিকাতেই পড়েছিলাম ঘটনাটা!

বিষয়: বিবিধ

১৩৬২ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

269054
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:৪৫
এ এম ডি লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:২৬
212950
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকেও
269061
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৬:৪১
শেখের পোলা লিখেছেন : কাদের কি বলেন৷ ওরা ছাতিধরা বোঝে৷
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:২৬
212951
বুড়া মিয়া লিখেছেন : হুম, অনেক সময় পার করা অভিজ্ঞতা-সম্পন্ন মানুষ আপনি, আসলেই ভুল বলেন-নি ...
269084
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:২১
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ।
ভালো লাগলো।
যে বুঝে না, তাঁকে চেষতা করা যেতে পারে বোঝানোর- কিন্তু মনে হয় না সে বুঝবে। কারণ এরা সব কিছু একটু বেশী বুঝে বসে তো।
শুভেচ্ছা রইলো অনেক অনেক।
জাজাকাল্লাহু খাইর। Rose Rose Rose Thumbs Up Thumbs Up Good Luck Good Luck
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:২৭
212953
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন মামুন ভাই, ধন্যবাদ আপনাকেও
269085
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:২১
আহ জীবন লিখেছেন : উনার পুরো বক্তব্যটাই স্ববিরোধী। পোশাক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বেক্তি স্বাধীনতার উপর খুব জোর দিয়েছেন। সেই বেক্তি স্বাধীনতার দোহাই দিয়েই যদি বলি "ধর্ষকরা যদি বলে আমার মন চাইছে ভালো লাগছে তাই আমি ধর্ষণ করছি।" এখানে তার বেক্তি স্বাধীনতা কেন হরন করা হবে?

আপনার আগের লিখায় বলেছিলেন 'এক্স রেটের' উপর উঠে গেলে ভায়াগ্রা দিয়া কাজ চালাইতে হয়। এই লোক ওই পর্যায়ের।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:২৮
212954
বুড়া মিয়া লিখেছেন : সেটাই, এদের পর্যায় নিয়ে আগের পোষ্টে আলোচনা করায়, এখানে আর বলি নি ...
269094
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৪৪
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মহিলাদের প্রতিটি অঙ্গকে আল্লাহ সম্মানিত ও আকর্ষনীয় করেছে। ঠিক একটি গোলাপের প্রতিটি পাপড়ির যে আবেদন সেভাবে। এখন কেউ যদি নিজেই নিজের পাপড়ি গাছের নিচের ঝোপ-ঝাড়ে আর কাদায় ফেলে একাকার হতে চায়, সেটা তার মানসিকতার ব্যাপার। সে নিজেই অপমানিত হবে এবং জগতে ফুলের কদর চলে যাবে। অনেক ধন্যবাদ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:২৯
212956
বুড়া মিয়া লিখেছেন : সত্যিই বলেছেন টিপু ভাই; অনেক ছেলে-মানুষকে পাপে নিযুক্ত হতে দেখেছি, তবুও তারা এই রকম মন মানসিকতার মেয়েদের সাথে কম্প্রোমাইজ করে না তারা ..
269103
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০০
বিন হারুন লিখেছেন : ওরা জেগে ঘুমায় তাই ওদের জাগানো যায় না. ওরা লেঙটু মড়ার্ণ বলে কথা Winking
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৩০
212957
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ঠিক বলেছেন, ধন্যবাদ আপনাকে ...
269405
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৫:১৫
সাদাচোখে লিখেছেন : উপভোগ্য যুক্তি। মাশাআল্লাহ্‌। ছবিগুলো লিখার সাথে চমৎকার এক্সপ্রেশান তৈরী করেছে।

আমি যখন আপনার লিখা পড়ছিলাম এবং বিশেষন হিসাবে 'দায়িত্বশীল' দেখে অবচেতন মনে সম্ভবতঃ এক্সট্রা এলার্ট হয়েছিলাম। কিন্তু একটু পড়তে না পড়তে একই লিখায় ভদ্রলোকের এমন কন্ট্রাডিক্টরী স্টেইটমেন্ট পড়ে লিটারেলী মনে হল আপনার 'দায়িত্বশীল' বিশেষনটি মূলতঃ 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' লেভেলের কিছু একটা হলে ভাল হত।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:২৯
213235
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আবারও ধন্যবাদ সাদাচোখ ভাইয়াকে, আশাকরি এর পর থেকে এরকম ক্ষেত্রে সেরকম ব্যবহার করবো।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File