তোমরা শাড়ি-চুড়ি পড়লেই এমনটা আর হবে না!

লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:১৯:৩৮ রাত

এই সংবাদ-টা দেখে একটু ভাবনায় পড়ে গেলাম যে, আমার চাইতে বেশি বয়সীরা আদৌ কি লেখা পড়া করেছে? এমন বলে কিভাবে? এটাতো ক্লাস ১০ পাশ সবারই বোঝার কথা! কিভাবে ক্লাস টেন পাশ সবার বোঝার কথা তা এখন দেখবোঃ

আমাদের দেশের আর্টসের (মানবিক বিভাগের) যে পোলাপানগুলো রয়েছে তারা মনে হয় ক্লাস ৯-১০ এ অথবা ১১-১২ তে একটা কন্সেপ্ট পড়ে, সেটা হচ্ছে Law of Diminishing Marginal Utility বা ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগ তত্ত্ব। এ তত্ত্ব বোঝাতে গিয়ে সব টিচাররাই খাবার দাবারের উদাহরণ দিয়ে থাকে। যেমন কেউ যদি প্রচন্ড পিপাসার্ত থাকে তবে প্রথম গ্লাস পানি তাকে যে উপযোগ বা স্যাটিশফেকশন দিবে, পরের গ্লাস তার চাইতে কম দিবে, তার পরের গ্লাস তার চাইতেও কম এবং .... এভাবে কমতে কমতে পানি আর পান করতে পারবে না, উল্টো বমি করবে এবং সর্বশেষ পানি খাওয়ার কথা শুনলে পিপাসার্ত দৌড়ে পালাবে। এটাকে অনেকে শুধুই ইকোনোমিক কন্সেপ্ট বলে উড়িয়ে দিতে চাইলেও, তা সম্ভব না এর বাস্তবিক কিছু উদাহরণ আমরা চিন্তা করলেই দেখতে পাবো, এবং মনে হচ্ছে এভাবে করাও উচিৎ।

যেমনঃ আমাদের দেশে নাকি অনেক ইভটিজার রয়েছে (আসলে নাই, বানানো হয়েছে); যদি পত্র-পত্রিকায় খেয়াল করি, তবে দেখা যায়, এইসব ইভটিজারদের বয়সঃ স্কুলগামী থেকে শুরু করে বিবাহের আগ পর্যন্ত বয়সের পোলাপান। ভদ্র আর বান্দর যে ধরনের পোলাপানই হোক না কেন, ঘরের কোনায় মোবাইল-নেটে বসে বা প্রকাশ্যে রাস্তায় ঐ বয়সের সবাই কম-বেশী ওসব করে, কারোটা প্রকাশ হয়ে হামলা-মামলা হয়, কারোটা সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধান বা এড়িয়ে গিয়ে উড়িয়ে দেয়া হয়; আর এসব আমাদের সমাজে সেইসব বয়সের পোলাপানের বয়সের দোষ হিসেবে সবার কাছেই অনেক আগে থেকেই বহুল সমাদৃত এবং পরিচিত। এদের মধ্যে এগুলো করার হার এতো বেশী হলো কেনো? তা নিয়ে আগের থেকেই দেখতে দেখতে আসবোঃ

আমাদের বয়স যখন ৬-১২/১৩ ছিলো, সেসময় আমরা তো ছেলে-মেয়েরা একসাথে অনেক ধরনের খেলাধুলা করতাম (কানামাছি, বৌচি, গোল্লাছুট, ইত্যাদি), খেলায় অনেক সময় না পারলে মেয়ে বন্ধুরা আমাদের জাপ্টিয়ে ধরে এবং পারলে ফেলে দিয়ে জিততে চাইতো আর নইলে আমরা শক্তিমান ছেলেরা ওদের চেপে ধরে ফেলে দিয়ে বা ধাক্কিয়ে সরিয়ে দিয়ে খেলায় জয় লাভ করতামঃ তখন কারোই যৌনতার চাহিদা ছিলোও না, আর বুঝতামও না, বিধায় সেসব জাপ্টাজাপ্টি - ধর্ষনের চেষ্টা বা ইভটিজিং কোনটার আওতায়ই পড়তো না! এবং সে বয়সের মধ্যে এখনো পড়ে না। ।

এর পর শুরু হলো যৌনানুভুতিঃ ছেলে-মেয়ে দু-দলের মধ্যেই, আর সামাজিক ও ধর্মীয় অনু/বহিঃশাসন ব্যবস্থার কারণে আমাদের অবাধ খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেলো; সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন ফাইভ-পাশ সচেতনরাও এমনটা বন্ধ করে, কেননা তারা ব্যাপারগুলো সে বয়সে অনুভব করে এসেছে। যৌনানুভুতি নিয়ে এলো ছেলে এবং মেয়ের দৈহিক চাহিদা, আর ওরা নিজেরাই এর যোগান। আর আমরা সবাই-ই জানি চাহিদা-যোগানে হাতাহাতি করলে বাজার কি হয়! এখানে হাত দিলে বাজার অস্থির এমনকি মারামারি-হাঙ্গামাও হয়; আমাদের ইভটিজিংও ঐরকমই আর কি!

এবার চাহিদা আছে ছেলে-মেয়ে সবার, কিন্তু কিছু বিজ্ঞভাবধারী অজ্ঞরা যোগানে বা-হাত ঠেলে দিলো, এখানে মার্জিনাল-ইউটিলিটি-রুল এ্যাপ্লাই না করার কারণে ছেলে এবং মেয়েগুলো চাহিদা মেটাতে না পেরে হয়ে যায় উন্মাদ; তাই ঐ বয়সে ছেলে মেয়েরা ঐরকম আচরণ করে রাস্তাঘাটে প্রকাশ্যে বা ঘরের কোনায় বিভিন্ন টেকনিকে। যারা বিবাহিত, তাদের মধ্যে একান্ত দুশ্চরিত্র/ত্রা ব্যতীত কারো মধ্যেই এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় না, কেননা চাহিদার সাথে যোগান আছে। এখানেও নারীবাদী-চামারদের জ্বালায় নারীদের বেশি আস্কারা দেয়ায় ঐ বয়সে মেয়েরা করলে কোন দোষই দেখা হয় না, সব দোষ ঐ বয়সের ছেলেদের উপরে চাপিয়ে দিয়ে – ছেলেদেরকে মানসিক-বৈকল্যের মধ্য ঠেলে দিয়ে অকার্যকর পুরুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। তাছাড়া আমাদের সময় চাহিদা আরও বেগবান করার জন্য ইনপুট হিসেবে হিন্দী-চ্যানেল বা ঐরকম প্রকাশ্য উলঙ্গপনা ছিলো না বিধায় আমরা এ যুগের পোলাপানদের মতো রাস্তা-ঘাটে এতোটা ক্ষিপ্র হিসেবেও তৈরী হইনি।

সংবাদের ঐ লোক যে সেখানে বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিলো যে, এই বয়সের মেয়েরা অনেক দেশে স্কার্ট-টপ্স পড়ে স্কুলে-বাইরে গেলেও সেখানে কিছু হয় না! আমার ধারনা, ও সেখানের অবস্থা নিশ্চয়ই জানে না, আর যদি জেনেই থাকে তাহলে ও অন্য কোন ভন্ডামীর জন্য এগুলো বলেছে এখানে। জাপানে ১৬-১৮ বছরের একটা মেয়ে প্রকাশ্যে যে কয়টা মানুষের পুরুষাংগ শরীরে প্রবেশ করায়, আমাদের দেশের বা অনেক মুসলিম দেশের মেয়েরা স্বপ্ন বা কল্পনায়ও অতোগুলো দেখতে পারে না; জাপানের অবস্থা পশ্চিমা দেশগুলোতেও। এখানে কি হলো ব্যাপারটা?

ওই বয়সের ছেলে-মেয়েদের দৈহিক চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে সেক্স বা এর যোগান ফ্রী করে দিচ্ছে – আর এতে সেই বয়সের ছেলে-মেয়েদের সে ডিমান্ড ফুলফিল হয়ে বা মার্জিনাল ইউটিলিটি কমতে কমতে বমি বমি ভাব হয়ে যায় বিধায় – ছেলে-মেয়েরা উলঙ্গ হয়ে ঘুরলেও ওদের কারও কোন সমস্যা হয়না, আর টিজিং এর তো প্রশ্নই আসে না ; তাছাড়া তাত্ত্বিকভাবেও তো প্রমাণিতই যে, এমন পরিবেশে ওসব সমস্যা হবার কথাও নয় – এটা মনে হয় অনেকের মাথায়ই ঢুকে নি। যদি সত্যিই না ঢুকে থাকে, তবে ক্লাস এইটে ভর্তি হয়ে মাল্টি-ভ্যারিয়েবল না হলেও বাই-ভ্যারিয়েট ক্যালকুলাস হাতে-কলমে কিছু দিন করা উচিৎ তাদের, আর সেখানে ভ্যারিয়েবল হিসেবে ঐ বয়সের ছেলে এবং মেয়েদের কল্পনা করতে হবে তাদের (মেয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর ছেলে ডিপেন্ডেন্ট ভ্যারিয়েবল হিসেবে) এবং একজনকে কোন অবস্থায় উপস্থাপন করলে (চাহিদা থাকা সত্ত্বেও যোগান বন্ধ রেখে, কনষ্ট্যান্ট আর কি!) আরেকজনের কি হবে – তা নিয়ে অবশ্যই মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে ওদের, কারণ আজব হলেও এগুলো তারা এ বয়সে এসেও বুঝতেছে না!

এটা আমরা সবাই-ই চাই যে, আমাদের দেশে পোলাপানের ঐ বয়সে যাতে কোন সমস্যা না হয় এবং ওরা যাতে ঐ টিজিং বা ধর্ষনে না যায়। উপরে তো বলেছিই জাপানী/পশ্চিমারা ফ্রী-সেক্সের মাধ্যমে এর সমাধান করেছে; আর এটা অসামাজিক বিধায় এটা তাদের ওখানে নতুন নতুন সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করেছে! তবে আমরা যেহেতু জেনেছি যে ওই ষ্টাইলে সামাজিক সমস্যা হবে, তাই ওই বয়সের চাহিদার জন্য ফ্রী-সেক্সের মাধ্যমে যোগানের বদলে বাল্য-বিবাহে উৎসাহ বোধ করি এবং দেই-ও, আর এ ছাড়া আসলে কোন উপায়ই নাই!

বাল্য-বিবাহের কথা বললেও এদের আবার সমস্যা হয়ঃ আসলে এদের মূল দাবী কি? ফ্রী-সেক্স এ পরোক্ষভাবে ঠেলে দেয়া? একেকবার মনে হয় এদের আসলে কোন দাবীই নাই – কেউ তাদের খাওয়া-পড়ার জন্য ২/৪ পয়সা দিচ্ছে, তাই তার/তাদের ইচ্ছার বাস্তবায়নে কিছু বলে আর কি – নিমক হারামতো হতে পারে না মনে হচ্ছে এরা, তাই নুন খায় যার গুন (আসলে দোষ) আমদানী করতে চায় তার ...

আরেকটা সমাধান আছে, এদের মতো ছেলে-মানুষ সব চুড়ি-শাড়ী পড়ে ঘরের কাজে এবং বাচ্চা পালনে মনোযোগ দিয়ে ঘরের কোনে বসে ঝিমানোর দুর্দান্ত দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে অন্য ছেলেদেরও তাতে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে, মেয়েরা রাস্তায় উলঙ্গ হয়ে ঘুরলেও তখন আর কোন সমস্যার সৃষ্টি হবে না। আমি আশা করি বাল্যবিবাহে তোমরা এগিয়ে না আসলে – অন্তত শাড়ী-চুড়ি পরে ঘরের কোনে এগিয়ে যাবে ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত হয়ে ...

বিষয়: বিবিধ

১৭৪৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

268739
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫১
আফরা লিখেছেন : দূর্দান্ত লেখা । এর পরো ইউরোপে ইভটিজিং আছে । আমি এখানে স্কুল কলেজ পড়েছি এখনো পড়ছি আমি জানি ।

তবে এরাও শালীন মেয়েদের সমীহ করে । সেই কারনে কখনো ইভটিজিং এর স্বীকার হয়নি ।
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৯
212446
বুড়া মিয়া লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো, আফরামনির দৃষ্টিতে ড্যানিশ-কালচার জানতে পারায় ...
268744
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১০:৩৮
ফেরারী মন লিখেছেন : আফরা লিখেছেন : দূর্দান্ত লেখা । এর পরো ইউরোপে ইভটিজিং আছে । আমি এখানে স্কুল কলেজ পড়েছি এখনো পড়ছি আমি জানি ।

তবে এরাও শালীন মেয়েদের সমীহ করে । সেই কারনে কখনো ইভটিজিং এর স্বীকার হয়নি ।

সহমত
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৯
212447
বুড়া মিয়া লিখেছেন : বুড়া মিয়া লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো, আফরামনির দৃষ্টিতে ড্যানিশ-কালচার জানতে পারায় ...
268801
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০১:৩২
কাজী লোকমান হোসেন লিখেছেন : আসলে একটা সত্যি কথা বলি বলি করে বলা হয়না , হয়তবা বললে তেমন অনেকে ঠাট্টার চলে এড়িয়ে যাবে , কিন্তু এটাই বাস্তব সচেতনামুলক পোস্ট সবাই এড়িয়ে যায় , হোক সেটা ফেসবুকে / ব্লগে , অনেক ধন্যবাদ দাদা , প্রিয়তে নিয়ে গেলুম , Rose Rose Rose Rose Rose Rose Rose Rose
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:১২
212636
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ধন্যবাদ লোকমান ভাইকে ...
268817
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৫৭
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : অর্থনীতির পাশাপাশি সমাজ বিশ্লেষক হিসেবে আপনার এই লিখাটিও বাস্তবায়তাকেই তুলে ধরেছেন!

শেয়ার করার জন্য শুকরিয়া Good Luck
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:১২
212637
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকেও ...
268857
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৬:৫৮
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার লিখেছেন। ধন্যবাদ।
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:১২
212638
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ...
268882
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:১৪
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : একেকবার মনে হয় এদের আসলে কোন দাবীই নাই – কেউ তাদের খাওয়া-পড়ার জন্য ২/৪ পয়সা দিচ্ছে, তাই তার/তাদের ইচ্ছার বাস্তবায়নে কিছু বলে আর কি – নিমক হারামতো হতে পারে না মনে হচ্ছে এরা, তাই নুন খায় যার গুন (আসলে দোষ) আমদানী করতে চায় তার ...

আপনার এই কথাটি অসম্ভব ভাল লেগেছে!!!! বুড়া মিয়া আপনার জন্যো দুঃখ হয়, চাইলেও আপনি টীজ করতে পারবেন না, আর বুইড়া বলে টিজ করেও লাভ নাই! সমবেদনা।
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:১৫
212641
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আরে গাজী ভাই, এখন দেখি দাড়ি-ওয়ালা বুইড়াদেরকেও শার্ট/গেঞ্জী-প্যান্ট পড়া মাইয়ারা কি যেন ইশারায় বুঝাইতে চায়! কিন্তু ঐসব মাইয়াদের এরকম করাকে প্রগতিশীলতা হিসেবে দেখা হয়, টিজিং এর আওতায় পড়ে না এটা!

ধন্যবাদ আপনাকেও

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File