অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা - ৯
লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৮:০৩:৩৯ সকাল
এর আগের বেশ কয়েকটা প্রতিযোগিতার পোষ্টে শুধুই আভ্যন্তরীন তুলনা এবং নিজের মত মতো বিশ্লেষন করা হয়েছে, এবার সমগ্র মুসলিম দেশগুলোর সাথে অন্যান্য কিছু দেশ এবং এলাকার তুলনা করবো। জি.ডি.পি, ইম্পোর্ট এবং এক্সপোর্ট এর ক্ষেত্রে দেশগুলোকে ৭ টা ভাগে ভাগ করবো এবং নেট-মাইগ্রেশন এর ক্ষেত্রে ৮ টা ভাগে ভাগ করবো। এখানকার সবকিছুই ওয়ার্ল্ড-ব্যাংক অথবা ইউ.এন.ষ্ট্যাটিক্টিকস এর। জি.ডি.পি, ইম্পোর্ট এবং এক্সপোর্ট এর মধ্যে কিছু কাটা-ছেড়া করা হয়েছে, তা হচ্ছেঃ
সোভিয়েত রিপাবলিক, চেকোস্লোভাকিয়া, যুগোস্লাভিয়া এবং ইথিওপিয়া ভেঙ্গে যে ২৬ টা দেশ হয়েছে, সেক্ষত্রে ১৯৯০ সাল থেকে এ ৪ টা দেশের সম্মিলিত বাদ দিয়ে ২৬ টা দেশের আলাদা আলাদা ডাটা নেয়া হয়েছে; সোভিয়েত ভেঙ্গে যে ১৫ টা দেশ হয়েছে ইম্পোর্ট-এক্সপোর্ট এর ক্ষেত্রে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এগুলোর সম্মিলিত বা আলাদা কোন ডাটা নেই এ তথ্যে, তবে সম্মিলিত জি.ডি.পি রয়েছে; চেকোস্লোভাকিয়ার ক্ষেত্রে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সম্মিলিত বা আলাদা ইম্পোর্টের ডাটা নেই, তবে ১৯৯০ এর পর থেকে চেক এবং স্লোভাকিয়ার আলাদা আলাদা ইম্পোর্ট রয়েছে। সুদানের ক্ষেত্রেও সম্মিলিত বাদ দিয়ে ২ টা দেশকে আলাদাভাবে দেখানো হয়েছে ২০০৮ থেকে। ইয়েমেন এর ক্ষেত্রে ১৯৮৯ সালের আগ পর্যন্ত ডেমোক্রাটিক এবং আরব রিপাবলিক আলাদা দেখানো হয়েছে এবং এর পর থেকে সম্মিলিত।
১৯৭০ সাল থেকে ২০১২ সালের উপাত্তগুলো থেকে প্রতি ১০ বছর পর পর নেয়া হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০১২ সালেরটা দেয়া হয়েছে। এখানে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই তাদের ২৮ টা দেশ নেয়া হয়েছে, যেগুলোর উপাত্ত সেখানে আছে নেয়া হয়েছে, যেগুলোর নেই তা বাদ; চায়নার মধ্যে ম্যাকাউ এবং হংকং-কেও ধরা হয়েছে; মুসলিম দেশগুলো বলতে এখানে যেসব দেশে ৫০% এর বেশী মুসলিম রয়েছে সেরকম ৪৭ টা দেশ; এছাড়া Other এর মধ্যে রয়েছে উল্লিখিতগুলো ছাড়া ১৩০ টা দেশ। প্রথমেই আমার মতো করে এলাকা ভাগ করা জি.ডি.পি দেখবোঃ
এখানে দেখা যাচ্ছে ইউ.এস.এ প্রতাপের সাথে এগিয়ে চলছে এবং তার সাথে যোগ দিয়েছে ই.ইউ; চায়না এবং জাপানও এগিয়ে যাচ্ছে, আর রাশিয়া ২০০০ সালে কোমর-ভাঙ্গা অবস্থা থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মাত্র দৌড়-ঝাপ শুরু করেছে, অন্যান্য সব দেশ মিলে মোটামুটি ইউ.এস.এ এর কাছে আছে আর মুসলিমরা গোনার বাইরে! এখানে যেসব দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তারা মূলত তাদের প্রাইস-লেভেল এর কারণে এবং টেকনোলোজী ও হাই-টেক ইক্যুইপমেন্ট এবং সার্ভিস বেচা-কেনা দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগুলোর প্রাইসিং-ই এদেরকে এগিয়ে রাখতে সহায়তা করছে, প্রোডাক্ট/সার্ভিসের কুয়ান্টিটি বা ভলিউম না, তা নিশ্চিত! এবার দেখবো এক্সপোর্টে কে কি অবস্থায় আছেঃ
এখানে দেখা যাচ্ছে ইউ.এস.এ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে এবং ই.ইউ, চায়না, অন্যান্য দেশও তার চাইতে এগিয়ে রয়েছে; আর মুসলিমদের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছেঃ তবে তা প্রচুর শ্রমের বিনিময়ে মালামাল ডেলিভারী দিয়ে নাকি কম শ্রমে তৈরী অনেক মূল্যের জিনিস দিয়ে, তা নিশ্চিত না হলেও বলা যায়ঃ এখানেও মুসলিমরা মাথার চাইতে গতর-ই খাটাচ্ছে বেশী এবং তেল-সমৃদ্ধ দেশের তৈল মেরেই এগিয়ে আছে। এবার দেখবো ইম্পোর্টঃ
ইম্পোর্টে ইউ.এস.এ এক্সপোর্টের চাইতে বেশি এগিয়ে যাওয়ায় বেশ কিছুদিন যাবত কারেন্ট এ্যাকাউন্টে মার খেয়ে চলছে, তবে এটা কোন সমস্যা না – মাইগ্রেশনের ক্যাপিটাল ট্র্যান্সফার এবং ফাইনান্সিয়াল ইনভেষ্টমেণ্ট রয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে! এখানেও দেখা যাবে মুসলিমরা বিলাসী পণ্য, আরাম আয়েশ এবং হাই-টেক যন্ত্রপাতি বেশী ইম্পোর্ট করছে। রশিয়াকে মোটামুটি প্রোডাকশন এবং ট্রেডেও ভালোই দেখা যাচ্ছে – এই জন্য মনে হয় ও এখন ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বাদ দিয়ে আরেকটা নিয়ে মেতেছে আর অন্যান্য সবাই মিলে অবরোধ নিয়ে ওর পিছনে লেগে গেছে, সরাসরি ওরা মারামারিতে নামলেই পারতো, কিন্তু নামলো না এখনও ... দেখা যাক কি হয় শেষ পর্যন্ত! এবার মুসলিম দেশগুলোর ট্রেড আবার দুইভাগ করে দেখবোঃ কারা ট্রেডে সারপ্লাস এবং কারা ডেফিসিট নিয়ে আছে, ২০১২ তে যারা সারপ্লাস ছিলো তাদেরকে এক দলে, আর এই সালেই যারা ডেফিসিটে ছিলো তাদেরকে আরেক দলেঃ
এখানে সারপ্লাসের দলে বা Muslim2 তে রয়েছে ১৯ টা দেশ এবং বাকীরা ডেফিসিট নিয়ে Muslim1এ, সারপ্লাসের দলে নিকটবর্তী কুয়েতের চাইতে দ্বিগুনেরও বেশী এগিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে সৌদি, এ দুজন ছাড়া উল্লেখযোগ্য – কাতার, ইউ.এ.ই, মালয়শিয়া, কাজাখস্তান, ইরান, ইরাক, আযারবাইযান। ডেফিসিট এর দলে পেছনের দিক দিয়ে সবচাইতে এগিয়ে রয়েছে তুরস্ক এবং সেটা তার নিকটবর্তী মিশরের চাইতে দ্বিগুনেরও বেশী, এখানে উল্লেখযোগ্য অন্যান্যের মধ্যে – পাকিস্তান, মরোক্কো, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, লেবানন, বাংলাদেশ, আফঘানিস্তান, সুদান। এ গেলো প্রোডাকশন এবং ট্রেড; এবার দেখবো মানুষ কিভাবে ছুটছেঃ
এখানে দেখা যাচ্ছে ইউ.এস.এ, ক্যানাডা, ই.ইউ, জাপানে এ যাবত কালে লোক ভেগে যাওয়ার চাইতে আশ্রয় পেয়েছে বেশি, মানে আদমও ইম্পোর্ট এবং সাথে ডলার/ইউরো/ইয়েন ইত্যাদীও, আর ওরা নিজেরা ঘর না ছেড়ে ঘরেই বসে বসে কাজ করে যাচ্ছে। রাশিয়া থেকে শুরুতে পালালেও এখন আবার আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে দেখা যাচ্ছে, আর চায়নীজরা শুরু থেকেই দৌড়ে পালাচ্ছে দেখা যাচ্ছেঃ তবে কি মতলবে ওরা দৌড়ায় তা সহজে অনুমান করা যায় না! মুসলিম দেশগুলোকে এখানেও দুইভাবে ভাগ করা হয়েছেঃ
এসময়কালে যাদের দেশে আশ্রয় বেশি পেয়েছে এবং ভেগেছে কম তাদেরকে Muslim2 এর দলে এবং এখানে রয়েছে ১৩ টি দেশ, আর বাদবাকীরা দেশ ছেড়ে যাওয়ার Muslim1 দলে। যেসব দেশ বেশী লোক আশ্রয় দিয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম ইউ.এ.ই এবং এর পরেই রয়েছে সৌদী, এছাড়াও এ দলের উল্লেখযোগ্য অন্যরা হচ্ছে – মালয়শিয়া, কাতার, ওমান, কুয়েত, লেবানন, জর্ডান, বাহরাইন, ইরান; তবে বিগত কিছু বছর যাবত ইরান ছেড়ে যাচ্ছে হাজার হাজার লোক।
এ হচ্ছে সামগ্রীক অবস্থা, মুসলিমদের জন্য মনে হয় দেশ ছেড়ে গিয়ে দোয়াই খালি করা উচিৎ আমাদের সবারই, কেননা এক দিকে এখানে না খেয়ে মরছি আমরা আবার মারামারির জন্য কঞ্চি-বাশও রেডি করতে পারছি না! বেশীরভাগ মুসলিম দেশের নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণও ইউরোপ-এ্যামেরিকায় চলে গেলো – বাকী আমরা যারা দুর্ভাগা রয়েছি দেশে দেশে, মাছি মারা আর ওদেরই গোলামী ছাড়া আর কিছু মনে হয় করার নাই আমাদের!
বিষয়: বিবিধ
১৫০৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু চিন্তা করি - আমাদের চাইতে ভালো লোক এবং টেকনোলোজীতো ওদের আছেঃ আমাদের নিয়া কি করবে ওরা?
http://www.cic.gc.ca
কানাডার কয়েকটা জব সাইটের লিঙ্ক দিলাম। লাভ নেই তবু ‘যদি লাইগ্যা যায়’ এই হিসেবে দেখতে পারেন।
http://www.workopolis.com
http://www.jobbank.gc.ca
ca.indeed.com
http://www.monster.ca
আপনি একেবারে নিরেট সত্য কথাটিই বলেছেন! অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন