দেশের ছেলে ও মেয়ের আদর্শিক পার্থক্য
লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:২৭:৪৪ রাত
অনেকদিন যাবত নারী-বিষয়ক আলোচনা বা কমেন্ট থেকেও দূরে ছিলাম, এখন মনে হলো একটু করা উচিৎ আবার। কিছু ঘটনার আলোকে আমার নিজের অভিমত দিবো দেশের নারী এবং পুরুষদের মানসিকতা ও চরিত্র এর ব্যাপারে।
আমাদের দেশে ছেলেদের জন্য একটা প্রতিযোগীতা হয় এবং সেখানে অল্প কিছু ছেলেরা নেংটী পড়ে সারা শরীরে চুপচুপা তৈল মেরে শরীর ফুলিয়ে-ফাপিয়ে নানারকম অঙ্গভঙ্গী করে ক্যামেরার সামনে পোজ দিয়ে হতে যায়ঃ মিষ্টার বাংলাদেশ; জানামতে দেশে এ প্রতিযোগিতা বেশ পুরোনো; তবে এতে বেশিরভাগ ছেলেদের মধ্যে তেমন কোন চাঞ্চল্য দেখা যায় না এবং তারা এসবে মাতে না – তাই এর আলোচনা এবং প্রচারণা কোনটাই খুব বেশি হয় না এবং এ নিয়ে মনে হয় এর আয়োজকরাও হতাশ, তাই সরব-চঞ্চল প্রচারণা দেখা যায় না।
একইভাবে আমাদের দেশে মেয়েদের জন্য রয়েছে সুন্দরী প্রতিযোগিতা – এখানে দেখা যায় মেয়েদের মানসিক অবস্থা! তারা কে কার চাইতে নিজেকে কতো বেশী প্রদর্শন করবে এবং কতো আগে ঝাপিয়ে পড়বে তা নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে দেখা যায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এবং এর জন্য এরা মাইক্রোফোন নিয়ে টিভিতে মানুষের কাছে এবং নিজেদের বাপ-ভাই এর কাছেও ভোট ভিক্ষা করতে কুন্ঠাবোধ করে না! আর সেখানে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে কি কি হয়, তা-তো আর আমার বলতে হবে না, আশা করি সবাই জানেন।
দেশের ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে এখানে কিন্তু চরিত্রগত একটা পার্থক্য সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়! এতে করে নির্দ্বিধায় যে কোন নিরপেক্ষ মানুষ আমাদের দেশের মেয়েদের দোষ দিবে আমার মতেঃ কেননা একই প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে যেখানে ছেলেরা কোন আগ্রহবোধ করে না, সেখানে মেয়েদের এতো চাঞ্চল্য কেন? ছেলেরা এসবে আগ্রবোধ করে না বিধায় এর আয়োজকরা ছেলেদের প্রতিযোগিতা নিয়ে যতোটা না প্রচারণা চালায় তার চেয়ে বেশী মেয়েদের নিয়ে চালায় - এ কারণেই যে মেয়েরাই স্বতঃস্ফুর্তভাবে এবং সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে এতে – বলতে গেলে ডাকার আগেই তারা হাজির হয়ে যায়! এই মেয়েদের ভালো করার জন্য আর ভালো দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য কি করার আছে? ব্যবসায়ীরা তো ছেলেদেরকেও প্রমোট করতে চায় – কিন্তু পারে না, আর মেয়েদের ব্যাপারেতো বলতে গেলে - দেশের মেয়েরাই ওদের ব্যবসা সফল করে দেয়!
আরেকটা ব্যাপার ইদানীং বারবার উঠে আসে আলোচনায়ঃ সেটা হচ্ছে মেয়েদের পর্দা ও হিজাব; যেসব প্রতিষ্ঠানে হিজাব-পর্দা নিষিদ্ধ করেছেঃ একটায়ও কি সেসব মেয়েরা সেখানে প্রতিবাদ করেছে? একটা ক্ষেত্রেও কি সেসব মেয়েরা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেছে? কিংবা মেয়েদের অভিভাবকরা কি তাদের মেয়েদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে? কেউ দুঃখ নিবেন না – আমারতো মনে হয় সেসব প্রতিষ্ঠানে মেয়েদের উলঙ্গ হয়ে শিক্ষা নিতে বললেও – মেয়েরা তাই করবে কেননা, তারা এগিয়ে যেতে চায় সব বাধা পেরিয়ে!
সুন্দরী প্রতিযোগিতা আর শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ব্যাপার দুইটা আলাদাঃ তবে মেয়েগুলো আমাদের দেশেরই। একটা জায়গায় মিডিয়ায় সামান্য পরিচিতি বা কিছু টাকার জন্য লাজলজ্জা বিকিয়ে দিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় ওরা এবং নির্লজ্জভাবে নিজেরা নিজেদের সাথে প্রতিযোগিতা করে স্রষ্টা-প্রদত্ত শরীর নিয়ে – বেশ্যাদের চাইতেও নিকৃষ্টভাবে; আরেকটা জায়গায় শিক্ষার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ধর্ম-মত জলাঞ্জলী দিয়েও টিকে থেকে প্রতিযোগিতা করতে কার্পণ্য করে না!
বেশ্যাদের কথা বাদ দিলাম, যারা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে রয়েছে – তাদেরকে ভালো পরিবেশে শিক্ষা দেয়ার জন্য দেশে সেরকমভাবে কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে কি – ইসলামী চিন্তাবিদেরা, যাদের সক্ষমতা রয়েছে? যেখানে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে পর্দা এবং হিজাব রুল মেনে চলতে হবে?
আপনারা যে যাই বলেন, আমি এ ধরনের মেয়েদের নিয়ে আশার কিছু দেখি না ....
বিষয়: বিবিধ
১৬৪১ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে আজকের এইটা মনে হইছে ঠিক আছে বলা।
কয়জনে হরবে না সেটা গবেষণার বিষয় হতে পারে!!
অনেক অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
ধন্যবাদ আবু সাইফ ভাইকে
আপনার বিশ্লষণধর্মী প্রতি টা লেখাই ভালো লাগে ব্লগার বুড়া মিয়া ভাই। আজকের টাও ব্যতিক্রম নয় ভাল লাগায়।
প্রতিবাদী ভাল লাগা ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি....।
অনেক সময় পরিবারে কঠিন শাসন থাকার পরেও পারিপার্শ্বিকতার কারনে ছেলে-মেয়েরা বেয়ারা হয়ে উঠে ...
আফরামনির চিন্তাধারা অনুধাবনের জন্য, ফেরারীকেও ধন্যবাদ
একটাই উপায়ঃ এরকম প্রতিযোগিতার ডাক দিবে এবং এতে সাড়া দিয়ে যেসব মেয়েগুলো উপস্থিত হবে, তাদের প্রত্যেককে দশটা করে সন্ধি-বেতের বাড়ি দিবে পশ্চাৎ-দেশে সর্বশক্তি দিয়ে ...
মন্তব্য করতে লগইন করুন