ইসলাম কি সমাজতান্ত্রিক? না-কি ধনতান্ত্রিক?

লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:১২:২৫ সকাল

এ ব্লগের অন্যান্য ভাই-বোন যারা রয়েছে তাদের অনেকের মতো আমার ইসলামের ইতিহাসে অগাধ জ্ঞান না থাকার কারণে, এ বিষয়টা নিয়ে আসলে বলাও হয় না; তবে এখন তাদের আরও দৃষ্টিভঙ্গী জানার জন্য মনে হয় – আমার জানামতে কিছু উত্থাপন করা উচিৎ।

আমার জানামতে মুসলিমদের সমাজে যতো সম্পদ ছিলো – প্রাথমিকভাবে তা ব্যক্তিমালিকানায় এবং সেসব ব্যক্তিমালিকদেরকে দান-সাদকায় প্রচুর পরিমানে উৎসাহিত করা হতো সমাজের বৈষম্য এবং অভাবীদের অভাব দূরীকরনে। তখনকার সময় মুসলিমদের অন্যান্য সামাজিক কার্য্যক্রম ছাড়া যে কার্য্যক্রমটা লক্ষ্যনীয় ছিলো – তা হচ্ছে যুদ্ধ এবং অনেক সময়ই তা চেপে বসা যুদ্ধ এবং পরবর্তীতে দাওয়াতী যুদ্ধ, তিন অপশনের শেষটায় এসে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতো শেষ দিকে; তবে এখানে যুদ্ধ আমার মূল আলোকপাতের বিষয় নয়, আমার বিষয় সম্পদের ব্যবহার ও তার বন্টন।

আমার জানামতে দেখা যেতো সেসব যুদ্ধে অনেক নামী-দামী সাহাবীগণ যুদ্ধের সাজ-সরঞ্জাম হিসেবে প্রচুর দান করতেন – উট, ঘোড়া বা টাকা-পয়সা। এসবকে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গীকে না দেখে অনেকটা ইনভেষ্টমেন্ট-প্রোজেক্ট হিসেবে দেখবো এখনঃ এখানে সব যোদ্ধারা তাদের জান এবং মাল বিনিয়োগ করতো তাদের নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী – যে বেশী পারতো বেশী করতো, যে কম পারতো কম। বিনিয়োগের পরেই শুরু হতো অপারেশন বা রিটার্ণ আনার জন্য কার্য্যক্রম। এখানেও যে যার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করে যেতো – কেউ খালিদ-বিন-ওয়ালিদ (রা), কেউ তার চাইতে কম যোগ্যতা-সম্পন্ন। কেউ মারতো ১০ টা অপরপক্ষে অন্য কেউ মারতেই পারতো না অথবা মারতো ১ টা।

কিন্তু এ বিনিয়োগের বৈষম্য এবং কার্য্যক্রমে ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতার প্রমাণ দেয়ার পরও রিটার্ণ, মানে যুদ্ধ-লব্ধ সম্পদ – কিভাবে ভাগ এবং ভোগ করতো? এখানে মনে হয় একটা নির্দিষ্ট উপায়ে যা সমান নয়, কিন্তু সমতার ভিত্তিতে ভাগ করা হতো। এ ভাগের জন্য কার কি যোগ্যতা, কে কি বিনিয়োগ করেছে - সেসব দেখা হতো না; এখানে বড় রকমের দুইটা ভাগে ভাগ করা হতো তাদেরকে – অশ্বারোহী যোদ্ধা আর পদাতিক যোদ্ধা। যে যাই বিনিয়োগ করুক না কেন আর যার যে যোগ্যতাই থাক না কেনঃ ভাগ করা হতো ঐ দুই ভাবে। এবার যদি এই রকম আহরিত সম্পদকে তাদের সম্মিলিত জাতীয় আয় ধরা হয়, তবে সেটার রিডিষ্ট্রিবিউশনে তেমন কোন ভেদাভেদ করা হতো না – এর কারণ আমার মনে হয় টীম-ওয়ার্ক। কেননা এরকম টীম না থাকলে এগুলো আহরন সম্ভব হতো না, আর এরকম টীম কখোনোই একই রকমের অবস্থান ও যোগ্যতার লোক দিয়ে হয় না – কিন্তু এখানে যদি বিনিয়োগ এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে বিচার করা হতো, তবে যাদের বিনিয়োগ কম এবং যোগ্যতা কম তারা এতে কোন উৎসাহ বোধ করতো না এবং এতে করে কোন টীম-ই গঠন সম্ভব হতো না।

এবার আমরা যুদ্ধ বাদ দিয়ে দিলাম, ধরে নিলাম তা করবো না; অন্য যুদ্ধ করবো আমরা – সেটা হচ্ছে অর্থনৈতিক যুদ্ধ। কিছু মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলে একেকটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড়িয়ে যায় এবং সেটার ইনকাম-জেনারেশন শুরু হয়। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা যদি না থাকতো তবে সে প্রতিষ্ঠানের চেহারা অন্যরকম হয়ে যেতো, মানে ব্যবসা আর করা লাগতো না। যতো ইনকাম হয়ে থাকে সব সেই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফল এবং অবশ্যই সেখানে শ্রেণীবিভাগ থাকতে এবং করতেই হবে, এবং আল্লাহও মানুষকে শ্রেণীবিভাগ করেই পাঠাচ্ছেন যাতে এভাবে উপকার লাভ হয়।

এই মুসলমানদের ক্ষেত্রে তারা তাদের সমস্ত অর্জিত ইনকাম ভাগ করে - তাদের বিনিয়োগ এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে – এতে করে কম যোগ্যতাসম্পন্ন এবং কম সম্পদের অধিকারীদের উপর স্বাভাবিকভাবেই বিরূপ প্রভাব পড়ে – কেননা মানুষ হিসেবে সে তো তার আকাঙ্খাকে কন্ট্রোল করতে পারে না, তাই তারা জড়িয়ে যায় যে যার মতো সম্পদ আহরনের জন্য দুর্নীতিতে - এটা কোন নীতিকথায় ফেরানো সম্ভব না, আর এভাবে ভাগ করার জন্য ধর্ম ব্যবহারের প্রশ্নও আসে না; কেননা সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল কিভাবে ভাগ হয়, তা উপরের যুদ্ধ নামক ইনভেষ্টমেন্ট-প্রজেক্টে দেখা যায়। যুদ্ধকে ইনভেষ্টমেন্ট প্রজেক্ট হিসেবে বলার জন্য আমার ব্যাখ্যা হচ্ছে কল্যানের কথা – যুদ্ধ নামক ইনভেষ্টমেন্ট প্রজেক্টে রাব্বুল-আলামীন রিটার্ণ দেন, হয় শহীদি রিটার্ণ নয়তো ফাইনান্সিয়াল বা গণিমত রিটার্ণ।

আমাদের যৌথমূলধনী সব ব্যবসা এরকমেরই এক যুদ্ধের মতো করেই পরিচালিত হচ্ছে, এর জন্য নোংরামী থেকে শুরু করে, মারামারি, হাতাহাতি এবং হত্যা পর্যন্ত কোনটাই বাদ দিচ্ছে না কেউ-ই। তবে এখানে সেই মুসলমানরা যুদ্ধের রিটার্ণ বা ইনকামগুলো রিডিষ্ট্রিবিউশনে কেনো ঝামেলা করেও আবার দ্বীনদারিত্ব প্রকাশ করতে আসে? এসব মুসলমানদের মুখে কি ধর্মের নীতিকথা মানায়?

দারিদ্রতার ব্যাপারে এক ভাইয়া/আপুর এক প্রশ্নের জবাবে আমি ইনকাম রিডিষ্ট্রিবিউশনের কথা বলেছিলাম এবং মূলত সমস্যাটা এখানেই। এখানে যতোক্ষন হাত না দেয়া হবে এ বৈষম্য বা দারিদ্রতা কখোনোই দূর করা সম্ভব না!

সোজাভাবে বলতে গেলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১০ জন লোকের যুদ্ধরত একটা ব্যবসায়িক দেশ ১০০ টাকা ইনকাম করে মালিক নামক ৩ জন লোক ৭০ টাকা পকেটে ভরে ভাকি ৩০ টাকা কর্মচারী নামক ৭ জনের মধ্যে ভাগ করলে কখোনোই দারিদ্রতা যাবে? – এটাতো ক্লাস ফাইভের পাটিগণিতের ছাত্রকে করতে দিলেও সমাধানে বলবে - কখনও সম্ভব না। আর ঐ ৩০ টাকা দিয়ে সারাজীবনইতো ঐ ৭ জন কর্মচারীর নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা থাকবে। মালিকরাও তো জানে ঐ ৭ জন কর্মচারী না থাকলে তাদের রিটার্ণ আনাই অসম্ভব বিনিয়োগের জন্য যতো সম্পদই থাকুক না কেন। রিটার্ণ এনে দিলো কর্মচারী - ভোগ করলো বা করবে খালি মালিক? সে কর্মচারীর থাকা খাওয়ার দায়িত্বও তো তারা নেয় না – যেমন নিতো সে যুগের সাহাবীরা, তারা তো তাদের কর্মচারীদেরকেও নিজের বাড়িতে রেখে, নিজেরা যা খেতো তাই খাওয়াতো আর নিজেরা যা পড়তো তাই পড়াতো, তাই তাদের দুর্নীতিতে জড়ানোর মানসিকতাও গড়ে উঠার চান্স ছিলো না; কারণ তারা দেখতো যে তাদের মনিবরা তো আসলে তাদের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাই করছে। এগুলো আমার ক্ষোভ থেকে বলা – অনেক মুসলিম বড় ব্যবসায়ীকে দেখা যায় নীতি কথা বলতে – আরে বেটা তুই-ই তো নিজেই হারামখোর ধাপ্পাবাজ আমাদেরকে দুর্নীতিবাজ বলিস কেন? কোনঠাসা করে রাখার জন্য? তাও তো হচ্ছে না দুর্নিতীও বাড়ছে আর তোমাদের ধাপ্পাবাজী তার চাইতেও বেশি হারে বাড়ছে – তার মানে দেখা যায় দুর্নিতীর ধুয়া তুলে অতিষ্টদের সাময়িক চাপে রেখে ধাপ্পাবাজীর মাধ্যমে আরও বেশী মারার পলিসি হিসেবে দুর্নিতীর বিরুদ্ধে পতাকা উত্তোলিত করেছো তোমরা?

এসব থেকে সেইফগার্ডের জন্য মালিকদের জন্য ট্র্যাডিশনাল মার্কেটের বাইরেও রয়েছে ক্যাপিটাল মার্কেট; শ্রমিকরা কথা শুনবে না, বিদ্রোহ করবে? রাষ্ট্র আছে সাপোর্ট দিতে – টাকা বা ক্যাপিটাল আমার কাছে দাও ঐটার মার্কেটও আমিইতো রেগুলেট করি, কাউকে লাগবে না, পরিশ্রমও লাগবে না – এমনি এমনিই আমি রিটার্ণ দিবো সুদ দিয়ে; আর শ্রমিকদেরকে মেরে পিটিয়ে পিঠের সাথে পেট লাগিয়ে ক্ষুধাতুর করে বাধ্য করে দেবো তোমাদেরই গোলামীতে!

আমার প্রশ্ন হচ্ছে ইসলাম কি পুরো সমাজের বৈষম্য দূর করণের জন্য যেটা এবং যেভাবে ভালো হয় সে মতে সমাজতান্ত্রিক? না-কি যার ধন আছে তার আরও ধন বাড়িয়ে দেয়ার উৎসাহের জন্য ধনতান্ত্রিক?

বিষয়: বিবিধ

১৪২৫ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

264856
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪০
কাহাফ লিখেছেন : ব্যক্তির কিছু কর্মকান্ডের মুল্যায়ন ধর্মের সামগ্রিকতার উপর আরোপ করা যুক্তিযুক্ত মনে হয় না।বর্তমান ধনিক শ্রেণী আর সাহাবাদের মধ্যকার মানবিকতা আপনিই লেখায় এনেছেন,তাহলে ইসলামের উপর কিভাবে প্রশ্ন আসে......? দ্বীনের প্রয়োজনে তথা জিহাদে অর্থ ব্যয় কে ইনভেষ্টমেন্ট প্রজেক্ট নামে আখ্যায়িত করা টা বিকৃতি হয়ে গেলো না.....?
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
208460
বুড়া মিয়া লিখেছেন : প্রায় সব ব্যক্তিগুলোই এরকম; আর প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট জিনিসগুলোকে বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখতে হয় বলে আমার মনে হয়েছে – যেমন সামরিক কৌশল, সামরিক দিক থেকে, কূটকৌশল কূটনৈতিক দিক থেকে, অর্থনৈতিক লাভ-লোকসান ইনভেষ্টমেন্ট-রিটার্ণের দৃষ্টিকোণ থেকে; এভাবে না করলে জিনিসগুলো পরিস্কারভাবে বুঝতে কষ্ট হয় বলে আমার মনে হয়, এটা বিকৃতির উদ্দেশ্যে না – শুধুমাত্র এর সাথে লাভ-লোকসান সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে আমার মতে বলেছি।

মুসলিমদের যখন অর্থনৈতিকভাবে সুদিন এসেছিল তার প্রায় পুরোটাই এসেছিলো যুদ্ধলব্ধ সম্পদ থেকে। তাই আমার মনে হচ্ছে – ইসলামের অর্থনীতি এবং যুদ্ধের অর্থনৈতিক-কৌশলের মধ্যে একটা যোগসূত্র রয়েছে। আর এ লাভ-লোকসানের কথা কিন্তু আল্লাহ বলেছেনই, লাভ মানে কল্যান – হয় শহীদী নয়তো গণীমত, এটা কি ইনভেষ্টমেন্টের রিটার্ণ না?

এভাবে আমি বা অন্য কেউ বিশ্লেষন করতে চাইলে ব্যাপারটা কি ধর্মীয় দিক থেকে গর্হিত কাজ হবে?
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
208485
কাহাফ লিখেছেন : ধর্মীয় যুদ্ধ তথা জিহাদে অর্থ ইনভেষ্ট করা যায় না।ধর্মীয় বিষয় কে ধর্মীয় দৃষ্টিতেই বিশ্লেষণ করতে হবে। ধর্ম তো আর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে না। জানার পরিধি আমাদের সীমিত বলে-অনেক বিষয়ই আমার কাছে যা যুক্তিক মনে হয় তা অন্য সকলের কাছে অযৌক্তিক হতে পারে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:০৭
208570
বুড়া মিয়া লিখেছেন : যায় কাহাফ ভাই, শুধু তাই না, ইনভেষ্ট না করলে যুদ্ধের কোন উপায়ই নাই ধর্মীয় দিকে হোক অথবা অন্য কিছু হোক
264879
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:০৯
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আল্লাহ মানুষের মন ও চিন্তাকে গুরুত্ব দেয়।
ইসলাম ধনী-গরীব নয় বরং আয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা আশা করে। কেউ ধনী হতে ইচ্ছা করলে ইসলাম সেটাকে নিন্দা করেনা। ইসলাম নিন্দা করে ধনী ব্যক্তিদের অস্বচ্ছ লেন দেন নিয়ে। ইসলাম সমাজতান্ত্রিক, ধনতান্ত্রিক ব্যক্তিতান্ত্রিকের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। ইসলামের মূল কনসেপ্ট হল:

১। সৎ আয়ের উপর নির্ভর করে হালাল উপায়ে কোন মুসলমান বিলিওনার হউক তাতে ইসলাম বাধ সাধেনা। বাধ সাধে তখন, যখন সে ব্যক্তি জাকাত পরিশোধ করেনা কিংবা অর্থকে কাজে না লাগিয়ে অলস ভাবে ফেলে রাখে তখন। অর্থকে কাজে লাগালে সে উছিলায় আরো প্রচুর মানুষের কর্ম সংস্থান হবে।

২। ইসলাম সমাজে কেউ ভিক্ষুক থাকুক তাও সমর্থন করেনা। তাই বলে ভিক্ষুকেরা ধনীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সম্পদ কেড়ে নিক সেটাও সমর্থন করেনা। ইসলাম চায় ধনীরা যখন জাকাত দেবে, সাদকায়ে জারীয়ার কাজ করবে তখন ভিক্ষাবৃত্তি নিবৃত হবে। আর এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে রাষ্ট্রকে। কেননা ধনী মানুষ জনগনের কাছে জবাবদিহীতার চাইতে রাষ্ট্রের কাছে জবাবদিহীতায় অনেক নমনীয় থাকবে।

৩। ইসলাম চায় শ্রমীকের মান, কাজের দক্ষতা, কাজে তার বিনিয়োগ, ইত্যাদি বিশ্লষন করে তাদের যথাযোগ্য প্রাপ্য নির্ধারণ হোক। কেউ যাতে অভাবে মৌলিক সমস্যায় পতিত না হয়। মৌলিক সমস্যা দূর হলেই সামগ্রিক ভাবে পুরো জাতিকে সুখী জাতি বলা হয়। কেননা একটি রাষ্ট্র পরিচালনায় কুলি, শ্রমিক, কৃষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার সকল পদের মানুষ দরকার। সকল শ্রেণী ও পদের মানুষ নিয়ে একটি জাতি। সবাই সৎ আয়ের সন্ধানে বের হবে, রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রনায়কেরা সৎ হবে। তাহলে সেই রাষ্ট্রে কোন সমস্যা হবেনা। সিংহভাগ নাগরিকেরা যখন সৎ আয়ের পিছনে ঘুরতে থাকবে, তখন শিল্পপতির সম্পদ রাস্তার পাশে পড়ে থাকলেও দেখার মানুষ থাকবে না।

সুন্দর পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:০৯
208817
বুড়া মিয়া লিখেছেন : টিপু ভাইকে অনেক ধন্যবাদ বেশ ব্যাখ্যা করে ব্যাপারটা তুলে ধরায়; তবে অর্থ অর্জনের প্রতিযোগীতা নিয়ে আমার দ্বিমত আছে, কেননা এটা অন্যদেরকেও ব্যাপকভাবে প্ররোচিত করে – এতে করে মানুষ বস্তুবাদী হয়ে যায় বলে আমার মনে হয়।

এ নিয়ে আর পরের পোষ্টটায় কিছু লিখেছি।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:২২
208995
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : এক সাহাবী রাসুল (সাঃ) এর কাছে দোয়া করতে আবেদন করলেন, যেন তাঁর সম্পদ কমে যায়! রাসুল (সাঃ) বললেন, 'উটের পিটে বসে তুমি খানা খাবে'।


বেশ কিছু দিন পরে সাহাবী একই দাবী নিয়ে রাসুল (সাঃ) কাছে আসেন! তিনি প্রশ্ন করেন তোমাকে না বলা হয়েছিল, উটের পিটে বসে খেতে?

সাহাবী বললেন, সেভাবেই তো খাচ্ছিলাম কিন্তু তার পর থেকে সম্পদ আরো বেড়ে যাচ্ছে।

রাসুল (সাঃ) প্রশ্ন করলেন: উটের পিটে বসে খাবার সময়, নীচে যে সব খাদ্যকনা পড়ে যায়, সেগুলো কি কর?

সাহাবী বললেন: তখন আমি উট থেকে নেমে সেগুলো খেয়ে নিই!

নবীজি বললেন, তাহলে কোনদিনই তোমার সম্পদ কমবে না। আর সেই সাহাবী ছিলেন ওসমান (রা)।

সোলায়মান (আঃ) আল্লাহর কাছে সম্পদ ও প্রবল ক্ষমতার অধিকারী হতে দোয়া করেছিলেন সাথে সাথে আল্লাহর অনুগ্রহ ও চেয়েছিলেন। তিনি দুটোই পেয়েছিলেন।

সুতরাং সম্পদ চাওয়া কিংবা আহরণ করার ইচ্ছা কোনটাই খারাপ নয়। আল্লাহর অনুগ্রহ থাকাটাই হল আসল ব্যাপার। আর আল্লাহর অনুগ্রহ পাবার একমাত্র উপায় হল আয় ও ব্যয়ের মাঝে স্বচ্ছতা থাকা। কেননা সম্পদ আয়ের মাধ্যমেও সওয়াব অর্জন করা যায়। অনেক ধন্যবাদ।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:১০
209076
বুড়া মিয়া লিখেছেন : টিপু ভাইকে আবারও ধন্যবাদ
264892
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৩৯
মামুন লিখেছেন : পোষ্টটি পড়লাম। তবে নিজের ক্ষুদ্র বুদ্ধির জন্য মন্তব্য না করে টিপু ভাই এর সাথে সহমত পোষণ করলাম।
শুভেচ্ছা আপনার জন্য। Rose Rose Rose Good Luck
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১১
208819
বুড়া মিয়া লিখেছেন : এসব লিখে উপকার যেটা বেশী হয়, তা হচ্ছে টিপু ভাইদের মতো ইসলামীক কন্সেপ্টে অভিজ্ঞ লোকদের সমালোচনায় অনেক জিনিস পরিস্কার হয় – আমার কাছে।

ধন্যবাদ আপনাকেও।
265229
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৪৭
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : সুন্দর ধন্যবাদ।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:১০
209077
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
266353
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৯
সাদাচোখে লিখেছেন : অর্থনীতি নিয়ে আপনার লিখাগুলো আমি পড়ছি। অসম্ভব কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করছেন - যা মূলতঃ চিন্তাশীল পাঠকের জন্য চিন্তার খোরাক জাগাবে।

আপনার এই লিখার উপর ওভারঅল কমেন্ট করেছেন টিপু ভাই - এবং আমার মনে হয় ওটাই বেশী রেশানাল রেসপন্স।

আমি ব্যাক্তিগতভাবে আপনার এ লিখা হতে যে উপকার টা পেলাম - তা হল - এই কনক্লুশান এ আসতে যে - মানুষের সৃষ্ট অর্থনৈতিক কাঠামো তথা ধনতান্ত্রিক মেকানিজিম কিংবা সমাজতান্ত্রিক মেকানিজম - দুটো ই মূলতঃ - লাইফ সাইকেল এর কোন না কোন পর্যায়ে নেগেটিভ কিংবা পরিত্যাজ্য হিসাবে - পলিসি মেকার দের সামনে বিমূর্ত হয়। আমরা গত ৫০/১০০ বছরের ইতিহাসে চায়না ও রাশিয়ায় যেমন সে প্রবনতা দেখেছি, তেমনি স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় ও ইউরোপে অপজিট প্রবনতা দেখেছি।

ইসলামিক অর্থনীতি - যার উপর আলোচনা, সমালোচনা, গবেষনা যেমন অপ্রতুল - তেমনি মেইন স্ট্রীম এ্যাকাডেমিক লেভেল হতে শুরু করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় এর ব্যবহার ও এতটাই সীমিত - যে আমরা লিটারেলী অন্ধকারে আছে এবং কখনো কখনো মনে হয় - মিসিং পাজেল নিয়ে জোড়া তালির ইসলামিক অর্থনীতি নিয়ে কথা বলছি, আলোচনা করছি।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:১৬
210106
বুড়া মিয়া লিখেছেন : পাশ্চাত্য শিক্ষা-ব্যবস্থায় আমরা এতো বেশী নির্ভরশীল হয়ে গেছি আর আমাদের দেশের নেতা নেত্রীরা এর আমদানী এতো বেশী করেছে যে – এসব বিষয় নিয়ে ইসলামিক কোন কিছু পড়ার চান্সই আমরা পাই-নি।

এখন বিভিন্ন আর্টিক্যাল পড়ে বা লেকচার শুনে যা মনে হয়, ইসলামিক অর্থনীতি নিয়ে যারা বলছে – তারা এক জগাখিচুরী মার্কা কথা বার্তা বলছে এবং এটা আসলে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে অনেকটাই মিলে যায়; আমার যখন সামাজিক দায়িত্ববোধ, দান-সাদকার কথা আসে তখন মনে হয়, নাহ এটা ধনতান্ত্রিক না – অন্য কিছু।

সবচাইতে বেশী যেটা অনুভব করি, তা হচ্ছে আমি এবং আমরা আসলে ঠিকমতো অনুধাবন করতে পারি নাই ইসলাম এর মূল উদ্দেশ্য সম্বন্ধে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File