IMF, সোনা এবং জাইঙ্গা ...
লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:৩৬:৫৯ সকাল
এর আগে IMF নিয়ে আলোচনায় ছিলাম, এখন এটা সম্বন্ধে আমার আরও কিছু অভিমত ব্যক্ত করছিঃ
যখন মাতবর শ্রেণীর দেশগুলো নিজেদের কারেন্সীকে ফ্লোটিং করে ফেললো, মানে কারেন্সীর সাপ্লাই-ডিমান্ড অনুযায়ী মার্কেটেই কারেন্সীর এক্সচেইঞ্জ-রেইট নির্ধারিত হবে, তখন IMF এর রিজার্ভ সিষ্টেমের আসলে আর কোন দরকার থাকে না। কিন্তু এর পরেও IMF বন্ধ হয় নি; এটা একটা প্রোফিটেবল ফান্ড হিসেবে এখন তার অপারেশান চালিয়ে যাচ্ছে। মাতবর শ্রেণীর দেশগুলোতে এ ফান্ড এর আসলে কিছু করার নেই (যেহেতু ফ্লোটিং-রেইট এরিয়া) এবং করতেও পারে না, এটা নাক গলায় শুধুমাত্র নিজ উদ্যোগে উৎসাহী ডেভেলপিং এবং লিষ্ট-ডেভেলপড দেশগুলোর ব্যাপারে। বর্তমানে এর কার্য্যক্রম মূলত তিনটা –
১) ফরেইন-কারেন্সীর রিজার্ভ মেইনটেইনেন্স
২) গরীব ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে লোন দেয়া
৩) মার্কেট মনিটর
এ বিষয়ে আমার জানা ও বিবেচনা মতে –
১) ফরেইন-কারেন্সীর রিজার্ভ মেইনটেইনেন্স
ফরেইন-কারেন্সীর রিজার্ভ মেইন্টেইন এর জন্য প্রথমেই এটা যা করে , তা হচ্ছে একটা দেশের ইকোনোমী বিচার করে তার জন্য কোটা নির্ধারণ করে এবং সে কোটার মূল্য প্রদানের মাধ্যমে একেকটা দেশ সে ফান্ডের ক্যাপিটাল এবং এর অপারেশনাল বেনিফিট এর ভাগ পায়। তবে এ কোটা নির্ধারনের সিষ্টেম সাংঘাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ, কেননা এরা একেকটা দেশের ইকোননোমিক কন্ডিশান বিচারের জন্য সে দেশের GDP, foreign Trade ইত্যাদী দেখে। এখানে সবচাইতে প্রশ্নবিদ্ধ বিষয় কেনো এটা GDP এর ভিত্তিতে হবে এবং GDP নির্ধারণ এর পদ্ধতি।
একটা দেশের GDP সাধারণত যেভাবে নির্ধারিত হয়, তা হচ্ছে একটা দেশের একটা বছরে/নির্দিষ্ট সময়ে টোটাল পণ্য ও সেবার প্রোডাকশান এর মানিটারী-মার্কেট ভ্যালু। এটা প্রশ্নবিদ্ধ এ জন্য যে, এখানে প্রাইস-ডিসক্রিপেন্সীর মাধ্যমে একই লেভেল এর প্রোডাকশান করেও দুই দেশের দু’রকম GDP হতে পারে। আর এ প্রাইস ডিসক্রিপেন্সীর জন্য একেকটা দেশ ইচ্ছা মতো মানি-সাপ্লাই বাড়িয়ে দিয়ে তা করতে পারে এবং এতে অন্য দেশের পার্টিসিপেশান এর মাধ্যমে যাতে নিজের দেশ এর এ পলিসিতে কোন সমস্যা না হয়, সে জন্য মার্কেট আইসোলেট করে ফেলে, মানে মুক্ত-বাজার হতে দেবে না দেশের বাজার-কে - ট্যারিফ, কোটা, ইত্যাদীর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়টা মোটামুটি সাধারণ অজ্ঞ-বিজ্ঞ সবাই ধরতে পারে বিধায় IMF এর কোটা নির্ধারনের পলিসিতে GDP দুইভাবে দুইটা ওয়েটে নেয় – একটা পারচেজ-পাওয়ার-প্যারিটি-এ্যডজাষ্টেড, আরেকটা নরমাল। তবে এটাও প্রশ্নবিদ্ধ, কেননা পারচেজ-পাওয়ার-প্যারিটি এ্যাডজাষ্ট করা হয় পণ্য বা সেবার মূল্যে অন্য কিছুতে না। এটা প্রশ্নবিদ্ধ এ প্রশ্নে যে, মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হয়?
এর আগে অন্য কিছু পোষ্টে মূল্যের ব্যাপারে আমি বলেছিলাম একটু, এখানে আরেকটু বলিঃ যদি পারচেজ-পাওয়ার-প্যারিটি এ্যাডজাষ্ট করা হয় তবে প্রত্যেক দেশের সব পণ্যের ও সেবার মূল্য একই হবে, আর সব কাচামাল এর মূল্য যদি একই হয় সেখানে কাচামাল প্রোসেসিং এর জন্য ফিজিক্যাল বা মেকানিক্যাল লেবার এর মূল্য যোগ হয়ে হবে ফাইনাল-প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মূল্য। মেকানিক্যাল লেবার এর মূল্য মূলত ফিজিক্যাল লেবারের চাইতে কম হবে স্বাভাবিকভাবেই, কেননা এটা ইচ্ছামতো ম্যানিপুলেট করা যায় এবং এ ধরনের তৈরী মেশিনে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফিজিক্যাল লেবারই দেয়া হয়; কিন্তু ফিজিক্যাল লেবারে তা সম্ভব না – এটার সংকট আছে বাজারে এবং এ লেবার ইচ্ছামতো জ্ঞান দিয়ে তৈরীও করা যায়, কিন্তু এখানে তা কখোনোই করা হয় না এবং মনে হয় মারামারি ছাড়া হবেও না সেটা! এখন যদি চিন্তা করি সমস্ত দেশের লেবারের মজুরী একই হবে এবং একই রকমের জ্ঞান-শেয়ার করে তৈরী করা হবে (উচিৎ তাই, নইলে সমগ্র-বিশ্ব নিয়ে মহৎ কথা বলা বাদ দিয়ে নিজের দেশের কথা বলাই শ্রেয়) এবং মেকানিক্যাল লেবার এর মূল্য (এ্যাসাইনড-লেবার-আওয়ার-ব্যাসিসে) কম হবে, তবে অবশ্যই যে দেশের জনশক্তি বেশী সে দেশের লেবার-আওয়ার বেশী হবে। আর যে প্রোডাক্টেই লেবার-আওয়ার এ্যাসাইন করা হবে সেখানে প্রোডাকশান-কষ্ট বেড়ে যাবে। সোজা কথায় একেক দেশে একই ক্লাসের লেবার-পেমেন্ট এর প্যারিটি না থাকলে যে দেশের এ্যাকটিভ লেবার যতো বেশী তার GDP ততো বেশী হবে। কিন্তু এখানে এসে কারও কোন কথা নেই, এ প্যারিটি-এ্যাডজাষ্টমেন্টের কোন কার্যক্রম নেই। তাই যে GDP এবং আমদানী-রফতানী এর ওয়েটে এ কোটা নির্ধারিত হয় অবশ্যই তা সেসব নির্দিষ্ট কিছু দেশের স্বার্থেই যায়, যারা এরকম প্রাইস-ডিসক্রিপেন্সীর মাধ্যমে নিজেদের আকাশে তুলে রেখেছে!
যাই হোক, এভাবে কোটা নির্ধারিত হলো (উৎসুক কেউ কোটা নির্ধারনের ওয়েট এবং ক্যালকুলেশান এর প্রসিডিউর জানতে চাইলে IMF এর ওয়েবে ডিটেইল পাবেন, এদিক থেকে ওরা ভালো আছে – তথ্য দেয়), এবং নির্ধারণের পর সে নির্ধারিত কোটা বা ক্যাপিটাল এর পেমেন্ট দিতে হবে। এখানে ২৫% মূল্য দিতে হবে Freely-Usable-Currency তে আর বাকী ৭৫% দিতে হবে ঐ দেশের নিজের কারেন্সীতে। এখানেও সমস্যা হয়, কেননা Freely-Usable-Currency বলতে খালি ইউ.এস. ডলার, জাপানীজ ইয়েন, লন্ডনী ষ্টার্লিং আর ইউরোল্যান্ড এর ইউরো। তাই এগুলো কেনায় ধুম পড়ে যায় এতে করে অন্যরকম এক আবহের সৃষ্টি হয়, কারণ – এগুলোর সাপ্লাই সেসব দেশের/এলাকার প্রিন্টিং-প্রেসের মর্জির উপর নির্ভর করে। এই যে ক্যাপিটাল পরিশোধ করলো এখন সেই ২৫% হলো সে দেশের ফরেইন-কারেন্সী রিজার্ভ। কোন দেশ যদি সেখান থেকে তার পরিশোধিত রিজার্ভ নিয়ে যেতে চায়, ইচ্ছে করলেই পারবে; তবে কেউ যদি তার রিজার্ভের চাইতেও বেশী পরিমান ফরেইন-কারেন্সী নিতে চায় তবে সেখানে একটা দেশের নরমাল সেন্ট্রাল-ব্যাংকের ওপেন-মার্কেট অপারেশান এর মতো কার্য্যক্রম এর মাধ্যমে নিতে হবে, মানে পারচেজ-সেল। নিজেদের দেশের কারেন্সী দিয়ে পারচেজ করতে হবে ডিজার্ভড-ফরেইন-কারেন্সী আবার প্রয়োজন ফুরালে, ফরেইন-কারেন্সী দিয়ে রিপারচেজ করতে হবে তার নিজের কারেন্সী, এভাবেই IMF এর রিজার্ভ মেইন্টেইন হচ্ছে। নিজের দেশের এ্যালোকেটেড রিজার্ভের চাইতে বেশি পরিমাণ কিনে ফেললে অতিরিক্ত পরিমাণ এর উপর ইন্টারেষ্ট দিতে হবে আর সমান অথবা কম হলে সেক্ষেত্রে ইন্টারেষ্ট লাগবে না। আর এ ইন্টারেষ্টও নির্ধারিত হবে মার্কেট-রেইটে, মানে ইংল্যান্ড, ইউ.এস, জাপান, ইত্যাদীদের গড় রেইটেই।
২) গরীব ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে লোন
ওদের আরেকটা অপারেশান হচ্ছে কনসেশনাল-ইন্টারেষ্ট-রেইটে গরীব-উন্নয়নশীল দেশগুলোকে লোন দেয়া, তবে ব্যালেন্স-অফ-পেমেন্ট এর কাহিনী ছাড়া লোন মঞ্জুর হবে না এবং হার্ড-কন্ডিশান ছাড়াও দেয়া হবে না; মানে মানিটারী-পলিসি এবং সরকারের উপর তাদের প্রত্যক্ষ্য ক্ষমতা না পেলে তারা লোন দিবে না। এখানেও একটা ব্যবসা হয় - এ ধরনের লোন IMF তার ফান্ড থেকেও দিতে পারে অথবা অন্যান্য উন্নত দেশগুলো থেকে নিয়ে তারপর গরীবদের দিতে পারে। এখানে অনান্য দেশের থেকে ফান্ড-কালেক্ট করা হলে সেসব দেশকে সে ফান্ডের উপর মার্কেট-রেইটে ইন্টারেষ্ট দেয়া হয় আর যে গরীবদেরকে লোন দেয়া হবে, তাদেরকে ০.৫% রেইটে লোন দেয়া হবেঃ ডেটর এবং ক্রেডিটর এর ইন্টারেষ্টের এ ডিফারেন্স IMF মেটাবে তার ইনকাম থেকে। কোন গরীব-উন্নয়নশীল দেশকে চাইলে লোন বা ইন্টারেষ্ট মওকুফ ভোটের মাধ্যমে করতে পারে আবার এ নিয়ে কথা না শুনলে সারচার্জ বা পেনাল্টী আরোপ করেতেও পারে।
এভাবেই IMF এর অপারেশান চলছে এবং বলতে গেলে বিশ্বের প্রায় সব দেশই এর মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ঢুকে গেছে। এখন কথা হচ্ছে – IMF এর তো ফাইনান্সিয়াল লাভ হয় এসব করে। কোন সময় যদি এ ফান্ড ফাইনাল-ডিভিডেন্ড হিসেবে ডিষ্ট্রিবিউট করে দেয়া হয় মেম্বার দেশগুলোর মধ্যে তবে অবশ্যই সেটা ক্যাপিটাল রেশিও বা কোটা-রেশিওতে দিয়ে দিবে, এতে করে লাভের বেশি অংশ সেসব উন্নত দেশগুলোই পাবে।
৩) মার্কেট মনিটর
এছাড়াও IMF মনিটর করে সমস্ত দেশগুলোকে, একেকটা দেশের মানিটারী এবং এক্সচেইঞ্জ-রেইট পলিসি কি, তা তারা নিয়মিত রিপোর্ট করে, এবং ওদের ওয়েবসাইটে সেটা পাবলিশ করে সর্বসাধারণের জন্য। আর একেক দেশের ইকোনোমী ৫ বছরের মধ্যে রিএ্যাসেস করে তার কোটা বাড়াতে বা কমাতে পারে, ওভারডিউ লোনের উপরে সারচার্জ আরোপ করে বা করতে পারে এবং এ সমস্ত কিছু হিসাব করা হবে একটা নির্দিষ্ট মানদন্ডে – সেটা হচ্ছে SDR। এই SDR কোন কারেন্সী না এটা চারটা কারেন্সীর ওয়েটেড-এ্যাভারেজ, যার ওয়েট প্রতি পাচ বছর পর পর রিএ্যাসেস করা হয় এবং প্রত্যেকদিন এ SDR রেইট আপডেট করা হয় হিসাবের জন্য, আর ওয়েটের জন্য নির্ধারিত কারেন্সীগুলো হচ্ছে Freely Usable Currency বা ইউ.এস. ডলার, জাপানীজ ইয়েন, লন্ডনী ষ্টার্লিং আর ইউরোল্যান্ড এর ইউরো। শুরুতে এ ওয়েট নির্ধারিত হতো যতোদূর মনে পড়ে ১৬ টা দেশের ওয়েটেড-এ্যাভারেজে, পরবর্তীতে ৫ টা দেশের আর সর্বশেষ এবং এখন ঐ ৪ টা দেশ/এলাকা; তবে চায়না খুব বেশী বেড়ে গেছে, মানে মন চাইলেই প্রিন্ট করে যা খুশি তা করছে – ভবিষ্যতে হয়তো একেও আমলে নেয়া হবে! তবে চায়নার কোন দোষ নাই, ওদের দেখেই চায়না এগুলো শিখেছে এবং এখন উলঙ্গ হয়ে নেমেছে – যেহেতু চায়নার ইন্ডাষ্ট্রিয়াল-বেইজ হয়ে গেছে এবং টেকনিক্যাল-এডুকেশানে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে অন্যদের তুলনায়, তাই সরাসরি মল্লযুদ্ধ ছাড়া ওকে থামানোর কোন উপায় আর নাই!
আর আমরা যারা আছি, মারামারি করতে গেলে মাইর খাবো, তাদের কনজারভেটিভ পলিসিতে চলা উচিৎ, যেমন মালয়েশিয়া; এর ইকোনোমী এবং এক্সচেইঞ্জ-রেইট কোনটাতেই অন্যরা ওকে মারতে পারে নাই! এ নিজেকে উন্নত দেশের তালে তালে এগিয়ে নিচ্ছে, মানে যেদিকের মার্কেট-শেয়ার এক্সপান্ড হচ্ছে তার ইনভেষ্টমেন্টও ডাইভার্সিফাই করে চলছে, এতে করে ট্রেডেও লস খাচ্ছে না আর অপরদিকে মানিটারি পলিসি এবং মার্কেট এমনভাবে ডমিনেট করছে যে ইউ.এস. ডলার এর এগেইনষ্টে ওর রেইট অনেকটা ষ্ট্যাটিক এবং এখন হাই-টেক দেশ এর কাতারে চলে গেছে প্রায়।
আমাদের বাংলাদেশ এর অবস্থা এক্ষেত্রে খারাপ, আমাদের অনেক ওভারডিউ লোন রয়েছে IMF কাছে এবং এতে করে আমাদের পলিসিতে IMF স্বাভাবিকভাবেই নাক গলাচ্ছে, কেননা লোনের কন্ডিশান-ই হচ্ছে নাক গলাতে দিতে হবে! মালয়েশিয়া জেনে-শুনে বিষ পান করেনি, আমরা করেছি! আমাদের আরও সমস্যা হচ্ছে, বিষ খেয়ে টাল-মাটাল হয়েও বুক-ফুলিয়ে গর্ব করে বলি আমাদের ফরেইন-কারেন্সী-রিজার্ভ বেড়েই চলেছে ....
বিভিন্ন দেশের মানিটারী এবং এক্সচেইঞ্জ রেইট পলিসিকে IMF এক্সচেইঞ্জ-রেইটের বাইপোলার-ভিউতে এ্যাসেস করে, মানে দুইটা পোল – ফিক্সড-এক্সচেইঞ্জ-রেইট (পেগড-রেইট) এবং ফ্লোটিং- এক্সচেইঞ্জ-রেইট। এর মাঝে এবং এর বাইরে কিছু দেশকে ফেলে দেয় তারা, সেসব দেশের কার্য্যক্রমের ভিত্তিতে। ফিক্সড-রেইটের ক্ষেত্রে এক্সচেইঞ্জ-রেইটে শর্ট-টার্মে বা লং-টার্মেও কোন পরিবর্তন হবে না আর ফ্লোটিং এর ক্ষেত্রে সেটা সবসময় কারেন্সী-মার্কেটের ডিমান্ড-সাপ্লাই দিয়ে নির্ধারণ হবে। উন্নত সব দেশগুলো ফ্লোটিং এর ক্যাটাগরীতে পড়ে – তবে এখানেও তাদের মারামারি চলে, তারা নিজেরাই ইচ্ছামতো কারেন্সী প্রিন্ট করে ডিমান্ড-সাপ্লাই ডমিনেট করে রেইট নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, সর্বশেষ চায়না-স্ক্যান্ডাল সারা বিশ্বে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছে টনকে টন কাগজ (ইউয়ান) প্রিন্ট করে।
ফিক্সড-এক্সচেইঞ্জ-রেইটকে তারা দুইভাগে ভাগ করে Hard-Peg এবং Soft Peg। আবার ফ্লোটিং- এক্সচেইঞ্জ-রেইটকে তারা দুইভাগে ভাগ করে Floating এবং Free Floating। এর বাইরে যে দেশগুলো পড়ে তাদেরকে Other managed এর আওতায় বিবেচনা করে। এছাড়াও এক্সচেইঞ্জ-রেইটের সাথে মানিটারী পলিসি যোগ করে তারা আরেক রকমের সেগমেন্টেশান করে, যেমন Monetary Aggregate Targeting এবং Inflation Targeting। এরকম কোন মানিটারী পলিসি না থাকলে তাদেরকে Other এর আওতায় বিবেচনা করে। কোন দেশ কোন ক্যাটাগরীতে পড়ে এর ডিটেইল দেখতে চাইলে উৎসুক যারা আছেন, তারা পাবেন IMF এর Report on Exchange Arrangements and Exchange Restrictions, এটাও তারা সর্বসাধারনের জন্য রেগুলার-ব্যাসিসে প্রকাশ করে অনলাইনেও। এছাড়াও কোন আইটেম এর ডেফিনিশান কি তা IMF এবং অন্যান্যরাও ওয়েবে প্রকাশ করে রেখেছেন।
আমরা, মানে বাংলাদেশ, আছি এক্সচেইঞ্জ-রেইটের ক্ষেত্রে – Other managed policy তে আর মানিটারী পলিসির ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান হচ্ছে Monetary Aggregate Targeting। তার মানে আমাদের আরও বেশী মানি-সাপ্লাই বাড়িয়ে দিতে হবে, মার্কেটে এর ইম্প্যাক্ট যাই হোক না কেন! মানি-সাপ্লাই বাড়িয়ে দেয়ার বেশ কিছু যুক্তি রয়েছে – যেমন একটা দেশের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে পারে এটা যদি অপর্চুনিটি থাকে। তবে যদি অপর্চুনিটি না থাকে তবে প্রাইস-ইনফ্লেশান আর স্লেভারী রাড়ানো ছাড়া আর কোন লাভ হয় না এতে। যেমন আমাদের দেশে যদি আরও মানি-সাপ্লাই বাড়ায়, তবে লোন বাড়বে – কিন্তু লোনটা যাবে কোথায়? চোখ বন্ধ করে বলা যায় ৮০% লোন যাবে দর্জিদের কাছে! আমাদের নিজেদের দেশের কাপড়-চোপড় এর পর্যাপ্ত চাহিদা মেটাতে তো আমরা সক্ষম, তবে এখন এর আরও প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে কি করবো আমরা? প্রিন্টেড-কাগজ (ডলার) আনবো? এটার নাম প্রোডাক্টিভিটি? নাকি ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট-কে প্রোডাক্টিভিটি বলে? আসলে আমাদের দেশের কিছু বিজ্ঞদের কথা শুনলে মনে হয় টাস-টাস থাপ্পড় মারি ওদের চাপায়!
মানি-সাপ্লাই বাড়াও তাতে অসুবিধা নাই, তবে দর্জী-নামক দাস এর প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য এটা না করে অন্যান্য ক্যাপাসিটি বাড়ান! থিওরিটিক্যালী এবং প্র্যাকটিক্যালীও প্রোডাক্টিভিটি বলতে ক্যাপাসিটি ডেভলপমেন্টকেই বোঝায় আর সে ক্যাপাসিটি দিয়ে অপটিমাম কুয়ান্টিটি প্রোডিউস করতে হয় দেশের মানুষের স্বার্থে! এছাড়াও সারা পৃথিবীতে গত ৪০ বছরেও মানিটারি মেজারমেন্টে ওয়ার্ল্ডের টোটাল এক্সপোর্টে দর্জিবাড়ীর ইনকাম-শেয়ার বাড়ে নাই, বরঞ্চ কমতেছে। সেসব ডাটাও রয়েছে সর্বসাধারণের জন্য বিভিন্ন ওয়েবে। অন্যরা কি করে একটু তাকিয়ে দেখুন – গত বছর ইংল্যান্ড এর টোটাল এক্সপোর্ট ছিলো আনুমানিক ৪৭৫ বিলিয়ন ডলার এবং তার প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার এসেছে শুধু গোল্ড-সিলভার এবং এরকম জিনিস এক্সপোর্ট করে! আর আমরাও গত বছরের হিসেবে বিশ্বের গোল্ড ইম্পোর্টারদের মধ্যে অন্যতম ছিলাম!
ওরা আমাদের কাছে বেচে গোল্ড, তাতে ওদের কোন লোকবল লাগে না খালি অল্প কয়েকজনের মাথা খাটানো ছাড়া, আর আমরা ওদের কাছে বেচি জাইঙ্গা লক্ষ লক্ষ মানুষকে গরুর মতো খটিয়ে আর হাজার হাজার মানুষের মাথা খাটিয়ে!
আর কতোকাল এমনে ভোদাই এর মতো মাথা আর গরুর মতো গতর খাটাবেন?
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ভালো ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন