ইসলামীক-ব্যাংকিং ও লাভ-ক্ষতি

লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ২৮ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:২০:৩৩ সন্ধ্যা

বিভিন্ন সোর্স থেকে জানা যায়, ইসলামীক ব্যাংকগুলো বিশ্বে অপারেশান চালাচ্ছে মোটামুটি দুই রকমের পদ্ধতিতে –

(১) Debt-based financing

(২) Equity-based financing

এভাবে অর্থায়নের জন্য তারা সঞ্চয়কারীদের থেকে আমানত সংগ্রহ করে এবং সেটা ব্যবসায়ীদেরকে প্রদান করে। এবার এ দুই-রকমের পদ্ধতি সম্পর্কে আমার জানাটা জানাচ্ছি –

(১) Debt-based financing: এ পদ্ধতিতে রয়েছে মুরাবাহা (cost plus pricing with deferred payment) এবং ইজারা (leasing)।

(২) Equity-based financing: এ পদ্ধতিতে রয়েছে মুদারাবা (silent partnership) এবং মুশারাকা (full partnership)।

মুরাবাহা এবং ইজারাঃ এ পদ্ধতিতে যেভাবে অর্থায়ন করা হয়, তা হচ্ছে ঋনগ্রহীতাকে সরাসরি টাকাটা না দিয়ে ইসলামীক-ব্যাংক গুলো প্রথমে যে কোন আইটেম ক্রয় করে তারপর ঋনগ্রহীতার সাথে বিক্রির চুক্তি করে ইন্সটলমেন্ট শুরু হয়; সুদের পদ্ধতির সাথে এখানে পার্থক্যটা শুধু ক্রয় এবং বিক্রয়, আর সব মোটামুটি একই। এবং আমার মনে হয় এ পদ্ধতিতে আসলে বর্তমানের প্রচলিত সুদ-ব্যবস্থার সাথে খুব একটা পার্থক্য নেই এবং এসব ক্ষেত্রে ইন্সটলমেন্ট-পেমেন্ট এর পরিমাণও মনে হয় সুদের পদ্ধতিতেই ডিসকাউন্ট করে করা হয়। আরও মনে হয়, এ পদ্ধতির ফলে বাজারে একই প্রভাব পড়ে যা বর্তমানের সুদী-ব্যবস্থায় পড়ে, কেননা এরকম অর্থায়নে প্রেজেন্ট-ভ্যালু এবং ফিউচার-ভ্যালু এর মাঝের অংশকে যা-ই বলা হোক না কেন, সেটা প্রোডাকশান-কষ্ট এ ঢুকে যাবে – তাই আমানতকারী লাভের যে অংশ পাবে তার পুরাটাই বাজারমূল্যে খরচ হিসেবে চলে যাবে এবং অতিরিক্ত যাবে এভাবে অর্থায়িত ব্যবসায়ীর লাভ; এতে করে ইসলামীক ব্যাংকগুলোর লাভ হবে কি-না তা না জানলেও এটা ব্যবসায়ীকেই লাভবান করবে এবং আমানতদারদের ক্ষতি-ই করবে বলে আমার ধারণা। এ পদ্ধতিতে হিসেব করলে ব্যাপারটা মনে হয় এমন হবে –

আমানতকারীরা ১০০ টাকা ইসলামীক ব্যাংকে রাখলে সে টাকায় ব্যাংক পণ্য কিনে ১১৫ টাকায় ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করলে ব্যবসায়ী সে ১১৫ টকার পণ্য আরও লাভে ১২০ টাকায় ভোক্তা/আমানতকারীদের কাছে বিক্রি করতে চাইলে ভোক্তাদের ১২০ টাকা চলে যাবে এবং তারা লাভসহ ব্যাংক থেকে ১১৫ টাকা পাবে। মোটের উপর ৫ টাকা লস খাবে আমানতকারী বা ভোক্তা এবং সে লাভ হবে ব্যবসায়ীর।

মুদারাবা এবং মুশারাকাঃ এটা তাত্ত্বিকভাবে বেশ ভালো লেগেছে, এখানে পূর্ব-নির্ধারিত সুদ বা লাভ নির্ধারন নেই। বরং এখানে আমানতকারী ব্যবসার মালিক হয়ে যায় এবং সেখান থেকে মালিকানার অংশ হিসেবে লাভের পুরো অংশই পাবে এবং দীর্ঘমেয়াদের হিসাব একবারে টানলে সমান সমান হয়ে যায়, এক-পক্ষের লাভ এবং আরেকপক্ষের ক্ষতি নেই বলেই মনে হয়েছে। এটা এমন মনে হয়েছে এ হিসেবে –

আমানতকারীরা ১০০ টাকা ইসলামীক ব্যাংকে রাখলে সে টাকায় উৎপাদনকারীর মালিকানার অংশ পেলে, উৎপাদিত পণ্য ১২০ টাকায় বেচা হলেও লাভের ২০ টাকা আমানতকারীদের পকেটে এসে ১২০ টাকা হবে এবং তার পুরোটাই পণ্য ক্রয়ে খরচ করে ফেলবে, এতে অন্তত এক পক্ষের লাভ বা আরেক পক্ষের ক্ষতি হবে না।

এসব সম্পর্কে আপনাদের কারও আরও জানা থাকলে বা আমার মতের ভিন্ন কোন মত থাকলে, আমাদের জানতে সাহায্য করবেন বলে আশা রাখি।

অলস সঞ্চয় ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্যাংকিং ভুমিকা রাখতে পারে অবশ্যই, কিন্তু তাতে মোটের উপর কার লাভ এবং কার ক্ষতি হয় তা পরিস্কার না হলে ব্যাপারগুলো প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে। এরকম প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই প্রচলিত-সুদী ব্যাংক অপারেশন চালিয়ে এক পক্ষের লাভ এবং আরেক পক্ষের ক্ষতি করে যাচ্ছে, আশা করি ইসলামীক ব্যাংকগুলো এতে সমতা আনবে এবং এসব বিষয় হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে সাধারণ মুসলমানকে পরিস্কার ভাবে বুঝিয়ে তাদের উপর সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার ছেড়ে দেবে।

বিষয়: বিবিধ

১৬৫১ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

259241
২৮ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
আবু সাইফ লিখেছেন :
মুরাবাহা: ...আরও মনে হয়, এ পদ্ধতির ফলে বাজারে একই প্রভাব পড়ে যা বর্তমানের সুদী-ব্যবস্থায় পড়ে..


**একই প্রভাব হবেনা, কারণ এখানে পণ্যটি কেবলমাত্র "কাগজ-কলমে" কেনাবেচা সম্ভব নয়- যেমনটা সূদীকারবারে হয়ে থাকে! ফলে পণ্য উতপাদন ও বিপননে এটি সরাসরি প্রভাব ফেলে!

আমানতকারীরা ১০০ টাকা ইসলামীক ব্যাংকে রাখলে সে টাকায় ব্যাংক পণ্য কিনে ১১৫ টাকায় ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করলে ব্যবসায়ী সে ১১৫ টকার পণ্য আরও লাভে ১২০ টাকায় ভোক্তা/আমানতকারীদের কাছে বিক্রি করতে চাইলে ভোক্তাদের ১২০ টাকা চলে যাবে এবং তারা লাভসহ ব্যাংক থেকে ১১৫ টাকা পাবে। মোটের উপর ৫ টাকা লস খাবে আমানতকারী বা ভোক্তা এবং সে লাভ হবে ব্যবসায়ীর।


**আর তারা বলে "ব্যবসা তো সূদের মতই"!- আলকুরআন

ব্যবসা ও সূদের মৌলিক পার্থক্যের জায়গাটা যদি সুস্পষ্টভাবে মাথায় না থাকে তবে এমন ধরণের অনেক গরমিল খুঁজে পাওয়া যাবে!

মুদারাবা এবং মুশারাকাঃ

আমানতকারীরা ১০০ টাকা ইসলামীক ব্যাংকে রাখলে সে টাকায় উতপাদনকারীর মালিকানার অংশ পেলে, উতপাদিত পণ্য ১২০ টাকায় বেচা হলেও লাভের ২০ টাকা আমানতকারীদের পকেটে এসে ১২০ টাকা হবে এবং তার পুরোটাই পণ্য ক্রয়ে খরচ করে ফেলবে, এতে অন্তত এক পক্ষের লাভ বা আরেক পক্ষের ক্ষতি হবে না।


**এখানেও চিন্তার কিছু ফাঁক রয়ে গেছে! ১২০টাকায় বেচলে যে ২০টাকা লাভ (ব্যাংকে পাবে) তার সবটাই তো টাকার মালিক পাবেনা!

এখানেও মূল সমস্যাটি এ তিনটি বিষয়ের সমীকরণে
-"ব্যবসা"
-"টাকার অবমূল্যায়ন"
-"পণ্যবিক্রিতে ব্যবসায়ীর মূল্যসংযোজন(লাভ যোগ)"

অথচ মূল্যস্ফীতি বা টাকার অবমূল্যায়ন এবং প্রকৃত লাভ এক সমান নয় এবং এসবের পেছনে অ-নে-ক ফ্যাক্টর থাকে!
লাভের পরিমান অ-নে-ক হলেও বাস্তবে ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি "শূণ্য" হতে পারে!

উদাহরণ- সৌদিআরব! আমি যতদূর জেনেছি তাতে সেদেশে অধিকাংশ ব্যবসায় বিভিন্ন স্তরে যে হারে লাভ করে ব্যবসায়ীরা তা অকল্পনীয়! কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য স্থিতিশীল বা অতি সামান্য মূল্যস্ফীতি!

অলস সঞ্চয় ব্যবহার করে উতপাদন বৃদ্ধিতে ব্যাংকিং ভুমিকা রাখতে পারে অবশ্যই, কিন্তু তাতে মোটের উপর কার লাভ এবং কার ক্ষতি হয় তা পরিস্কার না হলে ব্যাপারগুলো প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে। এরকম প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই প্রচলিত-সুদী ব্যাংক অপারেশন চালিয়ে এক পক্ষের লাভ এবং আরেক পক্ষের ক্ষতি করে যাচ্ছে, আশা করি ইসলামীক ব্যাংকগুলো এতে সমতা আনবে এবং এসব বিষয় হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে সাধারণ মুসলমানকে পরিস্কার ভাবে বুঝিয়ে তাদের উপর সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার ছেড়ে দেবে।


অর্থনীতি ও ব্যাংকিং এর মত জটিল বিষয় সাধারণ মানুষ কখনো-ই বুঝবেনা! ৩৫০জন আইমপ্রণেতাদের ক'জন বোঝেন?

আর সমতা(আসলে আদল ও ইনসাফ) আনয়নের ব্যাপারটি রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া সম্ভব নয়! কারণ এর পেছনে রয়ে গেছে রাষ্ট্রীয় ফিস্কাল পলিসি যার ক্ষমতা/প্রভাব ভোক্তার রান্নাঘরের ম্যাচেরকাঠি পর্যন্ত পৌঁছায়!

২৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৫:১২
203145
বুড়া মিয়া লিখেছেন : @আবু সাইফ ভাই মুরাবাহার এটা এই সেন্সে বলেছি যে, প্রচলিত সুদটা ব্যবসায়ীরা ফাইন্যান্স-কষ্ট হিসেবে চার্জ করে পণ্য বা সার্ভিসে; একইভাবে মুরাবাহাতে যে লাভটা চার্জ করা হলো ব্যাংকের পক্ষ থেকে, সে পণ্যটা কিন্তু ব্যবসায়ী পুনঃবিক্রয়ের সময় তার খরচ হিসেবে ধরে নিয়েই মূল্য নির্ধারণ করবে। এক্ষেত্রে সুদ এর খরচ এবং মুরাবাহার প্রদত্ত লাভ যদি সমান হয়, তাহলে বাজারে সেই পণ্যটার মূল্য একই হবে দুই ক্ষেত্রেই।

আর মুরাবাহা কিন্তু আমার জানা মতে অর্ডিনারী কোন ব্যবসা নয়, এটা ষ্পেশালাইজড ব্যবসা যা শুধু বাকী-ই দেয় ইনষ্টলমেন্ট-পেমেন্ট-সিষ্টেমে, যে ধরনের ইন্সটলমেন্ট সুদী-ব্যাংকের থাকে; এ জন্যই বলেছি এখানে পার্থক্য শুধু ক্রয়-বিক্রয় আর সব ন্যাচার একই! এটা যদি অর্ডিনারী ব্যবসা হতো, যেখানে নগদেও বেচা কেনা হয় এবং প্রয়োজন পড়লে বাকীতেও বেচা-কেনা হয়, তাহলে আমার এ প্রশ্ন থাকতো না; এ ধরনের ষ্পেশালাইজড ব্যবসা আমার মনে হয় সাধারণ-ব্যবসার কাছাকাছি থাকে না বরং সেটা চলে যায় সুদ-সিষ্টেমের কাছাকাছি – এখনও আমি আশা করি, এ ব্যাপারে আরও কোন যুক্তি থেকে থাকলে আমাকে অনুগ্রহ করে জানাবেন।

মুশারাকা-মুদারাবার ১২০ টাকার পুরোটাই আমানতকারী/ভোক্তার কাছে চলে আসবে, কেননা তারাই তো সে ব্যবসার পার্টনার যে ব্যবসা টাকা নিয়ে খাটাচ্ছে এবং লাভের সে ২০ টাকা থেকে পরিচালনার জন্য এজেন্ট হিসেবে ইসলামীক-ব্যাংক গুলোর খরচ ঐক্যমতের ভিত্তিতে পার্টনাররাই চালাবে, ব্যবসায়িক খরচ হিসেবে। ব্যাংকের লাভ, আমানতকারীর লাভ, অন্যান্যের লাভ আলাদা করলে আরও কমপ্লিকেটেড হয়ে যাবে তাই আমি হিসেব এর ধরণাটা এখানে কন্সোলিডেটেড আকারে করেছি যাতে সহজে অনুধাবন করা যায়, শুরুতেই সেগমেন্ট করলে আলটিমেট-ইম্প্যাক্ট বুঝতে কষ্ট হবে বলে মনে হয়েছিলো।

সৌদী-আরব এর ঘটনা জানানোয় ভালো লাগলো এবং রাষ্ট্র-ব্যবস্থার ব্যাপারে আপনার মতামতের সাথে আমিও একমত।

আমার ধারণা – এসব বিষয়ে আপনি আমার চাইতে ভালো জ্ঞান-সম্পন্ন এবং আশা এবং দাবী দুইটাই রাখি, এসব বিষয়ে আপনিও কিছু লিখবেন; যাতে করে আমার মতো অনেকেই এ-বিষয়গুলো সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পায়।
২৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৫:৩১
203147
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ওহ! আরেকটা বিষয়ে আমার মতামত দিয়ে ভুলে গিয়েছিলাম @আবু সাইফ ভাই,

ব্যবসা, টাকার অবমূল্যায়ন, লাভ, মূল্যস্ফীতি – এসব বিষয়গুলো পরিস্কার হয় কনষ্ট্যান্ট-প্রাইসে বা একটা নির্দিষ্ট বেইজ এর রিয়েল-রেটে হিসেব করলে। নমিনাল-রেট বা কারেন্ট-প্রাইসে এগুলো হিসেব করলে অনেক-সময়ই আসল ব্যাপার চোখে পড়ে না। এজন্য অনেক ইকোনোমিক-ইন্ডিকেটর কনষ্ট্যান্ট এবং কারেন্ট, দু’টোতেই দেখা যায়।
২৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৬:১৬
203154
সাদাচোখে লিখেছেন : আবু সাইফ ভাই, ব্যক্তিগতভাবে আমি আপনার মন্তব্যের কিছু পয়েন্ট এর সাথে একমত হতে পারছিলাম না। তাই এই প্রতিমন্তব্য এই জন্য যে - এতে জানার যেমন সুযোগ হবে তেমনি আমল করার ও সুবিধা হবে।

আপনি বলেছেন **একই প্রভাব হবেনা, কারণ এখানে পণ্যটি কেবলমাত্র "কাগজ-কলমে" কেনাবেচা সম্ভব নয়- যেমনটা সূদীকারবারে হয়ে থাকে! ফলে পণ্য উতপাদন ও বিপননে এটি সরাসরি প্রভাব ফেলে!**

>>>> আমি এ পয়েন্ট টা বুঝিনি। আমার যে ভাবে দেখা - সুদী ব্যাংক একজন টিভি/ফ্রিজ ক্রেতাকে বলে ১৮% ইন্টারেস্ট এ সে টিভি/ফ্রিজ কিনতে পারবে যেখানে তাকে ডাউন পেমেন্ট হিসাবে কোন টাকা দিতে হবেনা। এতে করে ক্রেতা ১০,০০০ টাকার একটা টিভি কিনে ১ বছরে শোধ করবে বলে, প্রতি মাসে (১০,০০+১৮০০/১২) ৯৮৩ টাকা করে পরিশোধ করে।

অন্যদিকে একই ক্রেতা ইসলামী ব্যাংক হতে ঐ টিভিটি ১১৮০১ কিংবা ১১৭৯৯ টাকায় কিনে - প্রতিমাসে ৯৮২ অথবা ৯৮৩ অথবা ৯৮৪ টাকা করে পরিশোধ করে।

এর মধ্যে আপনি পার্থক্য কোথায় দেখছেন? সততার সাথে চিন্তা করলে আমরা কি আসলেই বুঝছি না যে - ব্যাংক সেকুলার ও ব্যাংক ইসলামিক দুটো ই
১। ক্রেতাকে টাকা না থাকা স্বত্তেও ঐ ভোগ্যপন্যটি কিনতে সুযোগ করে দিচ্ছে না?
২। ক্রেতাকে টিভিটির জন্য অতিরিক্ত যে অর্থটি প্রদান করতে হচ্ছে দুটি ব্যাংকেই - তা শুধু মাত্র এজন্য যে - ব্যাংক দুটিই তাকে ঐ টাকাটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করতে দিচ্ছে বলেই?
৩। ব্যাংক দুটিই এই ঋণ এর বিপরীতে বীমা করা অবস্থায় আছে - যদি কোন কারনে ঋনটি খেলাপী হয়।

---------------

ব্যবসা ও সূদের মৌলিক পার্থক্যের জায়গাটা যদি সুস্পষ্টভাবে মাথায় না থাকে তবে এমন ধরণের অনেক গরমিল খুঁজে পাওয়া যাবে!

>>> আমি সিম্পলী এভাবে বুঝি - ব্যবসায়ে ব্যবসায়ী যে লাভ করে তা - ইসলামে তা তার মধ্যস্থিত (বিনিয়োগ, মেধা, শ্রম ইত্যাদি) ও পরিচালিত (কর্মী নিয়োগ, বিপনন, পরিবহন ইত্যাদি) এ্যাফোর্ট এর সাথে জড়িত।

অন্যদিকে সুদ এ উপরোক্ত ব্যবসায়িক বিষয়াবলীর সাথে - অতিরিক্ত যে বিষয়টি এ্যাড করা হয় - তা হল 'নন প্রসেসড - সময়'। যা ব্যবসায়ীর এ্যাপোর্ট এর মধ্যে পড়ে না। ব্যবসায়ী 'সময়' উৎপাদন, নিয়ন্ত্রন, এক্সপানশান বা প্রসেস না করেই তার বিনিময় মূল্য ঋণ গ্রহীতা কিংবা পন্য ক্রেতার কাছ হতে নেয়। প্রসেসড বিহীন স্রষ্টার কোন কিছুর বিনিময়ে অন্য মানুষ হতে মূল্য নেওয়া হল সুদ।

সময় পুরোটাই স্রষ্টার, ঠিক যেমন বাতাস, সূর্যের আলো ইত্যাদি। আপনি আমি স্রষ্টার এ্যাভানডান এ সকল রিসোর্স কে প্রসেস করা ছাড়া অন্য মানুষ হতে কোন বিনিময় মূল্য নিলে তা সুদ হবে। এবং সুদ হল একধরনের প্রতারনা - যা স্মার্টলোকরা আন স্মার্টলোকদের উপর আরোপ করে - এবং তাই এটা হারাম বলে আমি জানি।

আমার এ জানায় - ভুলগুলো কি? কিংবা ব্যবসা ও সুদ এর পার্থক্য কি - তা যদি অন্য কোনভাবে ব্যাখ্যা করা যায় - জানালে ভাল হত।

-----------------

অর্থনীতি ও ব্যাংকিং এর মত জটিল বিষয় সাধারণ মানুষ কখনো-ই বুঝবেনা! ৩৫০জন আইমপ্রণেতাদের ক'জন বোঝেন?

>>>> আপনার এ পয়েন্টে আমার অভিমত হল - যারা জানতে চায় - তাদের জানানোতে সমস্যা কোথায়? ইসলামের অনেক বিষয় আছে যেটা সাধারন মানুষ জানেনা। এর অর্থ এই নয় যে - এটা নিয়ে সাধারন মানুষের জানাশোনায় কোন বাধাঁ আছে। আমার আরো মনে হয় আমরা না জানা থাকার চেয়ে - জানতে দেওয়া হয় না - এ সমস্যায় আছি। ঠিক যেমনটা আমরা রাবাই দের ক্ষেত্রে দেখেছিলাম এবং তাদেরকে এ জন্য আল্লাহ ও শাস্তি দিয়েছিলেন।

আশা করি আপনার কাছ হতে এ ব্যাপারে সুচিন্তিত মতামত পাবো। ধন্যবাদ। আসসালামুআলাইকুম।

261472
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:০৭
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ..
দেরীতে আসার জন্য দুঃখিত,
আসলে ইচ্ছার সাথে ব্যস্ততা ও বাস্তবতার বিস্তর ফারাক!

@বুড়া মিয়া ভাই,
মুরাবাহা প্রসংগে বলতে হয়-

আপনি বলেছেন মুরাবাহা কিন্তু আমার জানা মতে অর্ডিনারী কোন ব্যবসা নয়, এটা ষ্পেশালাইজড ব্যবসা যা শুধু বাকী-ই দেয় ইনষ্টলমেন্ট-পেমেন্ট-সিষ্টেমে, যে ধরনের ইন্সটলমেন্ট সুদী-ব্যাংকের থাকে;

>>আপনি কি বায়-ই-মুআযযাল বলতে চেয়েছেন? অথবা দুটোতে মিশিয়ে ফেলেছেন!! কারণ যা শুধু বাকী-ই দেয় এবং ইনষ্টলমেন্ট-পেমেন্ট-সিষ্টেমে-এ দুটো শর্তই মুরাবাহা-তে অপরিহার্য নয়! কিন্তু বায়-ই মুআযযালে যা শুধু বাকী-ই দেয় অপরিহার্য এবং ইনষ্টলমেন্ট-পেমেন্ট-সিষ্টেমে হতে পারে, না-ও পারে!

যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের/সরকারের বিধিনিষেধ না থাকতো তবে শুধুমাত্র মুরাবাহা দিয়েই দেশটা উতপাদনশীলতায় ভরে দেয়া যেতো- যেমন কল-কারখানায়, তেমনি কৃষি ও সেবাতে!

আর জনসাধারণও উতপাদনের ন্যায্যমূল্য পেতো এবং ভোগ্যপন্যও ন্যায্যমূল্যে পেতো!!

একদল সত ও দক্ষ জনগোষ্ঠী জনসাধারণের জন্য কতটা কল্যান দিতে পারে তার কিছু উদাহরণ বোধ হয় দেশের মানুষে বুঝেছেন!

এদের হাতে থাকলে "বিসিএসসি" বিলুপ্ত হতোনা- বরং সর্বসাধারণের নির্ভরতার ঠিকানা হতো!


***
@সাদাচোখে ভাই
ফ্রীজ কেনার ব্যাপার যেটা বলেছেন- যদি ফ্রীজ কেনা ও হস্তান্তর না হয়ে থাকে তবে .. ভেবে দেখুন তো


আর আসলেই যদি ফ্রীজ কেনা ও হস্তান্তর হয়ে থাকে তবে তো ঐ ব্যাংক "ইসলামী ব্যাংকিং"ই করেছে, যদিও সূদের নিয়ম মনে করছে/ বলছে!

ঠিক যেমন-
ইসলামের "শূরা" থেকে "গণতন্ত্র" নিয়ে তাতে কিছু আবর্জনা মিশিয়ে ব্র‍্যান্ডিং করার মত!

আর এখন আমাদের একথা নিয়ে বিতর্ক করতে হয় যে, ইসলামে "গণতন্ত্র" জায়েজ কিনা, বা হলেও কতখানি!

আপনার প্রশ্নের জবাব-
১। ক্রেতাকে টাকা না থাকা স্বত্তেও ঐ ভোগ্যপন্যটি কিনতে সুযোগ করে দিচ্ছে না?

>>এটা তো "বাকিতে কেনা-বেচার ব্যবসা" দুষণীয় হবার কিছু নেই এতে! এটা গরীব-ধনী শিক্ষিত-মূর্খ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সুবিধার জন্য!

২। ক্রেতাকে টিভিটির জন্য অতিরিক্ত যে অর্থটি প্রদান করতে হচ্ছে দুটি ব্যাংকেই - তা শুধু মাত্র এজন্য যে - ব্যাংক দুটিই তাকে ঐ টাকাটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করতে দিচ্ছে বলেই?

>>এটি-ই তো ব্যবসার লাভ, কমদামে কিনে বেশী দামে বিক্রি করা

আপনি যে বলেছেন- টাকাটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করতে দিচ্ছে - মূল সমস্যা তো এখানেই! টাকাটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করার কথা আসলো কেন??

পণ্য বিক্রি হলো বাকিতে, আর ভাবছেন টাকাটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করতে দিচ্ছে
চিন্তার এ জায়গাটুকুতে পরিবর্তন না হলে
**আর তারা বলে "ব্যবসা তো সূদের মতই"!- আলকুরআন
এখান থেকে বেরুনো সম্ভব হবেনা!

৩। ব্যাংক দুটিই এই ঋণ এর বিপরীতে বীমা করা অবস্থায় আছে - যদি কোন কারনে ঋনটি খেলাপী হয়।

>>[খেলাফী ঋণ বলতে চাইনা] পাওনা আদায় করার জন্য বন্ধক, জামিন, বীমা বা অন্য কোন প্রকার ব্যবস্থা রাখাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার! রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা এবং ইসলামী স্বাক্ষ্যআইনের যথার্থ প্রয়োগ থাকলে ওসবের অনেক কিছুই অন্যরকম হতে পারতো!

আবার সেই ঘুরেফিরে রাষ্ট্রের প্রসংগ এসে যায়!

প্রকৃতপক্ষে নাগরিক অধিকার, কর্তব্য ও সুখ-সুবিধার যেকোন বিষয় রাষ্ট্রের অংশগ্রহন ও তদারকী ছাড়া পূর্ণতা পাওয়া সম্ভবই নয়!
সে কারণেই বলা হয়েছে "আন আক্বিমুদ্দীন, ওয়া লা তাতাফাররাক্বু ফীহ"

আগে তো গাছটা লাগাতে হবে, ফলদেবার পর্যায়ে নিতে যত্ন/কষ্ট করতে হবে- তারপর ..

ব্যবসা ও সূদের যে তফাত আপনি ব্যাখ্যা করেছেন তা ঠিকই আছে! এজন্যই শুধুমাত্র "সময়" কোন পণ্য হতে পারেনা!

শেষে বলা যায়- যখন প্রকৃতই একটি পণ্য কেনা-বেচা ও হস্তান্তর হয় তখন সার্বিকভাবে উতপাদন ও বাজারব্যবস্থায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয় [পণ্য+মানিসার্কুলেশন বেড়ে যায়] এর একটি বড় উদাহরণ মাহে রমাদ্বান! সবার ব্যয় বাড়ে, শ্রমের সুযোগ বাড়ে, উতপাদন বাড়ে, ব্যবসার আয় বাড়ে, যাকাতের পরিমান বাড়ে, বঞ্চিতের প্রাপ্য বাড়ে...


বলেছেন "..আমার আরো মনে হয় আমরা না জানা থাকার চেয়ে - জানতে দেওয়া হয় না - এ সমস্যায় আছি।"

>>আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে ঐ মন্তব্যটি করেছিলাম- আপনার মত আরো অনেক আগ্রহী মানুষেরা তার বাইরে!

উচ্চশিক্ষিত অনেক মানুষকে এসবে আগ্রহী হতে দেখলামনা- যদিও তাঁদেরকে অহরহ ইসলামের অর্থনীতি, ব্যবসা ও ব্যাংক নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখী হতে হয়- আর জবাবের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল-ই রয়ে গেলেন আজীবন!

ইসলামের ব্যাপক-বিস্তৃত ব্যবসা পদ্ধতির উপর শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমিক স্তরেই মোটামুটি প্রশিক্ষণ হওয়া উচিত মনে করি, বিশেষতঃ মাদ্রাসাগুলোতে!

কিন্তু তারাবীহর রাকায়াতসংখ্যা আর রফউল ইয়াদাইন নিয়ে ব্যস্ত থাকলে ওসব শেখা/ শেখানোর সুযোগ কে দেবে?


তথ্য এখন তো সব নাগালের মধ্যেই, পড়তে চাইলেই হয়! কিন্তু বাস্তবে অনুশীলন/ প্রয়োগের ব্যাপারগুলো দ্বীনের অন্য অনেক বিষয়ের মতই শিক্ষক ছাড়া পূর্ণ আয়ত্ব করা দুঃসাধ্য!

আল্লাহতায়ালা আমাদের কল্যানকর জ্ঞান বাড়িয়ে দিন এবং সঠিক বুঝ ও আমলের তৌফিক দিন (আমীন)

জাযাকুমুল্লাহ
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৪৬
205339
বুড়া মিয়া লিখেছেন : হুম @আবু সাইফ ভাই, বাই ডেফিনিশন মুরাবাহা ক্যাশ এবং ক্রেডিট সেল দুইটাই। যেহেতু সাধারণ ব্যবসায়ীর হাতে টাকা না থাকার কারনেই ব্যাংকের দারস্থ হয় আর অনেক ক্ষেত্রেই উৎপাদনকারী তার নিজের ব্যবসার অংশিদার হিসেবে ব্যাংক বা আমানতকারীকে নিতে চায় না, তাই বাকীতে কিনে ইনষ্টলমেন্ট-পেমেন্টকেই তারা গ্রহণ করে – আর ইসলামীক ব্যাংকগুলোও এভাবে দিয়ে থাকে; অবশ্যই এটা বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার কারণে হয়েছে, তাতেও কোন সন্দেহ নেই। আমার মনে হয় বিশ্বের ইসলামিক-ব্যাঙ্কগুলোর মোট ইনভেষ্টমেন্ট এর ৬০-৭০ ভাগই হয়েছে মুরাবাহার মাধ্যমে এবং এর সিংহভাগ আবার বাই মুয়াযযাল এর মাধ্যমে, যে কারণে মুরাবাহাটা সাধারণের কাছে পরিচিত হয়ে যাচ্ছে ক্রেডিট সেল এ্যান্ড ইনষ্টলমেন্ট পেমেন্ট সিষ্টেমের এর মাধ্যমে লাভ অর্জনের মাধ্যম হিসেবে – এটা হতো না যদি সাধারণ মুসলিম ব্যবসায়ীরা এসব বিষয়ে সচেতন হতো প্রথম থেকেই।, তারাও সে সুযোগ পায়নি কারণ শুরু থেকেই প্রচলিত ব্যাংকের সাথে পাল্লা দেয়ার জন্য ইসলামীক ব্যাংক দাড়ায়-নি।

এসব থেকে সাধারণ মুসলিমদেরকে বের করে আনার জন্য দেরীতে হলেও ইসলামিক ব্যাংকিং এর কন্সেপ্ট নিয়ে স্কলারদের এগিয়ে আসার ব্যাপারটা প্রেরণাদায়ক অবশ্যই এবং অনেক সাড়াও পড়েছে, এসব বিষয়ে সাধারণদের পরিস্কার ধারণা দেয়ার জন্য এখনও বই অপ্রতুল। সাধারণ ব্যাংকিং এর প্রত্যেকটা ব্যাপার ডিটেইল-মাথম্যাটিক্যাল-এক্সাম্পল দিয়ে যেভাবে বুঝানো হয় সাধারণ শিক্ষায়, ইসলামীক ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে এখনও তেমন হয় নি, উপরন্তু আমার চোখে পড়েছে এমন – ইসলামীক ব্যাংকিং ইন্টারন্যাশনালী পড়াচ্ছে বৃটিশ-এ্যামেরিকানরা একাডেমিক এবং প্রোফেশনাল লেভেলেও, তারা সেখানে উদাহরণ সহ শিখাচ্ছে।

আমাদের দেশের জন্য যেটা ভালো হবে বলে আমার মনে হচ্ছে, সেটা সব ইসলামীক ব্যাংকগুলোর উদ্যোগে একটা ইসলামীক-ব্যাংকিং এর ইনষ্টিটিউট খোলা এবং সেখান থেকে সার্টিফিকেট অর্জনকারীদেরকে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের সুব্যবস্থা করা, এতে করে সাধারণ মানুষ সেদিকে ধাবিত হবে, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত।

সৎ নিয়্যতে মুসলিম স্কলাররা যে বীজ বপন করেছে, তা বেড়ে উঠুক এটা আমিসহ সমস্ত মুসলিমদেরই কাম্য। দোয়া থাকলো তাদের জন্য।
261489
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৫৯
আবু সাইফ লিখেছেন : সব ইসলামীক ব্যাংকগুলোর উদ্যোগে একটা ইসলামীক-ব্যাংকিং এর ইনষ্টিটিউট খোলা এবং সেখান থেকে সার্টিফিকেট অর্জনকারীদেরকে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের সুব্যবস্থা করা, এতে করে সাধারণ মানুষ সেদিকে ধাবিত হবে, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত।

IBTRA (Islami Bank Training & Reasearch Academy)এ ব্যাপারে কিছু কাজ করেছে/ করছে, সকল ইসলামী ব্যাংক-বীমার সম্মিলিত শরীয়া কাউণ্সিল তেমনি একটা প্লাটফরম!

কিন্তু এমন কিছু সীমাবদ্ধতা এবং অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্খিত ব্যাপার-স্যাপার আছে যা উন্মুক্ত আলোচনার যোগ্য নয়!!

তবুও একথা খুব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে্, ইসলামী অর্থব্যবস্থাই আগামী বিশ্বকে আলোর পথে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ!
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
205542
বুড়া মিয়া লিখেছেন : সারা বিশ্বেই ইসলামিক ব্যাংকিং এগিয়ে যাক, দোয়া রইলো আবারও...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File