সচেতনতায় কথিত যৌন-শিক্ষা
লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ২৯ জুলাই, ২০১৪, ০৯:০৯:৫৭ রাত
এ-লেখাটা দেখে কিছু গল্প (যা রক্ষণশীল পরিবারে এখনও অশালীন বলে বিবেচিত) মনে পড়ে গেলো – এ-তো (গল্পের লেখক) যেন সেই রসময় গুপ্তের বিমল, মা-মাসী-পিশী-র কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছে সব; ওসবের জন্য বিমলদের কিছু পড়তেও হয়নি কখনো, তাদের ঘর-ই ছিল ওসবের ব্যবহারিক-পাঠশালা। রসময়ের সেসব রসালো গল্প যেমন তাদের বিকারগ্রস্ত সমাজের করুন-মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ; তেমনি এসব বিমলদের ফেবু-আহাজারী যেন নিজেদেরকে সমাজের উচ্ছিষ্ট হিসেবে বিবেচিত হওয়া হতে রক্ষা করার এক অপপ্রয়াস। তাই সবাইকেই তাদের মানসিকতা ধারণ করাতে হবে, আর এসব বিমলদের মানসিকতা সবাইকে মানাতে হলেও তো সবাইকে একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নিতে হবে।
বিমলরূপী লেখক যেমন ডাক্তারের গল্প জুড়ে দিয়েছেন, সেটাই ছুড়ে মারতে হয় তার মুখের উপরঃ এসব ফেঃবুঃ লেখকের ভ্যাঃভুঃ এতোটুকু বোঝার জন্য যথেষ্ট যে, এরা এমন-ই মানসিক রোগী এবং বিকারগ্রস্ত, যেন দাড়ি-টুপিওয়ালারা কিছু লিখলেই সেখানে মধ্যযুগীয় মনোভাব, অযৌক্তিকতা, অসচেতনতা, কুশিক্ষা, জামাতপন্থী অপপ্রচার ইত্যাদী খুজে পায়! তাদের সামনে ডাক্তার কাগজে একটি দাগ দিলে বলবেঃ এতো জামাতী মৌলবাদীর দাড়ি! আর দু’টো দাগ দিলে নিশ্চিত বলে ফেলবেঃ এতো দুই মৌলবাদীর সংঘবদ্ধ চক্রান্তের চিত্র! এদের বোঝার জন্য ডাক্তারও লাগে না, সবাই-ই এদের রোগটাও বুঝতে পারে।
যুগে-যুগে যৌনতার কোন শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দেয়া লাগে নি! এবং এ ব্যাপারটা থেমেও থাকে নি! এটা এমনই, ঠিক যেমন – ‘হাগু আসলে ডাক দিতে হয় না’; তাই এ বিষয় নিয়ে তাদের মাতামাতি তাদেরকে আমাদের কাছে অন্যভাবেই পরিচিত করিয়ে দিচ্ছে!
কবে যেন টিভি-তে দেখলাম একটি বিজ্ঞাপনী-চিত্রঃ এক বাবা যেন তার মেয়েকে স্যানিটারী-ন্যাপকিন পড়িয়ে (যদিও সেটা সরাসরি চিত্রিত করা হয়নি) অনেক গর্বিত এবং হাসিমুখে সচেতন বলে নিজেকে জাহির করছে; পরের যুগে এদেরই বংশধরদের হয়তো দেখবো – যৌনক্ষুধায় ক্ষুধার্ত কণ্যা-র যৌনক্ষুধা নিজে মিটিয়েও (হয়তো বা চিত্রিত করা হবে না তখনও) হাসিমুখে বলবে – আরেকজন মানুষ আমার মেয়ের যৌনক্ষুধা কিভাবে মেটাবে সেটা তো ‘অন্ধকার’, আমি জানি না এবং দেখি না! অতএব, প্রতিটি সচেতন বাবার কর্তব্য, নিজের আদরের কণ্যা-কে অন্ধকারে অপরের কাছে তুলে দেয়ার মতো অমানবিক এবং অমানুষিক কাজ ‘বিয়ে’ দেয়া থেকে বিরত থাকা! তাই এ বিষয়ে প্রতিটি পিতাকে সচেতন হয়ে নিজ কণ্যার যৌন-ক্ষুধা মেটানোর দায়িত্বটাও নিজেদের নিতে হবে, পিতাই পারে কণ্যার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে! আসুন সবাই আমার মতো সচেতন হয়ে – নিজনিজ কণ্যাকে ক্ষুধামুক্ত রাখুন, হাসি-খুশী-সুখী পরিবার গড়ে তুলুন!
এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের সমাজ; এক লাফে তো আর রক্ষণশীলতা ভেঙ্গে দেয়া যায় না, তাই গতকাল যৌনতা থেকে সামান্য দূরে ছিল বিজ্ঞাপনী চিত্র, আজ যৌন-শিক্ষা পাঠ্য-বইয়ে, এর-পর যৌন-শিক্ষার ল্যাব গড়ে সেখানে প্র্যাকটিকাল ক্লাস (যদিও এটা এখন অনেক স্কুলেও অঘোষিতভাবে বিদ্যমান, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে তো বলার অপেক্ষা রাখে না!) করিয়ে নিলে বিপদমুক্ত দূরত্বে থাকতে পারবে এর প্রবক্তা বিমলরা। আর তাদের মনের একান্ত চাওয়া যেন এটাই কেনো যে ঘরে ঘরে তাদের মতো বিমল-রা মাসী/পিসী/মা-র কাছ থেকে এসব শিক্ষা নেয় না! এবং সেরকম বাবু/মেসো/পেসো-কমলা-কণ্যা কেন গড়ে উঠে না!
এরপর আর কি? একে তো নিজের অজান্তেই সবার জানা জিনিস; উপরন্তু হাতে-কলমে নির্লজ্জভাবে প্রকাশ্যেই কেউ না জানতে চাইলেও, শিখিয়ে দিচ্ছি; কেন? অবশ্যই তা-র প্রকাশ্য অ্যাপ্লিকেশনে যাতে কোন কথা না থাকে এবং কেউ যেন এতে সংকোচ বোধ না করে! এটা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে?
পরিমল-তো আমরা পেয়েছি-ই; নেই শুধু এখন বিমল-কমলা ঘরে ঘরে; ছিলো তসলিমা হয়েছে বিতাড়িত, তাই তারা গড়ছে সমাজ জন্ম দিবে রসময় গুপ্ত – লিখবে না তারা, করবে ভিডিও, ডিজিটাল বাংলাদেশ, তাই তো কাম্য!
বিষয়: বিবিধ
১৮৬৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অভিভাবক-মহলের দৃঢ় পদক্ষেপ এ ক্ষেত্রে কাজে দিবে বেশী; তারা সবাই মিলে স্কুলে-স্কুলে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা তেমন কিছু করলে হয়তো এর একটা সুরাহা হবে বলে আশা করা যায়।
অন্যদিকে স্কয়ার Splash সাবানের মাধ্যমে তিশাকে দিয়ে জানান দিচ্ছে '' কৃষ্ণকলি তারে আমি বলি '' জাতীয় স্লোগান ।
আর ক্লিয়ার আপনাকে ক্লিয়ারলি সব কিছু ক্লিয়ার করে দিচ্ছে
সব কিছুই এখন হবে ওপেনলি । লুকাবার কিছু নেই কারণ যত লুকাবেন মানুষের কিউরিসিটি ততই বাড়বে ।
আর মানুষের এই আগ্রহকে বাড়ানোর জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকে হটিয়ে '' নিজেকে জানো''র আগমন ঘটানো হয়েছে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন