বাংলাদেশঃ সম্প্রতিক বিশ্বের কাছে এক ভয়ংকর নাম!
লিখেছেন লিখেছেন কামেল মুরব্বী ০২ জুন, ২০১৩, ০১:০৪:০২ রাত
মাঝে মাঝে চরম এ্যাকশন মুভি দেখার ইচ্ছা জাগে। কি আর উপায় দেখতে বসি ইংলিশ ফিল্ম। কোন কোন সময় এ্যাকশন আবার কোন কোন সময় হরর বা ভয়ংকর সব কাহিনী। তবে একটা কন্ট্রোল সিস্টেম আমাদের হাতে থাকে। বেশি ভয় পেলে রিমোর্টের সহায়তা নেয়া প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু সমস্যা বাঁধে লাইভ মুভি গুলোতে।
বর্তমান বাংলাদেশের আজব আজব কাহিনী মাঝে মাঝে হলিউড বলিউডকেও হার মানায়। এই ধরেন পুলিশের এ্যাকশন। বিরোধী দলের মিছিল দেখার পরই ইংলিশ মুভি “টার্মিনেটার” এর মতো গুলি শুরু করেন আমাদের পুলিশ হিরুরা। মাঝে মাঝে মিডিয়ার কল্যানে তারা হিরুর চরিত্রে থাকলেও বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় ভিলেনের চরিত্রে।
বাংলাদেশের সরল মনা মানুষগুলো এক সময় রিক্সার টায়ার ফাটলেই আঁতকে উঠতেন। কিন্তু এখন টায়ার ফাটলে খুব হাবাগুবা না হলে কোন ভ্রুক্ষেপই করেননা কেউ। কারণ পরিষ্কার। সাউন্ড গ্রেনেড আর গুলির শব্দ শুনতে শুনতে বাংলাদেশের সরল মনা মানুষগুলোর কান এখন মুটামুটি বন্ধই হয়ে গেছে বলা যায়।
এক সময় কোন হত্যার বা অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর ঘঠনা থাকতো পত্রিকার হেডলাইন। কিন্তু “এখন সেই যুগ কি আর আছে, যুগ পাল্টাইয়া গেছে”। নিহতের খবর ছাপলে হয়তো পত্রিকায় খবর প্রকাশের আর কোন জায়গা থাকবেনা। তাইতো পত্রিকাগুলোর ইচ্ছে হলে নিহত হওয়ার সংবাদ্গুলো একসাথে করে সারসংক্ষেপ ছাপায় অথবা সংবাদ ছাপায়ই না। “দিন বদলাইয়া গেছে”।
মানুষ মরার পর এখন সংখ্যা গুনা হয়। তর্ক বাঁধে। এইটা কি হত্যা না গণহত্যা? হত্যা হইলে লগু পাপ। আর গণহত্যা বলা নিষেধ। কারণ এই দেশে ৭১ পরে কোন গণহত্যা হওয়া নিষেধ করে দিয়েছেন আমাদের মন্ত্রীবর্গ। তবে সরকার দলীয় কেউ নিহত হইলে সেইটা মাঝে মাঝে রাডারে ধরা পরে।
বাংলাদেশ নামক ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে এ্যাকশন এবং কমেডী ধর্মী ছবি তৈরী করে থাকে মহাজোট প্রডাকশন।
ছবি তৈরী হলো “রানা প্লাজা”। অভিনয়ে ১৩০০ পোশাক শ্রমিকের লাশ। ভিলেন হরতাল সমর্থনকারী জামাত-শিবির। ট্রাজেডি হিরু রানা। হিরু কয়েকজন র্যাবের অফিসার। কমেডিমেন পিলার তত্ত্ব মখা আলমগীর। সিরিয়াস কমেডিম্যান আবুল মাল।
ছবিতে কমেডিম্যান এর সেরা উক্তি “পিলারের ফাটল ধরে হরতাল সমর্তনকারী জামাত-শিবিরের ঝাকুনিতে বিল্ডিং এর ধ্বস ঘটেছে”।
ছবিতে সিরিয়াস কমেডিম্যান এর সেরা উক্তি “বিল্ডিং ধ্বসে নিহতের এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে দিত্বীয় ঘটনা হলেও এটি খুব বড় ঘটনা নয়”।
ইংলিশ ফিল্মে মানুষ ধরে নিয়ে গিয়ে তত্ত্ব উদঘাটন করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের পুলিশ একবার ধরে নিয়ে গেল তিন অবস্থা। গুম, খুন, অথবা নির্যাতনে পংগু।
হরর মুভির কার্যকলাপ দেখলে বুঝা যায় ভিক্টিমের কিছু একটা হবে। কিন্তু বাংলাদেশের পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে গেলে কি হবে কিছুই বলা যায়না। তবে ধারণা মোতাবেক দুই অবস্থা হয়। রানা, আসিফ মুহিদ্দীনের অবস্থা অথবা শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা বাবুনগরীর অবস্থা।
বড়-ই হার কিপ্টে হয়ে গেছে আমাদের পুলিশ বাহিনী ! মাত্র দেড়লক্ষ গোলাবারুধ ব্যাবহার করেছে হেফাজতে ইসলামের উপর।
আমাদের প্রিয়মাতৃভূমি বাংলাদেশ। অপ্রিয় হলেও সত্য। সারাবিশ্বে আজ ভয়ংকর এক রাষ্ট্রের নাম। হয়তো সেই দিন আর বেশি দূরে নয়। যেইদিন বাংলাদেশের পুলিশকে দেখলেই মানুষ বলে উঠবে “ঐ যে পুলিশ যায়, মানুষ না”। যেইদিন কোন মন্ত্রীকে দেখে মানুষ বলবে “পাগল দেখতে চাইলে দেখে নাও, আর হেমায়েতপুরে যাওয়া লাগবেনা”।
হয়তো এও ঘটবে মায়েরা বাচ্চাকে খাবার খাওয়াতে ভাল্লুকের ভয় না দেখিয়ে বলবে “আওয়ামীলীগ আসছে, ছাত্রলীগ আসছে, যুবলীগ আসছে”।
হায়রে আমার সোনার বাংলাদেশ। তোমার বুকে কল্যানের আলপনা আঁকার সর্নকারের আজ বড়ই অভাব।
বিষয়: বিবিধ
১৮১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন