বোরকা কি দাসত্বের চিহ্ন? আর পতিতাবৃত্তি কি স্বাধীনতার বাস্তবায়ন?djdj l
লিখেছেন লিখেছেন মুকুলসরকার ১১ আগস্ট, ২০১৩, ১১:৪৬:০৪ সকাল
ইসলামে পর্দার বিধান কেবল নারী বা কেবল পুরুষের জন্য নয়। আল-কুরআনের সূরা নূরে আল্লাহ তাআলা বলেন: (হে নবী) আল্লাহর প্রতি আস্থা -বিশ্বাস স্থাপনকারী পুরুষদের বলুন তারা যেন তাদের চক্ষু অবনত রাখে আর নিজের লজ্জাস্থান (অবৈধ ব্যবহার থেকে) হেফাজত করে । আর মুমিন নারীদের বলুন তারা যেন তাদের চক্ষু অবনমিত রাখে আর নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে আর তাদের সৌন্দর্য যেন প্রদর্শন করে না বেড়ায়, অবশ্য যা স্বাভাবিকভাবে প্রকাশিত হয়ে যায় তার কথা ভিন্ন....।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেছেন: মূর্খতার যুগের মত সাজসজ্জা করে বেড়িও না।
আমরা জানি যে ইসলামের পূর্বে যে দাসপ্রথা ছিল তা ছিল অমানবিক । ইসলাম দাস-দাসীদের ঠিক তেমন ভরন-পোষনের নির্দেশ দিয়েছে যেমন নিজেরা থাকে। তাছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে দাসপ্রথা পর্যায়ক্রমে বিলোপের দিকে নিয়ে গিয়েছে। যাই হোক যে কথা বলতে চাচ্ছিলাম, ইসলামের আবির্ভাবের পরে মুমিন নারীদেরকে চাদর দিয়ে তাদের মাথা ও বক্ষস্থল ভালভাবে ঢেকে রাখতে ও সতর যথাযথভাবে ঢেকে রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এ উদ্দেশ্যে যে তাদেরকে এর ফলে উত্তক্ত করা হবে না। আল্লাহ তাআলা মানুষের স্বভাব-প্রবনতা যেভাবে জানেন আর কে তার চেয়ে ভাল জানতে পারে? তিনি বলছেন যে, নারীরা যদি এভাবে সুন্দরভাবে ঢেকে চলে তাহলে তাদেরকে উত্তক্ত করা হবে না! আমরা অবাক হয়ে পারি না এই নির্দেশনার বাস্তবতা দেখে। কারণ, আমরা দেখছি আজকে ইভটিজিং নামক মহামারীর স্বীকার প্রধানত কারা? চোখ বুজে বলে দেওয়া যায় তথাকথিত দিগম্বর সভ্যতার পূজারীরাই এর প্রধান শিকার।
সুতরাং স্বপ্নে পাওয়া তথ্যে বোরকাকে তথা পর্দার বিধানকে মুখোশধারী ও বর্ণচোরা বিতাড়িত শয়তানের কর্মীরা দাসত্বের প্রতীক বলতে পারে।
আর তালেবানদের ফরমান মানেই ইসলামের বিধান এটা বলার হেতুটা কি? এটা কি এজন্য যে লাখো বনী আদমকে ক্রুসেডাররা যে হত্যা করেছে তাকে বৈধতা দানের খোড়া যুক্তি দাড় করানো?
তারপর কথা থেকে যায়, প্রত্যেকটা সমাজ সভ্যতার নিজস্ব কিছু কালচার থাকে । আমরাতো দেখেছি, বাংলাদেশের হিন্দু নারীদের একটা অংশ, যারা ভদ্র পরিবারের মহিলা ছিলেন, তারাও মুসলিম মহিলাদের মতই মাথা ও শরীর ঢেকে চলতেন। তারা কি মোল্লাদের ওয়াজ শুনে এভাবে চলতেন? নাকি আবহমান বাংলার সংস্কৃতির প্রকাশ মাত্র?
সুতরাং মতলববাজরা আফগানের সামাজিক কালচারকে ইসলাম আখ্যাদিয়ে মানুষকে ইসলামী বিধানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার উস্কানি দিচ্ছে! কিন্তু তাদের ভন্ডামী মানুষ কি বুঝতে পারে না?
আমি মুসলিম দেশে দেশে যে সাংস্কৃতিক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় তার কিছু নমুনা তুলে ধরছি:
১. বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে নারীর জন্য কেবল পর্দা করার বিধান পুরুষের জন্য নয় এমন মনে করা হয়। আর ইসলামে প্রথমে পুরুষকে পর্দার বিধান মানতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ।
২. বাংলাদেশ ও আশেপাশের দেশগুলোতে দাড়ি রাখা ও লম্বা জামা জুববা পরাকে দীনদারির প্রধান চিহ্ন মনে করা হয়। আর মিসরে বড় বড় আলেম ও ক্বারীরাও দাড়ি রাখেন না এবং কোট স্যুট পরেন। পক্ষান্তরে দীনদারীর প্রধান একটি মাপকাঠি রাসূল সা. এর এই বক্তব্যে পাওয়া যায়: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের সুরত-সৌন্দর্য ও ধনসম্পদের দিকে তাকান না । বরং তিনি লক্ষ করেন তোমাদের অন্তকরণ ও কর্মসাধনার দিকে। (সহীহ মুসলিম) প্রিয় নবী আরেকবার তাঁর বক্ষস্থলের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন: আল্লাহভীতি বা পরহেজগারীতা এখানে। অথচ আমাদের দেশে যত বড় হারাম উপার্জনকারী ও মানুষের অধিকার হরণকারী সে ততবড় সম্মানিত ও নেতৃস্থানীয় হয় । যাদের কিছু মুখোশ খোলার নমুনা আমরা ১/১১ এর পরবর্তীতে কিছুটা দেখেছি। বাস্তবতাতো আরও জঘন্য।
৩. আমরা আরব ও সংলগ্ন দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিয়ের অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে দফ বাজানোর রেওয়াজ দেখতে পাই। কিন্তু বাংলাদেশে এর কি অস্তিত্ব আছে? বরং সাধারণ মানুষ আরও খারাপ মনে করবে?
৪. বাংলাদেশে ভাড়া করা "খতমে কুরআন" ও মিলাদ-মাহফিল নামক সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং মৃত্যুদিবস পালিত হয়। কিন্তু আরব ভূখন্ডে তার কোন অস্তিত্বও নেই ।
এভাবে শীতপ্রধান দেশে ও গ্রীষ্মপ্রধান দেশের মধ্যে পোষাক-আশাক ও অভ্যাস ও রুচির মধ্যে বিস্তর তফাৎ রয়েছে।
সুতরাং কোন কিছু হলেই ইসলামের উপর চাপিয়ে দেয়ার অপপ্রচেষ্টা শয়তানী সুড়সুড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা বিতাড়িত ধোকাবাজ বর্ণচোরা ও ছদ্মবেশী শয়তানের সুড়সুড়ি থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। আর নিজের প্রবৃত্তির দাসত্বের হাত থেকে ও নানান নামে নানান বর্ণে বহুখোদার গোলামী থেকে এক আল্লাহর গোলামীতে রজু হওয়ার তৌফিক চাই। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৯৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন