মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনীত ফরিদপুর কিংবা ঢাকার একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি প্রসিকিউশন
লিখেছেন লিখেছেন মবকল ২৯ মে, ২০১৩, ১০:১৫:১৯ রাত
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মামলায় গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো ডিফেন্স পক্ষের আর্গুমেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুনানি করেছেন ডিফেন্স পক্ষের অন্যতম আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ মিজানুর রহমান ও ব্যারিস্টার মুন্সী আহসান কবির। এই মামলায় মোট সাতটি চার্জের মধ্যে গতকাল তারা সাত নম্বর চার্জের বিষয়ে শুনানি করেছেন। এছাড়া শুনানিতে তদন্তকালের কাজের নানা অসঙ্গতিও তুলে ধরেছেন এই দুই আইনজীবী।
গতকাল শুনানিতে আইনজীবীরা বলেছেন, মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা ফরিদপুর কিংবা ঢাকার একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি প্রসিকিউশন। এছাড়া মুজাহিদকে আল বদর সদস্য হিসেবে নানা অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত করে অভিযোগ আনা হলেও প্রসিকিউশনের দাখিলকৃত কোন ডকুমেন্টেই মুজাহিদকে তারা আল বদর হিসেবে প্রমাণ করতে পারেননি। সাত নম্বর চার্জের বাগচরের হিন্দু কমিউনিটিকে অত্যাচার ও কয়েকজনকে হত্যার অভিযোন আনা হলেও মুন্সী আহসান কবির শুনানিতে বলেছেন, এই চার্জের পক্ষে ১২ নম্বর সাক্ষী চিত্তরঞ্জন সাহা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কোন সাক্ষী নন। তিনি অন্যের কাছে শুনে দীর্ঘ ৪২ বছর পরে এসে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়া অপরসাক্ষী (১৩ নং) শক্তিসাহা ঘটনার বর্ণনা দিলেও তার সাক্ষ্যতেই স্ববিরোধী বক্তব্য রয়েছে। এছাড়া এই সাক্ষী ভারতের নাগরিক বলেও শুনানিতে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।
শুনানিতে মুন্সী আহসান কবির আরো বলেন, মুজাহিদ এমন একজন ব্যক্তি যিনি ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। জীবনের সকল ক্ষেত্রেই তিনি মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। এমনকি সরকারের মন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি তার সেই মেধা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের সেবায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। দরিদ্র এই দেশে যেখানে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে অধিকাংশ ব্যক্তি অনিয়ম আর দুর্নীতি করে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন সেখানে আজকের কাঠগড়াতে দাঁড়ানো এই মুজাহিদের বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষ থেকেও সামান্যতম অনিয়মন কিংবা দুর্নীতির কোন অভিযোগ তুলতে পারেননি। আর এটা সম্ভব হয়েছে মুজাহিদের অসামান্য সততা ও ন্যায়পরায়নতার কারণেই। এসময় কাঠগড়াতে দাঁড়ানো মুজাহিদ অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। বেশ কয়েকবার তাকে রুমাল দিয়ে চোখ মুছতেও দেখা গেছে।
পরে এডভোকেট সৈয়দ মিজানুর রহমান শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, এই মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে যেসকল জব্দকৃত ডকুমেন্ট জমা দিয়েছেন সেগুলোর নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে মুজাহিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার প্রত্যেকটিই তারা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে অপর দুই বিচারপতি আর্গুমেন্ট রেকর্ড করেন। গতকাল আর্গুমেন্ট করেছেন ডিফেন্স পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান ও ব্যারিস্টার মুন্সী আহসান কবির। তাদেরকে সহায়তা করেছেন এডভোকেট এম শাহজাহান, এডভোকেট গাজী এইচ এম তামিম প্রমুখ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই মামলায় লিগ্যাল পয়েন্টে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের আর্গুমেন্ট করার কথা রয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১৬১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন