সময়ের সাহসী সন্তান সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান

লিখেছেন লিখেছেন আবরণ ১৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:১৭:১৪ দুপুর

আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেই সরকার ক্ষান্ত হয় নাই। তাঁকে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি 'আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল' এর সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং কানাডা প্রবাসী জনৈক আহমেদ জিয়াউদ্দিন এর ট্রাইবুনালে বিচারাধীন বিষয় সম্পর্কে কথোপকথন তাঁর পত্রিকায় ছেপেছেন। একজন বিচারক বিচারাধীন বিষয় নিয়ে যে ভাষায় যে শব্দ চয়নে কথা বলেছেন তা' নিঃসন্দেহে বিচারকের ইমেজ ক্ষূন্ন করেছে এবং একই সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমার দেশ পত্রিকাতে সংলাপটি ছাপা হওয়ার সুবাদে সারাদেশের মানুষ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছে। বিচারপতি নিজামুল হক সাহেব সংলাপের বিষয়টি অস্বীকার না করে বরং সংলাপের পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। বিষয়টি এখানেই থেমে যাওয়া উচিৎ ছিল এবং সেটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী এতে সন্তষ্ট হতে পারে নাই। পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকেই মাহমুদুর রহমান সংলাপটি তাঁর পত্রিকায় ছেপেছেন। এতে অপরাধ ট্রাইবুনালের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় এবং বিচারপতি পদত্যাগ করায় সরকার কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়ে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রকাশিত হাতে গোনা কয়েকটি বাদে বেশীর ভাগ পত্রিকাই যেখানে সরকার বন্দনায় ব্যস্ত, সেখানে কে এই মাহমুদুর রহমান যিনি সরকার বহাদুরের ইচ্ছা অনিচ্ছা, মান মর্যাদার দিকে না তাকিয়ে এত বড় একটা কাজ করে ফেললেন। মাহমুদুর রহমান এর দোষতো একটা নয়। তিনি সরকার বাহাদুরের দৃষ্টিতে আরও একটা বড় ধরণের অন্যায় করেছেন। তা' হলো কিছূ স্বঘোষিত নাস্তিক ব্লগার তাদের ব্লগে নবী করিম (সঃ) এবং ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি সম্পর্কে মনগড়া, কাল্পনিক, আপত্তিকর লেখা পোষ্ট করে বিশ্বের কোটী কোটী মুসলমানকে অপমান করেছে। আর সেই লেখাগুলো তিনি তার পত্রিকায় ছেপে সবা্ইকে জানিয়ে দিয়েছেন। সত্য প্রকাশ করাই একজন সৎ সাংবাদিকের কাজ। এই দৃষ্টি কোন থেকে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান যে কাজটি করেছেন তা' অত্যন্ত যুক্তি সংগত এবং সঠিক। তবে যারা এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেন তাদের বক্তব্যটা এরকম যে, ' আমি অন্যায় করেছি, অপরাধ করেছি, তুমি দেখার কে? দেখেছ বেশ করেছ- তা' আবার অন্যদেরকে বলবে কেন?" সরকারও এ রকমই ভাবে। না হলে যারা অন্যায় কাজটি করলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে যিনি অন্যায়টা প্রকাশ করে দিলেন তাকে নির্যাতন করছে কেন? এত ষ্পষ্টই বুঝা যায় এই অন্যায় কাজের প্রতি সরকারের সমর্থণ আছে। মাহমুদুর রহমানকে নির্যাতন করে কিংবা তাঁর পত্রিকা বন্ধ করে তাঁকে যতই ক্ষতি করার চেষ্টা করা হোক না কেন তাতে তাঁর ক্ষতি না হয়ে বরং উল্টো ফল ফলবে। সরকারের রোষানলে পড়ে মাহমুদুর রহমান নিজেকে ইতোমধ্যেই যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন সেখান থেকে কারও পক্ষে সম্ভব নয় তাঁকে টেনে নামিয়ে আনে। মানুষ মাত্রই মরণশীল। ব্যক্তি মাহমুদুর রহমান এই অমোঘ নীতির বাইরে নন। মাহমুদুর রহমান এর উপর নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়ানো হবে, তিনি দেশের মানুষের কাছে তত বেশী গ্রহনযোগ্যতা পাবেন, তত বেশী জন নন্দিত হবেন। মাহমুদুর রহমানের উপর নির্যাতন করে তাঁকে মেরে ফেলা যেতে পারে, তাঁর পত্রিকাও বন্ধ করে দেওয়া যেতে পারে কিন্তু সময়ের সাহসী সন্তান সাংবাদিক মামমুদুর রহমানকে তাঁর অবস্থান থেকে একচুলও নড়ানো যাবে না।

বিষয়: বিবিধ

১৪৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File