নারীদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রস্তুতি হেফাজতের
লিখেছেন লিখেছেন জেমস বন্ড ০০৭ ২৪ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:৫৭:৫৬ সকাল
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে এবার নারীদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রস্তুতি চলছে। দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রী ও নারী শিক্ষকরা এক্ষেত্রে উদ্যোগী ভূমিকা রাখছেন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নারী শ্রমিক, নারী কর্মকর্তা এমনকি তৃণমূল পর্যায়ের গৃহিণীদের সংগঠিত করছেন। এছাড়া নারীদের মাঝে যারা ইসলামী আদর্শ লালন করছেন, অথচ মাঠে-ময়দানে আন্দোলন-সংগ্রামে
সম্পৃক্ত নন- তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য সংগঠনের ১৩ দফা দাবির বিষয়ে নারী সমাজের ভীতি ও বিভ্রান্তি দূর করার পাশাপাশি এসব দাবির পক্ষে নারী সমাজের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করা। এরপর ইসলাম ভিত্তিক ১৩ দফা দাবির পক্ষে রাজধানী ঢাকায় বড় আকারের সমাবেশ করার পরিকল্পনাও আছে উদ্যোক্তাদের। হেফাজতে ইসলামের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্লগে ইসলাম ও রাসূল (সাঃ)-কে নিয়ে কটাক্ষ করায় দেশব্যাপী ইসলামপন্থি নারীসমাজও ক্ষুব্ধ হয়েছে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে নারীদের মাঝে বিরাজমান ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে না। এ পর্যায়ে ১৩ দফায় নারীদের অমর্যাদা করা হয়েছে, নারীদের গৃহবন্দি কর্মহীন করার চক্রান্ত চলছে- এমন প্রচারণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় নারীসমাজে। বিশেষ করে কর্মজীবী নারীরা এ প্রচারণায় দারুণভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এমন প্রেক্ষাপটে ইসলামী ভাবধারায় বিশ্বাসী পর্দানশীন নারীরা এগিয়ে আসছেন। তারা হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফায় নারী উন্নয়নে প্রতিবন্ধক কিছু নেই বলে মনে করছেন। সমাজের কর্মজীবী নারীসমাজের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করতে চান তারা। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হেফাজতে ইসলামের এক নারীনেত্রী বলেন, সামপ্রতিককালে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম দেশ বাংলাদেশে ইসলামবিদ্বেষী তৎপরতা যে হারে বেড়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এজন্য কেবল হেফাজতে ইসলাম নয়- আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতসহ দেশের সকল রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দলের নারীদের ইসলাম ও রাসূলকে নিয়ে বিষোদগারকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা নৈতিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষী ব্লগগুলো বন্ধ করে নাস্তিক, মুরতাদদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আইন পাসসহ বিভিন্ন দাবিতে দেশের লাখ লাখ মুসলিম নারী ঐক্যবদ্ধ। তারা সুযোগ পেলে মাঠে নামবেন, অন্যথায় যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন, জনমত গঠন করবেন। এ ব্যাপরে হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, কওমি ধারার শিক্ষায় শিক্ষিত নারীদের রাজপথে মিছিল সমাবেশ করার নজির নেই। তাই ঘরোয়াভাবে নারীরা ১৩ দফার পক্ষে জনমত গঠন কিংবা নারীসমাজের বিভ্রান্তি নিরসন করার মতো কাজ করতে পারেন। সেই অর্থে এই শ্রেণীর নারীরা মাঠে নামছেন বলা যাবে না। তবে বিচ্ছিন্নভাবে অন্য কোন সংগঠনের ব্যানারে মাঠে নামতে পারেন। মিছিল সমাবেশও করতে পারেন।
এদিকে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির সমর্থনে রাজপথের আন্দোলনে নারীদের উদ্যোগ নেয়ার কথা স্বীকার করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতি হারুন ইজহার চৌধুরী একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শাহবাগি নাস্তিক মুরতাদদের শেখানো বুলি আউড়াচ্ছে বামপন্থি কতিপয় নারী। তারা গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মরত নারী শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করে দেশের ওলামা-মাশায়েখদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে হেফাজতের নারীরা রাজপথে নামছে। খুব শিগগিরই বিভিন্ন দাবিতে নারীরা পর্দার মধ্যে থেকেই ইসলামবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন। তিনি বলেন, এতে বাধা দিলে দেশের কোটি কোটি ইসলামপ্রিয় মানুষ তাদের সহযোগী শক্তি হিসেবে পাশে থাকবে। ইসলামবিরোধী তৎপরতা বন্ধে সরকারকে বাধ্য করতেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মুফতি হারুন বলেন, ইসলাম নারীদের চার দেয়ালে আবদ্ধ করেনি। ইসলাম নারীর মর্যাদা অন্যান্য ধর্মের চেয়ে বেশি দিয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রণীত নারীনীতির কিছু ধারা কোরআন-হাদিসবিরোধী বিধায় তা সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে হেফাজতে ইসলামের দেয়া ১৩ দফায়। হেফাজতে ইসলাম কোন নারীর অধিকার খর্ব করার দাবি তোলেনি। হেফাজতে ইসলাম বা ইসলাম যে কোন ক্ষেত্রে নারীর শালীন অংশগ্রহণকে সমর্থন করে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতেই আমাদের এ আয়োজন। তিনি বলেন, দেশের নারী সমাজের বিশাল একটি অংশ ইসলাম ও রাসূল (সাঃ)-কে অপমানকে বরদাস্ত করছে না। তারা দীর্ঘদিন ধরেই রাজপথে নেমে আসতে চাইছে। তাছাড়া কথিত প্রগতিশীল নারীরা হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি নিয়ে যেসব আস্ফালন করছে সে অবস্থায় কোন মুসলিম নারী ঘরে বসে থাকতে পারে না। আল্লাহ্র পথে রাসূলের পথে নেমে আসার এখন সময় এসেছে। এ কারণে নারীরা আজ ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে চান। অবশ্য হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে তাদের চূড়ান্ত পরিস্থিতির আলোকে মাঠে নামার বিষয়টি বিবেচনাধীন।
বিষয়: বিবিধ
১৩০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন