ইসরাইলি গোলার ৩০ টুকরো শরীরে বয়ে বেড়ানো ফিলিস্তিনি যুবকের স্বপ্ন -

লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ১৫ জুলাই, ২০১৪, ০৫:৪৮:০৭ বিকাল



ইসরাইলি বর্বরতার শিকার ফিলিস্তিনি যুবক আল সালিবি(২৫)। ২০০৯ সালে ইহুদীবাদি রাষ্ট্রটির রকেট হামলায় তিনি তার বাম হাত হারান। শরীরে এখনো রকেটের গোলার ৩০টি ছোট টুকরা রয়েছে।

এছাড়া, ডান পায়ের হাড় ভেঙে যাওয়ার কারণে সেটি বাম পায়ের তুলনায় ছোট। হামলার পর সম্প্রতি কানেও কম শুনতে পান এই যুবক।

গালফ নিউজের খবরে বলা হয়, ২০০৯ সালে বাইসাইকেলে আরোহন করে মায়ের জন্য রান্নার গ্যাস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন আল সালিবি। তখন গাজায় রকেট হামলা চালায় ইসরাইল।

হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের কোমায় একমাস কাটাতে হয় সালিবিকে।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন, "রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আমার বাম বাহু কেটে ফেলতে হয়েছে। গোলার একটি বড় টুকরা আমার মস্তিষ্কের পেছন থেকে অপসারণ করেছে ডাক্তাররা। এই প্রক্রিয়াগুলো আমার জীবন বাঁচাতে সহায়তা করেছে, কিন্তু পেছনের বছরগুলোতে বেশ সমস্যা দেখা দিয়েছিল।"

শাহরজাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্র আরো বলেন, ইসরাইলি রকেট হামলা তার জীবনকে এখনো প্রভাবিত করছে।

আল সালিবি সম্প্রতি বাম কানে কম শুনতে পাচ্ছেন। রকেটের আঘাতে হাড় ভেঙে যাওয়ার কারণে তার ডান পা বাম পায়ের চেয়ে ৩ সেন্টিমিটার ছোট। তার হাত ও পায়ে অনেক ক্ষত রয়েছে।

"আমি এখন ক্যাম্পাসে খুড়িয়ে হাটি। এক পায়ের তুলনায় অন্য পা ছোট হওয়ায় মেরুদণ্ডে সমস্যা হয়। তাই এক পায়ের জুতার হিল অন্য পায়ের হিলের চেয়ে উচু। কিন্তু সেখানেও ব্যথা আছে।"

কানে কম শুনতে পাওয়ার কারণে আল সালিবি'র দৈনন্দিন জীবনযাত্রা প্রভাবিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ক্লাস লেকচার ভালোভাবে শোনার জন্য তাকে সামনের সারিতে বসতে হয়। এছাড়া যারা তার সাথে কথা বলেন তাদেরকে ডানপাশে দাড়াতে হয়; যাতে তিনি যথাযথভাবে কথা শুনতে পান।

শরীরের ভেতরে থেকে যাওয়া রকেটের গোলার ছোট টুকরা এবং বিভিন্ন ক্ষত অংশে পানির স্পর্শ লাগলে ব্যথা অনুভব করেন এই যুবক।

তিনি বলেন, "যখন আমি এক্স-রে করার জন্য গিয়েছিলাম তখন ক্রিসমাস গাছের মতো পুরো জিনিসটি জ্বলে উঠল। কারণ, এ্যালুমিনিয়ামের তৈরী গোলার টুকরা আমার শরীরের ভিতরে রয়েছে। শরীরের উপরের অংশে থাকা একটি টুকরা অপসারণ করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এখনো গোলার প্রায় ৩০টি টুকরা শরীরের গভীরে রয়েছে। কারণ, সেগুলো শরীরে রেখে দেয়ার চেয়ে অপসারণ করাটা বেশি মারাত্মক।"

নিজের চিকিৎসা শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ আল সালিবি'র নেই। তিনি বলেন, "আমি আশা করি আমার চিকিৎসা প্রক্রিয়া শেষ হবে। কিন্তু এটা খুবই ব্যয়বহুল এবং এ ধরনের বড় সার্জারিগুলো ইন্সুরেন্সের অর্থ দিয়ে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।"

আল সালিবি'র প্রাথমিক চিকিৎসা খরচ বহন করেছে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এজন্য সে কৃতজ্ঞ।

আল সালিবি'র স্বপ্ন

ইসরাইলি গোলার আঘাতে দুর্বিষহ জীবনযাপনকারী এই যুবক একজন ভালো ছাত্র। মোট ৪ এর মধ্যে তার সিজিপিএ ৩.৮।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন "আমারা স্বপ্ন চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়া, উচ্চশিক্ষা অব্যাহত রাখার জন্য মাস্টার্স ও ডক্টরেট পর্যায়ে বৃত্তি লাভ করা; যাতে আমি গাজা ফিরে আমার দেশকে উপকৃত করতে পারি। এই স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি সহযোগীতা প্রত্যাশী।" সূত্র: গালফ নিউজ।

- See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/18315#sthash.SshNNFrP.dpuf

বিষয়: বিবিধ

১১৩৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

244965
১৫ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:৩৯
শাহ আলম বাদশা লিখেছেন : এককথায় চমৎকার!!
244980
১৫ জুলাই ২০১৪ রাত ১০:৩০
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : শোকরিয়া আপনাকে। ‍সুন্দর উপস্থাপনা আপনার।
244997
১৫ জুলাই ২০১৪ রাত ১১:১১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
245237
১৬ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৯
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File