সংগ্রামী সিরিয়ান শরণার্থী নারীরা

লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ০৯ জুলাই, ২০১৪, ০৪:৪০:৫৩ রাত



মাতৃভূমি সিরিয়াতে গৃহযুদ্ধ চলার কারণে প্রায় এক বছর আগে ৭ সন্তান নিয়ে প্রতিবেশী দেশ লেবাননে আশ্রয় নিয়েছেন লিমা। শরণার্থী শিবিরের তাবুকেই তিনি আজ নিজের বাড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

দুই বছর আগে সিরিয়াতে তার স্বামী আটক হয়েছেন। এরপর থেকে স্বামীর সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি। বর্তমানে তিনি স্বামীর বিষয়ে চিন্তিত নন, বরং পরিবারের ভাগ্য নিয়ে চিন্তিত।

৭ সন্তানের মধ্যে ৩ জন চর্মরোগে আক্রান্ত। তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু লিনার হাতে প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। যে পরিমাণ অর্থ আছে, তা দিয়ে ঐষধ কিনলে খাবার কেনা সম্ভব না। এছাড়া সন্তানদের বয়স কম হওয়ায় অসুস্থ অবস্থায় ঘরে রেখে তিনি কাজে যেতে পারছেন না।

নিজের দুর্দশার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, "এমনও দিন আছে, যখন আমি সন্তানদের ঐষধ দিতে পারি না। ঐ দিনগুলো তাদের জন্য বিশেষভাবে কষ্টকর, আমার জন্যও। নিজের সন্তানকে কোনো দুর্দশার মধ্যে দেখতে পাওয়াটা একজন মায়ের জন্য খুবই পীড়াদায়ক।" তিনি আরো বলেন," শক্ত হওয়া ছাড়া এখন আমার অন্য কোনো উপায় নেই"।

দুর্দশাগ্রস্থ অনেক সিরিয়ান শরণার্থী নারীদের মধ্যে লিমা হলেন একজন। তার মতো আরো অনেক নারী আছেন। তাদের সবারক্ষেত্রে একটি বিষয় সত্য। আর সেটা হলো, এরা সবাই জন্মভূমি থেকে দূরে এসে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করছেন। অনেকের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা মারা গেছে অথবা জেলে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। আর তাই ঐ মানুষগুলোর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

"একাকী নারী- সিরিয়ান শরণার্থী নারীদের বেঁচে থাকার জন্য যুদ্ধ" শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক কিমশন (ইউএনএইচসিআর)।নারীরা হাল ধরেছে এমন ১৪৫,০০০টি সিরিয়ান শরণার্থী পরিবারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। প্রতিবেদনটি তৈরী করার জন্য লেবানন, মিশর, জর্ডান এবং ইরাকে বসবাসরত ১৩৫ জন সিরিয়ান শরণার্থী নারীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যারা তথ্য দিয়েছেন তাদের বয়স ১৭ থেকে ৮৫ বছরের মধ্যে। এছাড়া ইউএনএইচসিআর বলেছে, শরণার্থী নারীদের ৮৫% বয়স ২৬ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে।

যাহোক, বেঁচে থাকার জন্য এখনো অনেকে সিরিয়া ত্যাগ করছে। জাতিসংঘের হিসেব অনুসারে প্রতি মাসে প্রায় ১০০,০০০ শরণার্থী প্রতিবেশি দেশগুলোতে আসে।

২০১৪ সালে শরণার্থীদের সহায়তার জন্য ৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার চেয়েছে ইউএনএইচসিআর। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ এখনো এসে পৌছায়নি। আবুধাবিতে ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র মুহাম্মদ আবু আসাকের বলেন "প্রয়োজনীয় সহায়তার মাত্র ৩০% পৌছেছে। ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৭০%।"

তিনি গালফ নিউজ'কে আরো বলেন, শরণার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় সহায়তা ঘাটতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

শরণার্থীদের আশ্রয়দানকারী দেশগুলো সম্পর্কে আবু আসাকের বলেন, শরণার্থীরা আশ্রয়দাতা দেশগুলোর সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর চাপ সৃষ্টি করছে।

সংকট মোকাবেলা করার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইতিবাচকভাবে সাড়া প্রদানের আহ্বান জানান। সূত্র: গালফ নিউজ।

- See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/17496#sthash.V6JRGNkg.dpuf

বিষয়: বিবিধ

১১৩০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

243076
০৯ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৮:১০
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
243078
০৯ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৮:১৭
ইমরান ভাই লিখেছেন : আল্লাহ তুমি শিরিয়ার মানুষগুলোকে ধয্যধরার তাওফিক দান করো। নিশ্চই তুমি যাদেরকে ভাল বাসো তাদেরকে কঠিন পরীক্ষা করো।

আল্লাহ তুমি আমাদেরকে কাফিরদের বিরুদ্ধ্যে জয়যুক্ত করো আমীণ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File