যেমন ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন ব্রিটেনের সাংবাদিকতা
লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ১০ মে, ২০১৪, ০১:২৯:৫৬ দুপুর
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বৃটিশ সরকার তথ্য নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তাই ১৯১৪ সালে একটি আইন পাশ করা হয়, যে আইনের সাহায্যে দেশটির যুদ্ধ-অফিস যে কোন গণমাধ্যমের খবর কাটছাট করতে পারত। এছাড়া, কেউ শত্রুপক্ষকে সাহায্য করছে- এমনটা প্রমাণিত হলে ঐ একই আইনের সাহায্যে তাকে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে হতো।
যুদ্ধ-অফিসের সেক্রেটারি লর্ড কিচনার বিশ্বাস করতেন যে, যুদ্ধের ময়দান সেনাবাহিনীর জন্য বিশেষভাবে সংরক্ষিত। একারণে তিনি সুদান ও বোরের যুদ্ধক্ষেত্রের বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে তর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন।
যাহোক, যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক বছরের মধ্যে হাতে গোনা কিছু সাংবাদিক বৃটিশ সৈন্যদের সাথে যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে রিপোর্ট করার সুযোগ পায়। আর যুদ্ধ শেষে পুরস্কৃত হয়েছিলেন নির্বাচিত কয়েকজন সাংবাদিক।
কিন্তু ১৯১৫ সালে মার্চ মাস পর্যন্ত ফিলিপ গিবস এবং বাসিল ক্লার্কের মতো কিছু সাংবাদিক পলাতক ব্যক্তিদের ন্যায় ফ্রান্সে অবস্থান করে যুদ্ধের বিষয়ে রিপোর্ট করতেন। রিপোর্ট করার পর সেই রিপোর্ট নিজের গণমাধ্যমের কাছে পাঠাতেন।
একজন সাংবাদিকের অভিজ্ঞতা
যুদ্ধ শুরু হলে ৩৭ বছর বয়সী সাংবাদিক ফিলিপ গিবস ফ্রান্সে অবস্থান করছিলেন। তিনি ছিলেন 'ডেইল ক্রনিকেল' পত্রিকার সাংবাদিক। নিজেকে গোপন করে প্রথম কয়েক মাস এই সাংবাদিক যুদ্ধের ময়দানগুলোতে ঘোরাফেরা করেছেন।
লন্ডনের ফ্লিট স্ট্রিটে অবস্থিত পত্রিকা অফিসে বেশ তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন পাঠাতেন ফিলিপ গিবস। ফ্রান্স অথবা বৃটিশ কর্তৃপক্ষের চোখ সুকৌশলে ফাকিঁ দিয়ে তিনি এসব রিপোর্ট পাঠাতেন।
রিপোর্ট পৌছে দেওয়ার জন্য গিবস অন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী একটি জাহাজে কর্মরত হিসাবরক্ষকে উৎকোচ দিতেন। অবাক করার মতো বিষয় হলো, একজন রাজকীয় বার্তাবাহকের বদান্যতায় তিনি বৃটিশ সরকারের যুদ্ধ-অফিসকে ব্যবহার করেছিলেন নিজের রিপোর্ট সরবরাহ করার জন্য।
গিবস একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিলেন; কিন্তু থেমে যাননি। মুক্ত হওয়ার পর ফিরে গেছেন যুদ্ধের ময়দানে সংবাদ সংগ্রহের জন্য। ১৯১৫ সালে তিনি লি হাভরি'তে শেষবারের মতো আটক হন। এসময় তিনি বন্দী ছিলেন ১০ দিন।
গিবসকে সতর্ক করে সামরিক ঘাটির কমান্ডার জেনারেল হজ ব্রুস-উইলিয়াম বলেন, মুক্তি পাওয়ার পর সে যদি আবারো যুদ্ধের মাঠে যায়, তবে তাকে 'অপ্রত্যাশিত পরিণতি'র মুখোমুখি হত হবে।
এই হুমকির পর গিবস ভাবলেন, যুদ্ধ সাংবাদিক হিসেবে তার ইতি টানার সময় হয়েছে। সূত্র: বিবিসি। - See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/12185#sthash.QpopMgop.dpuf
বিষয়: বিবিধ
৯২১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন