ইরাকের খনিজ তেল রক্ষাকারী পুলিশ বনাম বিদ্রোহী অন্তর্ঘাতক

লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ০৯ মে, ২০১৪, ১১:২০:১৭ সকাল



ইরাকের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হলো খনিজ তেল। এই মূল্যবান সম্পদ রক্ষার জন্য নিয়োজিত রয়েছে একটি আলাদা পুলিশবাহিনী, যারা 'ইরাক অয়েল পুলিশ' নামে পরিচিত। তাদের কাজ হলো, তেল সরবরাহকারী পাইপলাইনগুলো পাহারা দেওয়া।

দেশটির উৎখাতকৃত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ৭০-এর দশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইন তৈরী করেছিলেন, যেটি সমুদ্রবন্দরে তেল সরবরাহ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

তারপর বন্দরে অপেক্ষমান জাহাজগুলো তেল বোঝাই করার পর সারাবিশ্বে সরবরাহ করার জন্য ছড়িয়ে পড়ে।

যাহোক, ২০০৩ সালে ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র শক্তিগুলো। এ সময় সারাদেশে নৈরাজ্য শুরু হয়। তেলের পাইপলাইনগুলো কম গুরুত্বের সাথে পাহারা দেওয়া হতে থাকে। কোনো কোনো পাইপলাইন থেকে যায় অরক্ষিত। এই সুযোগে চোরাকারবারী ও বিদ্রোহীরা তেল চুরি করে অন্তর্জাতিক কালো বাজারে বিক্রি করে।

এরপর ২০০৭ সালে গঠন করা হয় ৩০,০০০ হাজার সদস্যের 'ইরাক অয়েল পুলিশ'; যারা সারাদেশের ৭,২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ তেলের পাইপলাইনগুলো পাহারা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই পুলিশবাহিনীর লোকবল সংকট এবং অস্ত্র সংকট রয়েছে।

দেশের মূল্যবান সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশবাহিনীকে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যেমন- দেশটির চোরকারবারী ও বিদ্রোহী গ্রুপগুলো মাঝে মধ্যেই পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পাইপলাইনগুলো বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়।

এ বিষয়ে ইরাক ওয়েল পুলিশের কমান্ডার হামিদ আব্দুল্লাহ ইব্রাহীম বলেন,"আমরা প্রচণ্ড হামলার মুখোমুখি হচ্ছি, বিশেষভাবে ২০১৩ সালে এবং এ বছর থেকে।"

তিনি আরো বলেন, শত্রুদের কৌশল হলো- নিজেদের স্বার্থে তেলকে একটি যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা। সুতরাং, তারা গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইনগুলোর সরবরাহ থামিয়ে দিতে চায়। শত্রুরা জানে, এটা করতে পারলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

কী বলতে চায় সরকার-বিরোধী গ্রুপগুলো?

রাজধনী বাগদাদ থেকে আনবার প্রদেশে যেতে সময় লাগে এক ঘন্টা। এই প্রদেশে বেশ কিছু সরকার-বিরোধী সুন্নিগ্রুপ সক্রিয় আছে। তারা মনে করে, শিয়া-নেতৃত্বাধীন সরকার তাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আর তাই তেলের পাইপলাইনগুলোতে তারা হামলা চালায়।

যেমনটা বলছিলেন উপজাতীয় নেতা কুসাই আল-ইসাওয়ি। হামলার বিষয়ে তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, " আমরা আমাদের অধিকার রক্ষা করছি, আমাদের স্বাধীনতা এবং ভবিষ্যৎ রক্ষা করছি। দেশের তেলের পাইপলাইন নেটওয়ার্কের একটি অংশ আমাদের ভূমির উপর দিয়ে গেছে, এর (তেল) রাজস্বের ন্যায্য অংশের পাওনাদার আমরা।

তিনি আরো বলেন, "সরকার আমাদেরকে আমাদের অধিকারগুলো দিচ্ছে না। সামরিক অভিযানগুলো অব্যাহত থাকলে আমাদের একমাত্র জবাব হলো খনিজ সম্পদের লাইনগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।"

সূত্র: আল-জাজিরা

See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/12087#sthash.PwsWAOGn.dpuf

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

220110
১১ মে ২০১৪ সকাল ১০:২১
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : শিয়া মালিকি সরকার সুন্নীদের উপর কোন নির্যাতনটা বন্ধ রেখেছে? তারা তো পুরোপুরি আমেরিকা ও তাদের মিত্র পশ্চিমা শক্তি আর শিয়া ইরান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সাদ্দাম আমলে যেই টর্চার সেল বানানো হয়েছিল বিদ্রোহিদের দমনের জন্য আজ সেই টর্চার সেলে শিয়া সরকার সুন্নীদের উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার সুন্নী নারী এই টর্চার সেলে শিয়া পুলিশ, সেনাবাহিনীর হাতে ধর্ষিত হচ্ছে, নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে সুন্নী তরুণদের। এমন অনেক প্রমাণ পাওয়া গেছে যেখানে রক্তাক্ত সন্তানের সামনে মাকে, পিতার সামনে কণ্যাকে আর ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। কাজেই এই শিয়া মালিকি সরকার ও তার অস্ত্রধারী বাহিনীর অর্থনীতি টিকিয়ে সুন্নী নিধনের সুযোগ করে দেয়ার কোন যৌক্তিক কারণ আছে কি?যাদেরকে বিদ্রোহি বলা হচ্ছে বাস্তবতা হল, তারা নিজ মা-বোন,বাপ-ভাইকে রক্ষার জন্য হাতে অস্ত্র নিয়েছে। এছাড়া কোন উপায় নেই আপন মানুষটাকে শিয়াদের হাত থেকে বাঁচানোর, অথচ তারাই নাকি জঙ্গি। হায়রে মিডিয়া!হায়রে কাফির মিডিয়ার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য সত্য বলে বিশ্বাস করা মডারেট মুসলিমের দল!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File