আকাশের মেঘ ও আমার ভাবনা

লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ২৭ আগস্ট, ২০১৩, ০৮:২৮:৩১ রাত



সকাল থেকেই ঢাকার আকাশটা কিছুক্ষণ পরপর কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। হঠৎ বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ কখনো বেশি, কখনো কম। দুপুর পর্যন্ত দেখলাম বৃষ্টি থেমে গেলে মাঝে-মঝ্যে কিছু সময়ের জন্য সূর্য মামা হাসি দিয়ে আবার মেঘের কোলে মুখ লুকিয়ে রাখছে। এমন পরিস্থিতিতে আমার মনে হলো- প্রকৃতির আকাশের মতো আমাদের দেশের রাজনীতির আকাশটাও যেনো অনিশ্চয়তার কালো মেঘে ঢেকে আছে। অনিশ্চয়তার এই কালো মেঘ তৈরি হয়েছে ‘সংঘাত’ থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘর্ষ, গুম, খুন চলছে। আর দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইন, বিচারব্যবস্থা, পুলিশি হয়রানি এসব কিছুর মাধ্যমে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে এক প্রকার সংগ্রাম করছেন। এ সব কিছু তিনি করছেন একটা আইনি মোড়কের সাহায্যে (মজহার, ২০১৩)।

আমার দৃষ্টিতে সংঘাত থামানোর অনেকগুলো হাতিয়ারের মধ্যে একটি হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু নিরপেক্ষ সরকারের কথা বললে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নেতারা ১/১১-এর কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তারা আমাদের এই বলে ভয় দেখান যে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না আসলে ১/১১-এর মতো আরেকটি অসাংবিধানিক শক্তি ক্ষমতায় বসবে (সালাম, ২০১৩)।

কিন্তু জনগণ আমাদের সরকার প্রধান অর্থৎ শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের কথা বিশ্বাস করতে চায় না। কারণ, “আমাদের সরকার প্রধান এতই ক্ষমতাধর যে, শেয়ার মার্কেট একবারের বদলে দুইবার ডাকাতি, ব্যাংকে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার দেউলিয়া বাণিজ্য, হলমার্ক, বিচার বিভাগে খোলামেলা হস্তক্ষেপ, সবচেয়ে বড় শিল্প দুর্ঘটনায় শত শত মানুষ মরলেও হাইব্রিড চালাকি করে কত দ্রুত ভুলিয়ে দিচ্ছেন ব্যর্থতার পর ব্যর্থতা! অর্থহীন বক্তব্যকে খাওয়াচ্ছেন চানাচুরের মতো। উঠতি গডফাদারদের আদর্শ ক্ষমতার একান্ত অনুগত পার্টি নেতা শামীম ওসমান, মিল্কি, তারেক...। কিভাবে সম্ভব? কারণ তিনি ওবামার চেয়ে ক্ষমতাধর। পুতিনের চেয়েও। সুরঞ্জিতের কালো বিড়াল কেলেঙ্কারির পরও তাকে দফতর থেকে দফতরবিহীন করার মতো ড্যামকেয়ার। ... প্রথম টার্মে গণভবন লিখিয়ে নেয়ার মতো নোংরা রেকর্ডও তো আওয়ামী লীগ সরকারেরই (ফারাহ, ২০১৩)।”

লেখার এ অংশে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আলোকপাত করব। আমরা সবাই জানি যে, আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দেশ এবং দেশের বাইরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতর তাদের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফের হুমকির মুখে। আর চীনা রাষ্ট্রদূত সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানোর জন্য তিনি চেষ্টা করছেন। লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, আতীতের চীনা রাষ্ট্রদূতরা চুপ থাকলেও চলমান নাজুক পরিস্থিতির কারণে এবার মুখ খুলেছেন বর্তমান রাষ্ট্রদূত। সংকট সমাধানে বিদেশীদের যথার্থ উদ্বেগকে মূল্য দিতে হবে। (“উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে”, ২০১৩)। বর্তমান দুনিয়ায় আন্তর্জাতিক মহলের মর্জি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। তাই সবাইকে জাতি ও দেশের স্বার্থে সমঝোতা করতে হবে ( “দুই নেত্রীকে জাতিসংঘ মহাসচিবের”, ২০১৩)।

তথ্যসূত্র

১.উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ছে বিস্ফোরণোন্মুখ এ অবস্থা চলতে পারে না। (২০১৩, আগস্ট ২৩)। দৈনিক নয়াদিগন্ত, পৃষ্ঠা নং ৬। ঢাকা: শামসুল হুদা।

২. দুই নেত্রীকে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের ফোন। (২০১৩, আগস্ট ২৫)। দৈনিক নয়াদিগন্ত, পৃষ্ঠা নং ৬। ঢাকা: শামসুল হুদা।

৩. ফারহ, মিনা। (২০১৩, আগস্ট ১৮)। সুশাসনের নাম ক্ষমতার দাপট!। দৈনিক নয়াদিগন্ত, পৃষ্ঠা নং ৭। ঢাকা: শামসুল হুদা।

৪.মজহার, ফরহাদ। (২০১৩, আগস্ট ২৩)। আমার যেমন বেণী তেমনি রবে চুল ভেজাবো না!!। দৈনিক নয়াদিগন্ত, পৃষ্ঠা নং ৬। ঢাকা: শামসুল হুদা।

৫. সালাম, রেহানা। (২০১৩, আগস্ট২৫)। গণতন্ত্রহীন গণতন্ত্রÑগন্তব্য কোথায়?। দৈনিক নয়াদিগন্ত, পৃষ্ঠা নং ৬। ঢাকা: শামসুল হুদা।

বিষয়: বিবিধ

১০৪৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File