পাগলের চরিত্র, বর্তমান সরকার ও এক নাগরিকের ভাবনা (প্রথম কিস্তি)

লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ২৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৯:২০:৫৬ রাত

আমি রাজধানী ঢাকায় আমার ছোট মামার বাসায় থাকি। মামার দুই ছেলে, কোনো মেয়ে নেই। সম্পর্কের দিক থেকে ওরা (মামার ছেলে দুটি) হলো আমার মামাতো ভাই। দুইজনেই বয়সে আমার চেয়ে বেশ ছোট। ওরা উভয়ে হেফজ মাদ্রাসায় পবিত্র কোরআন শরীফ মুখস্ত করছে। দুই মামাতো ভাইয়ের মধ্যে ছোট মামাতো ভাইটি বাসার পাশের হেফজ মাদ্রাসায় পড়ছে। আমার মামি বাসায় যে খাবার রান্না করে, ছোট মামাতো ভাইটির জন্য তিন বেলা সেই খাবার সরবরাহ করা হয়। কখনো আমার বড় ভাই বাসায় রান্না করা খাবার মাদ্রাসায় পৌছে দিয়ে আসে। কখনো আমি অথবা মামি মাদ্রাসায় খাবার পৌছে দেই। যখন যে অবসর থাকে, সে ছোট ভাইটির জন্য খাবার নিয়ে মাদ্রাসায় যায়।

যা হোক, সেদিন ছিল ১৪ এপ্রিল, ২০১৩। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ১ লা বৈশাখ, ১৪২০। আমার দেয়াল ঘড়িতে তখন সময় ৭:২০ মিনিটের কিছু বেশি। ছোট মামাতো ভাইয়ের জন্য মাদ্রাসায় নাস্তা নিয়ে যেতে হবে। মামি জানালেন, নাস্তার জন্য তিনি কোনো তরকারি রাধতে পারেনি। শুধু রুটি বানিয়েছেন। আমাকে বললেন নাস্তা দিয়ে আসার সময় মহল্লার হোটেল থেকে ডাল-ভাজি কিনে নিয়ে যেতে। নাস্তা মাদ্রাসায় পৌছে দেওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হলাম। হোটেলের দিকে যাচ্ছি। এমন সময় পাড়ার পাগলটির সাথে দেখা হয়ে গেল। সে একটি বাড়ির দরজার সামনে দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে তৃপ্তি সহকারে পানি খাচ্ছে। একটু খেয়াল করে দেখলাম, বাড়ির ভেতরে কেউ একজন থালা-বাসন নাড়াচাড়া করছে। বুঝতে পারলাম, বাড়ির সদস্যরাই হয়তো নববর্ষ উলক্ষ্যে পাগলটিকে ভাত খেতে দিয়েছে।

পাগলটিকে দেখে মনে একটা চিন্তার উদয় হল। ভাবলাম, একজন পাগলের চরিত্রের সাথে বর্তমান আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের অনেক মিল রয়েছে। পাগলের চরিত্র হলো, যখন যা মনে চায় তখন সে তাই করে। মনে চাইলে হাসে, মনে চাইলে কাঁদে। মনে চাইলে কাউকে আঘাত করে। আবার মনে চাইলে স্নেহ করে। বর্তমান আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার পাগলের মতোই নিজের ইচ্ছা অনুসারে সব কিছু করছে। ফাঁসির আসামিদের মুক্তি, জামিন দিচ্ছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের জেল থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, হলমার্ক কেলেঙ্কারির সাথে জড়িতদের বেশ কিছুদিন আগে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা শুরু হলে সরকার হলমার্ক কেলেঙ্কারির সাথে জাড়িতদের জামিন বাতিল করতে বাধ্য হয়। অন্যদিকে সরকারের অন্যায় কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে জেলে আটকে রাখা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে বলা হচ্ছে- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্টা করছে আন্দোলনকারীরা। (চলবে)

বিষয়: বিবিধ

১৪১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File