ছোলা ভক্ষণ, নাগরিক চেতনা ও কিছু কথা....(প্রথম কিস্তি)

লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ০৭ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:৫৮:১৮ বিকাল

সেদিন ছিল ২১ মার্চ। সন্ধ্যার পর সব কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার জন্য অফিস থেকে বের হলাম। আমার অফিস রাজধানী ঢাকার বিজয় নগরে অবস্থিত। হাটতে হাটতে কাকরাইল মোড়ে এসে পৌছলাম। দেখলাম একজন লোক ছোলা বিক্রি করছে। ছোলা খেতে মন চাইল। বিক্রেতার কাছে গিয়ে ছোলা বানাতে বললাম। বিক্রেতা যখন ছোলা বানাচ্ছিল তখন জিজ্ঞেস করলাম, “মামা, বাড়ি কই?” বিক্রেতা বলল, “মাদারীপুর।” বললাম,“ পদ্মা সেতু তৈরী হলে তো ভালই হত, কী বলেন।” বিক্রেতা আমার কথায় সায় দিয়ে বলল,“ হ।” আমি বললাম, “সরকার তো তার প্রতিশ্রুতি রাখল না।” বিক্রেতা এবারো আমরা কথায় সায় দিল। আরও কিছুক্ষণ পদ্মা সেতুর বিষয়ে কথা বললাম। বুঝলাম পদ্মা সেতু তৈরী না করায় অন্যান নাগরিকদের মত এই লোকটি সন্তুষ্ট নয়। আমি বললাম, “সেতু বানানোর আগেই দুর্নীতি কইরা সরকারি দলের লোকেরা টাকা খাইয়া ফালাইছে। সেতু বানাইব কেমনে।” এরই মধ্যে ছোলা বানানো শেষ হলে খাওয়া শুরু করলাম। পাশাপাশি পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারার ব্যর্থতা ও বিভিন্ন অসংগতিপূর্ন কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারের সমালোচনা করতে লাগলাম। এমন সময় ২৪ থেকে ২৬ বছর বয়সী একজন যুবক এসে ছোলা বানানোর অর্ডার দিল। আমার এবং বিক্রেতার আলোচনার বিষয় বস্তু/ টপিক বুঝতে পেরে সেও এক প্রকার গায়ে পড়ে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করল। ‘চোর, চোর সব শালা চোর’ , ‘টাকা চুরি কইরা ফালাইছে’, ‘ভোট দিয়া কী লাভ’ ইত্যাদি নানা মন্তুব্যের মাধ্যমে যুবকটি মনের ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। মন্তব্য প্রকাশের সময় যুবকটির কন্ঠের আওয়াজ ছিল বলিষ্ঠ। যা হোক, আমি আর সেখানে বেশিক্ষণ অবস্থান করলাম না। বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে আবার হাটতে শুরু করলাম। আমি হাটছি আর আমার কানে যুবকটির ক্ষোভ মিশ্রিত সেই মন্তুব্যগুলো বেজে চলেছে, যেগুলো সে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছে। আসলে দিন-দিন আমাদের দেশের নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছোলা খাওয়ার সময় যে অপরিচিত যুবকটি সরকারের সমালোচনা করেছিল, আমার মতে সে দেশের সচেতন নাগরিক সমাজের একজন। যেই পদ্মা সেতু নিয়ে এত কথা, আলোচনা, সামালোচনা এবার সেই পদ্মা সেতুর বিষয়ে আসা যাক। (চলবে)

বিষয়: রাজনীতি

১২৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File