মিরপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্রশিবিরের সদস্য প্রার্থী শহীদ এমদাদ ভাইয়ের বন্ধুর স্ট্যাটাস থেকে....
লিখেছেন লিখেছেন খামচি বাবা ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৯:৫৯:০৭ রাত
Misbah Ahmed ( শহীদ এমদাদ ভাইয়ের বন্ধু)
ক্যাম্পাসে পা দিতেই অনেকগুলো দেয়াল
লিখনী চোখে পড়ে,ওগুলো প্রায় সবাই দেখেও
চোখ ফিরিয়ে নেয়.. শুধু শুধু সময় নষ্ট করার
কি দরকার?(।)
প্রায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়েই রাজনৈতিক
ব্যানার ফেষ্টুনে ভরা। তবে কিছু কিছু ব্যানার
আছে,যেগুলো দেখে কিছুক্ষন স্তব্ধ
হয়ে থাকতে হয়। যেগুলো মূলত টাঙানোই হয়
কারো চিরবিদায় উপলক্ষ্যে।
কালো হরফে লিখা থাকে সড়ক দূর্ঘটনায়
বা কোন একটা রোগে মেধাবীর অকাল মৃত্যু।
কালো ব্যানারের হাস্যজ্বল
ছবিটা দেখে কোনমতেই বোঝার উপায়
থাকেনা,এই ছেলেটা পৃথিবীতে নেই।
...এমন অবেলায় প্রায়
প্রতিটি ডিপার্টমেন্টেই কেউ না কেউ
সবাইকে কাঁদিয়ে উপারে পাড়ি জমিয়েছে।
আমাদের ঢাকা কলেজ পরিসংখ্যান
ডিপার্টমেন্টেটা সবার চেয়ে আলাদা।
পুরো ক্যাম্পাসের একমাত্র এই
ডিপার্টমেন্টটাই পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের
রুলসে চলে। আমাদের
ডিপার্টমেন্টে ঢুকতে বা আশে পাশে কোন
রাজনৈতিক
বা কারো উপারে চলে যাওয়া উপলক্ষ্যে শোকপ্রকাশের
কোন ব্যানার নেই। তবে হয়তো দুই একের
মধ্যে একটি ব্যানার সংযুক্ত হতে যাচ্ছে।
ভাবছি,ব্যানারটায় কি লিখা থাকবে?
.. একটা বন্ধুর গল্প বলি।। ছেলেটার নাম
এমাদুল্লাহ,এই ছেলেটার সাথে সর্বশেষ
কথা হয় প্রভাবিলিটি (ইনকোর্স) পরীক্ষার
দিন। হালকা দাড়ি ছিল ছেলেটার। ঠিক
যতটা রাখা সুন্নাত। সেদিন সবার আগে সিট
রেখে ডিপার্টমেন্টের সিড়িতে বসে ফেবু
চালাচ্ছিলাম।
এমাদুল্লাহ জিজ্ঞাসা করল,বন্ধু কিচ্ছু
পারিনারে ..পেছনের সিট খালি আছে?
আজকে কপি করার দিন ..
বললাম,হালার্পু তুই শিবির নেতা।। তুই উত্তম
চরিত্রের অধিকারী। তোরে আল্লাহ
পাড়াইয়া দিব,ডরাস ক্যান?
সে মুচকি হেসেছিলো। বলতেছিলো,তোর
দাড়িটা অনেক সুন্দর দোস্ত,রাইখ্যা দিস।
সিড়ির দিকে দৌড়ে যাচ্ছিল,বলতেছিল
ো দূয়া করিস আল্লাহর পরীক্ষায় আমার সিট
যেন সবার আগে পরে। মনে মনে বলতেছিলাম
তুই এইডা কি কইলি! কথাটা মনে দাগ
কেটে গেল ....!!
গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের Dhaka College
SNIPERS-13/14 গ্রুপে বন্ধুরা পোষ্ট
দিছে এমদাদ নাকি মারা গেসে?
আমি একটুও বিশ্বাস করিনি,কয়েকদিন আগেও
এই ছেলেটাকে নিয়ে গ্রুপে কয়েকজন
মজা করেছে। সেখানে তার নিখোঁজ
হওয়াটাকে ফান ভাবা হয়েছে।
গ্রুপে ক্লাস ক্যাপ্টেন মাসুমের দেয়া নিউজ
পেইজের লিংকে ঢুকে কনফার্ম
হলাম,বেড়িবাধে আমাদের এমদাদকে পুলিশ
দ্বারা নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ভাবতেছি,তোকে নিয়ে ডিপার্টমেন্টে কালো হরফের
কোন ব্যানার টাঙানো হবে কি?
আচ্ছা কি লিখা থাকবে ওখানে?
নিউজ পেপার বা ফেসবুক পেইজগুলায় তুই
বন্দুকযুদ্ধে নিহত বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে।
কেউ কেউ হাইলাইট করছে তুই পুলিশের
সাথে গুলাগুলি করছিস। জানিস? এসব
শুনে হাসি পায় বড্ড! দেশবাসী অতো মূর্খ
না,তারা জানে বন্দুকযুদ্ধ কারা করে।
কারা অস্র মজুদ রাখে। কাদের
কে মেরে ক্রসফায়ার বলে চালানো হয়।
তুই নোংরা রাজনীতির শিকার।
ফেবুতে দেয়া তোর লাষ্ট
স্টাটাসটা মনে পড়েরে..
.."তোমরা জ্ঞান অর্জন করতে এসে নিজের
জীবন এর চাওয়াটাকে মিথ্যায় পরিনিত করছ।
বন্ধু! সংগী সবার জীবনেই
আছে,নিজেকে প্রতিষ্ঠিত কর আগে"
তুই নিজেকে মনমত পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত
করতে পারছিস বন্ধু?
-কখনো জিজ্ঞাসা করা হয়নি তোর
বাসা কোথায় বন্ধু?
-আমি তোর ঠিকানা জেনে গেসিরে এমদাদ।
তুই গাফফারের আরশের নিচে পারমানেন্ট
ভাবে এড্রেস গড়ে নিছিস ।আমার বন্ধুদের
মধ্যে তুইই সবার আগে সিটটা কনফার্ম করলি
বিষয়: বিবিধ
১৩২২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হে আল্লাহ তুমি আমার এই ভাইটিকে কবুল কর।
ইসলামী আন্দোলনের মেধাবী মুখগুলো কে হত্যা করে জালিমশাহী স্বীয় মসনদ কে নিষ্কন্টক করতে চায়!যদিও জালিমরা শেষ পর্যন্ত অসফলই থেকে যায়!
মহান আল্লাহ উঁনাকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন!আমিন!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন