ট্রান্সকম গ্রুপের এবিসি রেডিও এবং প্রথম আলোর ইসলাম বিদ্বেসী প্রচারনা চলছেই. . .
লিখেছেন লিখেছেন খামচি বাবা ০৩ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৩৮:২৯ সকাল
ABC Radio এর ঘৃন্য মিথ্যা কাহিনী বানিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে চরম কুত্সা রটানো (প্রমাণ সহ) :
এবিসি রেডিওর পরিচয় দেয়াটাই শুরুতে জরুরি মনে করছি।
এবিসি রেডিও হচ্ছে Transcom Group এর।
প্রথম আলো , ডেইলি স্টার এই পত্রিকা গুলোও হচ্ছে এই Transcom Group এর।এরা সব একই জিনিস।
প্রথম আলো যে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ব্যাঙ্গ করে কার্টুন প্রকাশ করেছিল তার ঘটনা অনেকেই জানেন হয়ত তারপরও লিখছি।
প্রথম আলোতে একটি অতি বাজে কার্টুনে একজন দাড়ি টুপিওয়ালা লোক একটি ছেলেকে বলছে, সব নামের আগেই মোহাম্মদ বসাতে হয়।
তারপর ছেলেটির কোলে একটি বিড়াল দেখিয়ে লোকটি জিজ্ঞেস করছে তার কোলে ওঠা কী?
জবাবে ছেলেটি তার দেওয়া শিক্ষা অনুযায়ী বলছে ,
"মোহাম্মদ বিড়াল "
শুধু এই না প্রথম আলো পত্রিকায় "ফতোয়াবাজি অব্যাহত, পুলিশকে সংবেদনশীল হতে হবে "
শিরোনামে প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে বিবাহিত নারীর সঙ্গে পরপুরুষের মেলামেশাকে সহজভাবে মেনে না নেয়ার মানসিকতাকে কুসংস্কার বলা হয়েছে।
প্রথম আলো ও এবিসি রেডিও হচ্ছে একই প্রতিষ্ঠান।
এবিসি রেডিওর চিফ অপারেটিং অফিসার এম. সানাউল্লাহ হচ্ছে প্রথম আলোর সাবেক নিউজ এডিটর।প্রথম আলো ও এবিসি রেডিওর মালিক যে একই লোক তা তো শুরুতেই বলেছি।
এবিসি রেডিও এবার তার আসল রুপ প্রকাশ করে দিয়েছে।
গতকালকে হ্যালো ৮৯২০ তে আমান নামের একজন এসেছিল।
তার কথা গুলো খুব সংক্ষেপে লিখলাম।
আমানের বাবা মা চেয়েছিল আমানকে হাফেয বানাতে তাই তাকে একটা মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেয়।
সেখানে আমান যে রুমে থাকত তার রুম মেট ছিল একজন সমকামী।
তো একদিন আমানের সাথে খারাপ আচরন করলে আমান তাকে লাঠি দিয়ে বারি মারে।
কিন্তু তার ফলে মাদ্রাসার হুজুর আমানকে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে ফ্যানের সুইচ অন করে পিটায়।
আমান ঐ মাদ্রাসা থেকে পরে চলে যায়।
আমি খুব সংক্ষেপে বলছি , আমানকে রাস্তার টোকাইও হতে হয়।
আমান একসময় ঢাকার যাত্রাবাড়ির একটা মাদ্রাসায় ভর্তি হয়।সেখানে নাকি পত্রিকা পড়া নিষিদ্ধ ছিল।
কিন্তু আমান লুকিয়ে পত্রিকা পড়লে আমানকে মাদ্রাসা থেকে বেড় করে দেয় হুজুররা।
আমান পীর জঙ্গি নামক মাদ্রাসার কথাও বলেছিল তার কথায়।
তখন আর. জে. কিবরিয়া একটু অন্য রকম ভঙ্গিতে জিজ্ঞাসা করছিল
পীর জঙ্গি ?
জঙ্গি ?
এবিসি রেডিও আগেও মাদ্রাসা নিয়ে এরকম ঘটনা প্রচার করেছে।
হুজুরদের ভয়ংকর দৈত্য রুপে মনে হয় এগুলো শুনলে।
আমানের ঘটনা যে মিথ্যা শুধু পত্রিকা পড়ার জন্য কাউকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়া হতে পারেনা তা যে কারো বোঝার কথা।
আমানের পরিচিত একজন কিবরিয়ার পেইজে কমেন্ট করেছে
" Tarek Dinar
এরকম অবাস্তব মিথ্যা ঘটনার দারা মানুষ ভাল কিছুই শিখতে পারবেনা সুধু শিখবে মিথ্যা বানোয়াটি ভাওতাবাজি,
কারণ আমি আমান কে ভাল ভাবেই চিনি ও কখনো টোকাই ছিলনা এবং অনাহারে থাকতনা ওর সাথে ওর একটা ছোট ভাই থাকত তার পিছনে কোন টাকা পয়সা আমান খরচ করতনা সব টাকা পয়সা সাদ্দামের পিছনে খরচ করত এমনকি মাঝে মাঝে সাদ্দাম দের বাসায়ও যেত এক সময় আমান সাদ্দামের বোনের সাথেও প্রেম করার চেষ্টা করে তার পর থেকে সাদ্দাম আমান কে আর বাসায় নেয়না সাদ্দাম কে বিরক্ত করার কারণে এক দিন সাদ্দাম আমান কে আমার সামনেই জুতা দিয়ে পিটায় তার পরও সে তার পথ ছারেনী বে উপায় দেখে সাদ্দাম এক হুজুরের পরার্মশ ক্রমে মাদরাসা পরির্বতন করে ফেলে। ... "
এবিসি রেডিওতে আরেকবার এক সন্ত্রাসী এসেছিল ঘটনা বলতে।
সেখানে সে বলেছিল আফগানিস্তান থেকে নাকি জঙ্গিরা এসে তাদের বোমা বানানো সেখাত।
এবিসি রেডিওর আরেকটা প্রোগ্রাম কুয়াশাতে একটা ঘটনা প্রচার করেছিল দেশ বিভাগের সময়কার মানে ১৯৪৭ এর।সেখানেও সুকৌশলে ইসলামকে জড়ানো হয়েছে।
ঘটনাটা এরকম যে
কোন এক হিন্দু জমিদারের মেয়ের উপর এলাকার কিছু মুসলিমদের কুদৃষ্টি পরে এবং এক রাতে বাসায় হামলা করে জমিদারকে হত্যা করে ও তার মেয়েকে ধর্ষন করে ঐ মুসলিমগুলো।
কুয়াশা নিয়ে বেশী কিছু বলব না কারন প্রচার করার আগে তারা স্বীকার করে যে এগুলো লেখা গল্প স্ক্রিপ্টিং করা।
কিন্তু আর.জে. কিবরিয়ার অনুষ্ঠান গুলো হাতে গোনা কয়েকটা বাদে বাকি সব গুলো তাদের বানানো ও আগে থেকেই রেকর্ড করা।
আমার কাছে এর প্রমাণ আছে।
কিন্তু তারা সত্যের মত করে চালিয়ে মানুষকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে।
খুব সুকৌশলে ওরা ইসলামকে টার্গেট করছে।
প্রথম আলো রাসূলুল্লাহ (সঃ) ব্যঙ্গ করে কার্টুন প্রকাশ করেছে আর তাদেরই প্রতিষ্ঠান এবিসি রেডিও সুকৌশলে ইসলামের বিরুদ্ধে অপ প্রচার চালাচ্ছে।
সুন্দর সুন্দর লাভ স্টোরি ও খুব ইমোশোনাল গল্প বানিয়ে তারা সত্যের মত প্রচার করে প্রোগ্রাম জনপ্রিয় করেছে।
ঠিক প্রথম আলোরই মতই এখন তাদের আসল রুপ প্রকাশ করে ফেলছে।
গতকালকে বানোয়াট গল্প প্রচার করে কিবরিয়া পেইজে অনেক গালি খেয়েছে।
তাই এরপর হয়ত আবার কয়দিন মিস্টি মিস্টি গল্প প্রচার শুরু করবে।
পরে আবার আসল উদ্দেশ্য সফলে কাজ শুরু করবে।
সবার কাছে অনুরোধ ওগুলো শোনা বন্ধ করুন।তাদের বানানো গল্পে শেখার কিছু নেই বরং আরও বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন।
কত জন শুনছে তা কিন্তু ওরা বুঝতে পারে তাই কি হচ্ছে তা দেখার জন্য টিউন করলেও সেটা হবে তাদের সহযোগিতা করা , তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়েই যাবে।
সবাই শোনা বন্ধ করলেই ঐ নাটক বন্ধ হবে।
. . . .
বিষয়: বিবিধ
৫২৩৮ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার প্রতিটি অভিযোগের সাথে আমি একমত। তবে আমি ঘটনাটি সেদিন শুনেছিলাম, তাই এখানে আমার মনে হয় বলা হয়েছিল একটি সমাজতন্ত্রি পত্রিকায় লেখা-লেখি করার কারনেই তাকে যাত্রাবড়ী মাদ্রাসা থেকে নাম কেটে দেয়া হয়েছিল।
তবে আপনার নিচের অংশটিই প্রমান করে যে পুরো ঘটনাটি এবিসির বানানো ঘটনা !
আর চুপ নয় এবার গন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে কুলাঙ্গার আমানুল্লাহ ও এ বি ছি রেডি ও ৮৯.২০ এর কুখ্যাত আর জে কিবরিয়ার সূত্র ধরে কওমী মাদারেসের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত,অপততপরতা,ও মিথ্যাচার-কুৎসা রটনার বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে সোচ্চার হ ই আর আসুন এই সকল হলুদ মিডিয়ার বয়কট করি আমরা এদের উপযুক্ত শাস্তি দাবী করি। কে এই আমান? সে ছিল মাদ্রাসার এক কুলাঙ্গার বদমাইশ ও অবাধ্য ছাত্র,একজন বিকৃত মস্তিশখের যৌনচারী, আমামাইন্না চোর কাকে বলা হত? সাদ্দাম কে বিয়ে করতে চাইছিল যেন কোন সমকামী? কার জ্বালায় যেন সহপাঠি সাদ্দাম নাহবেমীর জামাতের পর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা থেকে অন্য মাদ্রাসায় চলে গেছে? আর কেউ না এই আমানুল্লাহ যে আজ আলেম উলামা ও মাদ্রাসার বিরুদ্ধে লেগেছে। ছাত্রদের জিনিস ও ছামানা কে চুরি করত?আর কেউ না এই আমান ওকে শাস্তি দিবেনা তো চুমা দিবে নাকি!? সাদ্দাম নামক সহপাঠির বোনের সাথে ইটিস পিটিস করার ফান্দ কে পেতেছিল? আমান অভিযোগ করেছে কওমী মাদ্রাসায় নাকি চরম অত্যাচার ও খুন-ধর্ষন হয় তাকে নাকি যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় নির্মম ভাবে ফেনের সাথে ঝুলিয়ে শাস্তি দেওয়া হত আমান! তোর মিথ্যা বলতে একতু ও বাধল না? আমরা কি জানিনা এটা কি সত্য না মিথ্যা!আমার মনে হয় একটা কাফের ও যদি ১ ঘন্টা যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় কাটায় ঐ কাফেরেরো এই মিথিচারের হিম্মত হবে না যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার বেপারে বলার।তোর মনে আছে যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় দাওরা হাদীস পড়ুয়া এক হিন্দুকে মুহতামিম শাইখ আল্লামা হাসান দাঃবা ধরেছিল? ক ই ঐ হিন্দুটাও তো যাত্রাবাড়ী বা কওমী মাদারেসের বেপারে এরুপ জঘন্য কথা বলতে তো শুনি নাই? তোর ফুলের মত!! চরিত্র আমরা যাত্রাবাড়ীর ছাত্ররা ভালো করেই জানি। তুই কওমী মাদ্রাসা গুলার প্রতি আরো জঘন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছিস যার সবকটাই ভিত্তিহীন। বিভিন্ন মহল ও প্রতিষ্ঠান আমাদের চুপ থাকাকে তারা দুর্বলতা মনে করছে ফলে একটার একটা চক্রান্ত ও মিথ্যা তুহমত প্রদান করছে কওমী মাদ্রাসার উস্তাদ ও ছাত্রদের উপর। এই কওমী ছাত্ররা উস্তাদ রা আপনারা বলুন আপনাদের সাথে কি কোন জুলুম-পাশবিক অত্যাচার ইসলাম বিরোধি কোন গর্হিত কাজ সম্পাদিত হয়?? লুচ্চামী,অসভ্যতা, অবাধ্যতার জন্য যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা হতে বহিষ্কৃত হে!আমানুল্লাহ এখোন সময় আছে ভালো হতে সিগারেট লাগেনা। আল্লাহ আমাদের সকল ইসলাম বিরোধি শক্তির উপর গালেব করুক। আমীন
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7218
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> যমুনার চরে লিখেছেন : আমদের নবী মোহাম্মদ যে ভাবে লাগামহীন যৌনতা করেছেন তাতে তাকে নিয়ে একটু-আধটু ঠাট্টা মস্করা হবেই। মুক্ত তথ্য প্রবাহের যুগে এটা থামানো যাবে না।A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7218
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
So We invite some of pro islami people pls set up some good pro islamic media...may allah give us the realization.
RJ গোলাম কিবরিয়াকে নিয়ে কিছু লেখবো না। এই ইসলাম বিদ্ধেশিটা শুধু কালকেই নয় বরং আগেও কয়েক বার সুক্ষ ভাবে ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতার হৃদয়ের স্পন্দন কওমী মাদ্রাসা নিয়ে কুত্সা রটিয়েছে।
তবে কালকে অনেকটা প্রকাশ্যেই ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান, কওমী মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কুত্সা রটিয়েছে। তারপরেও ওকে নিয়ে কিছু লেখবো না। কারণ এর মস্তিষ্ক আর ইসলাম ধর্মের চির শত্রু নাস্তিক, মুরতাদ, ইয়াহুদী, খৃষ্টান্দের দালালদের মস্তিষ্ককের মাঝে কোন পার্থক্য খুজে পাইনি।
তাই শুধু আমানের কথায় লিখবো।
এই কুলাঙ্গারের বাড়ী বরিশালে। পুরান ডাকার কোন এক মাদ্রাসায় নাকি হেফজ শেষ করেছে। (বাকী সত্য মিথ্যা আল্লাহ মা'লুম।)
অতপর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী জামাতে ভর্তি হয় এবং শরহেবেকায়া বছর মাদ্রাসা থেকে হুজুররা অতিষ্ঠ হয়ে এই কুলাঙ্গারটাকে বের করে দেয়।
আমানের ব্রেন মোটামোটি ভালই ছিল। তাই মীযান জামাতের সাদ্দাম নামে এক জন আমানের কাছে পড়া বুজার জন্য কখনো কখনো আসতো।
সাদ্দাম ছিল ছোট আর আমান ছিল বড়। আর সাদ্দামের মনে কোন ধরণেরই কুধারণা ছিলো না, তবে এই কুলাঙ্গার আমানের মনটা ফ্রেশ ছিলো না। ছিল না তার কোন ভালো উদ্দেশ্য।
সাদ্দামকে নিয়ে সব সময় সে মেতে থাকতো। এমনকি ক্লাসের সময় শিক্ষকের সবক পড়ানো (পাঠ) না শুনে সাদ্দামের আশেক হয়ে সাদ্দামের নামে কবিতা লেখতো। একদিন বাংলা স্যারের ক্লাসে এই আমানে সাদ্দামের কবিতা লিখে সবার সামনে আবৃত্তি করে শুনিয়ে ছিলো।
এই গুলো আবার সাদ্দামে কিছুই জানতো না। কারণ সাদ্দামে ওর নিচের ক্লাসে পড়তো।
আবার এমনও ঘটনা ঘটেছে যে, পরিক্ষার হলে প্রশ্নের উত্তর না লিখে কবিতা ও প্রবন্ধ লিখতো এবং এই লেখা বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে পাঠাইত।
ওর একটা ছোট ভাই ছিল। কিন্তু ওর ভাইয়ের প্রতি তেমন একটা খেয়াল করতো না। আবার দেখা যেত আমান নিজেই ডিম বাজী করে সাদ্দামকে খাওয়াইত।
কয়েক বারই আমান সাদ্দামদের বাড়ীতে গিয়েছে।
কিন্তু যখন সাদ্দাম জানতে পারলো আমানে তার বোনের সাথে প্রেম করার চেষ্টা করতেছে ঠিক তখন থেকেই আমানের সাথে সাদ্দামের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।
যখন আমান বিষয়টা বুঝতে পারে যে, সাদ্দাম তার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ঠিক তখনই আমানে ছাত্রদেরকে বিভিন্ন কথা শিখিয়ে দিতো সাদ্দামকে বিরক্ত করা জন্য।
এক পর্যায়ে সাদ্দামে অতিষ্ঠ হয়ে আমানকে জুতা দিয়ে পিটিয়েও ছিলো।
এবং শেষ পর্যন্ত সাদ্দাম আমানের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে হুজুরের পরামর্শ ক্রমে নাহবেমীর পড়ে মাদ্রাসা থেকে চলে যায় এবং অন্য মাদ্রাসায় ভর্তি হয়।
আর এদিকে দিন দিন আমানের পড়া লেখায় পিছিয়ে যেতে থাকে এবং পরিক্ষায় সব গুলো বিষয়েই রাসেব (ফেইল) হতে থাকে।
তখন আমানের পড়া লেখায় অধপতনের বিষয়টা বিষয়টা হুজুরদের নজরে পড়ে।
পরে খুজ নিয়ে হুজুররা সবই জানতে পারে যে, আমান সরা দিনই পত্রিকায় লেখা দেওয়ার ধান্দায় থাকে তাই তেমন একটা পড়া লেখা করে না এবং সাদ্দামের বিষয়টাও জানতে পারে।
হুজুররা আমানকে অনেক বুজিয়েছেন। এমনকি এটাও পর্যন্ত বলেছেন যে, সাদ্দাম একজন ছেলে। তুমি সাদ্দামকে জীবনেও বিয়ে করতে পারবা না। তাই সাদ্দামকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা বাদ দাও এবং পড়া লেখায় মনোযোগ দাও।
কিন্তু কথায় আছে না যে, কয়লা ধইয়লে ময়লা যায় না ঠিক তেমনটাই হয়েছে আমানের বেলায়। হুজুরদের কোন উপদেশই তার কানে যায় না।
তাই শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই হুজুররা তাকে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করতে বাধ্য হন।
আর এছাড়া কোন উপায়ও ছিলো না। কারণ মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ফ্রী খাবার খেত। আবার থাকতোও ফ্রী অথচ মাদ্রাসার কোন পড়াই সে পড়তো না।
পাঠক! ঠান্ডা মাথায় একটু চিন্তা করুন তো, যদি কোন কর্মচারী তার মালিকের কথা না শুনে এবং মালিকের কোন কাজও না করে তাহলে কি সে মালিক তার কর্মচারীকে রাখবে নাকি লাথি দিয়ে বের করে দিবে ?
আর অথচ এই কুলাঙ্গার আমানে প্রচার করেছে, বাংলা পড়ার কারণে তাকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দিয়েছে। আমরাও তো বাংলা পড়ি এবং পড়তেছিও কই আমাদেরকে তো বের করা হয় না তোকে কেন বের করে দিল ?
আর তুই যখন এতই ভাল তাহলে সাদ্দাম কেন তোকে জুতা দিয়ে পিটিয়েছিল?
পরিশেষে একট কথাই বলবোঃ
ইসলাম বিদ্ধেশীরা শত চেষ্টা করেও এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে পারে নাই। ইনশাআল্লাহ তোরাও কিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করে দেখ তোরাও বন্ধ করতে পারবি না।
বিঃ দ্রঃ
যদি কারো বিশ্বাস না হয় তাহলে যাত্রাবাড়ীতে এসে যাচাই করতে পারেন। আগের হুজুররাও আছেন এবং আমান যাদের সাথে পড়া লেখা করেছে তাহদের অনেকেই বর্তমানে তাফসীর, ফেকাহ ও উলূমূল হাদীসে পড়তেছে । তাদের সাথে যোগাযোগ করে সত্য মিথ্যা যাচাই করতে পারেন। (Omar Bin Aziz ) https://www.facebook.com/omarbinabdulazi?fref=ts
https://www.facebook.com/rnodir/posts/573377629413963?comment_id=3649355¬if_t=comment_mention
এক.
গত কয়েকদিন ধরে বিষয়টা নিয়ে বেশ হৈচৈ চোখে পড়ে। তাই সময় নিয়ে গত রাতে পুরো অডিও শুনতে হলো। পুরো অডিও শোনার পর আমার যা মনে হয়েছে তা এখানে প্রকাশ করবো। আশা করি সুস্থ মতামত হিসেবেই সবাই তা গ্রহণ করবেন।
আমানের জীবনগল্পের মূল পয়েন্ট তার জীবনযুদ্ধ। এবং মূল প্রতিপাদ্য বিষয় এ যুদ্ধে তার জয়। জীবনযুদ্ধে জয় আমাদেরকে উৎসাহিত করে, আমরা আনন্দিত হই। মোটের ওপর আমার মনে হয় তার গল্পটি এ উৎসাহ জোগাতে সফল হয়েছে।
তার জীবনযুদ্ধের গল্পের অংশ হিসেবে উঠে এসেছে তার কষ্টের শৈশব, বাবার মাদ্রাসার চাকুরী, অর্ধাহার বা অনাহারের দিনরাত্রি; মাদ্রাসায় মক্তব ও হিফজ শিক্ষা, নানা কারণে এক মাদ্রাসা ত্যাগ করে অন্য মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়া, বড় ভাইয়ের মাদ্রাসা বদল; এরপর কুমিল্লা হয়ে ঢাকায় আসা; টোকাই, দোকান সহকারী, গৃহকর্মী ইত্যাদি নানা করুণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া; বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে পার্কের সীটে, দোকানে, কিংবা গৃহকর্তার কাছ থেকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়া -ইত্যাদি। আরো এসেছে তার হিফজ শেষ করার আগ্রহ, উচ্চতর শিক্ষার জন্য কিতাবখানায় ভর্তি, লেখালেখির আগ্রহ; একজন লেখিকার সাথে পরিচয় ও তার মাধ্যমে নানা মতবাদ ও বইয়ের সাথে পরিচয়; ব্যক্তিগত আবেগ, শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন, দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, ঢাকা কলেজে ভর্তি, মানুষের অনুদানে ও ছোটখাটো ব্যবসা করে শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সবশেষে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাওয়া। তার শেষ আবেদন ছিল, জীবনের বন্ধুর পথে হাঁটতে হাঁটতে কুরআনের ভুলে যাওয়া অংশগুলো আবার মনে করা, দৈনিক কুরআন তেলাওয়াতের আমলের ঘোষণা এবং ভবিষ্যতে বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন।
যেমনটা শুরুতেই বলেছি, নানা প্রতিকূলতা আর অনিশ্চয়তার মাঝে হাবুডুবু খেয়ে পার্থিব সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়া -এটাই তার জীবনগল্পের মূল বিষয়।
গল্পটা শুধু জীবনযুদ্ধের থিম নিয়ে এগিয়ে গেলে তাতে নিশ্চয় কারো দ্বিমত থাকত না। কিন্তু প্রাসঙ্গিকভাবে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নানা বিষয় উঠে আসায় বিতর্কে জড়াতে হয় গল্পের নায়ক আমানকে।
মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে যেসব বিষয় উঠে আসে, সেগুলো মোটামুটি নিম্নরূপ:
১. মাদ্রাসার হোস্টেলে অনৈতিকতা চর্চা।
২. অনৈতিক কর্মকাণ্ডের শিকার হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষক কর্তৃক তা আমলে না নিয়ে উল্টো ভিকটিমকেই শাস্তি দেয়া।
৩. শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুখাবয়বের সৌন্দর্যের ভিত্তিতে বিভাজন।
৪. শিক্ষকের খিদমত না করায় বিরক্তি ও ক্রোধ প্রকাশ।
৫. নির্মম প্রহার।
৬. পত্রিকা, সাহিত্যের বই নিষিদ্ধকরণ, ও এ কারণে বহিষ্কার।
দুই.
প্রথমে বলে নেই, আমান যেসব মাদ্রাসার তথ্য দিয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করাটা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। এমনকি এ ধরণের অনুষ্ঠান প্রচার আদৌ সমর্থনযোগ্য কিনা, তাতেও বেশ বিতর্ক আছে। কারণ মানুষ যখন আবেগে কাউকে স্থান দেয়, তখন তার দেয়া সকল অভিযোগ সত্য বলে মেনে নেয়। অথচ ব্যক্তি যতক্ষণ তার কথা বা কাজে অন্যকে না জড়াবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তা বিশ্বাসযোগ্য হলেও, অন্যের বিপক্ষে গেলে বা অন্যের হক সংশ্লিষ্ট হলে, অবশ্যই তাকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে কোনো প্রতিষ্ঠান হলে বিষয়টা আরো গুরুত্বের দাবীদার।
এক্ষেত্রে সে সুযোগ না দেয়া হলে, এবং ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম স্পষ্ট ব্যবহার করা হলে, শ্রোতার অন্তরে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে অনর্থক কুধারণা চলে আসতে পারে, যার পুরো দায় পড়বে বক্তার ওপর। বর্তমানে মিডিয়াসহ তথাকথিত সুশীল সমাজ সবাই এমনিতেই মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। কাজেই একজন সত্যিকার মাদ্রাসার ছাত্র, বা মাদ্রাসার কল্যাণকামী কখনোই এই বিরোধিতার আগুনে তেল ঢালবে না, এটা তার কাছ থেকে কাম্য না। তাই এ জায়গাটায় আমান অথবা এবিসি রেডিও অথবা উভয়েই অন্যায় করেছে, এ ব্যাপারে একমত পোষণ করছি।
এবার আসা যাক আমাদের সমাজব্যবস্থা নিয়ে। আমরা কমবেশি জানি, সমকামিতা ও অনৈতিকতা চর্চা বর্তমানে একটি মহামারীর রূপ নিয়েছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলগুলোতে এগুলো যে কী হারে চলে, তা বাংলা ব্লগ ও ফেইসবুকে যারা চোখ রাখেন, তারা আঁচ করতে পারেন। মাঝে মধ্যে ছোটখাটো অনলাইন পত্রিকাও এসব নিয়ে রিপোর্ট করে।
শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র বা ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, বা পরিবার ও সমাজের বড় কর্তৃক ছোটকে এবিউজ বা অনৈতিক নির্যাতন ও অবমাননা করাটাও সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারেও যথেষ্ট রিপোর্ট আমরা পড়ি ও জানি।
মনে রাখতে হবে, যারা মাদ্রাসায় আসেন, তারা এই সমাজেরই মানুষ। এমন নয় যে, মাদ্রাসার গেইট দিয়ে ঢুকলে অটোমেটিক তারা শুধরে যান। শুধরানোর ব্যাপারটার জায়গা তাকওয়ার মাঝে। আর তাকওয়া এক দিনে অর্জন হয় না। কাজেই সমাজের অন্য সব অংশের অনৈতিক ভাবনা তাদের মাঝেও থাকতে পারে।
তাকওয়ার চর্চা যেটা করে তা হলো, এই ভাবনাকে দমিয়ে রাখে। যদি উপযুক্ত তারবিয়াত, শাসন ও ব্যবস্থাপনা না থাকে, তাহলে এই দমানো বেশি দিন টিকে না।
হিফজ ও মক্তব বিভাগে যেসব শিক্ষক পড়ান, তাদের অনেকেই (বা সিংহভাগই) মাওলানা নন। তারা অল্প কিছু পড়াশোনা করে বা হাফেজ হয়েই হয়ত হিফজ বিভাগে যোগ দেন। তাকওয়ার একটি বড় অংশ আসে শিক্ষা থেকে। তাই তো, "আল্লাহর বান্দাদের মাঝ থেকে আলেমরাই (শিক্ষিতরাই) তাঁকে ভয় করে [আল-কুরআন ৩৫:২৮]"। কাজেই যারা সেই শিক্ষাটা পান না, তাদেরকে সমাজের অন্য সব অংশ থেকে খুব বেশি আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই।
এখন এই যে সমাজের এই অংশটা, তাদেরকে নৈতিকতার মানদণ্ডে সঠিক জায়গায় রাখতে মাদ্রাসা প্রশাসনকে যথেষ্ট শ্রম দিতে হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের ব্যাপারেও যথেষ্ট সচেতন হতে হয়। নতুবা শিক্ষার্থীদের মাঝে তো বটেই, শিক্ষকদের মাঝেও অনৈতিকতা চর্চা হতে পারে।
আমরা যারা মাদ্রাসায় পড়ি, মক্তব ও হিফজ বিভাগে এমন সব ঘটনার ব্যাপারে কমবেশি সবাই জানি। প্রতি বছরই হয়ত বিভিন্ন মাদ্রাসায় কিছু ছাত্র-শিক্ষককে বহিষ্কার হতে হয়। কিতাবখানায় ওপরের জামাতে এমনটা হতে দেখা যায় না। আমানের সব অভিযোগ মক্তব ও হিফজ বিভাগে পড়াকালীন। কিতাব বিভাগের অভিযোগ শুধু একটি, সেটি অনৈতিকতার সাথে জড়িত না। সে বিষয়ে পরে আসছি।
তিন.
আমানের উল্লিখিত #১-#৪ (অনৈতিক চর্চা) এর বাস্তবতা কিছু কিছু জায়গায় আছে। আগের চেয়ে হারটা কমে আসছে, আশা করি একেবারে চলে যাবে। এটাকে একেবারে অস্বীকার করাটা আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথকে বাধাগ্রস্ত করবে। এমন ঘটনা আমার ছাত্রজীবনেও জেনেছি। এমন কয়েকজনকে জানি, যারা এসব ঘটনায় মাদ্রাসা ছেড়েছেন, কাউকে বলেন নি। তবে যেমনটা শুরুতে বলে নিয়েছি, নৈতিকতার এ অধঃপতন পুরো সমাজেই। আর মাদ্রাসায় যে কোনো আঁচর সমাজ বড় করে দেখে। তাই এসব রোধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমার দুটো পরামর্শ:
ক. শিক্ষকদের কোয়ার্টারের ব্যবস্থা রাখা, নতুবা প্রতি সপ্তাহে একবার বাড়ীতে যাওয়ার ছুটি দেয়া।
খ. ছাত্রদের সীটের মাঝে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা রাখা। কিংবা ছোট চৌকি ব্যবহার করা। (আমি সবসময়ই ছোট চৌকি ব্যবহার করেছি, ঠাণ্ডার সমস্যার কারণে)।
#৫ নির্মম প্রহার: আমি স্বচক্ষে দেখেছি। তখন সবেমাত্র স্কুল থেকে মাদ্রাসার ইবতেদায়ীতে ভর্তি হয়েছি (মক্তব ও হিফজ পড়া হয় নি)। একদিন কী কারণে মক্তবে গিয়েছিলাম, ওপর তলায়। মক্তবের হুজুরের সাথে অন্যভাবে পরিচয় ছিল, খুব সাদাসিধে হুজুর বলে জানি। তো, দেখলাম, তিনি লুঙ্গি কাছা দিয়ে দুজন ছাত্রকে (সাত-আট বছরের) বললেন অন্য একজন ছাত্রকে (একই বয়সের) ধরে উপুড় করে শোয়াতে। তারা দুইজন ধরে আছে। আর হুজুর বেত নিয়ে লাগাতার পেটাচ্ছেন। একটি বেত দিয়ে বেশ সময় ধরে পেটানোর পর আরেকটি বেত চাইলেন। আমি আর থাকতে পারি নি। বারো বছর বয়সের সেই স্মৃতিটা আজও আমাকে কাঁপিয়ে তোলে।
আরেক দিন। মাদ্রাসার প্রথম দিকের এক দিন। একটি ক্লাসে হুজুর আগের দিন পড়া দিয়ে গিয়েছেন। তো, সেদিন শুধু আমিই পড়া শোনাতে পারি। আশেপাশের কেউ শোনাতে পারে নি। আমি ছিলাম সবার ছোট। তো হুজুর বললেন, আজ যারা পারে নি তাদের মারব না। যে পেরেছে তাকে মারব, তুই অন্যদের শেখালি না কেন। বলেই, হুজুর আমাকে কয়েকবার বেত দিয়ে হাতে মারলেন। আমি জীবনে প্রথম বেতের মার খেলাম। খুব কেঁদেছিলাম। সহপাঠী এক বড় ভাই সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। যাহোক, পরবর্তীতে হুজুরের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল এবং হুজুর আমাকে খুব স্নেহ করতেন। তিনি চলে গেছেন, আল্লাহ ওনাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন। আমীন। (আবেগাপ্লুত...)
তো, আসলে আমার মনে হয়, এক সময় শিক্ষার্থীদের প্রহার করাটাই সিস্টেম ছিল। আমি স্কুলেও পড়েছি, দেশেও, বিদেশেও। দেশে দেখেছি শিক্ষকরা বেত নিয়ে ক্লাসে ঢুকতেন। একজন পিটি স্যার ছিলেন, যখন তখন যার তার ওপর বেত চড়াতেন। তবে বিদেশে এমনটা কখনো দেখি নি।
বর্তমানে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটায় পরিবর্তন আসছে। এই পরিবর্তন মাদ্রাসাগুলোতেও আসছে। হয়ত শহরের বাইরে কোথাও এখনো বেত ব্যবহার হয়, তবে তা সীমিত। কাজেই এই প্রহারের জন্য মাদ্রাসাগুলোকে এককভাবে দোষ দিলে চলবে না। বরং পুরো সমাজে যা হত, মাদ্রাসাতেও তার প্রতিফলন ঘটত।
#৬ মাদ্রাসায় পত্রিকা ও সাহিত্যের বই পড়া নিষিদ্ধকরণ ও বহিষ্কার: একেক শিক্ষাব্যবস্থা তার আদর্শকে অটুট রাখতে বিভিন্ন নিয়ম করতে পারে, তাতে সমালোচনার কিছু নেই। ছাত্রদের ভেতর যতক্ষণ একটি আদর্শ স্থির না হয়, ততক্ষণ হুজুররা তাকে এই নিয়মে বেধে রাখেন। দাওরা হাদীস শেষ করার পর সে যা কিছু ইচ্ছে পড়তে পারে, মুরুব্বীর সাথে পরামর্শ করে। আমান এমনটি করেনি বিধায়ই সে আদর্শহীনতায় ভুগেছে, যেটাকে উপস্থাপক সঠিক গাইডের অভাব বলে উল্লেখ করেছেন। একটি আদর্শের ওপর স্থির থেকে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়তে পারত, সেক্ষেত্রে তাকে আমরা হয়ত আরো উজ্জ্বল অবস্থায় দেখতে পেতাম। উল্লেখ্য, বর্তমানে অধিকাংশ মাদ্রাসাতেই এ ব্যাপারে কিছু শিথিলতা এসেছে। তারপরও সর্বাবস্থায় শিক্ষক বা একজন মুরুব্বীর তত্ত্বাবধানে পড়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
কোনো নিয়ম বা আইন করার পর তা কার্যকর না করা হলে তার কোনো মূল্য থাকে না। আমরা জানি, আর্মিদের কোনো একটি গ্রুপে কোনো একজন শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কোনো কাজ করলে গ্রুপের সবাইকে শাস্তি পেতে হয়। নতুবা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। ইসলাম সবচেয়ে সুশৃঙ্খল ধর্ম। আর এ ধর্মের সবচেয়ে সুশৃঙ্খল বিদ্যাপীঠ কওমী মাদ্রাসা। কাজেই এখানে শৃঙ্খলার সর্বোচ্চ ব্যবহার তো হবেই। তদুপরি আমান একজন ভালো মানের ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও একটি পরীক্ষায় তার বক্তব্য অনুসারে সব বিষয়েই ফেল করে। এতে তার শাস্তি অনিবার্য হয়ে ওঠে। কারণ মাদ্রাসায় থাকা খাওয়াটা পড়াশোনার কমিটমেন্টের মাধ্যমে হয়। এটা কোনো হোটেল নয় যে, বাইরের সব কাজ সেরে রাতে এখানে খেয়ে সুখ নিদ্রায় যাওয়া হবে। (এক্ষেত্রে তার উল্লিখিত মাদ্রাসা না হয়ে অন্য কোনো মাদ্রাসা হলেও সম্ভবত একই সিদ্ধান্ত নেয়া হত।)
আমান মাদ্রাসার খাবারের বিষয়ে বলেছেন, সবই মানুষের অনুদান ও সদকা বলে ব্যক্ত করেছেন, যাতে উপস্থাপকও সায় দিয়েছেন নিজের অভিজ্ঞতা থেকে। বাস্তবতা হলো শহরের অধিকাংশ মাদ্রাসাতেই সামর্থবান পরিবারের ছাত্রদের জন্য টাকা দিয়ে খাওয়ার ভিন্ন ব্যবস্থা আছে। বাকীদের জন্য ফ্রি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
চার.
যা হোক, সব মিলিয়ে আমি আমানকে সম্পূর্ণ দোষ দেব না। আমাদের চারপাশে এমন আমান অনেক আছেন, যাদের আমান হওয়ার পেছনে আমাদের দুর্বলতাই কাজ করে। আজ আমান মিডিয়াতে আসায় তাকে নিয়ে হয়ত কথা হচ্ছে, কিন্তু এমন আমান অনেক পরিবারেই আছে, যাদের কাছে মাদ্রাসার কথা শুনে কেউ আর মাদ্রাসায় সন্তান দিতে চান না। তাই খুঁজে খুঁজে আমানদের বের করে হুমকি দেয়ার চেয়ে আমান তৈরি হওয়ার পথ বন্ধ করাই হবে যৌক্তিক ও সময়োচিত সমাধান। আমরা চাই না আর একজন আমান #১-#৫ এর কোনো কারণে মাদ্রাসা ছেড়ে যাক। এজন্য কী উপায় বের করা যায়, তা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। মিটিং করতে হবে। সমস্যা যেখানে আছে, সমাধান থাকবেই।
আর উপস্থাপককেও আমি সেভাবে দোষ দিতে চাইব না (শুধু এই একটি পর্বের ভিত্তিতে)। কারণ আমানরা যখন তাদের গল্প বলে, পরিবারে বা বন্ধুদের আড্ডার আসরে, তখন উপস্থাপকের ন্যায় অনেকেই থাকেন, যারা নিজের জীবনের মাদ্রাসার ক্ষুদ্র গল্প তুলে ধরে। চারপাশে এমন অনেকেই আছেন যারা অল্প কিছুদিন মাদ্রাসায় গিয়েছিলেন। তারা ভাবেন, তাদের সেই অল্প কয়েকদিনের অভিজ্ঞতাই পুরো মাদ্রাসা ব্যবস্থা। তাদের এই ভাবনাকে বদলাতে আমাদের প্রতিবাদ হতে হবে বুদ্ধিদীপ্ত। এ সময় আমরা 'নাস্তিক নাস্তিক' বলে ট্যাগিংয়ের কাজে সময় নষ্ট করলে তা হিতে বিপরীত হবে। তাছাড়া উপস্থাপক একাধিকবার বলেছেন যে আমান গাইডহীনতার কারণে এক লাইন থেকে আরেক লাইনে গিয়েছেন। গাইড থাকলে তিনি বড় মাওলানা হতেন, নতুবা বাংলা লাইনে বড় হতেন। শেষেও তিনি কামনা করেছেন যেন আমান তার হিফজকৃত কুরআন পুনরায় ইয়াদ করতে পারে।
আমরা দোয়া করি, আল্লাহ আমাদের কওমী মাদ্রাসাগুলোকে ইলমী-আমলী সর্বদিক থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার তাওফীক দিন। আমীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন