একসময় প্রচুর সিনেমা দেখতাম। এখন আর দেখতে হয় না। বাংলাদেশে যা ঘটছে, সিনেমা এর তুলনায় ডালভাত. . .

লিখেছেন লিখেছেন খামচি বাবা ১৭ আগস্ট, ২০১৩, ০২:৫৮:৪৪ দুপুর

নিউজইভেন্ট২৪ এ একটা বর্ণনা পড়লাম, পুরো সিনেমাটিক। সাউথ ইন্ডিয়ান মুভির মতো, একটু বেশি ভিডিও অচিন্তনীয় একশন।

"জামায়াতের হরতালের দ্বিতীয় দিন যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলি খেয়ে রাস্তায় পড়ে যাওয়ার পরে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন শিবির নেতা খলিলুর রহমান।

শরীরটা রাস্তা থেকে উপরে তুলেছিলেন।

ঠিক সেই মুহূর্তে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি তদন্ত অবনী করের গাড়ি তুলেদেয়া হয় খলিলের শরীরের ওপর।

এরপর আবারো ওঠার চেষ্টা করলে অবনি নিজেই গুলি করেন খলিলকে লক্ষ্য করে।

রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন খলিল।

মাথার এক পাশ দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে।"

দারুণ। অবনী কর কি জয় হো।

আমারদেশ পত্রিকায় দেখলাম আরেক সিনেমা। আম্রিকায় গিয়ে এখন নিরাপদ হয়ে তারপর উইং কমান্ডার সালাহউদ্দিনের বর্ণনা।

"গিয়ে দেখি এরই মধ্যে আমাদের এফ-৭ ফাইটার বিমানে রকেটগুলো লাগানো হলো, আরেকটি এমআই-১৭১ হেলিকপ্টারেও রকেট লাগানো হলো। আমরা প্রস্তুত।...............

আমি এবং এয়ার কমডোর জামান তখন গোলাবারুদে সজ্জিত ফাইটার এয়ারক্রাফটের ডানারনিচে দাঁড়িয়ে আছি। ওইদিকে ওই বিমানের পাইলটরাও রেডি। সবাই অপেক্ষারত, কেবল একটি নির্দেশের অপেক্ষায়।

চোখের সামনে অতিচেনা মুখগুলো ভাসছে আর শঙ্কা এবংউত্তেজনায় ভেতরটা কাঁপছিল।আমি কমান্ডারকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করলাম, স্যার, আর কতক্ষণ? উনি বললেন, আমরা প্রস্তুত, কেবলনির্দেশের অপেক্ষায় আছি।

কিন্তু হায়, সেই নির্দেশ আরএলো না। যে নির্দেশ বাঁচাতেপারতো অনেকগুলো সূর্যসন্তান।

এমন সময় মেজর এমরান তার ২০ থেকে ২২ জন কমান্ডো নিয়ে কুর্মিটোলার মেইন গেটে চলে এলো। ............

এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর একটি দল আক্রান্ত সেনা অফিসার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের রক্ষার জন্য পিলখানার অতিকাছে চলে গিয়েছিল। তাদের সেখানে থামানো হলো। কথিত আছে, এ ঘটনার পর আর্মির অনেক ইয়ং অফিসারের চাকরি চলে যায়। তারা আলোচনা করেছেন এবং বলেছেন, এটা সেনাবাহিনীর ওপর প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ। এরকম ভাবলে অবাক হওয়ার কোনো কারণ নেই। ......

প্রধানমন্ত্রী তার পরিবারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেনাবাহিনীর ওপর প্রতিশোধ নিলেন বলে আমাদের মনে সন্দেহ। এমনকি সেনাকুঞ্জেরমিটিংয়ে চেয়ার ভাঙার ঘটনাও ঘটে। অফিসাররা প্রচণ্ড আপসেট ছিলেন।

নিহত কর্মকর্তাদের জানাজায়অংশগ্রহণ করতে অর্থমন্ত্রীআবুল মাল আবদুল মুহিত ও কিছু আওয়ামী নেতা সেনানিবাস মসজিদে এলে সেনা অফিসাররা ‘ভারতীয় দালাল’ বলে তাদের দিকে তেড়ে এলে সিনিয়র অফিসারদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেনি। ..........

সৈনিকরা কমান্ড ভেঙে তাদের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের সঙ্গে গিয়ে গোপনে দেখা করেছিলেন। তারা লোকাল এমপি ব্যারিস্টার তাপসের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, শেখ সেলিম এমপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাদের ক্ষোভের কথা বলেছেন। ............

যেসব কর্মকর্তাকে গুলি করা হলো, আমি নিশ্চিত হয়তো তারাসবাই মারা যাবেন, অনেকেই কালভার্টের নিচে ছিলেন, কেউকেউ অন্য জায়গায় ছিলেন, ২৬ তারিখ পর্যন্ত অনেকে বেঁচে ছিলেন লুকিয়ে। কেউ পায়ে গুলি খেয়েছেন, কেউ শরীরের অন্য কোথাও গুলি খেয়েছেন। তারা ব্লিডিংয়ে মারা যাচ্ছেন। ..............

আপনাদের নিশ্চয়ই বড়াইবাড়ি সীমান্তের কথা মনে আছে। সীমান্তে বাংলাদেশী বিডিআরকতজন বিএসএফকে মেরে ফেলেছিল? তখন ডিজি জেনারেল ফজলুর রহমান। এটা আওয়ামী লীগের গতবারের ক্ষমতায় থাকার সময় হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমাদের বিডিআর যদি দুর্বল হয়, তাহলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রেরজন্য বিরাট অ্যাডভান্টেজ এবং তাদের জন্য বিজয়। পিলখানার ঘটনার সঙ্গে এ ঘটনা নিয়েও মানুষের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। ..............

লে. জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে সামরিক পর্ষদ দ্বারা এই নির্মম ঘটনার তদন্ত হয়েছিল। সেই তদন্তে যে তথ্য এবং সুপারিশএসেছিল, তা এখনো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমি সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তির কাছে শুনেছি—এই তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারকাছে যাওয়া হয়, উনি দেখে ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘তাহলে দোষীদের মধ্যে আমার নামটাও লিখে দেন।’ ...........

এ বিচার যখন চলছিল, তখন অনেক আসামিই বন্দি থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।এই মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। তাছাড়া আমার পরিচিত যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের মৃত্যুও স্বাভাবিক ছিল না। .........."

এতো সিনেমা আর সিনেমা। অবাস্তব মুভি দেখার দরকার কি? একটু আফসুস হচ্ছে। স্রষ্টা যদি অবনী কর, প্রদীপ কুমার দাশ, বনজ কুমার সাহা বাবু হয়ে জন্ম নেয়ার সুযোগ দিতেন, তাহলে হয়তো বাংলাদেশের সিনেমায় একটা পার্ট পেয়েও পেতাম।

মূল লেখক Aman abduhu

ফেসবুক থেকে সংগৃহিত

বিষয়: বিবিধ

১২৬৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File