মাহমুদুর রহমান গ্রেফতার কেন? জবাব চাই
লিখেছেন লিখেছেন ফজলে রাব্বী ১১ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:১১:২০ রাত
আবারো অ্যারেস্ট হলো ফ্যাসিবাদী সরকারের আতঙ্ক বাংলার অকুতভয় প্রাণপ্রিয় সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। নেহায়েত খোঁড়া এক যুক্তি দিয়ে আবারো তাঁর উপর নির্যাতন নিপীড়নের স্টীম রোলার চালানো হবে। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক বৈ কিছুই নয়। নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে নফল নামাজটুকুনও পড়তে দেয়নি তারা
তাঁকে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। জানি না এই ১৩ দিন পরে তাকে পুণরায় দেখার সৌভাগ্য দেশবাসীর হবে কি না! এই সরকারের হাত থেকে তাঁকে এখন আমাদের বাঁচানো মনুষত্ব্যের দাবি। [b]মুসলিম হলে ঈমানী দায়িত্বও বটে।
যাই হোক! গ্রেফতারের পর আমারদেশের ওয়েবসাইটে একটি টেলিগ্রাম প্রকাশ করা হয়, তার হুভু নিচে তুলে ধরা হলো।
দৈনিক আমার দেশ-এর নন্দিত, সাহসী এবং সত্যনিষ্ঠ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আজ সকাল ৯টায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৭ মিনিটের কমান্ডো স্টাইলের অভিযানে তাকে কারওয়ানবাজারের পত্রিকা কার্যালয় থেকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। অমানবিকভাবে গ্রেফতারের পর মাহমুদুর রহমানকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। গত ১২ ডিসেম্বর তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। জনপ্রিয় এই সম্পাদককে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করছে পুলিশ। বেলা সোয়া দুইটায় ডিবি অফিস থেকে কড়া পুলিশ প্রহরায় তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে মানবাধিকার ও আইনের শাসনের লড়াইয়ে সদাজাগ্রত পত্রিকা আমার দেশ-এর সম্পাদককে গ্রেফতারে সারাদেশে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও আমার দেশ পরিবার।
এর আগে তাকে ২০১০ সালের ১ জুন পত্রিকা কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে ১০ মাস কারাবন্দি রাখা হয়। আমার দেশ পত্রিকাটিও ৪৭ দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে আদালতের আদেশে পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও অপশাসনের চিত্র তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করায় আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ৬০টির বেশি মামলা দেয়া হয়েছে।[i](সরকার গাঁজাখোর হইলে যা করতে পারে-লেখক) গত ১২ ডিসেম্বর সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তথ্যপ্রযুক্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ সময় তাকে গ্রেফতার করার ঘোষণা দেন কয়েকজন মন্ত্রী। এমনকি তাকে গুম করারও গুজব ওঠে। ১৩ ডিসেম্বর থেকে মাহমুদুর রহমান প্রায় চার মাস পত্রিকা কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মাহমুদুর রহমানকে পত্রিকা কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৮টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৮ মিনিট পর্যন্ত কমান্ডো স্টাইলের অভিযানে তাকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। হঠাত্ ডিবি, র্যাব ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকশ’ সদস্য কারওয়ানবাজারে অবস্থিত আমার দেশ-এর কার্যালয় ঘিরে ফেলে। উপস্থিত সংবাদকর্মীরা জানান, অপারেশনে অংশ নেয়া অফিসার পর্যায়ের অধিকাংশই ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী।
৮টা ৫১ মিনিটে ডিবি পুলিশের অর্ধশতাধিক সদস্য কার্যালয়ের ১১ তলার গেটে অবস্থান নেন। সেখানে গার্ডকে মারধর করে চাবি কেড়ে নেন তারা। কমান্ডো স্টাইলে সরাসরি সম্পাদকের কক্ষে যান ডিবি সদস্যরা। মাহমুদুর রহমান তখন চা খাচ্ছিলেন। পুলিশ তাকে চা খাওয়াও শেষ করতে দেয়নি। তিনি দু’রাকাত নফল নামাজ পড়তে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে সাহসী সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কার্যালয় থেকে বের করা হয়। কেবল লুঙ্গি বদলে পায়জামা পরার সুযোগ দেয়া হয় তাকে। গ্রেফতারকালে তিনি একখানা কোরআন শরীফ সঙ্গে নেন। টেনেহিঁচড়ে নিচে নামানোর সময় আমার দেশ-এর এক ফটোসাংবাদিক ছবি তুলতে গেলে তাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়া হয় এবং ক্যামেরা কেড়ে নেয় পুলিশ। কার্যালয়ের নিচে গাড়িতে তোলার সময় আমার দেশ-এর এক সংবাদকর্মী সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। অস্ত্র তাক করে চলে যাওয়ার জন্যও হুমকি দেন পুলিশ সদস্যরা। এ সময় মাহমুদুর রহমান হাস্যোজ্জ্বল ও দৃঢ়চেতা ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা পত্রিকা চালিয়ে যাও। আমার জন্য চিন্তা করো না।’
গ্রেফতারের পর সম্পাদকের কক্ষে তল্লাশির নামে জিনিসপত্র তছনছ করে ডিবি পুলিশ। তারা মাহমুদুর রহমানের ব্যক্তিগত কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ নথিসংবলিত ৭টি সিডি ও কিছু কাগজপত্র নিয়ে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন, ‘তেজগাঁও থানায় দায়ের করা স্কাইপ কথোপকথন কেলেঙ্কারি মামলায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ পরে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে নেয়া হবে বলে পুলিশ সূত্র জানায়।(তবে ইতিমধ্যেই ১৩ দিনের রিমান্ড মন্জুর হয়ে গেছে-লেখক)
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা মহানগর (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবির বিশেষ একটি দল দৈনিক আমার দেশ কার্যালয়ে অভিযান চালায়। এরপর তাকে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে মিন্টো রোডে নিয়ে যাওয়া হয়।
ফরাস
বিষয়: রাজনীতি
৯৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন