আমাদের প্রভু
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ১৮ মার্চ, ২০১৩, ০৪:১৮:২৭ বিকাল
সব ধরনের কাফেরদের খোদা থেকে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর খোদা সম্পূর্ণ আলাদা । মুশরিকদের কারো খোদার ছয় দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করার পর সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেবার প্রয়োজন হয়েছে। সে বিশ্ব - জগতের প্রভু নয় বরং ইসরাঈলের প্রভু । একটি গোষ্ঠীর লোকদের সাথে তার এমন বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে যা অন্যদের সাথে নেই। সে হযরত ইয়াকুবের সাথে কুস্তি লড়ে কিন্তু তাকে আছাড় দিতে পারে না । তার উযাইর নামক একটি ছেলেও আছে। আবার কারো খোদা হযরত ঈসা (সা )মসিহ নামক একমাত্র পুত্রের পিতা। সে অন্যদের গুণাহের কাফফারা দেবার জন্য নিজের পুত্রকে ক্রুশ বিদ্ধ করায়। কারোর খোদার স্ত্রী সন্তান আছে। কিন্তু সে বেচারার শুধু কণ্যা আবির্ভূত হয়েছে এবং মানুষের দেহ পিঞ্জরে আবদ্ধ হয়ে পৃথিবীর বুকে এবং মানুষের মতো কাজ করে যাচ্ছে । কারো খোদা নিছক অনিবার্য অস্তিত্ব অথবা সকল কার্যকারণের কারণ কিংবা প্রথম কার্যকারণ (First cause ) । বিশ্ব জগতের ব্যবস্থাপনাকে একবার সচল করে দিয়ে সে আলাদা হয়ে গেছে।তারপর বিশ্ব জাহান ধরা বাধা আইন মুতাবেক স্বয়ং চলছে। অতপর মানুষের সাথে তার ও তার সাথে মানুষের কোন সম্পর্ক নেই । মোটকথা ,খোদাকে মানে এমন সব কাফেরও আসলে ঐ আল্লাহ মানে না যিনি সমগ্র বিশ্ব জাহানের এ ব্যবস্থাপনার শুধু স্রষ্টাই নন বরং তার সার্বক্ষণিক পরিচালক । তাঁর হুকুম এখানে প্রতি মুহূর্তেই চলছে। তিনি সকল প্রকার দোষ ,ক্রটি ,দুর্বলতা ও ভ্রান্তি থেকে মুক্ত । তিনি সব রকমের উপমা ও সাকার সত্তা থেকে পবিত্র ,নজীর , সাদৃশ্য ও সামঞ্জস্য মুক্ত এবং কোন সাথী , সহাকারী ও অংশীদারের মুখাপেক্ষী নন। তাঁর সত্তা , গুণাবলী , ক্ষমতা ,ইখতিয়ার ও মাবুদ হবার অধিকারে কেউ তাঁর সাথে শরীক নয়। তাঁর সন্তানাদি থাকা , কাউকে বিয়ে করে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার এবং কোন পরিবার বা গোষ্ঠীর সাথে কোন বিশেষ সম্পর্ক থাকার কোন প্রশ্নই ওঠে না। প্রতিটি সত্তার সাথে রিজিকদাতা ,পালনর্কতা ,অনুগ্রহকারী ও ব্যবস্থাপক হিসেবে তাঁর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তিনি প্রার্থনা শোনেন ও তার জবাব দেন। জীবন - মৃত্যু , লাভ - ক্ষতি এবং ভাগ্যের ভাঙা - গড়ার পূর্ণ ক্ষমতার তিনিই একচ্ছত্র মালিক। তিনি নিজের সৃষ্টির কেবল পালনকর্তাই নন বরং প্রত্যেককে তার মর্যাদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী হিদায়াতও দান করেন। তাঁর সাথে আমাদের সম্পর্ক কেবল এতটুকুই নয় যে , তিনি আমাদের মাবুদ এবং আমরা তাঁর পূজা অর্চনাকারী বরং তিনি নিজের নবী ও কিতাবের সাহায্যে আমাদের আদেশ নিষেধের বিধান দান করেন এবং তাঁর বিধানের আনুগত্য করাই আমাদের কাজ। নিজেদের কাজের জন্য তাঁর কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হবে। মৃত্যুর পর তিনি পুনর্বার আমদের ওঠাবেন এবং আমাদের কাজকর্ম পর্যালোচনা করে পুরস্কার ও শাস্তি দেবেন। এসব গুণাবলী সম্পন্ন মাবুদের ইবাদাত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর অনুসারীরা ছাড়া দুনিয়ার আর কেউ করছে না। অন্যেরা খোদার ইবাদাত করলেও আসল ও প্রকৃত খোদার ইবাদাত করছে না। বরং তারা নিজেদের উদ্ভাবিত কাল্পনিক খোদার ইবাদাত করছে।
(তাফহীমুল কুরয়ান- সুরা কাফিরুনের তাফসির থেকে)
বিষয়: বিবিধ
৯৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন