বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই বছরের আঁতাত
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ০১ নভেম্বর, ২০১৪, ১২:১০:৪২ রাত
৫ই জানুয়ারির আগের কথা । সরকার পতন হবে কিনা এ নিয়ে কথা হচ্ছিল এক বিএনপি নেতার সাথে । আমি বলছিলাম যে, সরকার পতন হবেনা । কারণ, সরকার পতনের জন্য যেরকম মনমানসিকতা নিয়ে আন্দোলন করা দরকার, তা জামায়াতের ভেতর থাকলেও বিএনপির ভেতর নেই । কোন একটা কারণে বিএনপি এই মুহূর্তে ক্ষমতা নিতে চায় না ।
যেসব কারণ হতে পারে, তার মধ্যে দুটা আমি বললাম । এক- বিএনপি এই মুহূর্তে ক্ষমতা নিলে সবচেয়ে বড় বিপদে পড়বে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল নিয়ে । কিন্তু বিএনপি এই ট্রাইবুনালের কোন দায় নিতে চায় না । হয় ট্রাইবুনাল চালু রেখে বন্দী জামায়াত নেতাদের তথাকথিত বিচার চালিয়ে যেতে হবে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সাজানো বিচারক-মামলা-সাক্ষী-সাবুদের ওপর ভর করে হয়তো সাজাও দিতে হতে পারে । অথবা ট্রাইবুনাল ভেঙ্গে দিতে হবে। কিন্তু বিএনপি এই দুইটার কোনটাই করতে চায় না। ট্রাইবুনাল ভেঙ্গে দিলে আওয়ামী লীগ আবার 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গেল' ধুয়া তুলে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করবে । নতুন সরকারের জন্য সেটা হবে একটা বেসামাল অবস্থা ।
বিচার করেছে অথবা করেনি, এই দুইটার কোনটার ছাপই বিএনপি তার গায়ে লাগাতে চায় না ।
সেজন্য বিএনপি চায়, আওয়ামী লীগ যে আগুনে হাত দিয়েছে তা না নেভা পর্যন্ত ওয়েট করতে । বিএনপি চায় জামায়াত নেতাদের প্রহসনমূলক বিচার আওয়ামী লীগের হাতেই শেষ হোক । সেজন্য আওয়ামী লীগকে আরো সময় দেবে বিএনপি ।
দ্বিতীয় কারণ হতে পারে, তারেক রহমানের অক্ষমতা । আসলে তারেক রহমান এখনো দেশে ফেরার উপযুক্ত নয় । আর দেশেও তারেকের দেশে ফেরার মত পরিবেশ সৃষ্টি হয় নাই । সেকারণেও বিএনপি চায় না এই মুহূর্তে ক্ষমতা নিতে ।
বিএনপির সেই নেতা দুইটি কারণই স্বীকার করে বললেন, আসলে বিএনপি আওয়ামী লীগকে আরো অন্তত দুটি বছর ক্ষমতায় রাখতে চায় । এ ব্যাপারে ভেতরে ভেতরে একটা সমঝোতা আছে ।
জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় না হলে যখন বিএনপির নামধারী কিছু লোক ইতর প্রাণীর মত জামায়াত-আলীগ আঁতাতের গন্ধ শুকতে শুরু করে, তখন আমার সেই কথাটা মনে পড়ে । জাতিসংঘ প্রতিনিধি তারানকোর উপস্থিতিতে কী আলোচনা হয়েছিল বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে? সেটাও তো জানা যায় নি । ঈদের পর ঈদের পর করে বিএনপি দিন কাটাচ্ছে । এইসব ব্যাপারও সেই গোপন 'সমঝোতা'র সাপোর্টে যায় ।
অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুতে বিএনপির নীরবতা আমার সেই মন্তব্যের সাপোর্টে যায়-'আসলে বিএনপি বিচার নিয়ে কোন দায় নিতে চায় না' । যদিও জামায়াতের সাথে জোট রেখে জামায়াত নেতাদের ফাঁসিতে নির্বিকার থাকাটা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সাথে বেমানান । বিএনপি এই নিয়ে একটা চরম Dilemmaয় পড়ে আছে । আফটার অল এটা বিএনপির জন্য ভালো হবে নাকি খারাপ হবে সেটা সময়ই বলে দেবে ।
বিএনপি-আওয়ামী লীগ চুক্তি হলে সেটা হয় 'সমঝোতা' , আর জামায়াতের সাথে কোন কথা হলে সেটা হয় আঁতাত !
বিএনপির নামধারী যেসব ইতর আঁতাতের গন্ধ শুঁকছিলেন, জামায়াতের আমীর মাওলানা নিজামীর ফাঁসির আদেশের পর তাদের অবস্থা কী? তারা কি এখন তাদের নিক্ষিপ্ত থুতু ঠিকমত চেটে খাচ্ছেন ?
বিষয়: রাজনীতি
১৫৬৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন