ঈদুল ফিতরঃ কিছু প্রশ্ন
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ২৮ জুলাই, ২০১৪, ০৮:০২:১৮ রাত
> ঈদের নামাজের পর খুৎবা কি শুনতেই হবে ?
- মুহাম্মাদ ইব্ন ইয়াহ্য়া (র) .......... আব্দুল্লাহ ইব্ন সায়িব (রা) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সা) ঈদের সালাত আদায় শেষে বললেন, যে চলে যাওয়া ভাল মনে করে সে যেন চলে যায়, আর যে খুৎবা শ্রবণের জন্য অপেক্ষা করা ভালো মনে করে সে যেন অপেক্ষা করে।
( সুনানে নাসাঈ )
> ঈদের দিন কি খেলাধুলা আনন্দ উল্লাস করা যাবে ?
- অবশ্যই যাবে । (তবে ইসলামের সীমারেখা অতিক্রম করা যাবে না ।)
- কুতায়বা ইব্ন সাঈদ (র) ............ আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা) একদিন তাঁর কাছে গেলেন, তখন তাঁর সামনে দুইটি বালিকা দফ্ বাজাচ্ছিল। আবূ বকর (রা) তাদের নিষেধ করলেন। নবী (সা) বললেন, তাদের নিষেধ করো না। কেননা প্রত্যেক জাতির জন্যই একটি আনন্দ স্ফূর্তির দিন থাকে। (সুনানে নাসাঈ)
- মুহাম্মাদ ইব্ন আদম (র) ............ আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কয়েকজন হাবশী এসে ঈদের দিনে নবী (সা)-এর সম্মুখে খেলাধূলা করতে লাগল। তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি নবী (সা)-এর কাঁধের উপর দিয়ে তাদের খেলা দেখতে লাগলাম । (সুনানে নাসাঈ)
> মেয়েরাও কি ঈদের নামাজে যাবে ?
- হ্যা । ( অবশ্যই যথাযথভাবে পর্দা রক্ষা করে । )
- আমর ইব্ন যুরারাহ (র) .......... হাফসা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মে ‘আতিয়্যা (রা) 'আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান হোক' বলা ব্যতীত রাসূলুল্লাহ (সা)-কে স্মরণ করতেন না। একবার আমি তাকে বললাম, তুমি কি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে এরূপ বলতে শুনেছ? সে বলল হ্যাঁ; তাঁর উপর আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছিলেন, কিশোরী, যুবতী এবং ঋতুমতিগণ যেন বের হয়। এবং তারা যেন ঈদগাহ এবং মুসলামানদের দোয়ায় উপস্থিত থাকে আর ঋতুমতিগণ যেন সালাতের স্থান থেকে দূরত্বে অবস্থান করে । (সুনানে নাসাঈ )
- আমরুন নাকিদ (র)......উম্মে আতিয়্যা (রা-) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সাবলিকা মেয়েদেরকে, ঋতুমতীদেরকে ও পর্দানশীলদেরকে ঈদের সালাতে যাওয়ার জন্য বের করতে । তবে ঋতুমতী মহিলারা সালাতে অংশ-গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে । তারা কল্যাণ কর্ম ও মুসলিমদের দুআতে অংশ:গ্রহণ করবে । আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের কারো ওড়না থাকে না (সে কি করবে?) তিনি বললেন, একে অন্যকে ওড়না পরিধান করতে দিয়ে সাহায্য করবে । ( সহীহ মুসলিম )
> গরীবদেরকে ফিতরের সদকা কখন দেয়া উচিৎ ?
- ঈদের নামাজের উদ্দেশ্যে বের হবার আগেই ।
- আদম (র)... (আবদুল্লাহ) ইব্ন ‘উমর (রা) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সাঃ) লোকদেরকে ঈদের সালাতের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বেই সাদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দেন । ( সহীহ বুখারী )
> ঈদুল ফিতরের সকালে কিছু খাওয়া কি উচিৎ ?
- হ্যা ।
- মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রাহীম (র …… আনাস ইবনে মালিক (রা খেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা ঈদুল ফিতরের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের হতেন না। অপর এক রিওয়ায়েতে আনাস (রা নবী করীম সা: থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি তা বেজোড় সংখ্যক খেতেন। ( সহীহ বুখারী )
> কীভাবে ঈদগাহে যাওয়া উচিৎ ?
- জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈদের দিন নবী (সা) এক রাস্তায় ঈদগাহে যেতেন এবং আরেক রাস্তায় সেখান থেকে ফিরতেন। (বুখারী)
> ঈদের নামাজের জন্য কি আযান বা ইকামাতের প্রয়োজন আছে ?
- না ।
- মুহাম্মাদ ইবন রাফি (র)......ইবন আব্বাস (রাঃ) ও জাবির ইবন আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তারা বলেন- ফিতরের দিবস ও আযহার দিবসে আযান দেয়া হত না । ইবন জুরায়জ (র) বলেন, কিছুক্ষণ পর আমি তাকে {আতাকে} এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম । তিনি আমাকে বললেন যে, জাবির ইবন আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) আমার কাছে রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন যে, ঈদুল ফিতরের সালাতের জন্য কোন আযান নেই । ইমাম (হুজরা থেকে) বের হওয়ার মুহূর্তেও নয়, পরেও নয় । ইকামতও নেই, নেদা-আহবান কিছুই নেই । সেদিন আহবানও নেই, ইকামতও নেই । (সহীহ মুসলিম )
> ঈদের নামাজে কোন সুরা তেলাওয়াত করা উচিৎ ?
- সুরা আল আ'লা এবং সুরা আল গাশিয়াহ , ক্রম ৮৭, ৮৮ ।
- কুতায়বা (র) ........... নু’মান ইব্ন বাশীর (রা) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সা) উভয় ঈদ এবং জুমুআর সালাতে ‘‘সাবিব হিসমা রাবিবকাল আ’লা’’ এবং ‘‘হাল আতাকা হাদীছুল গাশিয়া’’ পাঠ করতেন। (সুনানে নাসাঈ)
> একই দিনে ঈদ এবং জুমআ হলে জুমার নামাজ কি পড়তে হবে ?
- জুমার নামাজ না পড়লেও চলবে ।
- মুহাম্মাদ ইব্ন বাশ্শার (র) ........... ওয়াহাব ইব্ন কায়সান (রা) বর্ণনা করেন যে, ইব্ন যুবায়র (রা)-এর যুগে একবার ঈদ এবং জুমুআ একত্রিত হয়ে গিয়েছিল। তিনি সূর্য উপরে না উঠা পর্যন্ত ঈদের সালাত আদায় করার জন্য বের হতে বিলম্ব করলেন। অতঃপর বের হলেন এবং খুৎবা দিলেন এবং খুৎবাকে দীর্ঘ করলেন, তারপর নীচে অবতরণ করলেন এবং সালাত আদায় করলেন। আর সেদিন লোকদের নিয়ে জুমুআর সালাত আদায় করলেন না। এ ঘটনা ইব্ন আব্বাস (রা)-এর সমীপে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, তিনি সুন্নাত মতই করেছেন। (সুনানে নাসাঈ)
- আমর ইব্ন আলী (র) ........... ইয়াস ইব্ন আবূ রমলা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মু’আবিয়া (রা)-কে যায়দ ইব্ন আরকাম (রা)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, ‘‘আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে ঈদ এবং জুমুআর সালাতে শরীক ছিলেন?’’ তিনি বললেন, হ্যাঁ; তিনি ঈদের সালাত দিনের শুরুতে আদায় করে ফেলেছিলেন। অতঃপর (গ্রামের অধিবাসীদেরকে) জুমুআর সালাতে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন ।
(সুনানে নাসাঈ)
> কোন কারণে ঈদের নামাজের জামায়াত মিস হয়ে হয়ে গেলে কী করতে হবে ?
- দুই রাকাত নামাজ আদায় করে নিতে হবে । ( সহীহ বুখারী )
বিষয়: বিবিধ
১০৭৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে খুতবার ব্যাপরে অন্য হাদিস ও আছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন