১৭ই রমজানের শিক্ষা

লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ২৫ জুলাই, ২০১৪, ১১:৩৮:৫৮ রাত

রমজানের অনেকগুলোই শিক্ষা রয়েছে । আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় ১৭ই রমজানের শিক্ষা । ১৭ই রমজানের ইতিহাস আমার জীবনে এক বিশাল পরিবর্তন এনে দিয়েছিল ।

কল্পনায় ভেসে ওঠে একটা কাফেলা । এগিয়ে চলেছে দৃপ্ত শপথ নিয়ে – মোকাবেলা করতে হবে একটা পিশাচ বাহিনীর । মক্কা থেকে যে বাহিনী এগিয়ে আসছে আল্লাহর দেয়া বিধানের অনুসারী কয়েকশ মানুষকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে । ‘মদীনা’ নামক ক্ষুদ্র রাষ্ট্রকে চিরতরে বিলুপ্ত করতে ।

সেই বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে চলছে কাফেলা । প্রায় তিনশ জনের কাফেলার সবাই অনাহারে আছেন । এখন রমজান মাস । এইতো এ বছরেই সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে নির্দেশ এসেছে- রমজান মাসে সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকতে হবে অনাহারে । শুধু খাদ্য নয়- যেকোন রকম ভোগ-আরাম থেকে সংযমী হতে হবে । আল্লাহর মনোনীত দূত যেভাবে বলেন – সেভাবে জীবন পুনর্গঠন করতে হবে ।

কাফেলা এগিয়ে চলেছে সামনে । মাঝে মাঝে শব্দ আসছে- ‘আল্লাহু আকবার’ । কাফেলার নেতা এমন একজন মানুষ- যিনি মানবজাতির আদি হতে অন্ত পর্যন্ত অনন্য একজন । নাম – মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ (সাঃ) ।

বিকেল হয়ে আসছে । সুর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে । আর ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই অনাহারের সমাপ্তি হবে । ইফতার করা যাবে । আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বান্দার এই কষ্টের প্রতিদান নিজে দেবেন । যত ইচ্ছা দেবেন ।

বদর নামক স্থানে এসে পৌছেছে কাফেলা । সিদ্ধান্ত হয়েছে এখানেই তাঁবু খাটানো হবে । পানির উৎস পাওয়া গেছে । সেটাকে দখলে রাখতে হবে । মক্কা থেকে কুরাইশ-কাফিরদের উদ্ধত বাহিনী এই স্থান থেকে আর বেশি দূরে নাই । হয়তো কাল এখানেই যুদ্ধ হবে । চূড়ান্ত হবে- পৃথিবীতে আল্লাহর বিধান মানার মত কেউ থাকবে কিনা । মদীনা নামক ক্ষুদ্র রাষ্ট্রটি থাকবে কি থাকবে না ।

হঠাৎ কানাকানি শুরু হলো । অধিনায়ক, সৃষ্টিকর্তার মনোনীত পুরুষ, রাসুল (সাঃ) বলেছেন রোযা ভেঙ্গে ফেলতে হবে । কেন ? আর তো সময় বেশি নেই । এইসময় রোযা ভাঙ্গার কী দরকার ? কারো বুঝে আসে না । অনেকেই ইতস্তত করতে লাগলেন ।

অধিনায়ক এবার নিজেই বললেন- আমাকে খেজুর দাও । তিনি খেজুর খেলেন । সঙ্গীরা বাধ্য হয়ে রোযা ভাংলেন । এই ব্যক্তির অনুসরণ করাটাই তো তাঁদের জীবনের পরম পাওয়া ।

এমনিভাবে আরো একবার রোযা ভাঙ্গা হয়েছিল ৮ম হিজরিতে । মক্কা অভিযানের সময় ।

রমজান মাস শুধু সেহরী আর ইফতারের জন্য নয় । দীর্ঘ সময়ের নামাজ, উপবাস এই সবকিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনের জন্য ট্রেনিং । তাগুতের বিরুদ্ধে লড়াই করার ট্রেনিং । রমজান মাস তাগুত শক্তির পরাজয়ের মাস । রমজানের শিক্ষা বদর যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার শিক্ষা । রমজানের শিক্ষা মক্কা বিজয়ের শিক্ষা । যদি আমরা রোযার স্পিরিট ও ট্রেনিং ধারণ করতে পারি, তাহলে দ্বিতীয় কিংবা অষ্টম হিজরীর মত আবু জেহেল ও তার বংশধররা আজও পরাজিত হবেই হবে ইনশাআল্লাহ ।

বিষয়: বিবিধ

৯৫৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

248248
২৬ জুলাই ২০১৪ রাত ০৩:১৩
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো
২৭ জুলাই ২০১৪ রাত ১১:২২
193413
মুহসিন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File