বাংলাদেশে আল কায়েদার ভবিষ্যৎ
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:৫৬:০৭ রাত
বাংলাদেশে আল কায়েদার প্রভাব যে একদম নেই তা আমি বলবো না । ইসলাম নিয়ে নির্দিষ্ট ক্রমধারা অনুসরণ করে, নির্দিষ্ট সিলেবাস অনুসরণ করে পড়াশুনা না করে যখন কিছু তরুণ হঠাৎ করে কিছু পড়াশোনা করে ইসলামের অনুপম সৌন্দর্যমন্ডিত সমাজের কথা জানতে পারে তখন তাদের মনে আকাংখা তৈরি হয় তেমন সমাজ প্রতিষ্ঠার । আর সেই সময়টিতে তারা ইসলামের মক্কী যুগের সুন্নাহ , ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক কর্মপন্থার প্রাথমিক অংশগুলো সম্পর্কে না জেনে ‘কিতাল’ বা যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো জানতে পারে বা তাদের জানানো হয় । তাদের কাছে মনে হয় – সব অন্যায়-অনাচার যেন এক মুহূর্তে খতম করে ফেলবে । ধীরে ধীরে মানুষের জন্য , মানুষের মাঝে কাজ করে মানুষের ও সমাজের সার্বিক পরিবর্তনের কর্মপন্থা অনুসরণের ধৈর্য তাদের কুলায় না ।
এভাবেই আল কায়েদার মত সশস্ত্র বিপ্লবের স্বপ্ন দেখা শুরু করে অনেকেই । ইচ্ছে পোষণ করে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার । অথচ এটা ভাবেনা – কার অস্ত্র ? কেন অস্ত্র ?
আমেরিকা ইসরাইল রাশিয়ার কাছে অস্ত্র কিনে সেই অস্ত্র দিয়ে তাদের দুই-একজন আর্মি সদস্য মারতে পারাতেই কি সফলতা ?
রাসুলের (সাঃ) যুগে যে যুদ্ধগুলো হয়েছিল (অবশ্যই মক্কী যুগের পর) তাতে সৈন্যসংখ্যার তারতম্য থাকলেও , মুসলিমদের সৈন্য ও অস্ত্রসংখ্যার কমতি থাকলেও সেইসব অস্ত্রের গুণগত মান ছিল সমপর্যায়ের । ওদেরও উট আছে, মুসলিমদেরও আছে । ওদের ঘোড়া ছিল , মুসলিমদেরও । ওদের তরবারি ছিল, মুসলিমদেরও । ওদের তীর ধনুক বল্লম ছিল, মুসলিমদেরও ।
আজ ইসলামবিরোধীদের (আল কায়েদার মূল শত্রু আমেরিকা) হাতে যা আছে, মুসলিমদের হাতে তার কোনটি আছে ? কতটুকু আছে ? কিছুই নেই । অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করবেন , সেই অস্ত্রও তো কিনতে হয় আমেরিকা রাশিয়া ইসরাইলেরই কাছে ।
আপনি অনেক মুত্তাকী বান্দা হতে পারেন , কিন্তু ডাক্তারি করতে গেলে আপনাকে ডাক্তারিবিদ্যাই জানতে হবে । নাহলে নাকের সার্জারি করতে গিয়ে হয়তো গলা কেটে ফেলবেন । আর গলা কেটে ফেললে আল্লাহর কুদরত দিয়ে সেই রোগী বাঁচাতে পারবেন না । আল্লাহ্ বাঁচাতে পারেন , কিন্তু এভাবে বাঁচানো আল্ললাহর সুন্নাত না ।
রাসুল (সাঃ) যুদ্ধ কামনা করতে নিষেধ করেছেন । কিন্তু যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হলে সাহসের সাথে মোকাবেলা করতে বলেছেন । সেজন্য আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন এসব জায়গায় যে সশস্ত্র যুদ্ধ চালাচ্ছে আল কায়েদা এবং হামাস- সেগুলো ঐ স্থানের জন্য যথার্থ । এর কোন বিকল্প নেই । সারাবিশ্বের মুসলমান এটাকে সমর্থন করে ।
কিন্তু বাংলাদেশে ? বাংলাদেশে আল কায়েদা কী করবে ? যে দেশের চারদিক ভারত মিয়ানমার দ্বারা বেষ্টিত , আশেপাশে কোন মুসলিম দেশ নেই সেখানে কোত্থেকে আসবে অস্ত্র ? ভারতের অস্ত্র দিয়ে ভারতের সাথে যুদ্ধ ? আফগানিস্তানের মত চারিদিকে মুসলিম দেশ পরিবেষ্টিত অবস্থায় ক্ষমতা টেকানো যায় নাই , সেখানে বাংলাদেশে তো অচিন্তনীয় ।
প্রকৃতপক্ষে দুনিয়ায় সফলতা পেতে চাইলে সেই সক্ষমতা অর্জন করতে হবে । জ্ঞানে-বিজ্ঞানে প্রযুক্তিতে নিজেদের যোগ্য করতে হবে ।
আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে উদার গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন ছাড়া ইসলামপন্থীদের কোন বিকল্প নেই । সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা ছাড়া আল কায়েদা বা অন্য কোন সশস্ত্র গোষ্ঠীর এদেশে কোন ভবিষ্যৎ নেই ।
বিষয়: বিবিধ
১১৬৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন