বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্র বানানোর চক্রান্ত রুখে দাঁড়াও
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:১৮:০৫ সকাল
সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে বাংলাদেশে বিদেশী সৈন্য ঢুকানোর সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনার সেমিফাইনাল শুরু হয়েছে । আল কায়েদা নেতা আইমান আল জাওয়াহিরির বাংলাদেশ প্রসংগে ভিডিও বক্তব্য প্রচার সেটারই অংশ বলে মনে হয় ।
আল কায়েদার এই তথাকথিত বক্তব্য হতে কারা বেনেফিশিয়ারী হবে ? স্পষ্টতই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এটা আওয়ামী লীগকে ইস্যু জোগাবে । এতে করে আওয়ামী লীগ ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত পাশ্চাত্য বিশ্বকে বোঝাবে, এই দেখুন বাংলাদেশে চরমপন্থী সশস্ত্র মুসলিম গোষ্ঠির নজর পড়েছে । একে মোকাবেলা করার জন্য আওয়ামী লীগকেই দরকার । এছাড়া জামায়াত হেফাজত বিএনপি এসব দলের বিরুদ্ধে কল্পিত আল কায়েদা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে নতুন করে প্রপাগান্ডা শুরু করা যাবে । এতে করে জোরজবরদস্তি করে ক্ষমতা আকড়ে থাকা এই সরকারের বৈধতার সংকট আপাতত নজরের বাইরে চলে যাবে । প্রতিদিন যেভাবে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিএনপি ও জামায়াতের মাঠ পর্যায়ের নেতাদের হত্যা করা হচ্ছে সেটিকেও আড়াল করা যাবে ।
বিগত ১৯৯৬-২০০১ আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজমের দুলাভাই শায়খ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হলেও এটা নির্মুল করে পরবর্তী বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার । কিন্তু বেশিরভাগ মিডিয়া আওয়ামীপন্থি হওয়ায় সে কৃতিত্ব বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট পাচ্ছে না । বরং উল্টো তাদেরকেই দোষারোপ করা হয় । বর্তমান সময়ে স্বৈরাচারীভাবে সরকারবিরোধী সকল টিভি পত্রিকা বন্ধ করে রাখায় আল কায়েদার এই ভিডিও সংক্রান্ত প্রচারণায় নতুন উদ্যমে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটকে জড়িয়ে প্রপাগান্ডা চালানো হবে । বিশেষ করে জামায়াত এবং হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হবে । যদিও এদের সাথে কখনোই কোন জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি । আওয়ামী লীগের মুখপাত্রের ভুমিকা পালনকারী একাত্তর টিভিতে প্রথম এই ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে সেই কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলে মনে হয় ।
এই ভিডিও সত্য নাকি ভুয়া ? ভুয়া হবার সম্ভাবনাই বেশি । বাংলাদেশে ইসলামপন্থি দলগুলোর ওপর চরম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে । প্রথম টার্গেট ছিল যেন এদেশের ইসলামপন্থিরা চরমপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ে । কিন্তু সেটা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আল কায়েদাকে আইমান আল জাওয়াহিরির নামে টেনে আনা ।
আল্লামা সাঈদী এবং বিএনপির চীফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুকের নামে ভুয়া পরকীয়া প্রেমের অডিও ক্লিপ প্রকাশের মত এটাও হতে পারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি ভুয়া ক্লিপ । সাঈদীর বিভিন্ন সময়ের ওয়াজ থেকে সাউন্ড সংগ্রহ করে সেগুলো জোড়া দিয়ে এডিট করে বানানো হয়েছিল সেটি । নতুন এই ভিডিও ক্লিপটি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা যাচাই করলে এর সত্যতা হয়তো প্রমাণিত হবে । যদি সত্যিকারভাবেই এটি ভুয়া হয়ে থাকে তাহলে এর পেছনে জড়িতদের খুঁজে বের করতে হবে । এটা নিঃসন্দেহে দেশদ্রোহিতা । আর যদি ভুয়া না হয়ে থাকে , তাহলে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার না বানিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আল কায়েদা এবং সাম্রাজ্যবাদী ভারত আমেরিকা উভয় গোষ্ঠির কুনজর থেকেই দেশকে রক্ষা করতে হবে ।
তবে আমি আতংকিত, হয়তো রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য কথিত বন্দুকযুদ্ধের মত দাড়ি টুপিওয়ালা কিছু মানুষকে দিয়ে দেশের ভেতর বোমাবাজির নাটক সাজানো হবে । যেমনটি হয়েছিল গতবছর মিল্কি নামের এক সন্ত্রাসীকে হত্যার সময় তার প্রতিপক্ষ যুবলীগ নেতা পাঞ্জাবি-পাজামা পড়ে টুপি মাথায় দিয়ে গুলি ছুড়েছিল । ঘটনাগুলো সাজানো হলেও সেখানে সত্যি সত্যি কিছু নিরীহ মানুষ মারা যাবে , আমার দেশের মানুষ । হয়তো আমিও হতে পারি, হতে পারেন আপনিও । সেজন্য এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সবার সচেতন হওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে ।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভারতীয় সৈন্য কিছু বাংলাদেশে রিজার্ভ রাখা হবে যেন সেনাবাহিনীর কেউ ক্যু না করে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন