বিপ্লবীর রূপান্তর
লিখেছেন লিখেছেন মুহসিন আব্দুল্লাহ ৩০ জুলাই, ২০১৩, ০৭:৩০:৪১ সন্ধ্যা
বিপ্লবের নেশা একবার রক্তে ঢুকে গেলে তা টগবগ করতেই থাকে । বিপ্লবীকে সংগ্রামের মাঠ থেকে দূরে থাকতে দেয় না । সহযোদ্ধার পিছুটান, বিশ্বাসঘাতকতা কিংবা নেতৃত্বের মোনাফেকি কখনো কখনো বিপ্লবীকে হতবিহবল করে দেয় । যে বিপ্লবী শত্রুর বুলেটের সামনে অটল দাঁড়িয়ে থাকে, সহযোদ্ধার বিশ্বাসঘাতকতা কিংবা নেতৃত্বের চিন্তাধারার দুর্বলতা , আপোষকামিতা ও ভুল সিদ্ধান্ত, তাঁকেও মাঝে মাঝে কুপোকাত করে ফেলে । যে প্রেরণা, যে চেতনা তাঁকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম করতে শিখিয়েছিল – সেই চেতনাই তাঁকে আবার বিক্ষুব্ধ করে তোলে বিপদের সময় এগিয়ে না আসা সহযোদ্ধারও বিরুদ্ধে ।
শত্রুর বুলেট হয়তো বুক ভেদ করবে, হৃৎপিণ্ড ভেদ করবে । কিন্তু অন্তর থাকবে অমলিন , নিষ্কলুষ । কিন্তু সহযোদ্ধার অসময়ে পিছুটান , নেতৃত্বের ওয়াদার খেলাপ অন্তরকেই ছিন্নভিন্ন করে দেয় । বিপ্লবীরা দিয়াশলাইয়ের মত । দিয়াশলাইয়ের কাঠি আগুন জ্বালানোর কথা জালিমের মসনদে । শত্রুর তাঁবুতে । কিন্তু অন্তরের আগুন দিয়াশলাইকেই জ্বালিয়ে দেয় ।
হাজারো বিপ্লবী তাই রণাঙ্গনের পাশে বসে জ্বলে যাওয়া অন্তরকে মেরামত করে । আবার যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুত করে । নতুন করে বিশ্বাসকে সাজায়- রণাঙ্গনেও বিশ্বাসঘাতকতা আছে, ওয়াদার খেলাপ আছে, নেতৃত্বের আপোষকামিতা আছে । ষড়যন্ত্র শুধু শত্রু একাই করে না , সহযোদ্ধাও করতে পারে । মীরজাফরও সেনাপতি ছিল । সেনাপতিও হয়তো বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন মীরজাফরের মত । সবকিছু পবিত্র নয়, এখানেও আছে অপবিত্রতা । তবুও চলতে হবে পথ- যতটুকু বিশুদ্ধতা আছে ততটুকু নিয়েই । তবুও লড়তে হবে ন্যায়ের পথে- যে ক’জন আছে বিশুদ্ধ সৈনিক- তাঁদেরকে নিয়েই । বিপ্লবী নতুনভাবে অন্তরকে গড়ে কঠিন বাস্তবতায়, সব কিছু মোকাবেলার জন্য । এবার আর কেউ জ্বালাতে পারবে না ।
অন্তরে শপথ ধীরে ধীরে দীপ্ত হয়- আবার যুদ্ধে যাবো । ঝিমিয়ে পড়া হাতের দিকে তাকিয়ে বিপ্লবীর কন্ঠে আসে কবিতা –
যদি কোনদিন আসে আবার দুর্দিন
যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবেনা প্রেম মানুষে মানুষে
ভেঙ্গে সেই কালো কারাগার
আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার ।
বিষয়: বিবিধ
১১১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন